Health Tips > Protect your Health/ your Doctor

গলাব্যথা কেন হয়

(1/1)

Sahadat Hossain:
কোভিডের অন্যতম লক্ষণ হচ্ছে গলাব্যথা। কিন্তু সব গলাব্যথাই কোভিড নয়।

গলাব্যথার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে শিশুরা।

গলাব্যথা যদি এক মাস বা তিন মাসের বেশি থাকে, তা থেকে হার্ট বা কিডনিতে ইনফেকশন হয়ে যেতে পারে।

গলাব্যথার খুব প্রচলিত কারণ হচ্ছে টনসিলাইটিস।

লেখা
ফাহমিদা শিকদার

গলাব্যথা কেন হয়
গলাব্যথা আমাদের কাছে খুব সাধারণ একটি অসুখ। বেশির ভাগ সময় ঠান্ডার কারণে গলাব্যথা হয়। তবে আরও অনেক মারাত্মক কারণেও এটি হতে পারে। গলাব্যথার বিভিন্ন কারণ, উপসর্গ ও চিকিৎসা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হলো স্বাস্থ্যবিষয়ক সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান ‘ডিজিটাল হসপিটাল লাইভ: হ্যালো ডক্টর’–এর চতুর্থ পর্বে।
 ডা. শ্রাবণ্য তৌহিদার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন ডিজিটাল হেলথ কেয়ার সলিউশনসের সিনিয়র ক্লিনিক্যাল কনসালট্যান্ট ডা. মো. কায়ছারুল আলম।

দাঁতের পেছনের অংশ থেকে জিবের গোড়া পর্যন্ত থাকে ওরাল ক্যাভিটি। এরপর থেকেই শুরু হয় গলা, যাকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলে ফ্যারিংস। ফ্যারিংসকে আবার তিন ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথমে আছে নাজো ফ্যারিংস (নাকের পেছন দিকে গলার ওপরের নরম তালু)। এর পেছনে ওরো ফ্যারিংস যেখানে টনসিলের অবস্থান। এই অংশে কোনো ইনফেকশন হলেই টনসিলে ব্যথা অনুভূত হয়। এর নিচে আছে ল্যারিঙ্গো ফ্যারিংস। এই অংশকে ল্যারিংস বা ভয়েস বক্সও বলা হয়। এখানে ইনফেকশন, ইনফ্ল্যামেশন বা প্রদাহ হলে ব্যথা হয়ে থাকে। ফ্যারিঞ্জাইটিস, ল্যারিঞ্জাইটিস আর টনসিলাইটিস—এ তিন রকমের সমস্যা হলে গলাব্যথা হয়।

ডা. কায়ছারুল আলম জানান, বাংলাদেশ বা অন্যান্য দেশে গলাব্যথা হওয়ার সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো ভাইরাস ইনফেকশন। ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস দিয়ে গলাব্যথা হয়। কিছু ক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়া ইনফেকশনও দায়ী। এ ছাড়া অ্যালার্জির জন্যও হতে পারে গলাব্যথা। অতিরিক্ত ধূমপানের জন্য ব্যথা হতে পারে। এ ছাড়া জারদ (GERD) নামে পাকস্থলীর একটি রোগ আছে যেখানে পাকস্থলীর অ্যাসিড ওপরের দিকে উঠে আসে। এটি হলে গলাব্যথা হয়। গলার কোনো অংশে টিউমার বা ক্যানসারও গলা ব্যথার অন্যতম কারণ।

ডা. শ্রাবণ্য তৌহিদা, সঞ্চালক
কোভিডের অন্যতম লক্ষণ হচ্ছে গলাব্যথা। কিন্তু সব গলাব্যথাই কোভিড নয়। ডা. কায়ছারুল আলম বলেন, ‘গলাব্যথার সঙ্গে যদি অতিরিক্ত জ্বর, মাথাব্যথা, ক্লান্তিবোধ, খুসখুসে কাশি, শ্বাসকষ্ট, ঘ্রাণশক্তি চলে যাওয়ার মতো সমস্যা না থাকে তাহলে সাধারণ ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া ইনফেকশন বা ইনফ্ল্যামেশনজনিত ব্যথা ধরে নিতে হবে।’ এই লক্ষণগুলো থাকলে অবশ্যই করোনা শনাক্তের পরীক্ষা করাতে হবে।

