Religion & Belief (Alor Pothay) > Allah: My belief

পরামর্শ মানা কি অপরিহার্য

(1/1)

Khan Ehsanul Hoque:
পরামর্শ মানা কি অপরিহার্য
যিনি পরামর্শ দেবেন তিনি এটা মাথায় রেখেই পরামর্শ দেবেন যে পরামর্শ মানা না মানা সম্পূর্ণ তার দায়িত্ব। আমার কাজ হচ্ছে, তাকে কল্যাণকামিতার পরামর্শ দেওয়া। পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সে সম্পূর্ণ স্বাধীন

কারো সঙ্গে ব্যক্তিগত পরামর্শ করলে তার পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করা কি আবশ্যক? পরামর্শের উদ্দেশ্য হচ্ছে, একজন দক্ষ মানুষের মতামত জানা। এ ক্ষেত্রে যে পরামর্শ নেবে তারও এ ব্যাপারে ভাবার সুযোগ আছে। সে যদি মনে করে, এই পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করলে ক্ষতির আশঙ্কা আছে, তাহলে তার জন্য পরামর্শ অনুযায়ী আমল করা আবশ্যক নয়। তার সমপূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে নিজের মতো কাজ করার।

আর এ কারণে পরামর্শদাতার এতে মনঃক্ষুণ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। অনেক সময় দেখা যায়, আমার কাছে যদি কেউ পরামর্শ নিতে আসে আর সে আমার পরামর্শ অনুযায়ী কাজ না করে তাহলে একটু মনঃক্ষুণ্ন হই। এটা একেবারে ঠিক নয়। কারণ পরামর্শের উদ্দেশ্য হচ্ছে অন্যের মতামত জানা। মতামত জানার পর এখন সে সমপূর্ণ স্বাধীন। ইচ্ছা হলে সে অনুযায়ী কাজ করবে। ইচ্ছা হলে করবে না। এ ক্ষেত্রে হজরত বারিরা (রা.)-এর ঘটনা আমাদের সামনে চমৎকার আদর্শ হিসেবে রয়েছে। স্বয়ং আল্লাহর রাসুল (সা.) তাঁকে একটি ব্যাপারে সুপারিশ করেছেন। কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করেননি।
ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, বারিরার স্বামী ক্রীতদাস ছিল। মুগিস নামে তাকে ডাকা হতো। আমি যেন এখনো তাকে দেখছি সে বারিরার পিছে কেঁদে কেঁদে ঘুরছে, আর তার দাড়ি বেয়ে অশ্রু ঝরছে। তখন নবী (সা.) বললেন, হে আব্বাস! বারিরার প্রতি মুগিসের ভালোবাসা এবং মুগিসের প্রতি বারিরার অনাসক্তি দেখে তুমি কি আশ্চর্যান্বিত হও না? এরপর নবী (সা.) বললেন, (বারিরা) তুমি যদি তার কাছে আবার ফিরে যেতে! সে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি কি আমাকে হুকুম দিচ্ছেন? তিনি বললেন, আমি কেবল সুপারিশ করছি। সে বলল, তাকে দিয়ে আমার কোনো প্রয়োজন নেই। (বুখারি, হাদিস : ৫২৮৩)

বারিরা (রা.) ভালোভাবে জানতেন যে রাসুল (সা.)-এর আদেশ শিরোধার্য। যদি তিনি কোনো আদেশ করেন তাতে যদি আমার মন না-ও সায় দেয়, তবু তা মানা আবশ্যক। সে জন্য তিনি রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করে নেন যে এটা কি (তার সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক ঠিক রাখা) আপনার আদেশ, না পরামর্শ? যখন রাসুল (সা.) বললেন—না, এটা আমার পরামর্শ, তখন বারিরা বললেন, পরামর্শ গ্রহণ না করার ব্যাপারে আমার স্বাধীনতা রয়েছে। কারণ তার সঙ্গে আমার জীবন যাপন করা কষ্টকর। সে জন্য আমি তার থেকে পৃথক হতে চাচ্ছি।

এ ক্ষেত্রে যে পরামর্শ গ্রহণ করবে, তার প্রথমেই এ ব্যাপারে স্পষ্ট হওয়া চাই যে সে যার সঙ্গে পরামর্শ করছে তিনি কি পরামর্শ দিচ্ছেন, না আদেশ করছেন। যদি আদেশ করে থাকেন, তাহলে হুকুম পালন করা উচিত। যেমন—মা-বাবা, শিক্ষক, কিংবা কোনো সম্মানিত ব্যক্তি আদেশ করে থাকেন। আর যদি পরামর্শ হয়ে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে ভিন্ন কথা।

তেমনি যিনি পরামর্শ দেবেন তিনি এটা মাথায় রেখেই পরামর্শ দেবেন যে পরামর্শ মানা না মানা সম্পূর্ণ তার দায়িত্ব। আমার কাজ হচ্ছে তাকে কল্যাণকামিতার পরামর্শ দেওয়া। পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সে সম্পূর্ণ স্বাধীন। কিয়ামতের দিন এ ব্যাপারে আমাকে কোনো জিজ্ঞাসা করা হবে না। সে জন্য কেউ যদি পরামর্শ অনুযায়ী না চলে, তাহলে পরামর্শদাতার মন খারাপ না করাই উচিত।

Source: https://www.kalerkantho.com/print-edition/islamic-life/2022/10/19/1194567

Navigation

[0] Message Index

Go to full version