Health Tips > Protect your Health/ your Doctor

এই করোনাকাল

(1/1)

Sahadat Hossain:
করোনা কি করুণা করল? নাকি এটা নিতান্ত ভ্রান্তিবিলাস। অবশ্য অন্যান্য দেশের তুলনায় করোনা যে আমাদের এতটা গ্রাহ্য করেনি তা বলা বাহুল্য। ভারত, আমেরিকা, ইউরোপ করোনার দাপটে অস্থির। এত প্রতাপশালী সব দেশ অথচ এই অণুক্ষুদ্র জীবকে কাবু করতে পারছে না। প্রথমে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছেন অনেকে, এখন তো ভয়ে–আতঙ্কে জড়সড়।

কিন্তু অনেকের মধ্যে শঙ্কা, দ্বিধা আর আশার সংমিশ্রণ। টিকা আবিষ্কার হয়ে গেছে আর এমন সংক্রমণ নেই। যথেচ্ছা ঘুরলেও কাবু হচ্ছি না; তাই মাস্ক পরা, সাবান–জলে বারবার হাত ধোয়া আর দূরত্ব বিধির বালাই থাকার দরকার নেই—এমন অনেক ধারণা যেন জন্ম নিচ্ছে। কিন্তু টিকা আবিষ্কারকেরা বলছেন, টিকা নিলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে!

কিন্তু সত্যি যে পরিমাণ সংক্রমণ ধরা পড়ছে, এর চেয়ে কি তা বেশি?করোনাযুদ্ধ জয় শেষ, এমন ধারণা অনেকের। তবে আমরা যে সংক্রমণের হার জানছি, তার চেয়ে সত্যিকার সংক্রমণ কি বেশি?

অনেকের কোনো উপসর্গ নেই, তাঁরা দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন আর ছড়িয়ে বেড়াচ্ছেন। এটা অবশ্য মনের অজান্তে। এদিকে জানা গেল, বিলেতে নতুন এক করোনা প্রজাতি হানা দিয়েছে। যাদের ছোঁয়াচে হওয়ার ক্ষমতা বেড়েছে বহু গুণ। আবার দক্ষিণ আফ্রিকায় যে নতুন প্রজাতি, এদেরও নাকি আরও বেশি সংক্রমণ ক্ষমতা। টিকা এদের কাবু করতে পারবে কি না, এ নিয়ে বেজায় ধন্দে আছেন বিজ্ঞানীরা। করোনা একদিন হার মানবে, তবে এর আগে তারা নান রূপ দেখিয়ে বাঁদর নাচ নাচাচ্ছে সবাইকে। ভাবখানা এমন, যেন আমার এরূপ দেখে মুগ্ধ হয়েছ, এবার অন্য রূপ দেখো।

যাঁরা গৃহবন্দী, তাঁরা আর কতকাল গৃহবাস করবেন?বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তিরা, আর যাঁদের অন্যান্য রোগ আছে দীর্ঘস্থায়ী, তাঁরা। অবশ্য অন্যরা বেশ ঘুরেফিরে বেড়াচ্ছেন, অফিস–কাছারি করছেন। কাজ না করলে খাব কী? কথাটা ঠিকই। বেশি মুশকিলে স্কুল–কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। অনলাইন ক্লাসে মন ভরে না। অনেকে গরহাজির। অনেকের অনলাইনে আসার সেই যন্ত্রটাও নেই। তবে স্কুল–কলেজ খুলে দিতে একটু ভাবার দরকার বৈকি। বাচ্চাদের বিপদের মুখে ফেলা কোনো কাজের কথা নয়। তবে উচ্চশিক্ষা, বিশেষ করে মেডিকেল, কৃষি আর প্রকৌশল ছাত্রদের অনলাইন চলে না, হাতে–কলমে কাজ শিখতে হয়। তাই সংক্রমণের হার দেখে এসব ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

টিকা এসে যাচ্ছে, শোনা গেল এতে সুবাতাস বইবে—এমন ভাবছেন অনেকে। তবে দেশের অন্তত ৭০ শতাংশ মানুষকে দিতে দিতে বছর তিনেক লাগবে এমন বলা হচ্ছে। মানে তখন আর অন্যদের টিকা লাগবে না, এমনিতে প্রতিরোধ গড়ে উঠবে শরীরে।

যাহোক মানবের চৈতন্য হলে হয়। আমাদের কি আর শিক্ষা হয়?বিপদে পড়লে হায় হায়, কেটে গেলে যেই সেই। আর কত কথা বলব? আমাদের সবাই একত্রে মোকাবিলা করতে হবে। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘যুক্ত কর হে সবার সঙ্গে।’

শেষকথা বলা হলো না। যাই হোক, টিকা যবে দেবেন, দেবেন। কিন্তু মাস্ক পরা, দূরত্ব বিধি মেনে চলা, হাত ধোয়া আর থুতু, কাশির শিষ্টাচার দয়া করে মেনে চলুন। টিকা এসেছে ভালো কিন্তু কদিন থাকবে দেহে প্রতিরোধ কে জানে! আর অ্যান্টিবডি হলেও দেহের ভাবগতি সব সময় এক রকম চলবে তা–ও নয়। নতুন আগন্তুক, তা–ও রূপবদলের জাদুকর। তাই সবাই সতর্কথাকুন। বিপদ না এলে জীবনের মজা কী করে বুঝবেন! কেবলই মিষ্টি মধু কি ভালো লাগে? তাই একটু তেতো, ঝাল দরকার বটে। না ঘাবড়ে গিয়ে এগিয়ে যাই আমরা। যুদ্ধে জয় হবে মানুষের, কালে কালে তা–ই হয়েছে।
Ref; https://www.prothomalo.com/feature/adhuna/%E0%A6%8F%E0%A6%87-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B2

Navigation

[0] Message Index

Go to full version