ক্লাউড কম্পিউটিং (Cloud Computing) by Humayun Kabir Polash

Author Topic: ক্লাউড কম্পিউটিং (Cloud Computing) by Humayun Kabir Polash  (Read 1457 times)

Offline Humayun Kabir Polash

  • Newbie
  • *
  • Posts: 18
  • MD.HUMAYUN KABIR
    • View Profile
    • www.hkpolash.com
ক্লাউড কম্পিউটিং (Cloud Computing)


সফটওয়্যারের জগতে ক্লাউড কম্পিউটিং (Cloud Computing) একটি পরিচিত নাম তবে  এর সঙ্গে ক্লাউড বা মেঘের কোনো সম্পর্ক নেই। ক্লাউড কম্পিউটিং (Cloud Computing) হচ্ছে কম্পিউটার রিসোর্স যেমন- কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার, নেটওয়ার্ক ডিভাইস প্রভৃতি ব্যবহার করে কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে (বিশেষত ইন্টারনেট) কোনো সার্ভিস বা সেবা প্রদান করা। উদাহারন: AWS, Azure, Google Cloud, Dropbox ইত্যাদি। 

ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের মূল সুবিধা হচ্ছে, আমাদেরকে নিজেদের হার্ডওয়্যার কিনতে হয় না, এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেটি মেইনটেইন করার কাজটিও আমাদের করতে হয় না। বরং একটি ফি-এর বিনিময়ে ক্লাউড সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান কাজটি করে থাকে।ক্লাউড কমপিউটিং হচ্ছে এমন এক কমপিউটিং সিস্টেম যেখানে আপনার কম্পিউটার নেই অথচ আপনি কমপিউটিং করতে পারবেন। অর্থাৎ ক্লাউড কম্পিউটিং এর ক্ষেত্রে আপনার কম্পিউটারের ফিজিক্যাল মেশিনটি আপনার টেবিলে থাকবে না। সেটি দুনিয়ার অন্য যেকোন প্রান্তে থাকতে পারে। আর সেই কম্পিউটারকে আপনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ ও কমপিউটিং করতে পারবেন।


কম্পিউটারের লাইন ক্লাউড কম্পিউটিংয়ে ব্যবহৃত প্রযুক্তিগত ধারণা ভার্চুয়ালাইজেশনের জন্ম সেই ষাটের দশকে। সে সময় কোনো একটি কোম্পানি Multics নামের একটি অপারেটিং সিস্টেম বানানোর পরিকল্পনা করেছিলো, প্রাথমিক দিকে ধারণাটি ছিল এমন, প্রতি শহরে একটি বা দুইটি মেগা কম্পিউটার থাকবে, আর ইলেকট্রিকের বা ডিশের লাইন নেয়ার মতো সবাই সেখান থেকেই কম্পিউটারের লাইন নিবে। প্রত্যেকে ঘরে শুধু থাকবে টিভির মতো একটি যন্ত্র ও কীবোর্ড। মূলত সেযুগে নেটওয়ার্ক ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার কারণে এবং পার্সোনাল কম্পিউটারের দাম কমে যাবার ফলে “কম্পিউটারের লাইন” নেয়ার প্রয়োজনীয়তা কমে যায়। ফলে সে সময় ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের প্রাথমিক পরিকল্পনা সফল হয়নি l

