Religion & Belief (Alor Pothay) > Allah: My belief
শিরকের অন্তর্ভুক্ত এমন একটা গুনাহ মানুষ করছে
(1/1)
Khan Ehsanul Hoque:
শিরকের অন্তর্ভুক্ত এমন একটা গুনাহ মানুষ করছে
শিরকের অন্তর্ভুক্ত এমন একটা গুনাহ মানুষ করছে, আর সেটি দেখে অনেকেই তার জন্য আল্লাহর কাছে জান্নাত প্রার্থনা করছে। মানে এটা ভাবলেই কেমন যেন লাগে না? এর থেকে উদ্ভট কোনো কিছু আর খুব বেশি হয়তো দেখা যাবেনা। কিন্তু এমন ঘটনাই হরহামেশা দেখা যায় আমাদের দেশে। সুইসাইড যে শিরকের মতো একটা গুনাহ এটা মানুষ হয় জানেনা, আর নাহয় জানলেও মানতে চায়না। আবার যদি মেনেও থাকে তাহলে কাজ করে তার উল্টোটা।
ইসলামের একেবারেই মৌলিক একটা বিষয়- ঈমান এর অন্তর্ভুক্ত একটি বিষয় এটি। সুইসাইড করার চিন্তা করাও একটা মহাপাপ। জীবনে আর কোনো রাস্তা নাই, বেঁচে থাকার কোনো কারণ নাই, কষ্ট কখনো শেষ হবেনা ইত্যাদি চিন্তা করাই হলো আল্লাহর রহমতের প্রতি স্পষ্টভাবে অসন্তোষ্ট হওয়া, তাকদীরকে অবিশ্বাস করা। সে যদি আল্লাহর পথে থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে তারপরেও আল্লাহ তার তাকদীরে ভালো কিছু রাখবেন না এটা মনে করলে তো ঈমানই থাকেনা। কেউ যেমন নিজের ইচ্ছায় জন্ম নেয়নি, তেমনি নিজের ইচ্ছায় নিজের জীবনকে শেষও করতে পারবেনা। আমাদের মৃত্যু হবে মহান আল্লাহর নির্দেশে। এখানে কোনো অবস্থাতেই আমাদের নিজেদের জীবন শেষ করে দেওয়ার অধিকার নেই। যে অধিকার শুধুই মহান আল্লাহর, সেখানে নিজেকে সেই অধিকারের জায়গায় নিয়ে যাওয়া হলো স্পষ্টভাবে আল্লাহর সাথে নিজেকে শরীক করা। এটা অনুধাবন করতে কি কারোর আলেম বা মুফতি হওয়ার দরকার আছে? আর নিজে নিজেকে হত্যার ব্যাপারে চিন্তা করা তো দূরে থাক নিজের ক্ষতি করার অধিকারও কারোর নেই।
আল্লাহ বলেছেনঃ "তোমরা নিজেরা নিজেদের সর্বনাশ/ক্ষতি/ধ্বংস করো না" (সূরা আল বাকারা, আয়াত ১৯৫)
সুইসাইড করা ব্যক্তি যে কখনোই জান্নাতে যাবেনা সেটা সম্পর্কেও আল্লাহ ও তাঁর রাসূল(স) আমাদের নিশ্চিত করেছেন।
আল্লাহ বলেনঃ "নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করা ক্ষমা করবেন না।" (সূরা আন-নিসা, আয়াত ৪৮)
মহানবী(স) বলেছেনঃ "যে লোক পাহাড়ের উপর থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে, সে জাহান্নামের আগুনে পুড়বে, চিরকাল সে জাহান্নামের ভিতর ঐভাবে লাফিয়ে পড়তে থাকবে। যে লোক বিষপানে আত্মহত্যা করবে, তার বিষ জাহান্নামের আগুনের মধ্যে তার হাতে থাকবে, চিরকাল সে জাহান্নামের মধ্যে তা পান করতে থাকবে। যে লোক লোহার আঘাতে আত্মহত্যা করবে, জাহান্নামের আগুনের ভিতর সে লোহা তার হাতে থাকবে, চিরকাল সে তা দিয়ে নিজের পেটে আঘাত করতে থাকবে।" (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৭৭৮)
খেয়াল করে দেখুন মহানবী(স) এখানে স্পষ্ট ভাবে বলেছেন সুইসাইড করলে তাকে 'চিরকাল' জাহান্নামে থাকতে হবে।
আরেকটি হাদীসে মহানবী(স) বলেছেনঃ "তোমাদের পূর্ব যুগে জনৈক ব্যক্তি আঘাত পেয়েছিল, তাতে কাতর হয়ে পড়েছিল। অতঃপর সে একটি ছুরি হাতে নিল এবং তা দিয়ে সে তার হাতটি কেটে ফেলল। ফলে রক্ত আর বন্ধ হল না। শেষ পর্যন্ত সে মারা গেল। মহান আল্লাহ্ বললেন, আমার বান্দাটি নিজেই প্রাণ দেয়ার ব্যাপারে আমার হতে অগ্রগামী হল। কাজেই, আমি তার উপর জান্নাত হারাম করে দিলাম।" (সহিহ বুখারী, হাদীস নং ৩৪৬৩)
এই দুই হাদীসের মাধ্যমে এটা পরিষ্কার যে আত্মহত্যা করা ব্যক্তি কখনোই জান্নাতে যেতে পারবেনা। তাহলে মহান আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল(স) যেখানে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন সুইসাইড করা ব্যক্তি কখনো জান্নাতে যেতে পারবেনা সেখানে আপনি কীভাবে সুইসাইড করা কোনো ব্যক্তির জান্নাতে যাওয়ার জন্য দোয়া করবেন? বলবেন 'আল্লাহ তাকে জান্নাত নসিব করুক'!? এমন দোয়া করা মানে কী আল্লাহর বাণীকে অস্বীকার করা হয়ে যায়না? কূফর হয়ে যায়না? আপনি এমন ভয়াবহ একটি গুনাহ তো করছেনই, সাথে অন্যদের মাঝেও জঘন্য একটি ধারণা ছড়িয়ে দিচ্ছেন।
চিন্তা করে দেখেন আপনি একজন সুইসাইড করা ব্যক্তির জান্নাত নসিব করার পোস্ট করছেন। সেটা দেখে কী অন্য কেউ যার ঈমান ততোতা শক্ত না সে কি মিসগাইড হলো না?
এইভাবে আপনার মাধ্যমে প্ররোচিত হয়ে যখন কেউ সুইসাইড করছে তখন আপনি এর দায়ভার এড়িয়ে যেতে পারবেন? ধরুন আপনি সুইসাইড করা কোনো ব্যক্তির জন্য দোয়া করে ফেসবুকে পোস্ট দিলেন, আপনার ছোট বোন সেটি দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে কয়েকদিন পর সুইসাইড করলো। কেমন লাগছে এটা ভাবতে?
Source: https://www.facebook.com/groups/tuhinkhan
Navigation
[0] Message Index
Go to full version