মুমিনদের জন্যে এটা একটা লোভনীয় হাদিস!

Author Topic: মুমিনদের জন্যে এটা একটা লোভনীয় হাদিস!  (Read 1336 times)

Offline ashraful.diss

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 162
  • 'শীঘ্রই রব তোমাকে এত দিবেন যে তুমি খুশি হয়ে যাবে'
    • View Profile
    • Daffodil Institute of Social Sciences - DISS
মুমিনদের জন্যে এটা একটা লোভনীয় হাদিস!

আল্লাহকে খুশি করার জন্যে নিজের চরিত্রকে শুধরানো অনেক জরুরি। এটা চিন্তা করেই কত ভালো লাগে যে, আমি যদি কোনোভাবে আমার চরিত্রটাকে সুন্দর করতে পারি, কিয়ামতের দিন আমার পাল্লা সবচেয়ে ভারী হবে! (আল্লাহ কবুল করুক! আমিন।) কিয়ামতের দিন দাঁড়িপাল্লায় সবচেয়ে ভারী হবে সুন্দর চরিত্র!" (তিরমিজী)।

চরিত্রকে কিভাবে সুন্দর করা যায় - এটার হয়তো বাঁধা-ধরা কোনো সিলেবাস নেই. রাসূল (সা:) কে নিয়ে পড়াশোনা করতে গিয়ে তাঁর চরিত্রের এমন কিছু দিক আমার সামনে এলো - যেটা নিয়ে সচরাচর আলোচনা শুনিনা।

যেমন, রসূল (সা:)
কখনো উচ্চ স্বরে কথা বলতেন না,
খুব অল্প শব্দে গভীর জ্ঞানপূর্ণ কথা বলতেন।
তিনি সবসময় হাসি খুশি থাকতেন।
কখনো বদমেজাজী হয়ে থাকতেন না!
ছোট বাচ্চাদের কোলে নিয়ে নামাজ পড়তেন।
তাঁর চরিত্রই হচ্ছে কুরআন।

আল্লাহর জন্যে নিজের ভিতরটাকে সুন্দর করার কিছু চর্চা এমন হতে পারে

১.সবসময় সবাইকে নিয়ে ভালো চিন্তা করা. উপযুক্ত প্রমান ছাড়া কাউকে খারাপ ভেবে না বসা. সাহাবীদের সময় একবার এক সাহাবী যখন দেখলেন আরেকজন সাহাবীর দাড়ি থেকে মদের ফোঁটা বেয়ে বেয়ে পড়ছে, সে তাকে প্রথমেই দোষ না দিয়ে ভাবলেন, হয়তো তার সাথে কারো ঝগড়া হয়েছে, এর ফলে রাগ করে কেউ তার দিকে মদের গ্লাস ছুড়ে মেরেছে। সেখান থেকেই ফোঁটা বেয়ে বেয়ে পড়ছে।


২.নিয়তেই বরকত! প্রতিনিয়ত নিজের নিয়তকে চেক করা. আমি এই কাজটা কেন করছি? কাকে খুশি করার জন্যে করছি? কেউ যদি সত্যি কোনো কাজ আন্তরিক ভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে করে - তাহলে সেই কাজে খুব উঁচু মানের কোয়ালিটি থাকবে! একটা সিম্পল নিয়ত করলে যে কোনো কাজ বরকতপূর্ণ হয়ে যায়। যেমন কেউ যদি ঘুমানোর আগে এই নিয়ত করে ঘুমায় যে, "হে আল্লাহ! আমি এই ঘুমের মাধ্যমে যে কর্মশক্তি আর তেজ পাবো, সেটা দিয়ে যেন ঘুম থেকে উঠে যেন আরো ভালোভাবে তোমার ইবাদাত করতে পারি।" তাহলে পুরা ঘুমটাই তার জন্যে ইবাদাত হবে এবং সে যতটা সময় ঘুমাযে তার জন্যে নেকী পেতে থাকবে! সুবহানাল্লাহ ঘুমানোর জন্যেও পুরস্কার!

৩.অপ্রয়োজনীয় কথা-আলাপে মশগুল না হওয়া। কেউ কথা বলার সময় তাকে কথার মাঝে cut-off না করা (বিঘ্ন না ঘটানো)! শেইখ বলেন, "কেউ কথা বলতে থাকলে কখনো তাকে মাঝখানে কাট করে দিয়ে নিজের কথা বলা শুরু করে দিও না. কারণ, যে কথা বলছে সে যদি জ্ঞানী হয়, তাকে শুনতে থাকো, তোমার জ্ঞান বাড়বে! আর যে কথা বলছে, সে যদি মূর্খ হয় তাকে শুনতে থাকো - তোমার ধৈর্য্য বাড়বে! নিশ্চয়ই তোমার ধৈর্য্য অর্জন করা জ্ঞান অর্জন করার থেকে বেশি জরুরি!

৪. নিজের সমালোচনা শুনলে ক্ষুব্ধ না হওয়া! আসলেই চিন্তা করে দেখা - আমার মাঝে কি আসলেই এই ভুল আছে? ইমাম শাফি'ই (রা:) একবার ভরা সমাবেশে ক্লাস করাচ্ছিলেন। তখন এক লোক হুড়মুড় করে তার ক্লাসে ঢুকে গেলেন। তার দিকে আঙ্গুল তুলে বললেন, "তুমি কি ইমাম শাফি'ই?". ইমাম বললেন, "জ্বী, আমি শাফি'." তখন লোকটি সবার সামনে চেঁচিয়ে ইমামকে বললেন, "তুমি একটা ফাসিক, কাফির এবং জঘন্য প্রকৃতির লোক!"

