Religion & Belief (Alor Pothay) > Islam

প্রাতিষ্ঠানিক কাজে ও সময়ে ফাঁকি দেওয়া পাপ

(1/1)

Badshah Mamun:
প্রাতিষ্ঠানিক কাজে ও সময়ে ফাঁকি দেওয়া পাপ

দায়িত্ববোধ ও কর্তব্যপরায়ণতা মানুষের সামগ্রিক জীবনের মৌলিক অনুষঙ্গ। ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজজীবনে যা কিছু সুন্দর ও সুশৃঙ্খল সব কিছুতেই আছে দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের একনিষ্ঠ ভূমিকা। অসুন্দর ও অনিয়মের পেছনে থাকে দায়িত্বহীনতা ও দায়িত্বশীলতার অভাব। আমাদের চারপাশের নানা দুর্ঘটনা ও ক্ষতির পেছনে দায়িত্বের প্রতি অবহেলার বিষয়টি জড়িত থাকে অনেকাংশে। একজন মুমিন কখনো স্বেচ্ছায় কারো ক্ষতির কারণ হতে পারে না। তাই পারিবারিক, সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক যেকোনো অর্পিত দায়িত্ব ও প্রতিশ্রুতির প্রতি মুমিনকে সজাগ ও সচেতন থাকতে হয় সব সময়। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে সফল মুমিনদের পরিচয় দিতে গিয়ে বলেন, ‘যারা নিজেদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে।’ (সুরা: মুমিনুন, আয়াত : ৮)

দায়িত্বে অবহেলা আমানতের খেয়ানত
আমানত একটি ব্যাপক শব্দ। মানুষের পারস্পরিক অধিকারসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোও আমানতের অন্তর্ভুক্ত। একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির কাছে তার ওপর অর্পিত নির্ধারিত সময়, স্থান ও দায়িত্ব পালনের উপকরণ সামাগ্রিক আমানত হিসেবে গণ্য। দায়িত্বে অবহেলার কারণে এর কোনো কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হলে এর দায় তাকেই বহন করতে হবে। ইসলামে আমানত রক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন, তোমরা আমানতগুলো প্রাপকদের কাছে পৌঁছে দাও। আর যখন মানুষের বিচার-মীমাংসা করবে, তখন ন্যায়ভিত্তিক মীমাংসা করো। আল্লাহ তোমাদের সদুপদেশ দান করেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ শ্রবণকারী, দর্শনকারী।’ (সুরা: নিসা, আয়াত : ৫৮) নবীজি (সা.) বলেন, ‘যে আমানত রক্ষা করে না তার ঈমানের দাবি যথাযথ নয় এবং যে অঙ্গীকার পূরণ করে না তার দ্বীন যথাযথ নয়।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১৩১৯৯)

দায়িত্ব অবহেলার পরকালীন জবাবদিহিতা
পরকালে সব বিষয়েরই জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। দায়িত্বের বিষয়টি নবীজি (সা.) বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। দায়িত্বের জবাবদিহিতা সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক করেছেন তিনি। তাই দায়িত্বসংক্রান্ত কোনো ত্রুটি ও অবহেলা কাম্য নয়। দায়িত্বভেদে দায়িত্বের জবাবদিহিতা কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। আর কোনো দায়িত্বের সঙ্গে যদি লাখ মানুষের স্বার্থ জড়িত থাকে তাহলে তার জবাবদিহিতা হবে কঠোর ও পরিণতি হবে ভয়াবহ। নবীজি (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যককে তার দায়িত্বশীলতার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৮৪৪)

প্রাতিষ্ঠানিক কাজে ও সময়ে ফাঁকি দেওয়া পাপ
প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তির সময় ও কাজের সঙ্গে হাজারো মানুষের সময় ও স্বার্থ জড়িত থাকে। তাই প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকর্তাদের সময়-সচেতনতা সবচেয়ে বেশি জরুরি। কোনো প্রতিষ্ঠানে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়া মানে সে প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত সময় ও কাজের সঙ্গে নিজেকে চুক্তিবদ্ধ করে নেওয়া। একজন প্রকৃত মুমিনের ক্ষেত্রে চুক্তি ও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ কাম্য নয়। এটা খেয়ানত ও পাপ। আমানতের খেয়ানতকারীকে নবীজি (সা.) মুনাফিক সাব্যস্ত করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘মুনাফিকের লক্ষণ তিনটি; তা হলো—মিথ্যা কথা বলা, প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা ও আমানতের খেয়ানত করা’ (বুখারি, হাদিস : ৩৩)

আল্লাহতালা আমাদের নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে সব ধরনের দায়িত্ব পালনের তৌফিক দান করুন।

মুফতি আব্দুল্লাহ আল ফুআদ

Source: https://www.kalerkantho.com/print-edition/islamic-life/2023/04/25/1273862

Navigation

[0] Message Index

Go to full version