পবিত্র মাহে রমযানের রোযার ফযিলত

Author Topic: পবিত্র মাহে রমযানের রোযার ফযিলত  (Read 675 times)

Offline ashraful.diss

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 162
  • 'শীঘ্রই রব তোমাকে এত দিবেন যে তুমি খুশি হয়ে যাবে'
    • View Profile
    • Daffodil Institute of Social Sciences - DISS
পবিত্র মাহে রমযানের রোযার ফযিলত

মহাগ্রন্থ আল কুরআনুল কারীমে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন-

يٰآاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا كُتِبَ عَلَيْکُمُ الصِّيَامُ کَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِکُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَۙ.

হে মু'মিনগণ! তোমাদের জন্য রোযার বিধান দেওয়া হল, যেমন বিধান দেওয়া হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীগণকে, যাতে তোমরা মুত্তাকী হতে পার- (সূরা বাকারা ১৮৩ আয়াত৷)

আল্লাহ তায়ালা অন্য আয়াতে ইরশাদ করেন-

فَمَنْ شَهِدَ مِنْكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ ؕ

সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এই মাস পাবে তারা যেন অবশ্যয়ই এই মাসে রোযা পালন করে। (সূরা বাকারা ১৮৫ আয়াত৷)

হাদীস শরীফে বর্নিত হয়েছে-

عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ بُنِيَ الإِسْلاَمُ عَلَى خَمْسٍ شَهَادَةِ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، وَإِقَامِ الصَّلاَةِ، وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ، وَالْحَجِّ، وَصَوْمِ رَمَضَانَ ‏

হযরত ইবনে উমার রাযিঃ থেকে বর্ণিত৷ তিনি বলেন, হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ ইসলাম ধর্ম পাঁচটি ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত৷ ১৷ এই সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ তায়ালা ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই এবং নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও তাঁর প্রেরিত রসূল। ২৷ সালাত কায়িম করা। ৩৷ যাকাত আদায় করা। ৪৷ হাজ্জ সম্পাদন করা৷ ৫৷ রমযানের রোযা পালন করা। সনদ সহীহ৷ (সহীহুল বুখারী ৮, ৪৫১৪ হাদীস৷ সহীহু মুসলিম ১৬ হাদীস৷ সুনানে তিরমিযী ২৬০৯, ৫০০১ হাদীস৷ সুনানে আবূ দাউদ ৪৭৮৩, ৫৬৩৯, ৫৯৭৯, ৬২৬৫ হাদীস৷ মুসনাদে আহমাদ ৬০২২, ৬৩০৯ হাদীস৷ রিয়াদুস সলিহীন ১২১৪ হাদীস৷)

