কেন আদম (আঃ) এবং হাওয়া (রাঃ) অবতরণ করলেন
কিছু লোক এই কথা বিশ্বাস করে যে, মানবজাতি জান্নাতেই বসবাস করতো, আদম (আঃ) এর অবাধ্যতার কারণেই আজ আমরা পৃথিবীতে। তা নাহলে আমরা হয়তো চিরকাল জান্নাতেই বসবাস করার সুযোগ পেতাম। এগুলি নিছক কল্প কাহিনী ও ভূল ধারণা, কারণ আদম আঃ সাঃ কে সৃষ্টি করার আগেই আল্লাহ ফেরেশতাগণকে বলেছিলেন যে, “আমি পৃথিবীতে প্রতিনিধি প্রেরণ করতে যাচ্ছি।” তিনি একথা বলেননি যে, “আমি জান্নাতে প্রতিনিধি বানাতে চাই।”
আল্লাহ জানতেন যে, আদম (আঃ) এবং হাওয়া (রাঃ) সেই নিষিদ্ধ গাছের ফল খাবে এবং পৃথিবীতে অবতরণ করবে। তিনি একথাও জানতেন যে, শয়তান তাদের সরলতার ফায়দা নেবে। এই সম্পূর্ণ ঘটনাটি আদম (আ), হাওয়া (রা) এবং তার বংশধরদের জন্য (যাদের মধ্যে আমরাও অন্তর্ভুক্ত) একরকমের শিক্ষণীয় ব্যাপার যে কিভাবে শয়তান তাদেরকে প্ররোচিত করে জান্নাত থেকে বিতাড়িত করেছে। আমরা আল্লাহর আনুগত্য স্বীকার করে এবং শয়তানের ধোঁকা থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করলেই নিজেদেরকে জাহান্নাম থেকে বাঁচতে পারব আর জান্নাতে পৌঁছুতে পারবো ইনশা আল্লাহ্।
আদমের স্বাধীন ইচ্ছা
এমন কথা কি বলা উচিত যে, আদম (আঃ) এর অবাধ্যতা; জান্নাত থেকে বিতাড়িত হওয়া এবং পৃথিবীতে অবতরণ করা, এই পুরো ব্যাপারটাই পূর্ব-পরিকল্পিত?
আল্লাহ কোনো কিছুকেই জোর করে বাধ্য করে ঘটায়নি। তিনি মানব জাতিকে স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়েছেন। আদম (আঃ) এরও পূর্ণ ইচ্ছাশক্তি ছিল বিধায় সে নিজের অবাধ্যতার দায়ভার নিজেই স্বীকার করেছিলেন।
তাই আদম (আঃ) অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে তওবা করেছিলেন যা আল্লাহ সুবহানু ওয়াতালা কবুল করেছিলেন। আদম (আঃ) এর এই ঘটনাটি কুরআনে বহুবার পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে যেন আমরা তা থেকে শিক্ষা গ্রহন করতে পারি যে, শয়তান কীভাবে আমাদেরকে বিভ্রান্ত করে আর আমরা কিভাবে নিজেদের রক্ষা করতে পারি এবং আমাদের পাপের জন্য আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারি।