Help & Support > Common Forum/Request/Suggestions
সত্যিই কি মৃত্যুর ৪০দিন আগে মানুষ বুঝতে পারে যে তার মৃত্যু হবে?
(1/1)
ashraful.diss:
সত্যিই কি মৃত্যুর ৪০দিন আগে মানুষ বুঝতে পারে যে তার মৃত্যু হবে?
সত্যিই কি মৃত্যুর ৪০দিন আগে মানুষ বুঝতে পারে যে তার মৃত্যু হবে? পবিত্র কুরআনুল কারীমে বর্ণিত হয়েছে, প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতেই হবে। {সুরা আলে ইমরান, আয়াত ১৮৫,}
আমরা আশরাফুল মাখলুকাত। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সৃষ্টির সেরা জিব হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। আমরাও একদিন পৃথিবী ছেড়ে চলে যাব। কেউ আগে যাবো কেউ পরে যাবো। কিন্তু সত্যিই কি মৃত্যুর ৪০ দিন আগে মানুষ বুঝতে পারে যে তার মৃত্যু হবে? এক ব্যক্তি হযরত আলী রাঃ এর নিকট উপস্থিত হয়ে আদবের সহিত বললেন, হে হযরত আলী (রাঃ) আমার এক বন্ধু ছিল যে গতকাল ইন্তেকাল করেছেন। কিন্তু কিছুদিন যাবত আমার সে বন্ধু আমাদের কাছে এসে এমন সব কথা বার্তা বলতেছিল যাতে করে তার কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছিল সে মারা যাবে। তাহলে কি মৃত্যুর আগে মানুষ কি বুঝতে পারে তার মৃত্যু সন্নিকটে। ব্যাস একথা বলার পর, হযরত আলী (রাঃ) লোকটিকে বললেন, হে আল্লাহর বান্দা, মনে রেখ আল্লাহ তায়ালা আলেমে মালাকুত, আলমে বেয়া, আলমে আরোয়াহ এর মাঝামাঝি স্থানে সমস্ত সৃষ্টি মানব জাতির জন্য মালাকুল রয়া রেখেছেন। যেটা মানুষের জন্য আগত সমস্ত বিপদ আপদ, বালা মসিবত ইত্যাদি সম্পর্কে আগে থেকেই মানুষকে সতর্ক করে জানিয়ে দেয়।
এই ইহকালিন জীবন শেষ হয়ে যাওয়াটা মানুষ মৃত্যু মনে করে। আসলে মৃত্যু এমন একটা জিনিস যেটা মানুষকে এক জীবন থেকে অন্য জীবনের দিকে নিয়ে যায়। আর একেই বলে মৃত্যু। জীবন শেষ হয়ে যাওয়াটাকে মৃত্যু বলে না। আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদেরকে অনেক অনেক ভালোবাসেন। তাই আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদেরকে মৃত্যুর ভয়কে দূর করার জন্য, এলহামি স্বপ্ন দেখায়। যাতে করে মানুষ বুঝতে পারে যে মৃত্যু অন্য একটি নতুন জীবন, এবং মৃত্যুর ভয় যেন তার মন থেকে কমে যায়। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে এই সুযোগ দেন, যাতে করে মানুষ নিজেদেরকে শুধরাতে পারে। নিজের কৃত পাপ কর্মের জন্য আল্লাহর নিকট তওবা করতে পারে এবং মৃত্যুর আগে নিজের আত্নার মুক্তির জন্য ব্যবস্থা করতে পারে। যেমনি ভাবে কোন মানুষ যখন এক দেশ থেকে অন্য দেশে সফরে যায় এবং সফরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে। এবং মাল-সামান,সাজসরাঞ্জাম সব কিছুর ব্যাবস্থা করে রাখে, ঠিক তেমনি আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সুযোগ করে দেয় যাতে করে মানুষ বারজাখের জীবনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারে।