হাদীস শরীফে আরও বর্নিত হয়েছে-

وَعَنْ سَلْمَانَ الْفَارِسِىِّ ، قَالَ : خَطَبَنَا رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ فِى اٰخِرِ يَوْمٍ مِنْ شَعْبَانَ فَقَالَ : يَا أَيُّهَا النَّاسُ! قَدْ أَظَلَّكُمْ شَهْرٌ عَظِيمٌ، شَهْرٌ مُبَارَكٌ، شَهْرٌ فِيهِ لَيْلَةٌ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ، جَعَلَ اللهُ تَعَالٰى صِيَامَه فَرِيضَةً، وَقِيَامَ لَيْلِه تَطَوُّعًا، مَنْ تَقَرَّبَ فِيهِ بِخَصْلَةٍ مِنَ الْخَيْرِ كَانَ كَمَنْ أَدّٰى فَرِيضَةً فِيمَا سِوَاهُ، وَمَنْ أَدّٰى فَرِيضَةً فِيهِ كَانَ كَمَنْ أَدّٰى سَبْعِينَ فَرِيضَةً فِيمَا سِوَاهُ. وَهُوَ شَهْرُ الصَّبْرِ، وَالصَّبْر ثَوَابُهُ الْجَنَّةُ، وَشَهْرُ الْمُوَاسَاةِ، وَشَهْرٌ يُزْدَادُ فِيهِ رِزْقُ الْمُؤْمِنِ، مَنْ فَطَّرَ فِيهِ صَائِمًا كَانَ لَه مَغْفِرَةً لِذُنُوْبِه، وَعِتْقَ رَقَبَتِه مِنَ النَّارِ، وَكَانَ لَه مِثْلُ أَجْرِه مِنْ غَيْرِ أَنْ يَنْقُصَ مِنْ أَجْرِه شَىْءٌ» قُلْنَا : يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ! لَيْسَ كُلُّنَا نَ جِدُ مَا نُفَطِّرُ بِهِ الصَّائِمَ. فَقَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «يُعْطِى اللّٰهُ هٰذَا الثَّوَابَ مَنْ فَطَّرَ صَائِمًا عَلٰى مَذْقَةِ لَبَنٍ، أَوْ تَمْرَةٍ أَوْ شَرْبَةٍ مِنْ مَاءٍ، وَمَنْ أَشْبَعَ صَائِمًا؛ سَقَاهُ اللّٰهُ مِنْ حَوْضِىْ شَرْبَةً لَا يَظْمَأُ حَتّٰى يَدْخُلَ الْجَنَّةَ. وَهُوَ شَهْرٌ أَوَّلُه رَحْمَةٌ، وَأَوْسَطُه مَغْفِرَةٌ، وَاٰخِرُه عِتْقٌ مِنَ النَّارِ. وَمَنْ خَفَّفَ عَنْ
مَمْلُوكِه فِيهِ؛ غَفَرَ الله لَه وَأعْتَقَه مِنَ النَّارِ

হযরত সালমান ফারসী রাযিঃ থেকে বর্ণিত:

তিনি বলেন, শা‘বান মাসের শেষ দিনে হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে উদ্দেশ্য করে ভাষণ দিলেন। হে লোক সকল! তোমাদের সামনে একটি বরকতময় ও মহিমান্বিত মাস ছায়া স্বরুপ আগমন করতেছে। যে মাসের মধ্যে শবে কদর নামে একটি রাত রয়েছে, যা হাজার মাস হতেও উত্তম। আল্লাহ তায়ালা এ মাসের রোযা তোমাদের উপর ফরয করেছেন আর কিয়ামুল লাইল তথা তারাবীহ আদায়কে পুন্যের কাজ হিসেবে নির্ধারণ করেছেন৷ যে ব্যক্তি এ মাসে একটি নফল কাজ করবে, সে যেন অন্য মাসের একটি ফরয আদায় করল। আর যে ব্যক্তি এ মাসে একটি ফরয আদায় করেন, সে যেন অন্য মাসের সত্তরটি ফরয আদায় করল। এ মাস সবরের মাস, আর সবরের প্রতিদান হলো জান্নাত। এ মাস সহমর্মিতার। এ মাসে মু’মিনদের রিযিক বৃদ্ধি করা হয়। যে ব্যক্তি এ মাসে কোন রোযাদারকে ইফতার করাবে, এ ইফতার তার গুনাহ মাফের কারণ হবে এবং জাহান্নামের অগ্নি থেকে মুক্তির উপায় হবে এবং রোযাদারের সমতূল্য সাওয়াব পাবে৷ অথচ রোযাদারের সাওয়াব বিন্দুমাত্রও কমানো হবেনা। আমরা বললামঃ হে আল্লাহর রসূল! আমাদের সকলের তো এ সামর্থ নেই যে, রোযাদারকে পেটভরে ইফতার করাবে! তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ সাওয়াব আল্লাহ তায়ালা ঐ ইফতার পরিবেশনকারীকেও প্রদান করবেন, যে একজন রোযাদারকে এক চুমুক দুধ, এক ঢোক পানি অথবা একটি খেজুর দিয়ে ইফতার করায়। আর যে ব্যক্তি কোন রোযাদারকে পেট ভরে খাওয়ায়ে পরিতৃপ্ত করবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে আমার হাওযে কাওসার থেকে এভাবে পানিপান করায়ে পরিতৃপ্ত করবেন, যার পর সে জান্নাতে প্রবেশ করার পূর্বে আর পিপাসার্ত হবেনা। এমনকি সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। এটা এমন এক মাস যার প্রথম অংশে রহমত ও মধ্য অংশে মাগফিরাত এবং শেষাংশে জাহান্নাম থেকে নাজাত। যে ব্যক্তি এ মাসে তার অধিনস্তদের কাজের বোঝা হালকা করে দেবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে ক্ষমা করে দিবেন এবং তাকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দেবেন। সনদ যঈফ৷ তবে হাদীসের প্রতিটি বিষয় বিভিন্ন সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত৷ (সহীহ ইবনে খুযায়মাহ ১৮৮৭ হাদীস৷ সুনানে কুবরা বায়হাকী ৩৩৩৬ হাদীস৷ মিশকাতুল মাসাবীহ ১৯৬৫ হাদীস৷ সহীহ আত তারগীব ৫৮৯ হাদীস৷ আহকামুস সিয়াম ১৪ পৃষ্ঠা৷)

