করোনার প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই বিশ্বব্যাপী চিকিৎসকেরা কাজ করছেন ফ্রন্টলাইনার হিসেবে। এ কাজে তাঁদের নানা চড়াই-উতরাই পেরোতে হয়েছে। পুরোপুরি অজানা এক ঘাতকের বিরুদ্ধে তাঁদের লড়তে হয়েছে।
এভারকেয়ার হসপিটালস ঢাকার প্রিন্সিপাল ডায়েটিশিয়ান তামান্না চৌধুরীর সঞ্চালনায় অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন ও বাতব্যথা বিশেষজ্ঞ ডা. মো. নাহিদুজ্জামান সাজ্জাদ
এভারকেয়ার হসপিটালস ঢাকার প্রিন্সিপাল ডায়েটিশিয়ান তামান্না চৌধুরীর সঞ্চালনায় অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন ও বাতব্যথা বিশেষজ্ঞ ডা. মো. নাহিদুজ্জামান সাজ্জাদ
করোনাকালে একজন চিকিৎসকের অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয় প্রথম আলো আয়োজিত এসকেএফ নিবেদিত স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষ অনুষ্ঠান ‘ইজোরাল মাপস স্বাস্থ্য আলাপন’-এ। অনুষ্ঠানটির অষ্টম পর্বে আলোচনা করা হয় করোনা চিকিৎসায় চিকিৎসকদের অভিজ্ঞতা নিয়ে। এভারকেয়ার হসপিটালস ঢাকার প্রিন্সিপাল ডায়েটিশিয়ান তামান্না চৌধুরীর সঞ্চালনায় অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন ও বাতব্যথা বিশেষজ্ঞ ডা. মো. নাহিদুজ্জামান সাজ্জাদ।
অনুষ্ঠানের সূচনায় মেডিসিন ও বাতব্যথা বিশেষজ্ঞ মো. নাহিদুজ্জামান সাজ্জাদ বলেন, শুরুতে ডাক্তারদের করোনা বিষয়ে একেবারেই অজানা ছিল। দিন দিন তাঁরা অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনেক এগিয়েছেন। বিশেষ করে রোগের ধরন এবং সংকটগুলো নির্ণয় করা গেছে। প্রচলিত অনেক ওষুধ দিয়েই করোনা চিকিৎসায় সফলতা পাওয়া গেছে। অল্প সময়ের কার্যকর গবেষণায়ও নতুন কিছু ওষুধ চিকিৎসকদের হাতে এসেছে। যেগুলোতে মৃত্যুহার অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। করোনার প্রথম ধাপে ইউরোপ-আমেরিকায় যে পরিমাণ মৃত্যুহার ছিল, তা এখন অনেক কম।
তিনি বলেন, বিশেষত করোনার সংক্রমণের শুরুতেই, অর্থাৎ প্রথম সাত দিনের মধ্যে যদি ওষুধগুলো প্রয়োগ করা যায়, তবে অনেক ভালো ফলাফল পাওয়া সম্ভব। প্রথম দিকে বিষয়টি জটিল ছিল। কেননা, করোনা শনাক্ত করতেই কয়েক দিন চলে লেগে যেত। কিন্তু এখন শনাক্তেও তুলনামূলক কম সময় লাগে। তবে যাঁদের লক্ষণগুলো স্পষ্ট, তাঁরা পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা না করে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন শুরু করতে পারেন। আরও কিছু জরুরি বিষয়ে চিকিৎসকেরা একমত হতে পেরেছেন। যেমন যাঁদের পুরোনো ও জটিল রোগ আছে, তাঁরা বেশি ঝুঁকিতে। যেমন যাঁদের হৃদরোগ, কিডনিরোগ, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি রয়েছে, তাঁদের করোনা থেকে অনেক বেশি সতর্ক থাকা উচিত।
এরপর মেডিসিন ও বাতব্যথা বিশেষজ্ঞ মো. নাহিদুজ্জামান সাজ্জাদ আলোচনা করেন শীতে অ্যাজমা রোগীদের করণীয় নিয়ে। তিনি বলেন, শীতে অ্যাজমার তীব্রতা বেড়ে যায়। এর প্রধান কারণগুলো হলো, এই সময়ে ঠান্ডা, জ্বর বা ফ্লুর প্রকোপ, ঠান্ডা-শুষ্ক বাতাস, যা শ্বাসতন্ত্র সংকুচিত করে, শীতে বেড়ে যাওয়া ধুলাবালু ও ধোঁয়ার পরিমাণ, কুয়াশা ও গুমোট পরিবেশ ইত্যাদি। এসবই শ্বাসতন্ত্রের সংবেদনশীলতা বাড়িয়ে দেয়, ফলে হাঁপানির রোগীদের কষ্ট বাড়ে।
আবার করোনা হাঁপানি রোগীদের জন্য অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই তাঁদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং অবশ্যই সামাজকি দূরত্ব মেনে চলতে হবে। সর্দি হলে নাক মুছতে রুমাল নয়, টিস্যু ব্যবহার করতে হবে। নাক, চোখ ও মুখে ঘন ঘন হাত লাগানো যাবো না। সর্দি ঝাড়ার পর নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। সর্দি-কাশি ও ফ্লুতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকা ভালো।
করোনা থেকে ভালো হওয়ার পরও অনেকের নানা ধরনের জটিলতা দেখা যায়। যেমন ইদানীং অনেক পোস্ট কোভিড রোগী আসছেন, যাঁদের হাতে, পায়ে বা পুরো শরীরে অস্বাভাবিক ব্যথা রয়েছে। এ ধরনের রোগীদের জন্য মেডিসিন ও বাতব্যথা বিশেষজ্ঞ মো. নাহিদুজ্জামান সাজ্জাদ বলেন, অনেকে করোনা ভালো হয়ে যাওয়ার পর সতর্ক থাকেন না। কিন্তু আমরা অনেক রোগী পেয়েছি, যাঁদের অনিদ্রা, শরীরে ব্যথা, দুর্বলতা, নানা ধরনের মানসিক সমস্যা, দুশ্চিন্তা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যাচ্ছে।
সুতরাং, রোগীকে সতর্ক থাকতে হবে এবং উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা করাতে হবে। পোস্ট কোভিড কোনো রোগীর যদি শরীরে ব্যথা হয়, তবে আগে তা বাত কি না, তা নির্ণয় করতে হবে। যদি বাত হয়, তবে সে অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হবে। আর যদি বাত না হয়, তবে সাধারণ ব্যথানাশক ওষুধে ভালো হতে পারে। কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করা উচিত। পোস্ট কোভিড সিমটম ডাক্তারদের কাছেও একটি বার্নিং ইস্যু। তাই দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
Video Link:https://www.facebook.com/watch/?v=148513700061757
Ref:
https://www.prothomalo.com/life/health/%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%A8%E0%A6%BE-%E0%A6%9A%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A7%8E%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A7%9F-%E0%A6%86%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%85%E0%A6%AD%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%A4%E0%A6%BE