বর্তমান বিশ্বে মানুষের চেয়ে মোবাইলের সংখ্যা বেশি! অবশ্য এর অনেকগুলো যৌক্তিক কারণও আছে। আপনি ফোনে ফটো তুলছেন, অথচ সেটা অটোমেটিক্যালি চলে যাচ্ছে আপনার ক্লাউড স্টোরেজে! শুধু ছবি না, আপনার যেকোনো প্রয়োজনীয় ফাইল আপনি আপলোড করে রাখতে পারেন আপনার ক্লাউড সার্ভারে। এর ফলে কোন কারনে যদি আপনার ফোনটি হারিয়ে ও যায়, তবুও আপনি ক্লাউড সার্ভার থেকে আপনার সকল প্রয়োজনীয় ডেটা ফিরে পেতে পারেন। আমরা কিংবা আমাদের পরিচিত কেউ যদি yahoo, gmail ব্যবহার করে কোনাে ই-মেইল পাঠিয়ে থাকি তাহলে আসলে ক্লাউড কম্পিউটিং ব্যবহার করে সেটি করা হয়েছে। কিংবা যদি কেউ সার্চ ইঞ্জিন গুগলে কোনাে তথ্য খুঁজে দেখ, তাহলেও সেটিতেও ক্লাউড কম্পিউটিং ব্যবহার করা হয়েছে। সুতরাং আমরা বলতে পারি, ইন্টারনেটে বা ওয়েবে সংযুক্ত হয়ে কিছু গ্লোবাল সুবিধা ভােগ করার যে পদ্ধতি তাই হচ্ছে ক্লাউড কম্পিউটিং। এটি একটি বিশেষ পরিষেবা। এখানে 'ক্লাউড’ বলতে দূরবর্তী কোনাে শক্তিশালী সার্ভার কম্পিউটারকে বােঝানাে হয়। বিশ্বের যেকোনাে প্রান্ত থেকে ইন্টারনেট সংযুক্ত কম্পিউটারের মাধ্যমে l ক্লাউড প্রদত্ত সেবা সমূহ ভোগ করা যায়। ক্লাউড কম্পিউটিং আজকের দিনে খুব গুরুত্বপূর্ণ। উদারহণস্বরূপ বলা যেতে পারে, অনলাইন ব্যাকআপ সার্ভিস, সামাজিক যােগাযোেগ সার্ভিস এবং পার্সোনাল ডেটা সার্ভিস। ক্লাউড কম্পিউটিং-এর জন্য ইন্টারনেট সংযােগ অপরিহার্য।


ক্লাউড কম্পিউটিং এর ইতিহাস (History of Cloud Computing)ঃ  ১৯৬০ সালে জন ম্যাক ক্যার্থি ক্লাউড কম্পিউটিং সম্পর্কে মতামত দেন এভাবে, “কম্পিউটেশন একদিন সংগঠিত হবে পাবলিক ইউটিলিটি হিসেবে।” তবে প্রকৃতপক্ষে  এ ধারণা ভিত্তি লাভ করেছে ১৯৯০ সালের দিকে। নব্বই এর দশকের শেষে বড় বড় কোম্পানিরা ইন্টারনেটে ব্যবসার আশায় বিশাল বিনিয়োগ করে ডেটা সেন্টার আর নেটওয়ার্কে। ২০০০ সাল নাগাদ হঠাৎ করে পরা ব্যবসাটাই ধ্বসে যায়, ফলে অনেক দেউলিয়া হয়ে পড়ে। তাদের ডেটা সেন্টারের মাত্র ৫% এর মতো ব্যবহৃত হচ্ছিল এবং বাকিটা সময়ে সিস্টেম অলস হয়ে বসে থাকত। ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘন্টা হিসেবে ভাড়া দিয়ে অলস বসে থাকা কম্পিটারগুলোকে কাজে লাগানোর বুদ্ধি থেকেই শুরু হয় ক্লাউড কম্পিউটিং যুগের। ২০০৫ সাল থেকে আমাজন ডট কম ইলাস্টিক কম্পিউট ক্লাউড বা EC2 শুরু করে। এর পর আর পেছনে তাকাতে হয়নি ক্লাউড কম্পিউটিংকে। আইবিএম, মাইক্রোসফট, গুগল থেকে শুরু করে প্রচুর কোম্পানি এখন ক্লাউড কম্পিউটিং ব্যবসার সাথে জড়িত।