হাদীস শরীফে আরও বর্নিত হয়েছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏ "‏ كُلُّ عَمَلِ ابْنِ آدَمَ يُضَاعَفُ لَهُ الْحَسَنَةُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا إِلَى سَبْعِمِائَةِ ضِعْفٍ ‏.‏ قَالَ اللَّهُ سُبْحَانَهُ إِلاَّ الصَّوْمَ فَإِنَّهُ لِي وَأَنَا أَجْزِي بِهِ ‏"‏ ‏.‏

হযরত আবূ হুরায়রাহ রাযিঃ থেকে বর্ণিত৷ তিনি বলেন, হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আদম-সন্তানের প্রতিটি কাজের সওয়াব দশ থেকে সাতশত গুন পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ তবে রোযা ব্যতীত। কেননা রোযা শুধু আমার জন্যই এবং আমিই তার প্রতিদান প্রদান করবো৷ সনদ সহীহ৷ (সুনানে ইবনে মাজাহ ৩৮২৩,১৬৩৮ হাদীস৷ সহীহুল বুখারী ১৮৯৪, ১৯০৪, ৫৯২৭,৭৪৯২, ৭৫৩৮, হাদীস৷ সহীহু মুসলিম ১১৫১ হাদীস৷ সুনানে তিরমিযী ৭৬৪ হাদীস৷ সুনানে নাসায়ী ২২১৫, ২২১৬, ২২১৭, ২২১৮, ২২১৯ হাদীস৷ মুসনাদে আহমাদ ৭৪৪২, ৭৬৩৬, ২৭৩৪৫, ২৭২৪৮ হাদীস৷)

হাদীস শরীফে আরও বর্নিত হয়েছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِذَا كَانَتْ أَوَّلُ لَيْلَةٍ مِنْ رَمَضَانَ صُفِّدَتْ الشَّيَاطِينُ وَمَرَدَةُ الْجِنِّ وَغُلِّقَتْ أَبْوَابُ النَّارِ فَلَمْ يُفْتَحْ مِنْهَا بَابٌ وَفُتِحَتْ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ فَلَمْ يُغْلَقْ مِنْهَا بَابٌ وَنَادَى مُنَادٍ يَا بَاغِيَ الْخَيْرِ أَقْبِلْ وَيَا بَاغِيَ الشَّرِّ أَقْصِرْ وَلِلهِ عُتَقَاءُ مِنْ النَّارِ وَذَلِكَ فِي كُلِّ لَيْلَةٍ

