আমার শিশু কেন খায় না?

Author Topic: আমার শিশু কেন খায় না?  (Read 2151 times)

Offline najnin

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 134
  • Test
    • View Profile
আমার শিশু কেন খায় না?
« on: January 20, 2013, 10:56:41 PM »
বাচ্চাদের খাবারের সময় যে বিষয়গুলোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে,

১। মনোযোগ সরিয়ে নেয়া – ছোট বাচ্চাদের কাছে ‘মনোযোগ’ সব থেকে বড় পুরস্কার হয়! যার অর্থ হচ্ছে আপনারা কেবল বাচ্চার ইতিবাচক ব্যবহারেরই প্রশংসা করবেন, যেমন – যখন বাচ্চা খাবার সময় বিরক্ত করবে না আর ভালোভাবে খাবার খাবে, তখন তার প্রশংসা করা উচিৎ। বাচ্চার সংখ্যা একাধিক হলে ভালোভাবে খাবার খাওয়ার ওপরেই সম্পূর্ণ মনোযোগ দিন। অন্য বাচ্চাদের সাথে তুলনা করবেন না, কেবল উপেক্ষা করে যান!

২। খাবার খাওয়ার সময়কে আনন্দে ভরিয়ে তোলার চেষ্টা করুন। রঙিন আর আকর্ষণীয় কাপ প্লেট আর পাত্র ব্যবহার করুন এবং ছোট বাচ্চাদের খেতে দেয়ার সময় তাদের প্রিয় খেলনা কাছে রাখুন।

৩। বাচ্চাদের তাড়াহুড়ো করে খাবার খাওয়ার জন্য বলবেন না! বাচ্চারা প্রায়ই খাবার খাওয়ার সময় খেলা করতে থাকে। তারা যদি খাবারের গ্রাসকে ২ মিনিটের বেশি মুখের মধ্যে পুরে রাখে, তাহলে আপনি তাদের এমনটা না করার জন্য বলতে পারেন।

৪। বাচ্চাদের কখনো জোর করে খাবার খাওয়াবেন না! তারা খাবার খেতে না চাইলে মাঝে মাঝে তাদের গল্প শুনিয়ে বা খেলনা দিয়ে খাবার খাওয়াতে পারেন। তবে এমনটা বেশি করলে সেটা বাচ্চাদের অভ্যাসে পরিবর্তিত হয়ে পড়তেও পারে! তাদের আধা ঘণ্টা পরে আবার একবার খাওয়ানোর চেষ্টা করুন। বাচ্চারা কথা না শুনলে তাদের দুধ, জুস বা স্যুপ দিন … পরের রাউন্ডে খাবার দিন।

৫। বাচ্চা বাইরে থেকে খেলে, ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফেরার পরেই তাদের খাবার দিবেন না… কিছুক্ষণ বিশ্রাম করার পরে খাবার খেতে দিন!

৬। পিপাসার্ত বাচ্চা কখনো খাবার খেতে চাইবে না। প্রথমে তাকে পানি খেতে দিন আর তারপর আধ ঘণ্টা পরে কিছু খেতে দিন… এতে ক্ষিধে আর পাচন শক্তি বাড়বে! খাবার খাওয়ার আগে বা খাওয়ার সময় বাচ্চাকে বেশি জল পান করতে দেবেন না… এতে ক্ষিধে আর পাচন শক্তি কমে আসে!

৭। প্লেটে ততটাই খাবার নিন… যতটা বাচ্চা একবারে খেতে পারবে! এর ফলে বাচ্চারঅ পূর্ণতার অনুভব হবে! সে আরও খাবার চাইলে প্রথমে খাবার শেষ করার জন্য তার প্রশংসা করুন আর তারপর খাবার দিন! প্রয়োজনের বেশি খাবার প্লেটে ভরা আর তারপর বাচ্চাকে পুরো খাবার খাওয়ার জন্য বাধ্য করা মোটেই ভালো ব্যাপার নয়।

৮। খাবারের সময় মিশ্রিত আইটেম দিন, যাতে বাচ্চার বেছে খাবার খাওয়ার অভ্যাস না হয়ে পড়ে! তাকে প্রতিদিন বিভিন্ন প্রকারের তরকারী, বিভিন্ন রূপে রান্না করে খাওয়ান।

৯। খাবার খাওয়ার আগে বিস্কুট, টফি, চকোলেট, দুধ বা মেওয়া ইত্যাদি দেবেন না। এগুল খাবার শেষ করার পরে পুরস্কার হিসেবে দিন!

১০। খাবার খাওয়ার সময় টিভি দেখার পুরস্কার দেবেন না। টিভি দেখলে খাবারের থেকে মনোযোগ সরে যাবে আর পেটে গ্যাসের সৃষ্টি হবে!

১১। খাবার শেষ হবার পরেই কোন পুরস্কার দিন…কেবলমাত্র প্রতিশ্রুতি দেবেন না!

১২। এমন অভ্যাস তৈরি করুন যাতে পুরো পরিবার দিনের মধ্যে অন্ততঃ পক্ষে একবার এক সাথে বসে খাবার খায়! বাচ্চার প্লেটে সব খাবার রেখে, তাকে নিজে সেটা খেতে বলুন। এর দ্বারা আহার-বিহারের সুস্থ অভ্যাসের বিকশিত হবে!

১৩। শিশুদের শাসন করতে গিয়ে কখনো অপমান করবেন না, মনে রাখবেন শিশুদের আত্মমর্যাদাবোধ প্রবল। অপমান শিশুদের মনে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে এবং শিশুটি ধীরে ধীরে বিদ্রোহী হয়ে পড়ে।

 

পরামর্শক্রমেঃ ডাঃ সুনীল বৈদ।