ভালো শেয়ার নির্বাচনের ১০ উপায়

Author Topic: ভালো শেয়ার নির্বাচনের ১০ উপায়  (Read 1805 times)

Offline Badshah Mamun

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 1997
    • View Profile
    • Daffodil International University
ভালো শেয়ার নির্বাচনের ১০ উপায়

প্রত্যেক বিনিয়োগকারীর একটি সাধারণ লক্ষ্য থাকে পূঁজি নিরাপদ রেখে নিশ্চিত মুনাফা করা। সেজন্য বিনিয়োগের জন্য ভালো শেয়ার বাছাই করতে হয়। ভালো শেয়ার বাছাই করার আগে বিনিয়োগকারীদের জানতে হবে কোম্পানির অতীত ও বর্তমান ইতিহাস, এর সঙ্গে কারা জড়িত, তাদের ব্যবসায়িক সততা, দক্ষতা, কোম্পানির বাজার পরিধি।

আমরা আমাদের আজকের ভালো মৌল ভিত্তির শেয়ার নির্বাচনের ক্ষেত্রে নিম্নের ১০টি লক্ষণ বিবেচনা করবো।

১। ভাল প্রবৃদ্ধিঃ আমাদেরকে প্রথমেই ভালো প্রবৃদ্ধির কোম্পানিগুলো শনাক্ত করতে হবে। তারপর কোম্পানির গত ৫ বৎসরের আয় ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে কিনা দেখবো। আমাদেরকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দেখতে হবে, তা হলো কোম্পানীর পরিচালনা পর্ষদ। কারণ দক্ষ পর্ষদ একটি কোম্পানিকে অনেক দূর নিয়ে যেতে পারে। কোম্পানী যে সব পণ্যের উৎপাদন বা ব্যবসা করে তার ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা কি এবং কেমন হতে পারে তা অনুমান করতে হবে। এছাড়াও কোম্পানির PE রেশিও, RSI, Growth in operating profit, NPAT, এবং EPS দেখলেই আমরা নিজেরাই ভাল কোম্পানিগুলো শনাক্ত করতে পারবো।

২। কম দায়ঃ আমাদেরকে কোম্পানি নির্বাচনের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খেয়াল রাখতে হবে কোম্পানির দায়। এই দায় কোম্পানির লাভ খেয়ে ফেলে। ফলে প্রতিষ্ঠান ভাল ব্যবসা করলেও ঋণ দায়ের কারণে ভালো ডিভিডেন্ড বা লভ্যাংশ দিতে পারে না। অবশ্যই কোন কোম্পানির দায় .৫০ শতাংশের বেশি হওয়া যাবে না। যদি হয় তাহলে বিনিয়োগ তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে।

৩। বড় বাজারঃ প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্যের টার্গেট কতটা বড় খেয়াল রাখতে হবে। কোম্পানিটি মোট মার্কেটের কতো শতাংশ হোল্ড করে তা দেখতে হবে। ভবিষ্যতে সম্ভাব্য বাজার কতো বড় হতে পারে তার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ ব্যবসায় আগ্রগতি তার উপর নির্ভর করে।

৪। উচ্চ রিটার্নঃ আমাদেরকে সর্বদা উচ্চ রিটার্ন দেওয়া কোম্পানিগুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে। যেসব কোম্পানি গত ৫ বৎসর যাবৎ ভালো ডিভিডেন্ড দিয়ে আসছে, সেসব কোম্পানি নির্বাচন করতে হবে। নিচের পদ্ধতিগুলো দেখে বুঝতে হবে কোনটি High Return দেওয়া কোম্পানি।

ক. Return on Equity (ROE): এর ক্ষেত্রে অনুপাত ১০ বা তার বেশি হওয়া উচিত।

খ. Return on Asset (ROA): এই পদ্ধতিতে কোম্পানির বর্তমান সম্পদ ভিত্তিক রিটার্ন কী জানা যায়। মোট আয়কে মোট সম্পদ দ্বারা ভাগ করে বের করতে হয়। একটি কোম্পানি মোট সম্পত্তির তুলনায় কতটা লাভজনক তার সূচক। এ সূচক যত বেশী হবে কোম্পানির অবস্থা ততো ভালো।