ক্লাউড কম্পিউটিং এর উদাহরণ
উদাহরণ-১: আপনি নিশ্চয় জিমেইল ব্যবহার করেন? আপনার জিমেইলে যদি কেউ মেসেজ পাঠায় সেটা কি সরাসরি আপনার কম্পিউটারে চলে আসে? নাকি আপনাকে ইন্টারনেট কানেকশন ব্যাবহার করে জিমেইলে লগইন করে সেই মেসেজ দেখতে হয়? এই মেসেজগুলো তো আপনার কম্পিউটারে নেই। তাহলে আপনি কোথায় থেকে মেসেজগুলো দেখতে পান? উত্তর হচ্ছে গুগলের সার্ভার কম্পিউটার.! গুগলের সার্ভার কম্পিউটারে আপনার সকল মেসেজ সংরক্ষণ করা থাকে। আর সেগুলো আপনাকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। তারমানে আপনি ক্লাউড কমপিউটিং এর মাধ্যমে আপনার জিমেইল নিয়ন্ত্রণ করেন।
উদাহরণ-২: আপনি নিশ্চয় আপনাার মোবাইলে বা কম্পিউটারে ইউটিউব ভিডিও দেখেন? সে ভিডিও গুলো কি আপনার মোবাইল বা কম্পিউটারে আছে? যেহেতুুুু নেই তাহলে সেগুলো কোথায় আছে? উত্তর youtube-এর সার্ভার কম্পিউটারে। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় গুগলের সার্ভার কম্পিউটার রয়েছে। সেসব জায়গায় এসকল তথ্য সংরক্ষষণ করা থাকে। আর সেগুলো আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেখতে বা ব্যবহার করতে পারি। এটি হচ্ছে ক্লাউড কমপিউটিং। যেখানে আপনার কাছে কোনো তথ্য নেই অথচ আপনি সে তথ্যগুলো ইন্টারনেট ব্যবহার করে অ্যাক্সেস করতেে পারেন।ধরুন আমি আপনার ফোনে একটি গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ পাঠালাম যেটি আপনার মোবাইলের লোকাল স্টোরেজে সংরক্ষণ করা থাকে। ভুলে আপনি মোবাইলটি বাসায় ফেলে অফিসে চলে আসলেন। এবার আপনি সেই মেসেজটি কিভাবে এক্সেস করবেন? অবশ্যই আপনাকে বাসায় যে ফোনটি নিয়ে আসতে হবে। কিন্তু আমি যদি ম্যাসেজটি আপনার মেসেঞ্জারে পাঠাতাম? তাহলে কি আপনার এত কষ্ট করা লাগতো? আশেপাশের কারো ফোন নিয়ে আপনি আপনার ফেসবুক আইডি লগইন করে মেসেজটি অ্যাক্সেস করতে পারতেন। কারণ ফেসবুকে পাঠানো মেসেজটি আপনার ডিভাইসে সেভ হয় না। সেটি সেভ হয় ফেসবুকের সার্ভার কম্পিউটারে। তাই আপনি ইন্টারনেট ব্যবহার করে আপনার ফেসবুকের যেকোনো তথ্য যেখানে খুশি সেখানে থেকে দেখতে পারেন। মূলত ক্লাউড কমপিউটিং একটি পোর্টেবল, ম্যানেজড এবং অন ডিমান্ড সিস্টেম। আপনি চাইলে আপনার কমপিউটিং করা তথ্য গুলো পাবলিক প্রাইভেট করে রাখতে পারেন.!