হযরত আবূ হুরায়রা রাযিঃ থেকে বর্ণিত৷ হযরত রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যখন রমজান মাসের প্রথম রাত আসে, তখন শয়তান ও অভিশপ্ত জিনদের শৃংখলিত করা হয় এবং জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়, তার একটি দরজাও খোলা হয়না৷ অনুরুপভাবে জান্নাতের দরজাসমূহ খোলে দেয়া হয়, এর একটি দরজাও বন্ধ হয়না এবং একজন ঘোষক ডেকে বলেনঃ হে সৎকর্মপরায়ণ ব্যক্তি! অগ্রসর হও!! হে অসৎকর্মপরায়ণ ব্যক্তি! থেমে যাও!! আর আল্লাহ তায়ালা রমযানের প্রতিটি রাতে অসংখ্য লোককে জাহান্নাম থেকে নাজাত দান করেন। সনদ সহীহ৷ (সুনানে ইবনে মাজাহ ১৬৪২ হাদীস৷ সহীহুল বুখারী ১৮৯৮, ১৮৯৯, ৩২৭৭ হাদীস৷ সহীহু মুসলিম ১০৭৯ হাদীস৷ সুনানে তিরমিযী ৬৮২ হাদীস৷ সুনানে নাসায়ী ২০৯৭ হাদীস৷ সুনানে দারেমী ১৭৭৫ হাদীস৷ মুসনাদে আহমাদ ৭১০৮, ৭৭২৩ হাদীস৷)

হাদীস শরীফে আরও বর্নিত হয়েছে-

وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهٗ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِه. وَمَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَه مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِه. وَمَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهٗ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِه.

হযরত আবূ হুরায়রাহ রাযিঃ থেকে বর্ণিত৷ তিনি বলেন, হযরত রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সাওয়াব লাভের আশায় রমাযান রমজানের রোযা পালন করবে, তার পুর্বের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। আর যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সাওয়াব লাভের আশায় রমযানে ‘ইবাদাতে রাত কাটাবে, তারও পুর্বের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। আর যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সাওয়াব লাভের আশায় লায়লাতুল কদরে ‘ইবাদাতে কাটাবে তারও পুর্বের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। সনদ সহীহ৷ (মিশকাতুল মাসাবীহ ১৯৫৮ হাদীস৷ সহীহুল বুখারী ৩৮, ১৮০২, ১৯১০, ২০১৪ হাদীস৷ সহীহু মুসলিম ৭৬০ হাদীস৷ সুনানে আবূ দাউদ ১৩৭২ হাদীস৷ সুনানে নাসায়ী ২২০৫ হাদীস৷ সুনানে ইবনে মাজাহ ১৬৪১ হাদীস৷ মুসনাদে আহমাদ ৭১৭০ হাদীস৷ সুনানুল কুবরা বায়হাক্বী ৮৫০৬ হাদীস৷)

হাদীস শরীফে আরও বর্নিত হয়েছে-

وَعَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : فِى الْجَنَّةِ ثَمَانِيَةُ أَبْوَابٍ مِنْهَا : بَابٌ يُسَمَّى الرَّيَّانَ لَا يَدْخُلُه إِلَّا الصَّائِمُوْنَ.

হযরত সাহল ইবনে সা‘দ রাযিঃ থেকে বর্ণিত৷ তিনি বলেন, হযরত রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জান্নাতের আটটি দরজা রয়েছে। এর মধ্যে ‘রইয়্যান’ নামে একটি দরজা রয়েছে। সিয়াম পালনকারীগণ ব্যতীত এ দরজা দিয়ে অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। সনদ সহীহ৷ (মিশকাতুল মাসাবীহ ১৯৫৭ হাদীস৷ সহীহুল বুখারী ৩২৫৭ হাদীস৷ সুনানুল কুবরা বায়হাক্বী ৮৫২২ হাদীস৷)

