প্রধান নির্বাহীদের আশা, এ বছরই উত্তরণ

Author Topic: প্রধান নির্বাহীদের আশা, এ বছরই উত্তরণ  (Read 1319 times)

Offline Md. Abul Bashar

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 174
  • Test
    • View Profile
প্রধান নির্বাহীদের আশা, এ বছরই উত্তরণ


মেঘের আড়ালে সূর্য হাসে—করোনার মধ্যে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে যেন এই প্রবাদের মতো আশাবাদী বিশ্বের বড় বড় কোম্পানির প্রধান নির্বাহীরা। তাঁরা বিশ্বাস করেন, এ বছরই করোনার কালো মেঘের প্রভাব কাটবে অর্থনীতির ওপর থেকে। তাঁরা আস্থা রাখেন উত্তরণে।

বিশ্বের ৭৬ শতাংশ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বাস করেন, আগামী ১২ মাসের মধ্যে বৈশ্বিক অর্থনীতির উত্তরণ হবে। সম্প্রতি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান প্রাইসওয়াটারহাউসকুপারসের (পিডব্লিউসি) এক জরিপে এমনটাই উঠে এসেছে। ১০০টি দেশ ও অঞ্চলের ৫ হাজার ৫০ জন প্রধান নির্বাহীর ওপর চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি নাগাদ পরিচালিত হয় এই জরিপ। মূলত ২০১২ সাল থেকে প্রধান নির্বাহীদের এই আস্থা জরিপ পরিচালনা করছে পিডব্লিউসি। তবে চলতি বছরেই সর্বোচ্চসংখ্যক সিইও ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করছেন। সংস্থাটির গত বছরের জরিপে মাত্র ২২ শতাংশ প্রধান নির্বাহী বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার বিষয়ে আস্থা রেখেছিলেন। ২০১৯ সালে যা ছিল ৪২ শতাংশ।

কেন আশাবাদী প্রধান নির্বাহীরা
এ বছরে টিকা গবেষণায় উন্নয়ন এবং বিশ্বের অনেক দেশে এই টিকা সরবরাহ গতিশীল হওয়ার সুবাদে নতুন শক্তি নিয়ে প্রবৃদ্ধি ফিরে আসবে বলে আশা করছেন নির্বাহীরা। বিশ্ব এখনো বিপদমুক্ত নয়, তবে সিইওরা বিশ্বব্যাপী অর্থনীতি এবং তাঁদের জন্য একটি পথ এগিয়ে আসছে, এমনটাই মনে করছেন। ৩৬ শতাংশ নির্বাহী এ বছর এবং আগামী বছর তাঁদের আয় বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী, ৪২ শতাংশ আশা করছেন, তিন বছর পর্যন্ত এই আয় বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে।

বিজ্ঞাপন

করোনার বিষয়ে এখন পর্যন্ত অর্থনীতি যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, তা থেকে পিডব্লিউসির গবেষকেরা মনে করছেন, এ বছর বিশ্বব্যাপী ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। যদিও তা আইএমএফের পূর্বাভাসের চেয়ে কিছুটা কম। আইএমএফের পূর্বাভাস হলো, প্রবৃদ্ধি হবে সাড়ে ৫ শতাংশ।

বিভিন্ন খাতে কোভিডের যে প্রভাব
বিভিন্ন খাতের প্রধান নির্বাহীদের মন্তব্য থেকেই বোঝা যায়, কোভিড সব খাতের ওপর এ রকম প্রভাব ফেলেনি। সংক্রমণ ঠেকাতে নেওয়া লকডাউন, চলাচলের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ, ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা বিশ্বের বিভিন্ন শিল্প ও খাতের ওপর আলাদা প্রভাব ফেলেছে। এই অসমতা জরিপে অংশ নেওয়া মুখ্য নির্বাহীদের আত্মবিশ্বাসে প্রতিফলিত হয়েছে। দেখা গেছে, আতিথেয়তা, অবসর, পরিবহন সংস্থা ও লজিস্টিক খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নির্বাহীদের তুলনায় প্রযুক্তি খাতের নির্বাহী অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে আস্থা বেশি। প্রযুক্তি খাতের ৪৫ শতাংশ এবং টেলিযোগাযোগ খাতের ৪৩ শতাংশ প্রধান নির্বাহী আস্থা দেখিয়েছেন। অন্যদিকে পরিবহন খাতের ২৯ শতাংশ এবং আতিথেয়তা ও অবসর খাতের ২২ শতাংশ প্রধান নির্বাহী আগামী ১২ মাসের মধ্যে রাজস্ব বৃদ্ধি করার সামর্থ্যে তেমন আত্মবিশ্বাসী নন।

প্রধান নির্বাহীদের দীর্ঘস্থায়ী যে উদ্বেগ
আত্মবিশ্বাস সত্ত্বেও প্রধান নির্বাহীরা খুবই সচেতন বাহ্যিক হুমকির বিষয়ে। জরিপ অনুযায়ী, মহামারি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যসংকট হলো এই বছরের তালিকার এক নম্বর হুমকি। ৫২ শতাংশ প্রধান নির্বাহী জানান, তাঁরা খুবই উদ্বিগ্ন এ বিষয়ে। এরপরে সাইবার হামলার ঝুঁকিকে হুমকি হিসেবে দেখছেন প্রধান নির্বাহীরা। জরিপে অংশ নেওয়া ৪৭ শতাংশ প্রধান নির্বাহী এটিকে বড় উদ্বেগ হিসেবে দেখছেন। সম্পদ ব্যবস্থাপনা, বিমা, ব্যক্তিগত ইক্যুইটি, ব্যাংকিং, মূলধন বাজার এবং প্রযুক্তি খাতসংশ্লিষ্ট নির্বাহীদের কাছে এটি প্রধান হুমকি।

গত বছর সবচেয়ে বড় হুমকি ছিল অধিক নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি। এবার তৃতীয় বড় হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে এটিকে। এ ছাড়া প্রায় ২৮ শতাংশ প্রধান নির্বাহী বর্তমান বিশ্বে বিভ্রান্তিকর তথ্যকে হুমকি হিসেবে দেখেন। গত বছরের চেয়ে এই হার ৭৮ শতাংশ বেড়েছে। ২০২০ সালে মাত্র ১৬ শতাংশ প্রধান নির্বাহী একে হুমকি হিসেবে দেখতেন।





Source: Prothom Alo