৫। যোগ্য নেতৃত্ব্ঃ আমাদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে কারা কোম্পানিটি পরিচালনা করছে। কারণ যোগ্য নেতৃত্বের কারণে কোম্পানিটির সফলতা অনেকাংশে নির্ভরশীল। নেতৃত্বের সঙ্কটে থাকা কোম্পানিগুলো কখনো ভালো ফলাফল দিতে পারে না।

৬। প্রতিযোগিতাঃ বিনিয়োগের পূর্বে আমাদেরকে জানতে হবে বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বাজারে কোম্পানিটির প্রতিযোগী কারা কারা রয়েছে। পূর্ণ প্রতিযোগিতামুলক বাজারে টিকে থাকার জন্য ভাল গুনগতমান সম্পন্ন পণ্যের ও পণ্যের ডাইমেনশন নিয়ে ভাবতে হবে। নির্বাচিত পণ্যের Advantage গুলি কী কী আছে তা বের করে দেখতে হবে তার বাজার সম্ভাব্যতা।

৭। পরিচালকদের মালিকানার অনুপাতঃ কোম্পানির ডিরেক্টরদের অবশ্যই ৪৫ থেকে ৬০ শতাংশ শেয়ার ধারন করতে হবে। তাহলেই কোম্পানির গ্রোথ ভালো হওয়ার সম্ভবনা থাকে। আর পরিচালকদের মালিকানা কম হলে সে কোম্পানির গ্রোথ ভালো হওয়ার সম্ভবনা কম থাকে।

৮। সেক্টর নির্বাচনঃ ভবিষ্যতে কোন খাতে ব্যবসা বাণিজ্য ভালো হতে পারে তার উপর ভিত্তি করে কোম্পানির শেয়ার নির্বাচন করতে হবে।

৯। নগদ প্রবাহ ও দায়ঃ আমাদেরকে অবশ্যই কম দ্বায় সম্পন্ন অর্থাৎ ০.৫০ শতাংশ শতাংশের কম Loan বা দায় গ্রহনকারী কোম্পানির শেয়ার নির্বাচন করতে হবে। অন্যদিকে যে সকল কোম্পানির দায় বেশী তাদের লাভ থেকে ঋণের সুদ বেশী খরচ হয়ে যায়। যে সকল কোম্পানির নগদ প্রবাহ বেশী তারা অন্যান্য কোম্পানির থেকে অনেক বেশী স্থিতিশীল হয়।

১০। অবমুল্যায়িতঃ আমাদেরকে অবশ্যই অবমুল্যায়িত কোম্পানিগুলোর শেয়ারে বিনিয়োগ করতে হবে। নিন্মোক্তভাবে অবমুল্যায়িত কোম্পানির শেয়ার নির্বাচন করতে হবেঃ

ক. Price Earning Ratio (PE Ratio): পিই রেশিও ১৫ বা তার আশেপাশে থাকা স্টকগুলো নির্বাচন করতে হবে।

খ. Price to Book Value ( PB Ratio): শেয়ারের ক্রয় মূল্য যেন কোনভাবেই NAV এর তিন গুনের বেশী না হয়।

গ. Price earning to Growth (PEG): কোম্পানির শেয়ার নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই ১৫ এর উর্ধে কোম্পানির স্টক ক্রয়ের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। পিই রেশিও ১০ এর মধ্যে থাকলে ভালো। ওয়ারেন বাফেট বলেন “১৫ পিই রেশিও এর উর্ধে্র শেয়ারে বিনিয়োগ কখনও ভালো বিনিয়োগ হতে পারে না।” বিনিয়োগকারী হিসেবে সফলতা পেতে হলে সকল পুঁজি একটি কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ না করে একাধিক ভাল কোম্পানি নির্বাচন পূর্বক বিনিয়োগই আপনার জীবন পাল্টে দিতে পারে।

লেখক:
মোঃ শাহ্ নেওয়াজ মজুমদার
শিক্ষক ও কলামিস্ট

Source: https://www.sharenews24.com/article/37248/index.html
Md. Abdullah-Al-Mamun (Badshah)
Senior Assistant Director
Daffodil International University
01811-458850
cmoffice@daffodilvarsity.edu.bd
www.daffodilvarsity.edu.bd

www.fb.com/badshahmamun.ju
www.linkedin.com/in/badshahmamun
www.twitter.com/badshahmamun