বিশুদ্ধ ও পরিমিত পানি পান একধরনের চিকিত্সা

Author Topic: বিশুদ্ধ ও পরিমিত পানি পান একধরনের চিকিত্সা  (Read 753 times)

Offline Sahadat Hossain

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 368
  • Test
    • View Profile
জাপানের দেশের চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন, শুধু বিশুদ্ধ ও পরিমিত পানি পানে অনেক রোগের উপকার পাওয়া যায়। ফলে নিয়ম মেনে পানি পান করার রেওয়াজ জাপানিদের মধ্যে চালু আছে। পরিমিত পানি পান করে যেসব সমস্যায় উপকার পাওয়া যায়, সেগুলো হলো মাথাব্যথা, শরীরে বিরামহীন ব্যথা বা যন্ত্রণা, হার্টের রোগ, বাতের ব্যথা, দ্রুত হৃৎস্পন্দন, অতিরিক্ত ওজন, অ্যাজমা, টিবি, কফ রোগ, মেনিনজাইটিস (মস্তিষ্ক ঝিল্লির প্রদাহ) কিডনি এবং মূত্রবিষয়ক রোগ, বমি, গ্যাস্ট্রিক, ডায়রিয়া, ডায়াবেটিস, সব ধরনের চোখের রোগ, ক্যানসার, মস্তিষ্কের সমস্যাজনিত সব ধরনের রোগ, কান, নাক ও গলার সব ধরনের সমস্যা।

শরীরের পানি থাকার আদর্শ পরিমাপ
আমাদের শরীরে ৭২ ভাগ পানি

আমাদের রক্তের ৮৩ ভাগ পানি

হাড়ে ২২ ভাগ পানি

মস্তিষ্কে ৭৪ ভাগ পানি

পেশিতে ৭৫ ভাগ পানি

চোখে ৮০ ভাগই পানি

অর্থাৎ আমাদের শরীরের দুই-তৃতীয়াংশই হচ্ছে পানি। শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলোর সঠিক কর্ম সম্পাদনের জন্যও প্রয়োজন পানি।

সারা শরীরের রক্ত সরবরাহ ও সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় পানি পানে

পানি শরীরের অভ্যন্তরে যে কাজটি করে
পানি রক্ত ও কোষে অক্সিজেন এবং অনান্য পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে।

সারা শরীরের রক্ত সরবরাহ ও সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় পানি পানে।

পানি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। পানির অভাবে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে।

পানি হজম শক্তি বাড়ায়, হজম প্রক্রিয়া ঠিক রাখে।

আমাদের শরীরে ঠিকভাবে খাবার হজম হওয়ার জন্য পরিমিত পানির দরকার। তাই আঁশজাতীয় খাবারের পাশাপাশি, পরিমিত পানিও পান করতে হবে।

মাথাব্যথার অনেক কারণের মধ্যে একটি হলো পানিশূন্যতা। এ ক্ষেত্রে দুই গ্লাস পানি খেয়ে ২০ মিনিট বিশ্রাম নিন দেখবেন মাথাব্যথা বন্ধ হয়ে গেছে।
পরিমিত পানি পানে যে উপকার হয়
পানি কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়। ঠিকমতো পান না করলে শরীর সব পানি শুষে নেয়, এতে কোলন শুষ্ক হয়ে যায়, ফলে শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ ঠিকমতো নির্গত হয় না। তাই পানির পরিমাণ ঠিক থাকলে কোলনে কোনো বর্জ্য জমতে পারে না।

পানি কিডনির পাথর হওয়া থেকে বাঁচায়। কারণ, এটি ইউরিনের লবণ ও খনিজ ভেঙে দেয়, ফলে কিডনিতে পাথর হয় না।

ব্রেনের ৮৫ শতাংশ হচ্ছে পানি। একটু পরপর পানি পান করলে তাই মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকা যায় এবং শারীরিক শক্তি বাড়ে।

পানি রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, তাই উচ্চ রক্তচাপ কমে।

ত্বকে টক্সিন জমতে দেয় না, স্বাভাবিক রঙের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দেয়।

শরীরে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না, বলিরেখা দূর করে।

চুলের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দেয়।

অক্সিজেনের পরই পানি আমাদের জীবনধারণের জন্য দ্বিতীয় উপাদান। অন্যদিকে ২৫ ভাগ অক্সিজেন পানি থেকে আসে। মাথাব্যথার অনেক কারণের মধ্যে একটি হলো পানিশূন্যতা। এ ক্ষেত্রে দুই গ্লাস পানি খেয়ে ২০ মিনিট বিশ্রাম নিন দেখবেন মাথাব্যথা বন্ধ হয়ে গেছে।

