স্ক্যাবিস বুঝবেন যেসব লক্ষণে, কী করবেন?

Author Topic: স্ক্যাবিস বুঝবেন যেসব লক্ষণে, কী করবেন?  (Read 732 times)

Offline Mrs.Anjuara Khanom

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 474
  • Test
    • View Profile
খোসপাঁচড়া বা স্ক্যাবিস অত্যন্ত সংক্রামক একটি ব্যাধি। মাইট নামক অতিক্ষুদ্র পোকার আক্রমণে স্ক্যাবিস হয়ে থাকে। এটি ত্বকের সঙ্গে ত্বকের সংস্পর্শে দ্রুত ছড়িয়ে যায়। তাই লক্ষণ দেখা দেয়া মাত্র দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।

গরমে অনেকেরই স্ক্যাবিস হচ্ছে। বিশেষ করে বাচ্চাদের মধ্যে বেশি দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়া একসময় দেখা যায়, পরিবারের সবাই এ রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে।

সাধারণত কী কারণে এটি হয়?

সাধারণভাবে স্ক্যাবিস বলে পরিচিত এই রোগটির নাম স্ক্যাবিস। এটি এক ধরনের জীবাণু দিয়ে হয়ে থাকে। রোগটি ছোঁয়াচে বলে খুব সহজেই এটি সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় স্ক্যাবিস বা খোসপাঁচড়া বেশি দেখা যায়।

স্ক্যাবিসের সাধারণ পরিচিতি
শরীরের বিভিন্ন স্থানে ঘামাচির মতো ছোট ছোট দানার আকারে স্ক্যাবিস দেখা দেয়। এগুলো খুব চুলকায়। বিশেষ করে রাতের বেলা উষ্ণ পরিবেশে এই চুলকানি খুব বেড়ে যায়। দু-একদিনের মধ্যে দানাগুলোর মধ্যে পানির আবির্ভাব ঘটে। এ পর্যায়ে চিকিৎসা না নিলে দানাগুলোর মধ্যে পুঁজ হয়। এ অবস্থায় শরীরের সামান্য জ্বর থাকতে পারে।

শরীরের যেসব স্থানে স্ক্যাবিস দেখা যায়—

হাত ও পায়ের আঙুলের ফাঁকে
কব্জিতে
বগল ও ঊরুসন্ধিতে
তবে একপর্যায়ে সারা শরীরেই দেখা দিতে পারে

চিকিৎসা

খোসপাঁচড়া বা স্ক্যাবিস নিরাময়যোগ্য একটি রোগ। তবে চিকিৎসা করাতে হবে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধায়নে। চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রথমেই ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। এ জন্য ফ্লুক্লক্সাসিলিন জাতীয় ওষুধ নেওয়া যেতে পারে। ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণে আনার পর গায়ে লাগানোর ওষুধ দিতে হয়। গায়ে লাগানোর এই সব ক্রিম/লোশনের মধ্যে রয়েছে পাঁচ ভাগ পারমেথ্রিন, বেনজাইল বেনজয়েট (২৫ ভাগ বড়দের জন্য, ১২ দশমিক ৫ ভাগ ছোটদের জন্য), ক্লোটামিটন।
ক্ষেত্রবিশেষে এগুলো দুই থেকে তিন দিন নিয়মানুয়ায়ী চোখ-মুখ বাদ দিয়ে সারা শরীরে মাখতে হয়। তবে ওষুধ ব্যবহার করতে হবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে।

বারবার হয় কেন

চিকিৎসা সঠিকভাবে না করালেই এমনটি হতে পারে। অনেক সময় ইনফেকশনের চিকিৎসা না করিয়ে গায়ে লাগানোর ক্রিম/লোশন দিলে জ্বালা করে। এতে অনেকেই এটির ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়ায় চিকিৎসা অসম্পূর্ণ রয়ে যায়। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, চিকিৎসার সঙ্গে প্রয়োজনীয় উপদেশগুলো মেনে না চলার জন্যই রোগটি বারবার দেখা যায়।

