ফুসফুস ক্যানসারের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপী। আমাদের দেশেও এর বিস্তৃতি ব্যাপক হারে বেড়ে চলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শ্বাসযন্ত্রের যাবতীয় রোগের মধ্যে ফুসফুসের ক্যানসার সবচেয়ে মারাত্মক। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে এ রোগ শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণ করলে জটিলতা এড়ানো যায়। এর জন্য প্রয়োজন জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।
ডা. মো. শাহরিয়ার ইসলামের সঞ্চালনায় অতিথি ছিলেন সহকারী অধ্যাপক ও ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডা. শেফাতুজ্জাহান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোহাম্মদ জাবেদ
এই লক্ষ্যে এসকেএফ অনকোলজি নিবেদিত ‘বিশ্বমানের ক্যানসার চিকিৎসা এখন বাংলাদেশে’ অনুষ্ঠানের সপ্তম পর্বে অতিথি হিসেবে যোগ দেন চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডা. শেফাতুজ্জাহান এবং বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোহাম্মদ জাবেদ। এ অনুষ্ঠানের আলোচ্য বিষয়—ফুসফুস ক্যানসার।
ডা. সৈয়দ মোহাম্মদ জাবেদ বলেন, ফুসফুসের রোগ অনেক ধরনের হতে পারে। তার মধ্যে কিছু রোগ আছে জীবাণুজনিত। এদের মধ্যে কিছুসংখ্যক আছে স্বল্পমেয়াদি জীবাণুজনিত। যেমন নিউমোনিয়া। আবার হঠাৎ করে ফুসফুসে প্রদাহ হতে পারে। এ ছাড়া কিছু জীবাণু আছে যেগুলো লম্বা সময় ধরে আমাদের ফুসফুসে প্রভাব বিস্তার করে। তখন দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
এ ক্ষেত্রে আমাদের দেশের একটি অন্যতম রোগ হচ্ছে যক্ষ্মা। আমাদের দেশের সামাজিক এবং পারিপার্শ্বিক কারণেই মানুষ এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। জীবাণুজনিত রোগ ছাড়াও কিছু কিছু রোগ রয়েছে যেগুলো বংশগত কারণে হয়ে থাকে। যেমন অ্যাজমা বা হাঁপানি। কিছু আছে বার্ধক্যজনিত রোগ। তা ছাড়া পরিবেশদূষণ এবং ধূমপানের কারণে বহুসংখ্যক মানুষ ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে থাকে।
ডা. শেফাতুজ্জাহান বলেন, ‘আমাদের দেশে ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ ধূমপান। অর্থাৎ অধিকাংশ ফুসফুস ক্যানসারের রোগীই ধূমপায়ী। আবার প্যাসিভ স্মোকিংয়ের ফলেও অনেকে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। আর এ রোগে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে খুব সাধারণ একটি উপসর্গ হলো কাশি। এদের মধ্যে কারও কারও সপ্তাহব্যাপী প্রচণ্ড কাশি হতে পারে। অনেকের আবার অনেক দিন ধরে অল্প কাশি হতে হতে একসময় কফের রং লাল হয়ে যায় এবং পরবর্তী সময়ে কাশির সঙ্গে রক্ত আসতে থাকে। এরপর অনেকের বুকের যেকোনো পাশে কিংবা মাঝখানে ব্যথা অনুভব হতে পারে।
এসব ক্ষেত্রে যতবার রোগী কাশি দিচ্ছে ততবারই বুকে ব্যথা হয়ে থাকে। কাশি ও বুকে ব্যথা বেড়ে যখন রোগটি জটিল পর্যায়ে চলে যায়, তখন রোগীর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। অনেক রোগী আবার জ্বর কিংবা জন্ডিস নিয়ে আসে।’
আমাদের দেশের রোগীরা সাধারণত প্রাথমিক পর্যায়ে এ জাতীয় রোগকে অবহেলা করে থাকে। ফলে ঠিকমতো অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করে না। এতে রোগ আরও জটিল হতে থাকে। এতে একসময় যখন শারীরিক যন্ত্রণা সহ্য করতে পারে না, তখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়। কিন্তু তখন চিকিৎসা করে রোগীকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তোলা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সম্ভব হয় না। তাই উপসর্গ দেখামাত্রই দ্রুত অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।
Ref:
https://www.prothomalo.com/life/health/%E0%A6%85%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A7%9F-%E0%A6%9C%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%B2-%E0%A6%B9%E0%A7%9F-%E0%A6%AB%E0%A7%81%E0%A6%B8%E0%A6%AB%E0%A7%81%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%B0