কাঁচা পেঁপে নাকি পাকা পেঁপে?

Author Topic: কাঁচা পেঁপে নাকি পাকা পেঁপে?  (Read 1538 times)

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2667
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management


পেঁপে আমাদের অতিপরিচিত একটি ফল। এর একটি বিশেষ দিক হলো এটি একাধারে ফল ও সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। শুধু স্বাদের দিক থেকেই নয়, অসাধারণ পুষ্টিগুণের কারণেও পেঁপে পৃথিবীজুড়ে বেশ জনপ্রিয়। পেঁপেতে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফাইবার বা আঁশ, পটাশিয়াম, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৯ এবং প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তা ছাড়া অল্প পরিমাণে রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে এবং কয়েক ধরনের ভিটামিন বি। এখন কথা হলো পেঁপে কীভাবে খেলে বেশি ভালো হবে? কাঁচা নাকি পাকা?

কাঁচা পেঁপে
কাঁচা পেঁপে আমাদের দেশে সাধারণত সবজি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কাঁচা পেঁপেতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, আছে ভিটামিন, খনিজ এবং উদ্ভিজ্জ ফ্যাট। তা ছাড়া কাঁচা অবস্থায় এতে সাইমোপ্যাপেইন এবং প্যাপেইন এনজাইম থাকে। এই দুটি এনজাইম প্রোটিন ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেটকে ভাঙতে সাহায্য করে। কাঁচা পেঁপে কেন খাবেন?

পেট পরিষ্কার রাখতে
কাঁচা পেঁপের আঁশ আমাদের হজম এবং পরিপাক প্রক্রিয়াকে সহজ করে। এতে করে মলাশয়, অন্ত্র এবং পরিপাক নালি থেকে বর্জ্যপদার্থ সহজে বের হয়ে যেতে পারে। কাঁচা পেঁপে বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য, পাইলস, অ্যাসিডিটির মতো সমস্যাগুলোকে প্রতিহত করতে সাহায্য করে।

ত্বককে রাখে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল
কাঁচা পেঁপে যেহেতু দেহের ভেতরকার দূষিত পদার্থ নিষ্কাশনে সাহায্য করে তাই এটি আমাদের ত্বকের স্বাস্থ্যও ভালো রাখে। যাদের ব্রণের সমস্যা আছে তাদের নিয়মিত কাঁচা পেঁপে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।

কোষ পুনর্গঠন
কাঁচা পেঁপেতে প্রোটিন, ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট এবং উপকারী এনজাইম থাকায় এটি নানাভাবে কোষের পুনর্গঠনে সাহায্য করে। ডায়েটে কাঁচা পেঁপে রাখলে তা কোষের প্রদাহ রোধ করে কোষের প্রতিরক্ষায় সাহায্য করতে পারে।

কীভাবে খাবেন?
কাঁচা পেঁপে এমনিতে টুকরো করে কাঁচা চিবিয়ে, সালাদের সঙ্গে মিশিয়ে বা তরকারি হিসেবে রান্না করে খেতে পারেন।

পাকা পেঁপে
পাকা পেঁপেতে রয়েছে ভিটামিন, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টসহ নানা রকমের পুষ্টি উপাদান, যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত জরুরি। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পাকা পেঁপে আপনার শারীরিক সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

ক্যানসার প্রতিরোধে
পাকা পেঁপেতে উপস্থিত ফ্লেভানয়েড, বিটা ক্যারোটিন, লুটেইন, ক্যারাটিনয়েডসহ আরও বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যানসার কোষ প্রতিরোধে সাহায্য করে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, এসব অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফুসফুস এবং অন্যান্য ক্যানসারে আক্রান্ত হবার আশঙ্কা কমায়।

চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে

গবেষণা বলছে, নিয়মিত পাকা পেঁপে খেতে চোখের বয়সজনিত ত্রুটি এবং ক্ষতিগ্রস্ততার ঝুঁকি অনেকাংশেই কমিয়ে দেয়। কেননা পাকা পেঁপেতে আছে বিটা ক্যারোটিন এবং ভিটামিন এ, যা আমাদের চোখের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য অত্যাবশ্যকীয় দুটি উপাদান।

রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়
পাকা পেঁপেতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি। এই উপাদানগুলো আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন রোগব্যাধির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে। পাকা পেঁপে খুবই স্বাস্থ্যকর একটি ফল। পরিবারের সুস্থতায় তাই সকালের নাশতায় রাখতে পারেন কয়েক টুকরো পাকা পেঁপে।

হৃৎপিণ্ড ভালো রাখে
পাকা পেঁপেতে থাকা ভিটামিন এ, সি এবং ই–এর মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। মানবদেহের কোলেস্টেরল অক্সিডাইজড হয়ে গেলে সেটা ব্লকেজ তৈরি করে; ফলে হৃৎপিণ্ডের নানা অসুখ দেখা দেয়। পেঁপের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট কোলেস্টেরলের অক্সিডাইজড হওয়ার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে, ফলে হৃৎপিণ্ড নানা ধরনের জটিলতার হাত থেকে রক্ষা পায়।

কীভাবে খাবেন?
পাকা পেঁপে টুকরো করে খাওয়া যায়। তা ছাড়া ফ্রুট সালাদ বানিয়ে বা জুস করেও খেতে পারেন। তবে যেভাবেই খান না কেন অতিরিক্ত মিষ্টি না যোগ করাই ভালো। কেননা পাকা পেঁপে এমনিতেই কিছুটা মিষ্টি হয়ে থাকে।

পেঁপে হোক কাঁচা কিংবা পাকা দুই-ই আমাদের শরীরের জন্য দারুণ উপকারী। পরিবেশনের বেশিক্ষণ আগে পেঁপে কেটে রাখা উচিত নয়, এতে পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। গর্ভাবস্থায় পেঁপে খাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত বলে ডাক্তাররা মনে করেন। এ ছাড়া আপনার যদি বিশেষ কোনো শারীরিক জটিলতা থাকে ডায়েটে পেঁপে অন্তর্ভুক্ত করার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করে নিন।


Source: https://www.prothomalo.com/life/nutrition/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%81%E0%A6%9A%E0%A6%BE-%E0%A6%AA%E0%A7%87%E0%A6%81%E0%A6%AA%E0%A7%87-%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BF-%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BE-%E0%A6%AA%E0%A7%87%E0%A6%81%E0%A6%AA%E0%A7%87