Educational > You need to know

মোটরসাইকেলে ভ্রমণে সতর্ক হোন

(1/1)

Sultan Mahmud Sujon:
১৮ বছর বয়স চম্পার (কাল্পনিক নাম)। নতুন বিয়ে হয়েছে। সুখের সাগরে ভাসছে দুজন। বর অফিস থেকে ফিরলেই খাওয়াদাওয়া ও একটু বিশ্রাম নিয়ে দুজনে বেরিয়ে পড়েন মোটরসাইকেলে ঘুরতে। কখনো আত্মীয়ের বাসায়, কখনো বা অজানার উদ্দেশে। এমনিই একদিন তাঁরা বের হলেন। চম্পা ওড়নাটা সেদিন গলায় প্যাঁচ দিয়ে পরেছিলেন। ওড়নার এক মাথা মোটরসাইকেলের চাকার কাছাকাছি ছিল তা চম্পা খেয়াল করেননি। একটু পরেই ওড়নার ওই মাথা চাকার মধ্যে পেঁচিয়ে গিয়ে চম্পাকে এক হ্যাঁচকা টানে মাটিতে ফেলে দিল। ওর বর কিছু বোঝার আগেই চম্পাকে রাস্তায় হেঁচড়ে টেনে নিয়ে গেল কিছু দূর। আশপাশের লোকজনের চিত্কার, ইমন মোটরসাইকেল থামিয়ে চম্পাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন। চম্পা তখন অজ্ঞান। জ্ঞান ফিরল দুই সপ্তাহ পর। যখন তিনি কথা বলতে চেষ্টা করলেন, তখন দেখা গেল তাঁর মুখের ডান পাশটা বেঁকে যাচ্ছে। পরীক্ষা করে জানা গেল, তাঁর একটা স্নায়ু (ফেসিয়াল নার্ভ) যেটা কানের সামনে দিয়ে মুখমণ্ডলে প্রবেশ করে—সেটা ওড়নার টানে চাপ খাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একে বলে ‘ফেসিয়াল পালসি’। আরও কিছু দিন পর দেখা গেল, চম্পা মাঝেমধ্যে একদৃষ্টিতে স্থির হয়ে তাকিয়ে থাকেন এক থেকে দেড় মিনিট, সঙ্গে হাত দুটি কচলায়। ডাকলেও উত্তর দেন না। প্রতিবার একই রকম করেন। মস্তিষ্কের ইইজি করে জানা গেল, চম্পার খিঁচুনি হচ্ছে, যাকে বলে কমপ্লেক্স পারসিয়াল সিজার। কিন্তু কেন তাঁর খিঁচুনি হচ্ছে? কারণ হলো:
* মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে মস্তিষ্কে আঘাত লেগেছে।
* ওড়না গলায় পেঁচানো থাকা অবস্থায় চাকায় টান পড়ায় গলায় ফাঁস লেগেছিল। এ কারণে কিছু সময়ের জন্য অক্সিজেন না পাওয়ায় মস্তিষ্কের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং সেখান থেকে খিঁচুনি হচ্ছে।
বিশেষ পরামর্শ
* রিকশা, মোটরসাইকেল বা সিএনজিতে চড়ার সময় ওড়নার দুই মাথার দিকে খেয়াল রাখুন।
* ওড়না গলায় প্যাঁচ দিয়ে এসব যানবাহনে ওঠা নিরাপদ নয়।

সেলিনা ডেইজী
সহযোগী অধ্যাপক, শিশু, শিশু নিউরোজি ও ক্লিনিক্যাল নিউরোফিজিওলজি বিশেষজ্ঞ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ডিসেম্বর ৩০, ২০০৯

Navigation

[0] Message Index

Go to full version