Faculties and Departments > Allied Health Science
চায়ের ভালো–মন্দ
(1/1)
SHAHRIAR ALAM:
চায়ের ভালো–মন্দ
পানীয় হিসেবে চা জনপ্রিয় হওয়ার একটি প্রধান কারণ হলো চায়ে আছে ক্যাফেইন নামক একটি উপাদান। চায়ের মতো কফিতেও আছে ক্যাফেইন। ক্যাফেইন একটি মৃদু উত্তেজক উপাদান। চা পান করলে শরীর চাঙা হয় ও ঝরঝরে লাগে। অনুভূতিটা হয় ক্যাফেইনের জন্যই। চা–পাতার ধরন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ পদ্ধতির বিভিন্নতার কারণে বিভিন্ন রকম চা হয়। যেমন গ্রিন টি, ব্ল্যাক টি, উলং টি ইত্যাদি। তবে সব রকম চায়ে পলিফেনল, থায়াফ্লাবিন, থায়ারুবিজিন ইত্যাদি উপাদান থাকে। এগুলো দেহে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়, দেহ থেকে বিষাক্ত ও বর্জ্য উপাদান নিঃসরণে সহায়তা করে ত্বক ও চুল সুস্থ রাখে। চায়ে বিদ্যমান আরেকটি প্রধান উপাদান হলো ট্যানিন। চায়ের তিক্ত-কষ স্বাদ এবং ব্ল্যাক টির কালো রং ট্যানিনের জন্য হয়। ট্যানিন খাদ্য থেকে দেহে আয়রনের শোষণহার হ্রাস করে। তা ছাড়া দেহে শক্তি উৎপাদন, প্রোটিনের গ্রহণযোগ্যতা ও ক্যানসার প্রতিরোধক উপাদানের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। তবে কি চা পান দেহের জন্য ক্ষতিকর? না, বিষয়টি তা নয়। প্রতিটি খাদ্যের কিছু ভালো ও কিছু ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে। চায়ের উৎপাদন, প্রক্রিয়া ও প্রস্তুতের ওপর এর উপাদানসমূহের পরিমাণ ও কার্যকারিতা নির্ভরশীল। চায়ে বিদ্যমান এসব উপাদানের প্রভাব মানুষের খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক অবস্থা ও অন্যান্য কিছু প্রভাবকের কারণে ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে।চা বানানো ও পান করার সময় কিছু নিয়ম মেনে চললে ট্যানিনের ক্ষতিকর প্রভাব কমানো সম্ভব।হোয়াইট টি ও উলং টিয়ে ট্যানিন নেই। তা ছাড়া সঠিক নিয়মে প্রস্তুত এক চা–চামচ চা-পাতা থেকে তৈরি এক কাপ চায়ে যে পরিমাণ ট্যানিন থাকে, তা দেহের জন্য ক্ষতিকর নয়। অনেকের ধারণা, চা পান করলে ক্যালরি বাড়বে। এটি সম্পূর্ণ ভুল কথা। চায়ে কোনো ক্যালরি নেই। এমনকি এতে উপস্থিত রাসায়নিক উপাদানের পরিমাণ খুবই কম। চায়ের ক্যালরি নির্ভর করে কতটুকু চিনি মেশানো হয় তার ওপর। দুধ–চায়ে যে পরিমাণ দুধ দেওয়া হয়, তার ক্যালরি ভ্যালু খুব কম। তবে সম্পূর্ণ গরুর দুধ ঘন করে তাতে পাতা দিয়ে চা বানালে দুধের ক্যালরি যুক্ত হয়। অর্থাৎ দুধ ও চিনি ছাড়া চা পান করলে তা হবে ক্যালরি–ফ্রি চা।তাই আজ থেকে চায়ের কাপ হিসাব না করে চা-পাতার পরিমাণ হিসাব করুন এবং সঠিক নিয়মে চা পান করুন।
পরামর্শ
• দুই বেলার খাবার খাওয়ার মাঝখানে চা পান করা ভালো।
• রক্তস্বল্পতা বা কোনো বিশেষ শারীরিক সমস্যার কারণে দেহে আয়রনের অভাব থাকতে পারে। এ অবস্থায় চা পান করলে আয়রনের ঘাটতি বাড়ে।
• গ্যাস্ট্রিক, পেপটিক আলসার বা বিশেষ কিছু শারীরিক অবস্থায় সাময়িক বা দীর্ঘ সময়র জন্য চা পান হতে বিরক্ত থাকতে চিকিৎসক পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এ সময় চা পান না করা ভালো।
• সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় কোনো ব্যক্তি দিনে ১-২ কাপ চা খেতে পারেন। তবে চায়ের ক্ষেত্রে চা-পাতার ব্যবহার পরিমাণযোগ্য। ১ কাপ চা যদি ১ চা–চামচ পাতা দিয়ে তৈরি হয়, তাহলে ১-২ কাপ চা গ্রহণযোগ্য। অর্থাৎ দিনে ১-২ চা–চামচ চা-পাতা গ্রহণযোগ্য। এই পরিমাণ পাতা দিয়ে যদি আরও বেশি কাপ চা বানানো হয়, তাহলে বেশি কাপ চা পান করা যাবে।
• চা বানানোর সময় অবশ্যই মনে রাখা উচিত যেন চা-পাতা দীর্ঘ সময় চুলার আঁচে না থাকে। চা যত জ্বাল দেওয়া হয়, তাতে ট্যানিনসহ অন্যান্য ক্ষতিকর উপাদান তত বেশি জমা হয়। চা-পাতা গরম পানিতে দিয়ে ছেঁকে ফেললে ভালো হয়।
Navigation
[0] Message Index
Go to full version