জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তি

Author Topic: জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তি  (Read 411 times)

Offline Khan Ehsanul Hoque

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 549
  • Test
    • View Profile
জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তি

পৃথিবীতে মানুষ যে ধরনের কর্ম করবে পরকালে সে ধরনের ফল পাবে। কেউ ভালো কাজ করলে তার চূড়ান্ত পুরস্কার হবে স্বপ্নের জান্নাত। আর যে গুনাহ করবে তার শেষ ঠিকানা হবে জাহান্নাম। কথায় আছে যেমন কর্ম তেমন ফল। জান্নাতের অফুরন্ত নিয়ামত সম্পর্কে আমরা অনেকে জানি। কিন্তু জাহান্নামের ভয়াবহতা সম্পর্কে তেমন আলোচনা করি না, তাই জানিও না। রাসূলুল্লাহ সা: সাহাবায়ে কেরামের কাছে জান্নাতের আলোচনার পাশাপাশি জাহান্নামের ভয়াবহতা নিয়েও আলোচনা করতেন। জাহান্নামের শাস্তি দুনিয়ার শাস্তি থেকে কোটি কোটি গুণ বেশি হবে। গুনাহের তারতম্যের কারণে শাস্তিও কমবেশি হবে। প্রিয় নবী সা: ইরশাদ করেন, ‘জাহান্নামিদের মধ্যে কোনো কোনো লোক এমন থাকবে যে, জাহান্নামের আগুন তার পায়ের টাখনু পর্যন্ত পৌঁছবে। কারো হাঁটু পর্যন্ত পৌঁছবে। কারো কোমর পর্যন্ত আবার কারো গর্দান পর্যন্ত পৌঁছবে। অর্থাৎ যার গুনাহ বেশি তার সাজা বেশি। যার গুনাহ কম তার শাস্তিও কম (মেশকাতুল মাসাবিহ : ৫৬৫৯)।
দুনিয়ার আগুন শরীরের শুধু বাহ্যিক অঙ্গ পোড়াতে পারে। পোড়াতে পারে না তা অভ্যন্তরীণ অঙ্গ। কিন্তু জাহান্নামের আগুনের এমন পাওয়ার থাকবে যা জাহান্নামিদের শরীর পোড়ানোর পাশাপাশি তাদের হৃৎপিণ্ডও পুড়িয়ে ছাই করে ফেলবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘এটি আল্লাহর প্রজ্ব¡লিত অগ্নি, যা তাদের হৃদয়কে গ্রাস করে ফেলবে।’ (সূরা হুমাজা : ৬-৭) দুনিয়ার আগুন লাল বর্ণের হয়ে থাকে। কিন্তু জাহান্নামের আগুন তীব্র উত্তপ্ত হওয়ার দরুণ কালো বর্ণের হবে। আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিতÑ রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘জাহান্নামের আগুন এক হাজার বছর জ্বালানোর পর তা লাল বর্ণ ধারণ করেছে। আবার এক হাজার বছর জ্বালানোর পর তা সাদা বর্ণ হয়েছে। তারপর এক হাজার বছর জ্বালানোর পর তা কালো বর্ণ হয়েছে। এখন তা গভীর অন্ধকার রাতের অন্ধকারের মতো কালো (সুনানে ইবনে মাজাহ : ৪৩২০)। ‘জাহান্নামিরা যখন পিপাসায় ছটফট করবে তখন তাদেরকে গলিত পুঁজ পান করানো হবে, যা সে এক এক ঢোক করে গিলবে’ (সূরা ইবরাহিম : ১৬-১৭)।
রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘পুঁজ যখন তার মুখের নিকটে নিয়ে আসা হবে, সে তা অপছন্দ করবে। তারপর যখন আরো নিকটে নিয়ে আসা হবে, তখন তার মুখমণ্ডল পুড়ে যাবে এবং মাথার চামড়া গলে পড়ে যাবে। তারপর সে যখন তা পান করবে তখন তার নাড়িভুঁড়ি গলে ছিন্নভিন্ন হয়ে মলদার দিয়ে বের হয়ে যাবে।’ (জামে তিরমিজি :২৫৮৩) ইবনে আব্বাস রা: থেকে বর্ণিত, একদিন রাসূলুল্লাহ সা: এ আয়াত তিলাওয়াত করলেন, অর্থাৎ ‘তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং পূর্ণ মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।’ তারপর প্রিয় নবী সা: ইরশাদ করলেন, ‘যদি জাক্কুম গাছের একটা ফোঁটা এই দুনিয়ায় পড়ে তাহলে দুনিয়াবাসীর জীবনোপকরণ বিনষ্ট হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় ওইসব লোকের কেমন দুর্দশা হবে এটা যাদের খাদ্য হবে?’ (জামে তিরমিজি : ২৫৮৫) রাসূল সা: জাহান্নামের সবচেয়ে সহজ শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তির আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, ‘জাহান্নামিদের মধ্যে সবচেয়ে সহজ শাস্তি ওই ব্যক্তির হবে, যাকে ফিতাসহ এক জোড়া জুতা পরিয়ে দেয়া হবে। এতে তার মগজ এমনভাবে টগবগ করবে গরম পানির পাত্র যেমন টগবগ করে। সে ধারণা করবে তার থেকে কঠিন আজাব আর কেউই ভোগ করছে না। অথচ সে হবে সবচেয়ে সহজ শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তি। (সহিহ মুসলিম : ৩৬৪)
প্রিয় পাঠক! জাহান্নামের সবচেয়ে সহজ শাস্তির যদি হয় এমন পাওয়ার তাহলে কঠিন শাস্তির পাওয়ার কেমন হবে? তা আমাদের ভাবতে হবে। প্রতিদিন কত গুনাহ আমরা করে যাচ্ছি অহরহ। কখনো কি ভেবে দেখেছি, এর শাস্তি যদি আমাকে দেয়া হয় তাহলে কিভাবে সহ্য করব? অথচ জাহান্নামে যাওয়ার জন্য একটি কবিরা গুনাহ-ই যথেষ্ট। মহান আল্লাহ তায়ালা যদি আমাদের মাফ না করেন, তাহলে আমাদের কী উপায় হবে? আল্লাহ তায়ালা আমাদের জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তি থেকে হিফাজত করুন।

Source: https://www.dailynayadiganta.com/diganta-islami-jobon/555310/%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AD%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%B9-%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BF
Khan Ehsanul Hoque

Daffodil International University
01847334702
fd@daffodilvarsity.edu.bd
www.daffodilvarsity.edu.bd