কোরআন-হাদিসে সাহরি ও ইফতারের সময়

Author Topic: কোরআন-হাদিসে সাহরি ও ইফতারের সময়  (Read 754 times)

Offline Md. Abul Bashar

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 174
  • Test
    • View Profile
কোরআন-হাদিসে সাহরি ও ইফতারের সময়

রোজার জন্য সাহরি খাওয়া মুস্তাহাব। তবে যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত সাহরি খায় না সে গুনাহগার নয়। আর এ কারণেই যদি কেউ ফজরের পর জাগে এবং সাহরি খাওয়ার সময় না পায়, তাহলে তার জন্য রোজা রাখা জরুরি। এতে তার রোজার কোনো ক্ষতি হবে না।

রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহরি খাওয়ার জন্য তাঁর উম্মতকে বিভিন্ন কথার মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করেছেন। তিনি সাহরিকে বরকতময় খাদ্য বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, তোমরা সাহরি খাও। কেননা সাহরিতে বরকত আছে। (বুখারি, হাদিস : ১৮২৩)

অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমাদের রোজা ও আহলে কিতাবের রোজার মধ্যে পার্থক্য হলো সাহরি খাওয়া। (মুসলিম, হাদিস : ১০৯৬)

সাহরি খাওয়ার সময় হলো অর্ধরাত্রির পর থেকে সুবহে সাদিক বা ফজরের আগে পর্যন্ত। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘...আর তোমরা পানাহার করো যতক্ষণ রাতের কৃষ্ণরেখা থেকে ঊষার শুভ্ররেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের কাছে প্রতিভাত না হয়...। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৭)

আর মুস্তাহাব হলো শেষ সময়ে সাহরি খাওয়া। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, জায়দ বিন সাবেত (রা.) তাঁকে জানিয়েছেন, তাঁরা নবী (সা.)-এর সঙ্গে সাহরি খেয়ে (ফজরের) নামাজ পড়তে উঠে গেছেন। আনাস (রা.) বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, সাহরি খাওয়া ও আজান হওয়ার মধ্যে কতটুকু সময় ছিল? জবাবে জায়দ (রা.) বলেন, ৫০ অথবা ৬০ আয়াত পড়তে যতটুকু লাগে। (বুখারি, হাদিস : ৫৭৫, ১৯২১, মুসলিম ১০৯৭

এখানে আয়াত বলতে মধ্যম ধরনের আয়াত গণ্য হবে। আর এই শ্রেণির ৫০-৬০টি আয়াত পড়তে মোটামুটি ১৫-২০ মিনিট সময় লাগে। অতএব সুন্নত হলো, আজানের ১৫-২০ মিনিট আগে সাহরি খাওয়া।

ইফতারের সময়

সূর্যের পুরো বৃত্ত অদৃশ্য হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতারের সময় হয়। আর সে সময় হলো মাগরিবের নামাজের আগে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘...অতঃপর নিশাগম (রাতের আগমন) পর্যন্ত তোমরা সিয়াম (রোজা) পূর্ণ করো...। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৭)

রোজার নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হয়ে গেলে রোজা খোলা বা ইফতার করার জন্য প্রত্যেক রোজাদারের অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করা স্বাভাবিক। অতএব ইফতার করতে তাড়াতাড়ি করা স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু তা সত্ত্বে প্রিয় নবী (সা.) আমাদের দ্রুত ইফতার করার নির্দেশ দিয়েছেন। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, মানুষ ততক্ষণ মঙ্গলে থাকবে, যতক্ষণ তারা (সূর্য ডোবার পর নামাজের আগে) ইফতার করতে তাড়াতাড়ি করবে। (বুখারি, হাদিস : ১৯৫৭)

অতএব দেখার বিষয় হলো সূর্যাস্ত—আজান নয়। সুতরাং রোজাদার যদি স্বচক্ষে দেখে যে সূর্য ডুবে গেছে, কিন্তু মুয়াজ্জিন এখনো আজান দেয়নি, তাহলেও তার জন্য ইফতার করা বৈধ।

ইফতার করে নামাজ পড়ার পর প্রয়োজনীয় আহার ভক্ষণ করবে রোজাদার। অবশ্য যদি আহার প্রস্তুত থাকে, তাহলে প্রথমে আহার খেয়েই নামাজ পড়বে। যেহেতু আনাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, রাতের খাবার উপস্থিত হলে মাগরিবের নামাজ পড়ার আগে তোমরা তা খেয়ে নাও। আর সে খাবার খেতে তাড়াহুড়া কোরো না। (বুখারি, হাদিস : ৬৭২)