সমস্ত মানুষের কান্নার চেয়েও আদম (আঃ)-এর কান্না বেশি

Author Topic: সমস্ত মানুষের কান্নার চেয়েও আদম (আঃ)-এর কান্না বেশি  (Read 739 times)

Offline ashraful.diss

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 162
  • 'শীঘ্রই রব তোমাকে এত দিবেন যে তুমি খুশি হয়ে যাবে'
    • View Profile
    • Daffodil Institute of Social Sciences - DISS
সমস্ত মানুষের কান্নার চেয়েও আদম (আঃ)-এর কান্না বেশি

এভাবে আদম (আঃ) ও হাওয়াকে (আঃ) দুনিয়ায় পাঠিয়ে দিলেন। আদমকে পাঠালেন স্বরণদ্বীপে আর হাওয়াকে পাঠালেন জিদ্দায়। এভাবে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় তাঁরা আল্লাহর দরবারে কান্না-কাটি করতে লাগলেন। সুদীর্ঘ কাল অতিবাহিত হওয়ার পর উভয়ের মধ্যে পুনরায় সাক্ষাৎ হল আরাফাতের ময়দানে। শয়তান গাদ্দারি করে ক্ষমা চায়নি কিন্তু হযরত আদম (আঃ) নিজের ভুল স্বীকার করে কান্না-কাটি শুরু করলেন।

বিশ্ববিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ তাফসীরে মাযহারীর মধ্যে এসেছে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আদম (আঃ) ও হাওয়া (আঃ) দুইশত বৎসর পর্যন্ত ক্রন্দন করেছেন এবং চল্লিশ দিন পর্যন্ত কোন খানা-পানি খাননি। হযরত আদম (আঃ) একশত বৎসর পর্যন্ত হাওয়া (আঃ)-এর নিকট আসেননি। ইউনুস ইবনে হাব্বান ও আলকমা ইবনে  মারছাদ (রাঃ) বলেন, যদি সমগ্র জগদ্বাসীদের চোখের পানি একত্রিত করা হয় তবুও হযরত দাউদ (আঃ)-এর চোখের পানি তার থেকে বেশি হয়ে যাবে। আর যদি হযরত দাউদ (আঃ) সহ সারা দুনিয়ার সমস্ত মানুষের চোখের পানি একত্রিত করা হয় তাহলে হযরত আদম (আঃ)-এর চোখের পানি তার থেকে অনেক বেশি হয়ে যাবে। শাহির ইবনে হাওশাব (রাঃ) বলেন যে, হযরত আদম (আঃ) নিষিদ্ধ গাছের ফল খাওয়ার অপরাধের জন্য আল্লাহর কাছে লজ্জিত হয়ে তিনশত বৎসর পর্যন্ত আকাশের দিকে মাথা উঁচু করেননি। তারা উভয়েই সর্বদা আল্লাহর কাছে এই বলে কান্না-কাটি করতেন

قَالَا رَبَّنَا ظَلَمۡنَاۤ اَنۡفُسَنَا ٜ وَاِنۡ لَّمۡ تَغۡفِرۡ لَنَا وَتَرۡحَمۡنَا لَنَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡخٰسِرِیۡنَ

তারা উভয়ে বললঃ হে আমাদের পালনকর্তা আমরা নিজেদের প্রতি জুলম করেছি। যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করেন, তবে আমরা অবশ্যই অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাব। (সুরা আল আরাফ -আয়াত ২৩)

এভাবে  সুদীর্ঘ কাল পর্যন্ত তারা কান্না-কাটি করতে  ছিল। কিন্তু তাদের দোয়া আল্লাহ কবুল করেন না। অবশেষে  তারা বললেন, রাব্বুল আলামীন! আপনি আমাদেরকে মুহাম্মদ (সাঃ)-এর অসিলায় মাফ করে দেন। তখন আল্লাহ পাক বললেন, হে আদম! তোমরা কোন মুহাম্মদ এর পরিচয় দিয়ে ক্ষমা চেয়েছ? তারা জবাব দিলেন, হে দয়াময় প্রভু! আমরা জান্নাতে অবস্থান কালে জান্নাতের দরজায় লেখা দেখেছিলাম কালেমা-লা’-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ! সুতরাং তোমার পবিত্র নামের সাথে যার নামকে সংযুক্ত করে রেখেছ তাঁর অসিলায় ক্ষমা করে দাও। তখন আল্লাহ বললেন, হে আদম! যখন তুমি আমার বন্ধুর নাম নিয়ে ক্ষমা চেয়েছ এখনো যদি আমি তোমাদেরকে ক্ষমা না করি তাহলে আমার বন্ধুর নামের সম্মান থাকে না। তাই আমার বন্ধুর সম্মানার্থে তোমাদেরকে আমি আর ক্ষমা না করে পারলাম না। আজ আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিলাম। তোমাদের দোয়া কবুল করে নিলাম।

Hafez Maulana Mufti. Mohammad Ashraful Islam
Ethics Education Teacher, DISS
Khatib, Central Mosque, Daffodil Smart City
Ashuli , Savar, Dhaka