সাক্ষাৎ করব সময়মতো

Author Topic: সাক্ষাৎ করব সময়মতো  (Read 598 times)

Offline ashraful.diss

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 162
  • 'শীঘ্রই রব তোমাকে এত দিবেন যে তুমি খুশি হয়ে যাবে'
    • View Profile
    • Daffodil Institute of Social Sciences - DISS
সাক্ষাৎ করব সময়মতো
« on: September 08, 2022, 03:00:33 PM »

সাক্ষাৎ করব সময়মতো

ইবনু আব্বাস (রাঃ) ছিলেন জ্ঞান পিপাসু। হাদীসের খোঁজে বিভিন্ন মানুষের কাছে যেতেন তিনি। যেন তাদের মুখে নবিজির হাদীস শুনতে পারেন।

একদিন তিনি গেলেন এক ব্যক্তির বাড়িতে। কিন্তু ঘরের সামনে গিয়ে থেমে গেলেন। দরজায় কড়া নাড়লেন না। গায়ের চাদর বিছিয়ে সেখানেই শুয়ে পড়লেন তিনি! একসময় বাতাসের সাথে উড়ে আসা ধূলোবালি পড়তে লাগল ইবনু আব্বাসের মুখে। তবুও ইনবু আব্বাস সেখানেই শুয়ে রইলেন।

অনেকক্ষণ পর লোকটি বের হলো। দরজার সামনে ইবনু আব্বাসকে শুয়ে থাকতে দেখে সে খুব অবাক হলো। এরপর ইবনু আব্বাস তাকে জানালেন যে, তার কাছে তিনি হাদীস শুনতে এসেছেন।

বন্ধুরা, তখন ছিল দুপুরবেলা। বিশ্রামের সময়। তাই ইবনু আব্বাস দরজার কড়া নাড়েননি। অপেক্ষা করেছেন।

ফজরের আগে, দুপুরে এবং ইশার পর মানুষ বিশ্রাম নেয়। এই তিন-সময়ে কারও সাথে সাক্ষাৎ করতে যাবে না। এই  তিন-সময়ে অনুমতি ছাড়া বাবা-মা, ভাই-বোনের ঘরেও প্রবেশ করবে না। তুমি ছোট, তবুও অনুমতি নিতে হবে তোমাকে। এটাই যে আল্লাহর নির্দেশ!

অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাব

একটি ছেলে নবিজির সেবাযত্ন করত। ছেলেটি ছিল ইয়াহূদি। একবার সে অসুস্থ হয়ে গেল। নবি (সাঃ) তাকে দেখতে গেলেন। তিনি ছেলেটির মাথার কাছে বসে বললেন, “তুমি ইসলাম গ্রহণ করো” একথা শুনে ছেলেটি তার বাবার দিকে তাকাল। ছেলেটির বাবা তার কাছেই ছিল। বাবা বলল, ‘তুমি তাঁর কথা মেনে নাও।’ সাথে সাথে ছেলেটি ইসলাম গ্রহণ করল। তখন নবিজি খুশি হয়ে বললেন, “সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি তাকে জাহান্নাম থেকে বাঁচালেন।”

কেউ অসুস্থ হলে নবিজি তাকে দেখতে যেতেন। নবিজি বলেছেন, “যে ব্যক্তি সন্ধ্যাবেলায় রোগী দেখতে যায়, তার সাথে ৭০ হাজার ফেরেশতা বের হয়। তারা ওই ব্যক্তির জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে থাকে সকাল হওয়া পর্যন্ত। আর যে ব্যক্তি সকালে রোগী দেখতে যায়,তার সাথেও ৭০ হাজার ফেরেশতা বের হয়। তারাও ওই ব্যক্তির জন্য ক্ষমা চাইতে থাকে সন্ধ্যা হওয়া পর্যন্ত।”

নবি (সাঃ) আরোও বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোনো রোগীকে দেখতে যায়, তার খোঁজ-খবর নেয় অথবা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোনো মুসলিম ভাইয়ের সাথে সাক্ষাৎ করে, সেই ব্যক্তিকে ডাক দিয়ে বলা হয়, ‘তুমি খুশি হও! তোমার এই সাক্ষাৎ সুখময় হোক! আর তোমার ঠিকানা হোক জান্নাতের প্রাসাদ!’’’

রোগী দেখার আদব

১। রোগীর বিশ্রামের সময় তাকে দেখতে যাবে না। অবসর সময়ে যাবে।
২। রোগীর কাছে লম্বা সময় বসে থাকবে না। একটু দেখা করেই চলে আসবে। তবে রোগী চাইলে বেশি সময় থাকতে পারো।
৩। রোগী কষ্ট পায় এমন কথা বলবে না। রোগীকে কোনো দুঃসংবাদ দেবে না।
৪। রোগীর কষ্ট হলে তার সামনে হাসি-তামাশা করবে না, অযথা কথা বলবে না।
৫। রোগীর জন্য সুস্থতার দু’আ করবে। রোগী ও তার পরিবারকে সান্ত্বনা দেবে।
৬। রোগীকে আশা দেবে, সাহস জোগাবে। তাকে বলবে, ‘চিন্তা করো না, ভালো হয়ে যাবে, ইনশা আল্লাহ! আল্লাহ তোমাকে সুস্থ করে দেবেন।’
৭। রোগীর কাছে অসুখের বিস্তারিত বিবরণ জানতে চাইবে না। ডাক্তার বা চিকিৎসার সমালোচনা করবে না।
৮। নিজে ডাক্তার না হয়ে  রোগীকে এটা-ওটা খেতে বলবে না।
৯। রোগীর ব্যাপারে মন্দ ধারণা করবে না। আল্লাহর নবিরাও রোগে ভুগেছেন। রোগের কারণে মুমিনের গুনাহ মাফ হয়, মর্যাদা বেড়ে যায়।
Hafez Maulana Mufti. Mohammad Ashraful Islam
Ethics Education Teacher, DISS
Khatib, Central Mosque, Daffodil Smart City
Ashuli , Savar, Dhaka