হাদীস শরীফে আরও বর্নিত হয়েছে-

عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَقَى الْمِنْبَرَ، فَلَمَّا رَقَى الدَّرَجَةَ الْأُولَى قَالَ: «آمِينَ» ، ثُمَّ رَقَى الثَّانِيَةَ فَقَالَ: «آمِينَ» ، ثُمَّ رَقَى الثَّالِثَةَ فَقَالَ: «آمِينَ» ، فَقَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، سَمِعْنَاكَ تَقُولُ: «آمِينَ» ثَلَاثَ مَرَّاتٍ؟ قَالَ: " لَمَّا رَقِيتُ الدَّرَجَةَ الْأُولَى جَاءَنِي جِبْرِيلُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: شَقِيَ عَبْدٌ أَدْرَكَ رَمَضَانَ، فَانْسَلَخَ مِنْهُ وَلَمْ يُغْفَرْ لَهُ، فَقُلْتُ: آمِينَ. ثُمَّ قَالَ: شَقِيَ عَبْدٌ أَدْرَكَ وَالِدَيْهِ أَوْ أَحَدَهُمَا فَلَمْ يُدْخِلَاهُ الْجَنَّةَ، فَقُلْتُ: آمِينَ. ثُمَّ قَالَ: شَقِيَ عَبْدٌ ذُكِرْتَ عِنْدَهُ وَلَمْ يُصَلِّ عَلَيْكَ، فَقُلْتُ: آمِينَ "

হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রাযিঃ থেকে বর্ণিতঃ একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাসজিদে নববীতে তাশরিফ আনলেন এবং মিম্বারে আরোহন করলেন। তিনি মিম্বরের প্রথম সিড়িতে পা মোবারক রেখে বললেনঃ আমীন! দ্বিতীয় সিড়িতে পা মোবারক রেখে বললেনঃ আমীন! এবং তৃতীয় সিড়িতে পা মোবারক রেখে বললেনঃ আমীন! অতঃপর তিনি মিম্বর থেকে নিচে অবতরন করলে হযরত সাহাবায়ে কিরাম রাযিঃ এর কারন জানতে চাইলে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর রহস্য ব্যক্ত করে বললেনঃ এইমাত্র আমার নিকট হযরত জিবরীল (আঃ) উপস্থিত হয়ে তিনটি বদদোয়া করে বললেনঃ হে মুহাম্মাদ! ঐ ব্যক্তি ধ্বংস হয়ে যাক, যে ব্যক্তি রমযানের মত মোবারক মাস পেল অথচ পাপমুক্ত হতে পারল না৷ তখন আমি (প্রথম সিড়িতে) বললাম-আমীন। তিনি আবার বললেনঃ ঐ ব্যক্তি ধ্বংস হয়ে যাক, যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতাকে অথবা তাদের একজনকে জীবিতাবস্থায় পেল অথচ তাদের খেদমত করে জান্নাত অর্জন করতে পারলনা"৷

তখন আমি (দ্বিতীয় সিড়িতে) বললাম-আমীন৷ অতঃপর তিনি বললেনঃ ঐ ব্যক্তিও ধ্বংস হয়ে যাক, যার নিকট আপনার মোবারক নাম উল্লেখ করা হয় অথচ সে আপনার উপর দরূদ পাঠ করে না৷ তখন আমি (তৃতীয় সিড়িতে) বললাম-আমীন৷ সনদ সহীহ৷ (আল আদাবুল মুফরাদ ৬৪৮ হাদীস৷ সহীহ ইবনে হিব্বান ৯০৮ হাদীস৷ সহীহ আত তারগীব ৯৯৬ হাদীস৷)

হাদীস শরীফে আরও বর্নিত হয়েছে-

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ الصِّيَامُ وَالْقُرْآنُ يَشْفَعَانِ لِلْعَبْدِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَقُولُ الصِّيَامُ أَيْ رَبِّ مَنَعْتُهُ الطَّعَامَ وَالشَّهَوَاتِ بِالنَّهَارِ فَشَفِّعْنِي فِيهِ وَيَقُولُ الْقُرْآنُ مَنَعْتُهُ النَّوْمَ بِاللَّيْلِ فَشَفِّعْنِي فِيهِ قَالَ فَيُشَفَّعَانِ