ক্লাউড কম্পিউটিং এর সমপ্রসারণ
অ্যামাজন তাদের ওয়েব সার্ভিসের মাধ্যমে ইউটিলিটি কম্পিউটিং এর ভিত্তিতে ২০০৫ সালে সার্ভিস শুরু করে। ২০০৭ সালে গুগল এবং আইবিএম যৌথভাবে কিছু সংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে সঙ্গে নিয়ে ক্লাউড কম্পিউটিং গবেষণা প্রজেক্ট শুরু করে এবং ২০০৮ সালের মাঝামাঝি এটি একটা পর্যায়ে চলে আসে। ২০০৯ সালের শুরুর দিক হতে বিশ্বের বড় বড় আইটি প্রতিষ্ঠানে ক্লাউড কম্পিউটিং নিয়ে তাদের কার্যক্রমে গতিশীলতা আনতে থাকে। এক সমীক্ষায় লক্ষ্য করা গেছে, যে কোনো প্রতিষ্ঠান তাদের আইটি বাজেটে প্রায় ১৮ শতাংশ ব্যয় কমিয়ে আনতে পারে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে। তাছাড়া ডেটা সেন্টারসমূহ তাদের ব্যয়ের ১৬ শতাংশ কমিয়ে আনতে সক্ষম হয় এই প্রযুক্তির প্রসারে। 

ক্লাউড কম্পিউটিং এর প্রকারভেদ:
ভিন্ন ভিন্ন দিক বিবেচনায় ক্লাউড কমপিউটিং নানান রকমের হয়ে থাকে। তবে টেকনিক্যাল দিক থেকে ক্লাউড কমপিউটিং কে চার ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে।
Infrastructure as a Service (IaaS)
Software as a Service (SaaS)
Platform as a Service (PaaS)
Network as a Service(NaaS):
Infrastructure as a Service (IaaS)

এই সিস্টেমে পুরা কম্পিউটারটি আপনার তত্ত্বাবধানে থাকবে। এটা অনেকটা আপনার নিজস্ব কম্পিউটারের মতোই। আপনি যখন যা ইচ্ছা তাই করতে পারবেন। ইচ্ছে হলে গেম খেলতে পারবেন, বিভিন্ন সফটওয়্যার ইন্সটল করতে পারবেন। Infrastructure as a Service (IaaS) এর উদাহরণ হল: Google drive, Dropbox, bigcommerce, slap ইত্যাদি। এখানে ভাড়া দেয়া হয় অবকাঠামো। মানে সার্ভারের উপরে যে ভার্চুয়াল মেশিন চালানো হয়, সেগুলোই ক্লায়েন্টরা ভাড়া নেয়। সেই মেশিনে ক্লায়েন্ট নিজের ইচ্ছামতো সফটওয়্যার বসাতে পারে। আমাজন ইলাস্টিক কম্পিউটিং ক্লাউড (EC2) এর উদাহরণ। (EC2)-তে ডেটা সেন্টারের প্রতি সার্ভারে ১ থেকে ৮টি ভার্চুয়াল মেশিন চলে, ক্লায়েন্টরা এইগুলো ভাড়া নেয়। ভার্চুয়াল মেশিনে নিজের ইচ্ছামতো উইন্ডোজ বা লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম বসানো যায়। ব্যাপারটা অনেকটা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে একটি কম্পিউটার দূর থেকে চালানোর মতো। কোন ধরনের সফটওয়্যার বসানো হবে, কীভাবে কাজ চালানো হবে, কম্পিউটারগুলো কীভাবে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করবে, সবকিছু ব্যবহারকারী নিজের ইচ্ছামত নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

