আদম (আঃ) এবং মুসা (আঃ) এর মধ্যকার বাকবিতণ্ডা – হাদীস

Author Topic: আদম (আঃ) এবং মুসা (আঃ) এর মধ্যকার বাকবিতণ্ডা – হাদীস  (Read 722 times)

Offline ashraful.diss

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 162
  • 'শীঘ্রই রব তোমাকে এত দিবেন যে তুমি খুশি হয়ে যাবে'
    • View Profile
    • Daffodil Institute of Social Sciences - DISS
আদম (আঃ) এবং মুসা (আঃ) এর মধ্যকার বাকবিতণ্ডা – হাদীস


একবার আল্লাহ (সুবহানু ওয়াতালা) মূসা (আঃ) কে আদম (আঃ) এর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছিলেন যেখানে তিনি আদম(আঃ) সাথে তর্ক করে বলেছিলেন যে, তার সেই নিষিদ্ধ গাছের ফল খাওয়ার কারণেই আমরা(গোটা মানবজাতি) সকলে জান্নাত থেকে বিতাড়িত হয়েছি। কিন্তু আদম (আঃ) সুন্দরভাবে পাল্টা যুক্তি দিয়েছিলেন যে, আসলে আদমের সৃষ্টিরও অনেক আগে থেকেই এই ব্যাপারটি পূর্বনির্ধারিত ছিল। আদম (আঃ) এর এই যুক্তির কাছে মূসা (আঃ) পরাস্ত হয়েছিলেন। এখনও আমাদের অনেকের মনেও এই একই প্রশ্ন থেকে গিয়েছে আর এইখানেই এর উত্তর রয়েছে: আদম (আঃ) আসলে তার পাপের জন্য আল্লাহ তা’আলাকে দোষ দেননি। বরং তিনি তার যুক্তিতে এটাই বুঝাতে চেয়েছিলেন যে, তিনি সহ সমগ্র মানবজাতির পৃথিবীতে আসার ব্যাপারটা পূর্বনির্ধারিত ছিল। সুতরাং এই পৃথিবীতে আমাদের অস্তিত্ব ও বসবাস আদম (আঃ) এর পাপের কারণে নয় বরং তা সর্বশক্তিমান আল্লাহ তা’আলা কর্তৃক পূর্বনির্ধারিত ছিল।

আবু হুরায়রা হইতে বর্ণিত আছে যে, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, আদম (আঃ) ও মূসা (আঃ) তর্ক-বিতর্ক করছিলেন। তখন মূসা (আঃ) তাঁকে বলছিলেন, আপনি সেই আদম যে আপনার ভুল আপনাকে বেহেশত হতে বের করে দিয়েছিল। আদম (আঃ) তাঁকে বললেন, আপনি কি সেই মূসা যে, আপনাকে আল্লাহ্‌ তাঁর রিসালাত দান এবং বাক্যালাপ দ্বারা সম্মানিত করেছিলেন। অতঃপরও আপনি আমাকে এমন বিষয়ে দোষী করছেন, যা আমার সৃষ্টির আগেই আমার জন্য নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’বার বলেছেন, এ বিতর্কে আদম (আঃ) মূসা (আঃ)–এর ওপর বিজয়ী হন। {সহীহ বুখারী বই ৬০, হাদিস ৮২/ ৩৪০৯}

এখানে একটি উল্লেখযোগ্য লক্ষণীয় বিষয় হলো:

যখন মূসা (আঃ) এই পৃথিবীতে আমাদের অস্তিত্বের পরিণতি হিসাবে আদম (আঃ) কে দোষারোপ করেছিলেন, আদম (আঃ) যুক্তি দিয়ে বলেছিলেন যে, এই ব্যাপারটি পূর্বনির্ধারিত ছিল।

কিন্তু, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা যখন আদম (আঃ) কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, কেন তিনি সেই নিষিদ্ধ গাছের ফল খেয়েছেন, তখন তিনি তার নিজের দোষ স্বীকার করে অনুশোচনার সাথে তওবা করেছিলেন।

আসলে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে তিনি নিজেই সেই ভুলটি করেছেন এবং তার দ্বায়ভার নিজের উপরেই নিয়েছিলেন। সুতরাং, পুনঃ নির্ধারণ ও নিজের পাপের জন্য দায়ভার গ্রহণের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। আল্লাহ (সুবহানু ওয়াতালা) জানেন যে কে ভুল করতে চলেছে তবে তিনি কখনই সেই ব্যক্তিকে ভুল করতে বাধ্য করেন না।

Hafez Maulana Mufti. Mohammad Ashraful Islam
Ethics Education Teacher, DISS
Khatib, Central Mosque, Daffodil Smart City
Ashuli , Savar, Dhaka