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযিঃ থেকে বর্ণিত৷ হযরত রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন রোযা এবং কুরআন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোযা বলবেঃ হে আমার প্রতিপালক! আমি ওকে পানাহার ও যৌনকর্ম থেকে বিরত রেখেছিলাম। সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ কর। আর কুরআন বলবেঃ আমি ওকে রাত্রের নিদ্রা থেকে বিরত রেখেছিলাম। সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ কর। অতপর উভয়ের সুপারিশ গ্রহণ করা হবে। সনদ সহীহ৷ (মিশকাতুল মাসাবীহ ১৯৬৩ হাদীস৷ মুসনাদে আহমাদ ৬৬২৬ হাদীস৷ মুসতাদারাক লিল হাকিম ২০৩৬ হাদীস৷ শু‘আবূল ঈমান ১৮৩৯ হাদীস৷ সহীহ আল জামি‘ ৩৮৮২ হাদীস৷ সহীহ আত তারগীব ৯৭৩ হাদীস৷)

#রোযাদারের_৫টি_বৈশিষ্টঃ

রমযান উপলক্ষে উম্মতে মুহাম্মাদীকে এমন ৫টি বৈশিষ্ট দান করা হয় যা পুর্ববর্তী কোন উম্মতকে দেয়া হয় নাই৷ ১৷ রোযাদারের জন্য শয়তানকে শৃংখলিত করা হয়৷ ২৷ রোযাদারের জন্য প্রতিদিন ইফতার পর্যন্ত সমগ্র সৃষ্টি এমনকি মৎসকুল পর্যন্ত মাগফিরাত কামনা করে৷ ৩৷ রোযাদারের জন্য প্রতিদি জান্নাত সুসজ্জিত করা হয়৷ ৪৷ রোযাদারের মুখের গন্ধ রবের কাছে মেশক আম্বরের যেয়েও অধিক প্রিয়৷ ৫৷ রোযাদারের জন্য রমযানের শেষ রজনীতে ক্ষমা ঘোষনা করা হয়৷ (মুসনাদে আহমাদ ৭৯১৭ হাদীস৷ ফাযায়েলে রমযান ১৯ পৃষ্ঠা৷ আহকামুস সিয়াম ১৩-১৪ পৃষ্ঠা৷ মুকাশাফাতুল কুলুব ২/৩১৮ পৃষ্ঠা৷)

#রমযানুল_মোবারকের_এতো_ফযিলত_কেন?

এর কারন হলো রমযান মাসে কুরআনুল কারীম নযিল হয়েছে৷ যেমন কুরআনুল কারীমে ইরশাদ হচ্ছে-

شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِىْٓ اُنْزِلَ فِيْهِ الْقُرْاٰنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَ بَيِّنٰتٍ مِّنَ الْهُدٰى وَالْفُرْقَانِۚ

অর্থাৎ- রমযান এমন একটি মাস, যাতে কুরআনুল কারীম নাযিল হয়েছে মানবজাতীর হেদায়েতের জন্য৷ (সূরা বাকারাহ ১৮৫) তাছাড়া পুর্ববর্তী সকল আসমানী কিতাবও রমযান মাসেই নাযিল হয়েছে৷ সুতরাং কুরআনুল কারীমের সংস্পর্শের কারনেই রমযান মাস এতো সম্মানিত৷ তদ্রুপ কোন বান্দাও যখন কুরআনুল কারীমের সংস্পর্শে আসে তখন আল্লাহ তায়ালাও তাকে সকল মাখলুকাতের উপর সম্মানিত করেন৷ (তাফসীরে মাযহারী ১/৩৬৭ পৃষ্ঠা৷)
« Last Edit: January 30, 2022, 11:49:38 AM by ashraful.diss »
Hafez Maulana Mufti. Mohammad Ashraful Islam
Ethics Education Teacher, DISS
Khatib, Central Mosque, Daffodil Smart City
Ashuli , Savar, Dhaka