এই কথা বলার পর লোকটি হযরত আলী রাঃ কে জিজ্ঞেস করলেন, হে হযরত আলী (রাঃ) সেই স্বপ্নে কি কি দেখা যায়? তখন হযরত আলী রাঃ বললেন, মানুষ ইন্তেকালের আগে স্বপ্ন দেখে সে সফর করতেছে, এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাচ্ছে। তার পোশাক পরিচ্ছদ সাদা হয়ে থাকে। আর দুনিয়ার জিন্দেগীতে যারা তার সঙ্গী ছিল, সেটা হতে পারে আত্নীয় স্বজন, পিতা মাতা যারা ইন্তেকাল করেছেন সেই স্বপ্ন দেখেন যে তারা তাকে নিতে এসেছেন এক দেশ থেকে অন্য দেশে। তখন স্বপ্নে মৃত সেই আত্নীয় স্বজনরা বলে থাকে তোমাদের এই দেশের সফর শেষ হয়ে গিয়েছে, তোমাকে অন্য দেশে নিয়ে যাচ্ছি। মানুষ যখন স্বপ্ন দেখে তার মৃত আত্নীয় স্বজনের মধ্যে কেউ তাকে নিতে এসেছে এবং তারা তার সাথেই আছে। তখন মানুষের মনের দিক থেকে সাহস বেড়ে যায় এবং মানুষের মৃত্যুর ভয় কমে যায়। একথা শুনার পর হযরত আলী (রাঃ) কে বললেন, হে হযরত আলী (রাঃ) যদি কোন ব্যক্তি এধরনের স্বপ্ন দেখে থাকে, তাহলে সে কিভাবে বুঝতে পারবে যে, এই স্বপ্ন এলহামি স্বপ্ন নাকি শয়তানের পক্ষ থেকে ছিল।
তখন হযরত আলী রাঃ জবাবে বললেন, যখন এই ধরনের স্বপ্ন দেখবে,যদি স্বপ্ন দেখার পরে মনের মধ্যে ভয়-ভীতি কাজ করে দুশ্চিন্তা কাজ করে,তাহলে মনে করতে হবে সেই স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে ছিল। আর যদি স্বপ্ন দ্রষ্টা স্বপ্ন দেখার পর মনের মধ্যে শান্তি অনুভব করে এবং শান্তি আসে এবং মৃত্যুর জন্য তার ভয় নয়, মহব্বত পয়দা হয়,তাহলে মনে করবে সেই স্বপ্ন রহমানি স্বপ্ন। আল্লাহ রব্বুল আলামীন তার হাবিবের উছিলায় অর্থাৎ নবী করিম (সাঃ) এর উছিলায় আমাদের সকলের মৃত্যুকে সহজ করে দিন।আর মৃত্যুর পরের জীবনকে আল্লাহর রহমতে যেন ভরপুর করে দেন। সম্মানিত ভাই ও বোনেরা আমাদের সকলের পিতা-মাতা আত্মীয়-স্বজন কেউ না কেউ এই দুনিয়া থেকে ইন্তেকাল করেছেন| আসুন আমরা তাদের জন্য প্রতিদিন নেক আমল করি এবং তাদের রুহের উপর বেশি বেশি দোয়া আমল করি। আর তাদের জন্য মাগফেরাত এবং নাজাতের জন্য দোয়া করি। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে সুস্থ রাখেন, ভাল রাখেন, আর সব সময় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবেন।
সম্ভব হলে প্রতি ওয়াক্ত নামাজের পর আল্লাহ তায়ালার নিকট শুকরানা হিসেবে একটি লম্বা সেজদা অবশ্যই দেবেন। সমস্ত শয়তানের ধোঁকা থেকে নিজেকে হেফাজত করতে হবে। এবং জীবনকে শুধরে নিতে হবে, সমস্ত পাপ কাজ থেকে নিজেকে শুধরে নিতে হবে। কারণ আল্লাহ তাআলা বলেনঃ মানুষ তাই পায় যা সে করে। তাই আল্লাহর ছায়া তলে থাকতে হলে মানুষকে অবশ্যই সৎকর্ম করে যেতে হবে। আমীন!
mosharraf.xm:
Jazakallah Khairan for the informative post.
Navigation
[0] Message Index
Go to full version