Software as a Service (SaaS)
এই সিস্টেমে প্রোভাইডার আপনাকে পুরো কম্পিউটার সিস্টেম দিয়ে দেবে না। বরং সেখান থেকে আপনার প্রয়োজনীয় দু’একটি সফটওয়্যার রান করানোর সুযোগ দেওয়া হবে। উদাহরণস্বরূপ: আপনি যদি জিমেইল ব্যবহার করেন, তবে গুগলের যে সার্ভারে জিমেইল সফটওয়্যার টি রয়েছে, সেই সার্ভারের কম্পিউটার পুরোটাই আপনাকে নিয়ন্ত্রণ দেওয়া হয় না। বরং শুধুমাত্র সার্ভারে থাকা জিমেইল অ্যাপটি ব্যবহার করার সুযোগ দিয়ে থাকে। আবার গুগলের বিভিন্ন সেবা, যেমন সার্চ ইঞ্জিন, জিমেইল, গুগল ড্রাইভ ইত্যাদিও সফটওয়্যার এজ আ সার্ভিস বা সংক্ষেপে স্যাস (SaaS)-এর উদাহরণ। আবার বিভিন্ন ডেটাবেজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানও এই মডেলে তাদের ডেটাবেজ ব্যবহারের সুবিধা দিয়ে থাকে।পৃথিবীতে অনেক প্রতিষ্ঠানই ক্লাউডভিত্তিক সেবা প্রদান করে। তাদের মধ্য, অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিস, গুগল ক্লাউড প্ল্যাটফর্ম, মাইক্রোসফট , টি ক্লাউডভিত্তিক এমন একটা সেবা, যেখানে ইউজার ক্লাউডের উপরে চলছে এমন সফটওয়্যার ব্যবহার করছে। উদাহরণ হিসেবে Google Docs এর কথাই ধরা যাক। ইন্টারনেট ও ওয়েব ব্রাউজার ব্যবহার করে Google Docs দিয়ে মাইক্রোসফট অফিসের প্রায় সব কাজই করা যায় (যেমন- ডকুমেন্ট,  স্প্রেডশীট, প্রেজেন্টেশন)। গুগল এই অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারটি আমাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে। সফটওয়্যারটি চলছে গুগলের ক্লাউডের উপরে। এতে সুবিধা হলো, ব্যবহারকারীকে সিপিইউ বা স্টোরেজের অবস্থান, কনফিগারেশন প্রভৃতি জানা কিংবা রক্ষণাবেক্ষণ করার প্রয়োজন নেই। তাদের হাতে রেডিমেড সফটওয়্যার এবং সার্ভিস পৌঁছে যাচ্ছে। সফটওয়্যার কোথায়, কীভাবে চলছে তা গুগলের দায়িত্ব।
Platform as a Service (PaaS):এই সিস্টেমে প্রোভাইডার আপনাকে হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার প্রদান করবে যে আপনাকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যবহার করতে হবে। যেমন: বিভিন্ন ওয়েব হোস্টিং সার্ভিস Platform as a Service (PaaS) এর অন্তর্ভুক্ত। তাছাড়া আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটে ই-কমার্স ইউজ করেন সেক্ষেত্রে আপনার ই-কমার্স ওয়েবসাইট এর কার্ট, চেক আউট পেমেন্ট মার্চেন্ট সার্ভার থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

নেটওয়ার্ক সেবা (Network as a Service-NaaS):
এই সেবাটি নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীকে আন্তঃক্লাউড নেটওয়ার্ক বা ট্রান্সপোর্ট কানেকটিভিটি সুবিধা প্রদান করে। এটি ব্যবহৃত নেটওয়ার্ক ও কম্পিউটার রিসোর্স অনুযায়ী ব্যবহারকারীকে রিসোর্স ব্যবহারের সর্বোচ্চ সুবিধা নিশ্চিত করে। এই সার্ভিসের বিভিন্ন মডেলের মধ্যে VPN (Virtual Private Network), BoD (Bandwidth on Demand), Mobile Network Virtualization উল্লেখযোগ্য।


বিভিন্ন ধরনের ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি মডেল হচ্ছে-
পাবলিক ক্লাউড (Public Cloud): পাবলিক ক্লাউড হলো এমন ক্লাউড, যা সবার জন্য উন্মুক্ত। অর্থাৎ যে টাকা দিবে, সেই সার্ভিস পাবে, এমন ক্লাউডকে বলা হয় পাবলিক ক্লাউড। যেমন- আমাজনের EC2। এসব ক্লাউডে সুবিধা হলো যে কেউ এর সেবা নিতে পারে। আর অসুবিধাটা হলো একই জায়গায় একাধিক ক্লায়েন্ট ব্যবহারের ফলে নিরাপত্তার সমস্যা হতে পারে।