বিশেষজ্ঞের আলোচনা থেকে জানা যায় যে গলাব্যথার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে শিশুরা। কারণ, তাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম থাকে, আর তারা ধুলাবালুর ভেতরে খেলাধুলা করে থাকে। ঠান্ডা, ধুলাবালুর জন্য শিশুরা বেশি গলাব্যথায় আক্রান্ত হয়। বয়স্কদেরও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম থাকে। তাঁদেরও বিভিন্ন কারণে গলাব্যথা হতে পারে।

গলাব্যথা কেন হয়
গলাব্যথার চিকিৎসায় সবার আগে রোগীর রোগের ইতিহাস সম্পর্কে জানা হয়। এটি জানার পর সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়। প্রথমে রোগীকে কুসুম গরম পানি দিয়ে গারগল করতে বলা হয়। ডায়াবেটিস না থাকলে মধু, আদা, তুলসীপাতা দিয়ে চা বা স্যুপজাতীয় খাবার এবং কুসুম গরম পানি পানের পরামর্শ দেওয়া হয়। ব্যথার সঙ্গে জ্বর থাকলে প্যারাসিটামল আর ঠান্ডা থাকলে অ্যান্টিভিটামিন ওষুধ প্রেসক্রাইব করা হয়ে থাকে। এরপর যদি ব্যথা না কমে তাহলে ৫-৭ দিন পর অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। এ ধরনের রোগীকে ফলোআপে রাখতে হয়। ডা. কায়ছারুল আলম জানালেন, ‘গলাব্যথা যদি এক মাস বা তিন মাসের বেশি থাকে, তা থেকে হার্ট বা কিডনিতে ইনফেকশন হয়ে যেতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ব্যাকটেরিয়াজনিত ইনফেকশন হলে আর্থ্রাইটিস পর্যন্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

মহামারি এসে আমাদের শিখিয়েছে কীভাবে জীবাণু থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখা যায়। গলাব্যথা যেহেতু ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার কারণে বেশি হয়, এটি এড়াতেও ভালোভাবে কিছুক্ষণ পরপর হাত ধুতে হবে। যখন ঠান্ডা বা সর্দি–কাশি লাগবে তখন নিজেদের আইসোলেট করে রাখতে হবে। আর এখন যেহেতু শীতকাল। এ সময় কুসুম গরম পানি পান করতে হবে। গারগল করার অভ্যাস করা যেতে পারে। দিনে অন্তত চার থেকে পাঁচবার কুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে এটি করা যায়। ডা. কায়ছারুল আলম যেকোনো ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সব সময় মাস্ক পরার অভ্যাসটি চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

গলাব্যথা কেন হয়
গলার সঙ্গে নাক ও কানের একটা সম্পর্ক আছে। গলাব্যথা হলে নাক ও কানেও ব্যথা হতে পারে। বিশেষ করে ব্যথা দীর্ঘ সময় ধরে থাকলে, জীবাণু নাক আর কানে ছড়িয়ে যেতে পারে। এ জন্য গলাব্যথা ১-২ দিনের ভেতর না সারলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

গলাব্যথা হলে অনেকের কণ্ঠস্বর পাল্টে যায়। তখন গলাকে বিশ্রাম দিতে হবে এবং হাইড্রোজেন পার অক্সাইড, ভায়োডিন দিয়ে গারগল করা যেতে পারে। এভাবে যদি না সারে তখন অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হবে।

গলায় ক্যানসার বা টিউমার হলে ব্যথা হয়ে থাকে। পাশাপাশি কণ্ঠস্বর একদমই পাল্টে যায় এবং গলায় কিছু একটা বিঁধে আছে, এমন বোধ হয়। তখন পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার ব্যাপারে ডা. আকছারুল আলম বলেন, ব্যাকটেরিয়ার কারণে ব্যথা হলে থ্রোট সোয়াব কালচার এবং সিবিসি টেস্ট করা হয়।

গলাব্যথার খুব প্রচলিত কারণ হচ্ছে টনসিলাইটিস। বিশেষজ্ঞের মতে, বছরে যদি ৪ থেকে ৫ বারের বেশি টনসিল ইনফেকশন হয় তাহলে অপারেশন করাতে হবে।

Ref: https://www.prothomalo.com/life/health/%E0%A6%97%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%A5%E0%A6%BE-%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%A8-%E0%A6%B9%E0%A7%9F

Navigation

[0] Message Index

Go to full version