Religion & Belief (Alor Pothay) > Ramadan and Fasting

রোজা কবুল হওয়ার ৬টি আমল

(1/1)

Mrs.Anjuara Khanom:
সাধারণত পানাহার ও কিছু জৈবিক চাহিদা পূরণ থেকে বিরত থাকাকে রোজা মনে করা হয়। কিন্তু এটাই রোজার শেষকথা নয়।
বরং রোজার কয়েকটি স্তর রয়েছে। প্রত্যেক স্তরের মর্যাদায় রয়েছে তারতম্য।
ইমাম গাজালি (রহ.) তার বিখ্যাদ গ্রন্থ এহইয়াউ উলুমিদ্দিন গ্রন্থে রোজার তিনটি স্তর বর্ণনা করেছেন। ক. সাধারণের রোজা, খ. বিশেষ শ্রেণীর রোজা ও গ. অতি বিশেষ শ্রেণির রোজা।
ক. সাধারণের রোজা হলো- পানাহার ও জৈবিক চাহিদা থেকে বিরত থাকা।
খ. বিশেষ শ্রেণির রোজা হলো- পেট ও লজ্জাস্থানের চাহিদা পূরণের সঙ্গে সঙ্গে তার চোখ, কান, জিহ্বা, হাত, পা অর্থাৎ তার সব অঙ্গ পাপমুক্ত রাখা।
গ. অতি বিশেষ শ্রেণির রোজা হলো- নিজের অন্তরকে দুনিয়া ও তার মোহ মুক্ত করা। আল্লাহ ব্যতীত অন্য সবকিছু থেকে বিমুখ হওয়া।
ইমাম গাজালি (রহ.) রোজার তিন শ্রেণি উল্লেখ করে বলেন, প্রথম প্রকারের কোনো মুমিনের প্রত্যাশা হতে পারে না। আর তৃতীয় শ্রেণির রোজা দীর্ঘ সাধনার ব্যাপার। মুমিনের প্রাথমিক লক্ষ্য হওয়া উচিৎ দ্বিতীয় শ্রেণির রোজা পালন। 
এর পর তিনি দ্বিতীয় শ্রেণি তথা খোদাভীরু ও পুণ্যবান ব্যক্তিদের রোজার ৬টি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেন। তাহলো-
১. দৃষ্টি অবনত রাখা: আল্লাহ যার প্রতি তাকাতে নিষেধ করেছেন বা তিনি তাকানো অপছন্দ করেন এমন সব কিছু থেকে দৃষ্টি অবনত রাখা এবং সেসব বিষয় থেকেও দৃষ্টিকে সংরক্ষণ করা যা আল্লাহর স্মরণ থেকে বিমুখ করে দেয়।
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দৃষ্টি শয়তানের বিষাক্ত তীর। যে আল্লাহর ভয়ে দৃষ্টি সংরক্ষণ করবে সে ঈমান ও তার মিষ্টতা লাভ করবে। ’ -মুসনাদে হাকিম
২. জিহ্বা সংযত করা: মিথ্যা, পরনিন্দা, অপবাদ, অশ্লীলতা, গালি ও অনর্থক কথা থেকে নিজের জবান সংরক্ষণ করা। হজরত মুজাহিদ (রহ.) বলেন, ‘দু’টি স্বভাব রোজার মাহাত্ম্য নষ্ট করে দেয়- মিথ্যা ও পরনিন্দা। ’
৩. কান সংরক্ষণ করা: আল্লাহতায়ালার অপছন্দনীয় সব বিষয় থেকে নিজের কানকে সংরক্ষণ করা। গান-বাদ্য, মিথ্যা-পরনিন্দা, অর্থহীন গালগল্প থেকে বেঁচে থাকা। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে মিথ্যা শ্রবণকারীর নিন্দা করে বলেছেন, ‘তারা মিথ্যা শ্রবণকারী ও অবৈধ সম্পদ ভক্ষণকারী। ’ -সূরা মায়েদা: ৪৬
৪. অন্যান্য অঙ্গসমূহকে হারাম থেকে বাঁচিয়ে রাখা: হাত-পাসহ বাকি অঙ্গসমূহকে হারাম থেকে বাঁচিয়ে রাখা রোজাদারের জন্য আবশ্যক। যেমন, অন্যায়ভাবে কাউকে আঘাত করবে না, অন্যায় কাজে যাবে না এবং হারাম খাবার খাবে না। রোজার উদ্দেশ্য গোনাহ পরিহার করা। পাপ পরিহার না করলে রোজার কল্যাণ লাভ করা যায় না।
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কতক রোজাদার এমন ক্ষুধা ও তৃষ্ণা ব্যতীত তাদের আর কোনো প্রাপ্তি থাকে না। ’ -মুসনাদে আহমদ
৫. ইফতার ও সাহরিতে কম খাওয়া: রোজাদার ব্যক্তি ইফতার ও সাহরিতে কম খাবে। কেননা হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) কম খেতে উৎসাহিত করেছেন।
রোজাদার ব্যক্তি যথাসম্ভব দিনের বেলা কম ঘুমাবে। এতে ক্ষুধা, তৃষ্ণা ও দুর্বলতা বেশি অনুভূত হয়। প্রতি রাতে সামান্য পরিমাণ হলেও তাহাজ্জুদ আদায় করবে। যেনো তার অভ্যাস গড়ে ওঠে।
৬. আশা ও ভয় নিয়ে ইফতার করা: ইফতারের সময় বান্দা রোজা কবুল হওয়ার এবং প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ভয় নিয়ে ইফতার করবে। কেননা আল্লাহতায়ালা রমজানে বান্দার প্রতি অনুগ্রহশীল হওয়ার ঘোষণা যেমন দিয়েছেন- ঠিক তেমনি পাপ মার্জনা করাতে না পারলে শাস্তিরও ঘোষণা দিয়েছেন। কেননা ঈমান আশা ও ভয়ের মধ্যবর্তী অবস্থানের নাম।
৬টি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করার পর ইমাম গাজালি (রহ.) বলেন, এ ছয়টি হলো- সেই আমানত যা রক্ষা করতে হাদিসে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয় রোজা আমানত। তোমরা তোমাদের আমানত রক্ষা কর। ’ –খারায়িতি
আল্লাহতায়ালা প্রত্যেক মুসলমানকে রোজার আমানত রক্ষা করে রোজা পালনের তওফিক দান করুন। আমিন। 

Md. Abul Bashar:
May Allah help us to obey....Ameen

Md Kamrul Hasan:
Ameen.

Navigation

[0] Message Index

Go to full version