কমিউনিটি ক্লাউড (Community Cloud): কমিউনিটি ক্লাউডও শেয়ার করা হয় অনেকের মাঝে, পাবলিক ক্লাউডের মতোই যে টাকা দেয়, সেই সার্ভিস পায়। তবে পার্থক্য হলো একটি ক্ষুদ্রতর কমিউনিটির লোকজনই এর সুবিধা নিতে পারে। ধরা যাক, ঢাকা সেনানিবাসে শুধু অফিসার ও সৈনিকদের জন্য একটা ক্লাউড বসানো হলো, তাহলে কেবল অফিসার ও সৈনিকরাই এর সার্ভিস নিতে পারবে। তখন এটি  পাবলিক ক্লাউড না হয়ে হবে প্রাইভেট ক্লাউড।  সুবিধা হলো, কমিউনিটির মধ্যে ইউজার সীমাবদ্ধ থাকে বলে এখানে সিকিউরিটির কোনো সমস্যা নেই। আর অসুবিধা হলো এখানে ক্লায়েন্টের সংখ্যা সীমিত বলে খরচ বেশি পড়ে।
প্রাইভেট ক্লাউড (Private Cloud): প্রাইভেট ক্লাউডকে ক্লাউড বলা চলে কিনা এই নিয়ে মতভেদ আছে। এই রকম ক্লাউড হলো কোনো বড় সংস্থার নিজের নানা সার্ভিস চালাবার জন্য নিজের ডেটা সেন্টারকেই ক্লাউড মডেলে ব্যবহার করা। সমস্যা হলো, এতে খরচ অনেক বেশি পড়ে, নিজস্ব ডেটা সেন্টার বসাতে হচ্ছে এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নিজস্ব জনবল রাখার প্রয়োজন পড়ে। তবে বড় প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এর সুবিধা হচ্ছে, কোনো বড় কোম্পানিতে ১০টা ডিপার্টমেন্ট থাকলে ১০টা ডেটা সেন্টার না বসিয়ে একটাকেই ক্লাউড মডেলে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করা যাচ্ছে। ধরা যাক, বাংলাদেশ সরকার তার সব মন্ত্রণালয়ের কম্পিউটার ব্যবহারের খরচ কমাতে চায়। সে ক্ষেত্রে একটা সরকারি প্রাইভেট ক্লাউড ভালো সমাধান হতে পারে।