নষ্ট হতে পারে কিডনিও

খোসপাঁচড়া সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে ত্বকের তীব্র ইনফেকশন ছাড়া তা কিডনিকেও প্রদাহে আক্রান্ত করতে পারে। এই ইনফেকশন কিডনি কোষের একক নেফ্রনকে প্রদাহযুক্ত করতে পারে। কিডনির এই মারাত্মক রোগটি কিডনিকে বিপন্ন করে তুলতে পারে।

প্রতিরোধ

চিকিৎসার শুরু থেকেই রোগীর ব্যবহার্য সব ধরনের কাপড়চোপড় সাবান দিয়ে সিদ্ধ করে ধুয়ে ফেলতে হবে। পরিবারের অন্যদের এ রোগ থাকলে তাদের চিকিৎসাও একই সঙ্গে করাতে হবে। এই কাজগুলো না করে শুধু চিকিৎসা করে কোনো লাভ নেই। বরং বারবার হয়ে রোগ আবারও জটিল হবে।
ঘরোয়া উপায়ে স্ক্যাবিস নিরাময়

রসুন

রসুন শক্তিশালী অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট যা সত্যিকার ভাবেই মাইটকে অপসারণ করতে পারে। রসুন সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। রসুন মাইট দমন করে ও ত্বকে এর কাজকে প্রতিহত করে। ক্রমাগত রসুন লাগানো ও খাওয়ার ফলে স্ক্যাবিস নিরাময় অত্যন্ত কার্যকরী ভাবে হয়। রসুন থেঁতলে রস বের করে নিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগান।
এছাড়া ভ্যন্তরীণভাবে নিরাময়ের জন্য প্রতিদিন ৩-৪ কোয়া রসুন খান। ৩দিন আক্রান্ত স্থানে রসুন লাগানোর পর ২ দিন বিরতি দিন।তারপর আবার লাগান। কারণ ক্রমাগত রসুন ব্যবহার ত্বক পুড়িয়ে দিতে পারে।

নিমপাতা

স্ক্যাবিস নিরাময়ে নিমপাতা ব্যবহার করা যায়। কারণ নিমপাতায় ছত্রাকনাশক ও ব্যাকটেরিয়া নাশক উপাদান আছে। হামানদিস্তায় একমুঠো নিমপাতা নিয়ে ভালো করে পিষে পেস্ট তৈরি করুন। আক্রান্ত স্থানটি ভালো করে ধুয়ে নিয়ে পেস্টটি লাগান। শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিরাময় প্রক্রিয়াকে দ্রুত করার জন্য নিয়মিত এটি করুন।

এক কাপ পানিতে কয়েকটি নিমপাতা দিয়ে সিদ্ধ করে নিন। তারপর মিশ্রণটি ঘরের তাপমাত্রায় ঠান্ডা করে নিয়ে এক চামচ করে দিনে ৩/৪ বার পান করুন। এক সপ্তাহ বা দুই সপ্তাহ এভাবে পান করুন মাইট ও চুলকানি পুরোপুরি দূর হওয়ার জন্য।

অ্যালোভেরা

এই শীতল জেল অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট। যা ত্বকের নিরাময় ও পুনরুজ্জীবনের জন্য কাজ করে। এটি ত্বকের উপরিভাগের মাইট অপসারণ করতে পারে। তাজা অ্যালোভেরা জেল নিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগান। এই ঘন জেল মাইটের কার্যকারিতাকে বন্ধ করে এবং তাদের সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে। ইনফেকশন দূর করার পাশাপাশি ত্বকের যত্নেও কাজ করে অ্যালোভেরা জেল।


Source: https://www.jugantor.com/doctor-available/588021
Mrs, Anjuara Khanom
Library Assistant Officer,
Daffodil International University
DSC Campus
02224441833/34