ইমাম চুপ করে শুনলেন। শুধু সমালোচনা না, তাকে সবার সামনে খুব খারাপ ভাবে অপমান করা হয়েছে! তিনি অফেন্ডেড তো হলেনই না, বরং এর উত্তরে তৎক্ষনাৎ দুই হাত তুলে সবার সামনে দুআ করলেন, "হে আল্লাহ! এই ব্যক্তি যদি সত্য বলে থাকেন, তাহলে তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও, আমার উপর দয়া করো এবং আমার তাওবা কবুল করে নাও! আর যদি এই ব্যক্তি যা বললেন, সেটা যদি সত্য না হয়, তাহলে তার এ আচরণের জন্যে তুমি তাকে ক্ষমা করে দাও, তার উপর দয়া করো এবং তার তাওবা কবুল করে নাও!"

৫.প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাবার আগে সবাইকে মাফ করে দিয়ে অন্তর পরিষ্কার করে ঘুমানো

৬.কোনো ব্যাপারে অন্তরে অহংকার ঢুকে যাচ্ছে কি না চেক করা. যার অন্তরে সরিষার দানা পরিমান অহংকার থাকবে, সে জান্নাতের ঘ্রাণ-ও পাবে না (সহীহ হাদিস)

৭.যদি কারো উপর হিংসা হতে থাকে, সেই ব্যক্তির নাম ধরে তার সাফল্যের জন্যে বেশি বেশি দুয়া করা. এটাকে অনেক স্কলার হিংসার সর্বোত্তম চিকিৎসা বলেছেন। একটা উদাহরণ দেই, ধরেন ক্লাসে আব্দুল্লাহ অনেক ভালো রেজাল্ট করলো, এতে উমরের হিংসা হচ্ছে। উমর কন্ট্রোল করতে পারছে না। তার মনে এটা নিয়ে কষ্ট লেগেই আছে যে, তার বন্ধু তার থেকে এতো ভালো অবস্থানে আছে, অথচ সেও তো অনেক পরিশ্রম করে যাচ্ছে, তার কেন উন্নতি হচ্ছে না? উমর সেই দিন থেকে বেশি বেশি আব্দুল্লাহর জন্যে দুয়া করতে থাকলো, আল্লাহ যেন আব্দুল্লাহকে আরো বেশি সাফল্য দেন, রহমত এবং বরকত দেন!

আলহামদুলিল্লাহ দুয়া করতে করতে কয় মাসের মধ্যেই উমরের অন্তর থেকে হিংসা দূর হয়ে গেলো। আল্লাহ সুবহানাতায়ালা উমর এবং আব্দুল্লাহ দুইজনকেই সামাজিক এবং অর্থনৈতিকভাবে অনেক ভালো অবস্থানে যাবার তাওফিক দিলেন।

৮. নিজের ভুল/গুনাহ -র একটা লিস্ট বানানো। নিজের ভুল নিয়ে বেশি ব্যতিব্যস্ত থাকা, যেন অন্যের ভুল নিয়ে গল্প/গীবত করার কোনো সুযোগ না থাকে।

৯. এমন কোনো কথা কারো পিছনে কখনো না বলা, যেটা সে যদি সামনে থাকতো, তাহলে তার সামনে কখনোই বলা যেত না. এটাই গীবতের ক্লাসিক সংজ্ঞা! গীবত মৃত ভাইয়ের মাংস খাবার মতন জঘন্য গুনাহ (কুরআন: সুরাহ হুজুরাত)

১o. রাস্তার মধ্যখানে কখনো ময়লা না ফেলা! আমার এক ভাইকে দেখতাম সে দেশে গেলে একটা ব্যাগ নিয়ে ঘুরতো। বলতো, দেশে তো সব জায়গায় ময়লা ফেলার ঝুড়ি খুঁজে পাওয়া যায় না. সারাদিনের ময়লা সে তার ঐ ব্যাগে রাখতো। ঘরে এসে ময়লার বিনে ফেলে দিতো।

১১. বড় - ছোট সবাইকে নিয়ে ভালো চিন্তা করা. যারা আমাদের থেকে বয়সে বড়, তারা আমাদের থেকে বেশি বছর ধরে বেঁচে আছেন, কাজেই তারা আমার থেকে বেশি নেক কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। আবার যারা আমাদের থেকে বয়সে ছোট, তারা আমাদের থেকে কম গুনাহ করার সুযোগ পেয়েছে। কাজেই বড় হোক, ছোট হোক - সবাই আমার থেকে ভালো। কারো সাথে তুলনা করে যেন আমার নিজের মধ্যে অহংকার না আসে। আল্লাহ সুবহানুতায়ালা আমাদের ভিতর-বাহির সব সুন্দর রাখুক।আমাদেরকে উত্তম চরিত্রের হবার তাওফিক দিন। আমিন!
« Last Edit: September 09, 2021, 01:25:58 PM by ashraful.diss »
Hafez Maulana Mufti. Mohammad Ashraful Islam
Ethics Education Teacher, DISS
Khatib, Central Mosque, Daffodil Smart City
Ashuli , Savar, Dhaka

Offline Anta

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 593
  • Never lose hope
    • View Profile
Anta Afsana
Lecturer
Department of English
Daffodil International University
email id: anta.eng@diu.edu.bd
Contact number: 07134195331

Offline Raisa

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 908
  • Sky is the limit
    • View Profile
:)

Offline mosharraf.xm

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 96
    • View Profile
Jazakallah Khairan for the beautiful post.
Md. Mosharraf Hussain
Senior Assistant Controller of Examinations
Office of the Controller of Examinations
Daffodil International University
Email: mosharraf.exam@daffodilvarsity.edu.bd
Cell: 01847140069