হাইব্রিড ক্লাউড (Hybrid Cloud): হাইব্রিড ক্লাউড হলো পাবলিক আর প্রাইভেটের সংমিশ্রণ। এখানে প্রাইভেট ক্লাউড দিয়ে প্রাথমিক চাহিদা মেটানো হয়, আর প্রাইভেট ক্লাউডের ধারণক্ষমতা অতিক্রান্ত হয়ে গেলে পাবলিক ক্লাউডের সাহায্য নেয়া হয়। পাবলিক ক্লাউডের চেয়ে হাইব্রিড ক্লাউডের খরচ বেশি, কারণ স্থানীয়ভাবে অনেক স্থাপনা বানাতেই হচ্ছে। তবে স্থানীয়ভাবে কাজ করিয়ে নেয়ার সুবিধাগুলো থাকছে, তার সাথে অতিরিক্ত চাহিদা মেটানোরও একটা ব্যবস্থা এখানে থাকছে পাবলিক ক্লাউডে পাঠানোর মাধ্যমে।
ক্লাউড কম্পিউটিং এর সুবিধা
আপনি যদি অনলাইন ভিত্তিক কোন বিজনেস রান করতে চান, তবে ক্লাউড কম্পিউটিং সিস্টেম আপনার খরচ এবং ঝামেলা উভয়ই কমিয়ে দিতে সাহায্য করবে। আপনার বিজনেস যদি ছোট হয় সে ক্ষেত্রে অনেক কম টাকায় আপনি ক্লাউড কম্পিউটার ভাড়া নিয়ে চালাতে পারবেন। উপরন্তু নিজের প্রয়োজনীয় সিস্টেম ইন্সটল করে আপনার অফিসে নিজস্ব কম্পিউটার ব্যবহার করা অনেক ব্যয়বহুল হয়ে যাবে। তাই যেকোনো বিজনেসের শুরুর জন্য ক্লাউড কমপিউটিং আপনার ব্যয় অনেকটাই কমিয়ে দিতে সক্ষম। ক্লাউড কমপিউটিং এর আরো কয়েকটি সুবিধা হল, ক্লাউড কমপিউটিং একটি পোর্টেবল, ম্যানেজড এবং অন ডিমান্ড সিস্টেম। আপনি চাইলে আপনার কমপিউটিং করা তথ্য গুলো পাবলিক প্রাইভেট করে রাখতে পারেন.! আপনি যদি আপনার পিসিতে কোন পাওয়ারফুল কাজ করতে চান তাহলে আপনার পিসি’ও পাওয়ারফুল হতে হবে। অর্থাৎ আপনি ঠিক যেমন কাজ করতে চান আপনাকে ঠিক তেমনভাবেই আপনার পিসি বিল্ড করতে হবে।
আপনি যদি আপনার পিসিতে ফটোশপ ইন্সটল করতে চান তাহলে আপনাকে এমন পিসি বিল্ড করতে হবে যাতে ফটোশপ খুব স্মুথলি রান করে। তা না হলে আপনি ভালোমতো ফটো এডিট করতে পারবেন না। কিন্তু আপনি যদি ফটো এডিটিং সাইট fotor.com এগিয়ে ফটো এডিটিং করেন তাহলে কিন্তু আপনার ইন্টারনেট কানেকশন থাকলেই হচ্ছে। এখানে আপনার ফটো এডিট করার জন্য কোন ধরনের হার্ডওয়ার সফটওয়্যার কিচ্ছু লাগবেনা। প্রফেশনাল ফটো এডিট করার জন্য যে সকল হার্ডওয়ার সফটওয়্যার প্রয়োজন তার সবকিছুই fotor.com সার্ভারে ইন্সটল করা আছে। মূলত এটি হচ্ছে ম্যানেজড সিস্টেম। আপনার প্রয়োজন মত কারো সার্ভারে কানেক্ট হোন আর প্রয়োজনীয় সুবিধা নিন।
অন ডিমান্ড (যখন যতটুকু দরকার)
ধরুন আপনার 4gb র‍্যাম এর একটি কম্পিউটার রয়েছে। সেটা দিয়ে আপনি আরামসে মুভি দেখতে পারেন, গান শুনতে পারেন। তাছাড়া ওয়েব ব্রাউজিং করতে পারেন। কিন্তু হঠাৎ যদি আপনার ভিডিও এডিটিং করার প্রয়োজন হয় সে ক্ষেত্রে আপনি কি করবেন? ভালো মানের ভিডিও এডিটিং এর জন্য 4gb RAM পর্যাপ্ত নয়। ভিডিও এডিটিং এর জন্য 8 জিবি RAM আপনার থাকায় লাগবে। তাহলে কি আপনি দু একটা ভিডিও এডিট করার জন্য 8gb RAM লাগাবেন! অবশ্যই এটা কোন ভাল সমাধান নয়। যেখানে আপনার 4gb দিয়ে হচ্ছে, সে অবস্থায় হঠাৎ দুই একটা কাজ করার জন্য 8gb RAM লাগানোর মানে হয় না।
ঠিক এই সমস্যার সমাধান টিও আপনি পাবেন ক্লাউড কমপিউটিং সিস্টেমে। ক্লাউড কম্পিউটার সিস্টেমে আপনি আপনার প্রয়োজন মত রিসোর্স ভাড়া নিতে পারবেন। আবার আপনি যদি অলরেডি কম মানের একটি রিসোর্স ব্যবহার করে থাকেন, তবে মাত্র কয়েকটি ক্লিকের মাধ্যমে আপনি আপনার রিসোর্স কয়েকদিনের জন্য বা কয়েক মাসের জন্য বাড়িয়ে নিতে পারবেন। অর্থাৎ আপনার প্রয়োজন মত আপনি রিসোর্স বাড়িয়ে বা কমিয়ে নিতে পারবেন। আপনার খরচ অনেকটাই কমে যাবে। কারণ ক্লাউড সিস্টেম পে এজ ইউ গো সিস্টেমে (pay-as-you-go) কাজ করে। এককথায় ক্লাউড কমপিউটিং হচ্ছে আপনার মোবাইল ফোনের বিল এর মত। ইচ্ছা হলে বেশি খরচ করবেন আর ইচ্ছা হলে কম খরচ করবেন। আপনি যখন যা খরচ করবেন আপনার তাই বিল আসবে।

