যেসব পাপে আসমানি আজাব এসেছে

Author Topic: যেসব পাপে আসমানি আজাব এসেছে  (Read 1009 times)

Offline Md. Abul Bashar

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 174
  • Test
    • View Profile
যেসব পাপে আসমানি আজাব এসেছে

পাপের কারণে আল্লাহ বান্দার ওপর ক্রোধান্বিত হন। আমাদের সমাজে এমন কিছু পাপ আছে, যেগুলোর কারণে পূর্ববর্তী উম্মতের ওপর আসমানি আজাব অবতীর্ণ হয়েছে। ঝড়-তুফান, বিকট আওয়াজ, দুর্ভিক্ষ, ভূমিধস, অন্তরে ভয়-ভীতি জাগিয়ে তোলা, চেহারা বিকৃতি করা ইত্যাদি। বর্তমানেও যদি কেউ সেসব পাপাচারে লিপ্ত হয় তাহলে সে পূর্ববর্তী সব উম্মতের উত্তরাধিকার হিসেবে বলা হবে।
এবং তার ব্যাপার সে সব হুমকি থাকবে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক পূর্ববর্তী উম্মতের মধ্যে কার ওপর কী কারণে আজাব নাজিল হয়েছে।

মাপে কম দেওয়া

শোয়াইব (আ.)-এর কওমের অভ্যাস ছিল, তারা যখন কারো থেকে কোনো জিনিস ক্রয় করত পূর্ণরূপে পরিমাপ করে নিত, আর যখন তারা তা বিক্রি করত তখন ওজনে কম দিত। আল্লাহর নবী তাঁদের এ ব্যাপারে সতর্ক করেন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে সততা ও স্বচ্ছতার কথা বলেন। কিন্তু তারা নবীর কথা শোনেনি, ফলে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের প্রতি আজাব এসেছে। আল্লাহ বলেন, ‘[শোয়াইব (আ.) বলেন] হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা ন্যায়সঙ্গতভাবে মাপো ও ওজন কোরো, লোকদের তাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিয়ো না এবং জমিনে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়িয়ো না। ’ (সুরা হুদ, আয়াত : ৮৫)
আয়াতে তাদের ওপর আজাব নাজিল হওয়ার জন্য কুফরি ও মাপে কম দেওয়াকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বোঝা যায় যে মাপে কম দেওয়া আল্লাহ তাআলার কাছে মারাত্মক অপরাধ।

ফ্যাসাদ সৃষ্টি করা

সালেহ আলাইহিস সালামের জাতি, যারা জমিনে প্রভাব খাটিয়ে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করত। তাদের আল্লাহ তাআলা বিশেষ শাস্তি দিয়েছেন। তাই যারা নিজের দাপট বিস্তারের জন্য পৃথিবীর বুকে নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তারা হচ্ছে সেই জাতির উত্তরাধিকারী। আল্লাহ বলেন, ‘আর সে শহরে ছিল এমন ৯ জন ব্যক্তি, যারা দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করত এবং সংশোধন করত না। আর তারা এক চক্রান্ত করেছিল এবং আমরাও এক কৌশল অবলম্বন করলাম, অথচ তারা উপলব্ধিও করতে পারেনি। ’ (সুরা নামল, আয়াত : ৪৮, ৫০)

সমকামিতা

লুত (আ.)-এর জাতি এমন পাপাচারে লিপ্ত হয়েছে, যা আগের কোনো উম্মত করেনি। তারা তাদের যৌন চাহিদাকে অবৈধ পদ্ধতিতে নিবারণ করত। আল্লাহ তাআলা লুত (আ.)-এর মাধ্যমে তাদের সতর্ক করেছেন; এ ধরনের হীন ঘৃণিত কাজ থেকে যেন তারা ফিরে আসে। কিন্তু তারা তাদের অপকর্মে অনড় রইল। তখন আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের ওপর শাস্তি আসে। আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের মাধ্যমে তাদের জনপদকে উল্টে দেন। তাদের ওপর পাথুরে বৃষ্টি বর্ষণ করেন। আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর সূর্যোদয়ের সময় প্রকাণ্ড চিৎকার তাদের পাকড়াও করল। তাতে আমরা জনপদকে উল্টিয়ে ওপর-নিচ করে দিলাম এবং তাদের ওপর পোড়ামাটির পাথর-কংকর বর্ষণ করলাম। ’ (সুরা হিজর, আয়াত : ৭৩, ৭৪)

অহংকার করা

শক্তিশালী এক সম্প্রদায় ছিল কওমে আদ। যারা স্থাপত্য ও শিল্পে অনন্য ছিল। তারা ছিল এক অহংকারী জাতি। তাদের ধ্বংসের কথা আল্লাহ তাআলা কোরআনে কারিমে বর্ণনা করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর আদ সম্প্রদায়, তারা জমিনে অযথা অহংকার করেছিল এবং বলেছিল, আমাদের চেয়ে বেশি শক্তিশালী কে আছে? তবে কি তারা লক্ষ্য করেনি যে নিশ্চয়ই আল্লাহ, যিনি তাদের সৃষ্টি করেছেন, তিনি তাদের চেয়ে বেশি শক্তিশালী? আর তারা আমাদের নিদর্শনাবলিকে অস্বীকার করত। অতঃপর আমি তাদের পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনার আজাব আস্বাদন করানোর জন্য তাদের ওপর প্রেরণ করলাম ঝঞ্ঝাবায়ু বেশ কতিপয় অশুভ দিনে। আর পরকালের আজাব তো আরো লাঞ্ছনাকর এ অবস্থায় যে তারা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে না। ’ (সুরা ফুসসিলাত, আয়াত : ১৫, ১৬)