পানি পানের আদর্শ পদ্ধতি

রাতে শোয়ার আগে ভালোমতো দাঁত ব্রাশ করতে হবে।

ভোরে উঠে দাঁত ব্রাশ করার আগে ৬০০ মিলি (তিন গ্লাস) কুসুম গরম পানি পান করতে হবে এবং এক ঘণ্টা পেট খালি রাখতে হবে। এই তিন গ্লাসের মধ্যে মাঝের গ্লাসে এক টেবিল চামচ লেবুর রস দিয়ে পানি পান করুন।

সারা দিনে আরও ৮ গ্লাস পানি পান করুন।

সকালে তিন গ্লাস পানি ছাড়া বাকি সারা দিনের পানি এক গ্লাস একসঙ্গে না খেয়ে আস্তে আস্তে করে পান করুন।

খাবারের সঙ্গে সঙ্গে পানি পান না করে প্রতিবার খাবার শেষ করে ৩০ মিনিট পর এক গ্লাস পানি পান করতে হবে।

শরীর খারাপ লাগলে কিংবা জ্বর জ্বর ভাব হলে কোনো ধরনের খাবার না খেয়ে প্রতি ঘণ্টায় এক গ্লাস হালকা কুসুম গরম পানি পান করুন। ৫ থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যেই বুঝতে পারবেন পানি কী উপকার করেছে।

দেহের একটি মাপ আছে পানি পান করার
আমরা প্রতিদিন বিভিন্নভাবে (যেমন প্রস্রাব, ঘাম, শ্বাসপ্রশ্বাস ইত্যাদি) শরীর থেকে পানি হারাই। আমাদের ফুসফুস থেকে নিশ্বাসের সঙ্গে দৈনিক দুই থেকে চার কাপ পানি বের হয়ে যায়। অন্যদিকে দৈনিক ছয়বার বাথরুমে গেলে আরও ছয় কাপ পানি দেহ থেকে কমে যায়। প্রতিদিন কতটুকু পানি পান করতে হবে, তা দেহের উচ্চতা ও কাজের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে।

সবার জন্য একই মাপে পানি পান করা যাবে না, যে মাপটি এখন পর্যন্ত আদর্শ মনে করা হয়, তা হলো কেজি হিসেবে দেহের ওজনকে ৩০ দ্বারা ভাগ করলে ভাগফলের পরিমাণ অনুযায়ী পানি পান করতে হবে। অর্থাৎ আপনার ওজন ৭০ কেজি হলে (৭০/৩০ = ২.৩) ২ দশমিক ৩ লিটার পানি পান করতে হবে। এর অর্থ হলো, প্রতিদিন ৮ গ্লাসের (প্রতি গ্লাস ২০০ মিলি) অধিক পানি পান করা বাঞ্ছনীয়।

বেশি পানি পানে হার্টের ওপর অপ্রয়োজনীয় চাপ পড়ে
অতিরিক্ত পানি পানের বিপদ
বেশি পানি খেলে বমি বমি ভাব, ক্লান্তি, ঘুম ঘুম ভাব, অতিরিক্ত প্রস্রাব এবং মাথাব্যথা হতে পারে। হার্টের ওপর অপ্রয়োজনীয় চাপ পড়ে। হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। কিডনির ছাঁকনি প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটায় অতিরিক্ত পানি। শরীরের কোষ ফুলতে থাকে। মাথার কোষও ফুলে যেতে পারে। পরিণাম ব্রেন স্ট্রোক। বুকে ব্যথা, লিভারের সমস্যা, পেটে যন্ত্রণা হতে পারে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি শরীরে গেলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
কখনোই একসঙ্গে অনেক পানি পান করবেন না। ভারী পরিশ্রম অথবা ব্যায়ামের সময় সবারই একটু একটু পানি পান করা উচিত। যতটুকু তৃষ্ণা ততটুকু পানি, কখনো তার চেয়ে বেশি নয়! বেশি হলেই পানির অপর নাম কেবল জীবন নয়, তা হবে মরণও।

লেখক: খাদ্য পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ।
Ref: https://www.prothomalo.com/life/health/%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7-%E0%A6%93-%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%A4-%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BF-%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A8-%E0%A6%8F%E0%A6%95%E0%A6%A7%E0%A6%B0%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%9A%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B8%E0%A6%BE
Md.Sahadat Hossain
Administrative Officer
Office of the Director of Administration
Daffodil Tower(DT)- 4
102/1, Shukrabad, Mirpur Road, Dhanmondi.
Email: da-office@daffodilvarsity.edu.bd
Cell & WhatsApp: 01847027549 IP: 65379