Faculties and Departments > Faculty Sections

তিন ধরনের তথ্য সমাজের জন্য ক্ষতিকর

(1/1)

Md. Sazzadur Ahamed:
তিন ধরনের তথ্য সমাজের জন্য ক্ষতিকর। এগুলো হলো মিসইনফরমেশন, ডিসইনফরমেশন ও ম্যালইনফরমেশন। নতুন আরেকটি শব্দ এসেছে মিডইনফরমেশন, অর্থাৎ কোনো তথ্য পুরোপুরি সঠিক কিংবা ভুল বলে সিদ্ধান্তে যাওয়া যাচ্ছে না, এমন তথ্য। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমরা যা দেখি, তার সবই নির্ভুল সংবাদ নয়। অথচ অর্থ উপার্জনের নেশায় অনেকে যেনতেনভাবে নানা তথ্য প্রচার করছেন ইন্টারনেটে। এতে কোন তথ্য সঠিক, আর কোনটি ভুয়া, তা শনাক্ত করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভুল তথ্য ছাড়ানো নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে দেশের তৃণমূল পর্যায় থেকে সচেতনতা তৈরি করতে হবে।

সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস (ক্যাম) অক্টোবর উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা।

‘সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়া সংবাদ: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক ওয়েবিনারের আয়োজন করে সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস–বিষয়ক জাতীয় কমিটি-২০২১। মুঠোফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেড ও প্রযুক্তি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান সাইবার প্যারাডাইসের পৃষ্ঠপোষকতায় মাসব্যাপী সচেতনতামূলক এ কর্মসূচি চলছে। ২০০৪ সাল থেকে আন্তর্জাতিকভাবে এবং ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা মাস পালন শুরু করে সিসিএ ফাউন্ডেশন।

বিজ্ঞাপন
গতকাল শনিবার রাতে আয়োজিত ওয়েবিনার অনলাইনে সরাসরি সম্প্রচার করে ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউন। ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন ক্যাম জাতীয় ক‌মি‌টির যুগ্ম আহ্বায়ক ও আইসাকা ঢাকা চ্যাপ্টারের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওমর ফারুক খন্দকার। সঞ্চালক ছিলেন কমিটির সদস্যসচিব ও সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের (সিসিএ ফাউন্ডেশন) উপদেষ্টা ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম। আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা ট্রিবিউনের সহযোগী সম্পাদক আবু সাঈদ আসিফুল ইসলাম ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউল্যাবের মিডিয়া স্ট্যাডিজ অ্যান্ড জার্নালিজম বিভাগের অধ্যাপক দীন এম সুমন রহমান।

সুমন রহমান বলেন, একদম মিথ্যা কিংবা অর্ধসত্য তথ্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে ছড়ানো হয়। এটিই ভুয়া সংবাদ। মিসইনফরমেশন, ডিসইনফরমেশন, ম্যালইনফরমেশন—এই তিন ধরনের তথ্য সমাজের জন্য ক্ষতিকর। নতুন আরেকটি শব্দ এসেছে মিডইনফরমেশন, অর্থাৎ কোনো তথ্য পুরোপুরি সঠিক কিংবা ভুল বলে সিদ্ধান্তে যাওয়া যায় না, এমন তথ্য।

এ ছাড়া মিসইনফরমেশন মানে ভুল তথ্য। অজ্ঞতা বা অসতর্কতার কারণে এমন ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। ডিসইনফরমেশন হলো কোনো ব্যক্তি, সামাজিক গ্রুপ, সংগঠন বা দেশকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলার জন্য ভুল তথ্যের ইচ্ছাকৃত ব্যবহার করা। ম্যালইনফরমেশন হলো তথ্যটি সঠিক। কিন্তু সঠিক তথ্যকে কোনো ব্যক্তি, সামাজিক গ্রুপ, সংগঠন বা দেশের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার।

অধ্যাপক সুমন বলেন, কোনো তথ্য ইন্টারনেটে প্রকাশিত হলে সেই ওয়েবসাইট যদি কোনো প্রতিষ্ঠিত বা মূল ধারার সংবাদমাধ্যম হয়, তাহলে সেটি সাধারণত ভুল তথ্য দেবে না।

ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ডিজিটাল লিটারেসিও বাড়াতে হবে। প্রতীকী ছবি
ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ডিজিটাল লিটারেসিও বাড়াতে হবে। প্রতীকী ছবিআনস্প্ল্যাশ
সুমন আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মনিটাইজেশন সিস্টেম, অর্থাৎ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তথ্য প্রচার করে আয় করার সুবিধার জন্য অনেকে বিভিন্ন নামে ওয়েবপোর্টাল পরিচালনা করছেন। এই প্রেক্ষাপটে দেশের তৃণমূল পর্যায়ে এমন একটা ইনফরমেশন ইকোসিস্টেম গড়ে উঠুক, যেন ভুল তথ্য ছড়ানো বন্ধ করা যায়। একইসঙ্গে আমাদের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ডিজিটাল লিটারেসিও বাড়াতে হবে। কিছু সোশ্যাল মিডিয়া ভুয়া তথ্যের প্রচার ঠেকাতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে, কিন্তু সব সোশ্যাল মিডিয়া কর্তৃপক্ষ এমন উদ্যোগ নিচ্ছে না।’

সাংবাদিক আসিফুল ইসলাম বলেন, ‘ইন্টারনেট এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র। এটির অপব্যবহার করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে যখন কোনো ভুল তথ্য ছড়িয়ে কেউ সমাজের ক্ষতির চেষ্টা করে, তখন সেটি প্রতিরোধের জন্য একজন গণমাধ্যমকর্মী কিংবা গণমাধ্যমের পাঠক-দর্শক হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।’

এই জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মনে করেন, সোশ্যাল মিডিয়ার নিউজ ফিডে যা আসে, সেটিই কিন্তু ‘সংবাদ’ নয়। একজন গণমাধ্যমকর্মী যখন কোনো তথ্য পান, তখন তার কর্তব্য অবশ্যই যেন তিনি তথ্যটি যাচাই করে শতভাগ নিশ্চিত হয়ে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করেন। এর মাধ্যমে দর্শক বা পাঠক সঠিক তথ্যটি পাবেন এবং উপকৃত হবে সমাজ।

ইন্টারনেটে ভুয়া তথ্য ছড়ানো ঠেকাতে সচেতনতা খুব জরুরি বলে মন্তব্য করেন ওমর ফারুক খন্দকার। এ ছাড়া নিউজপোর্টালগুলোতে প্রতিটি নিউজে পাঠকের রেটিং সিস্টেম চালু করা যেতে পারে। তাহলে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ছাড়ানো তথ্য ঠেকাতে সচেতন পাঠকেরা ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারবেন।

Raisa:
 :)

Navigation

[0] Message Index

Go to full version