Faculties and Departments > Departments

ইলন মাস্ক আর সিইও হতে চান না কেন

(1/1)

Md. Sazzadur Ahamed:
টেসলা বানায় গাড়ি, স্পেসএক্স বানায় রকেট। মস্তিষ্ক থেকে সরাসরি কম্পিউটার পরিচালনার জন্য কাজ করছে নিউরালিংক। আর একই সঙ্গে এসব ভিন্নধর্মী প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক। এর বাইরে আরও অনেক প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়েছেন তিনি, পরিচালনায়ও অংশ নিচ্ছেন। তবু তিনি বলেছেন, ‘আমি কোনো কিছুর সিইও হতে চাই না।’

ইলন মাস্কের এই বক্তব্যের ব্যাখ্যায় যাওয়ার আগে পেছনের ঘটনা জেনে রাখা ভালো। তাঁকে নিয়ে নতুন একটি বই প্রকাশিত হওয়ার কথা আছে আগামী পরশু। সেখানে একটি গল্প এমন—২০১৬ সালে টেসলার দুঃসময় চলছিল। ইলন মাস্ক তখন অ্যাপলের সিইও টিম কুকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। অ্যাপল হয়তো টেসলা কিনবে, এমন আশা করেছিলেন মাস্ক। তবে চুক্তির অংশ হিসেবে শর্ত জুড়ে দিয়েছিলেন, মাস্ক হবেন অ্যাপলের নতুন সিইও।

আসন্ন বইয়ে লেখা ঘটনাটি সত্য কি না, তা জানতে টুইটারে মাস্কের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বিবিসির উত্তর আমেরিকার প্রযুক্তি প্রতিবেদক জেমস ক্লেটন। উত্তরে টিম কুকের সঙ্গে তাঁর কখনো কথা হয়নি বলে জানিয়েছেন মাস্ক। চিঠি বা ই-মেইলেও যোগাযোগ হয়নি।


বিজ্ঞাপন
আমাকে করতে হচ্ছে, নয়তো সত্যি বলতে, টেসলা নিঃশেষ হয়ে যাবে।
ইলন মাস্ক
তবে যোগ করেছেন, ‘একসময় ছিল, যখন অ্যাপলের টেসলা কেনার ব্যাপারে আলোচনা করতে কুকের সঙ্গে যোগাযোগের অনুরোধ করেছিলাম আমি। তবে অধিগ্রহণের ব্যাপারে কোনো শর্তের প্রস্তাব ছিল না সেখানে। তিনি (কুক) দেখা করতে চাননি। টেসলার বাজারমূল্য তখন বর্তমানের ছয় শতাংশ ছিল।’

আরেক টুইটার ব্যবহারকারী সে বিষয়ে মন্তব্য করেছেন, অ্যাপলের অনেক ভালো সিইও হতে পারতেন ইলন। আর সে টুইটের উত্তরেই মাস্ক বলেছেন, ‘আমি কোনো কিছুর সিইও হতে চাই না।’


গত মাসে আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় একই ধরনের মন্তব্য করেছিলেন তিনি। টেসলায় তাঁর সিইওর ভূমিকা নিয়ে বলেছিলেন, ‘আমি বরং এটা ঘৃণা করি। এর চেয়ে নকশা এবং প্রকৌশলে আমার সময় ব্যয় করতে চাই।’

তবু কেন টেসলা-প্রধানের ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে তাঁকে? সে উত্তরও দিয়েছেন। বলেছেন, ‘আমাকে করতে হচ্ছে, নয়তো সত্যি বলতে, টেসলা নিঃশেষ হয়ে যাবে।’

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে একবার টিম কুক এবং ইলন মাস্ককে একই ফ্রেমে দেখা গিয়েছিল। তবে তাঁরা কথা বলেছিলেন কি না, তা জানা যায়নি।

ইলন মাস্ক বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী ঠিকই, তবু ইচ্ছেমতো কিছু করার স্বাধীনতা নেই বলে মনে হয় তাঁর
ইলন মাস্ককে ভালো লাগুক বা না লাগুক, বিনিয়োগকারীরা তাঁকে ছাড়তে চাইবেন বলে মনে হয় না। তাঁর নেতৃত্বেই টেসলা এখন বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান গাড়ি তৈরির প্রতিষ্ঠান।

মাস্ক আসলে কোনো প্রতিষ্ঠানের শুরুর দিকটা নিয়ে বেশি আগ্রহী। আইডিয়া, উদ্ভাবন, প্রকৌশল—এসব। তবে স্টার্টআপ থেকে যখন বড় প্রতিষ্ঠানে রূপ নেয়, তখন সিইওর ভূমিকা অনেকখানি বদলে যায়।

বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যাপলের স্টিভ জবস, গুগলের ল্যারি পেজ ও সের্গেই ব্রিন কিংবা মাইক্রোসফটের বিল গেটস দূরদর্শী ছিলেন। প্রতিষ্ঠানগুলোর বর্তমান সিইওরা তাঁদের চেয়ে অনেক আলাদা। নেতা হিসেবে অ্যাপলের টিম কুক, গুগলের সুন্দর পিচাই এবং মাইক্রোসফটের সত্য নাদেলা চমৎকার, অত্যন্ত যোগ্যও। তবে তাঁদের কেউ বিপ্লবী বলবে না, বৈপ্লবিক কোনো পরিবর্তন আনেননি তাঁরা।

অন্যদিকে ইলন মাস্ক অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় উদ্যোক্তা। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে প্রতিষ্ঠান দাঁড় করাতে চান। তবে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার প্রশাসনিক কাজগুলোয় তাঁর আগ্রহ কম। ব্লুমবার্গের তালিকায় ইলন মাস্ক বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী ঠিকই, তবু ইচ্ছেমতো কিছু করার স্বাধীনতা নেই বলে মনে হয় তাঁর।

Navigation

[0] Message Index

Go to full version