প্রাইভেট/পাবলিক কম্পিউটিং
আপনার নিজের কম্পিউটার যেমন আপনি না চাইলে কেউ এক্সেস করতে পারবেনা। তেমনি ক্লাউড কমপিউটিং এর প্রাইভেট কম্পিউটিং সিস্টেমে আপনার ক্লাউড সার্ভিস গুলো আপনি না চাইলে বাইরের কেউ এক্সেস করতে পারবে না। ক্লাউড প্রোভাইডার অ্যামাজন পাবলিক এবং প্রাইভেট দুই ধরনের ক্লাউড সিস্টেম প্রদান করে থাকে। প্রাইভেট ক্লাউড সিস্টেম পাবলিক ক্লাউড সিস্টেম এর মতই কাজ করে। শুধু পার্থক্য হচ্ছে, প্রাইভেট ক্লাউডে আপনি শুধুমাত্র নির্দিষ্ট এরিয়ার আন্ডারে অ্যাক্সেস করতে পারবেন।

ক্লাউড কম্পিউটিং এর অসুবিধা
ক্লাউড কম্পিউটিং এর এতসব সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও রয়েছে। অসুবিধা গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় অসুবিধা টি হল, আপনাকে দিনের পর দিন এর বিল দিয়ে যেতে হবে। আপনি যদি কষ্ট করে একবার বেশি টাকা খরচ করে নিজের অফিসে বা প্রতিষ্ঠান একটি কম্পিউটার সার্ভার তৈরি করে ফেলেন এবং প্রয়োজনীয় সকল সফটওয়্যার ইন্সটল করে নেন তাহলে আপনার কাজ শেষ। এরপর আর তেমন কোনো খরচ করতে হবে না। অপরদিকে ক্লাউড কম্পিউটিং এর ক্ষেত্রে আপনি যদি বছরের পর বছর শেষে বা গ্রহণ করে থাকেন তাহলে আপনাকে বিল দিয়ে যেতেই হবে। তাই আপনি যদি অনেক বেশি সময় নিয়ে কাজ করতে চান তাহলে ক্লাউড কমপিউটিং আপনার খরচ কমানোর পরিবর্তে বরং বাড়িয়ে দিবে।

ব্যবহারঃ
ক্লাউড কম্পিউটিং আজকের দিনে খুব গুরুত্বপূর্ণ। গুগল এর বিভিন্ন প্রয়োগ - যেমন জিমেইল, পিকাসা থেকে শুরু করে পৃথিবীর আবহাওয়া বা কোনো দেশের আদমশুমারির মতো বিশাল তথ্য ব্যবস্থাপনা, ব্যবসায়িক, বৈজ্ঞানিক ইত্যাদি নানান ক্ষেত্রে এর অপরিসীম ব্যবহার। ২০০৫-৬ সাল থেকে শুরু হয় আমাজন ডট কমের ইলাস্টিক কম্পিউটিং ক্লাউড বা (EC2)। এর পর থেকে আইবিএম, মাইক্রোসফট, গুগল থেকে শুরু করে অনেক কোম্পানি ক্লাউড কম্পিউটিং ব্যবসার সাথে জড়িত হয়ে পড়ে। গুগল, মাইক্রোসফট, ফেসবুক প্রভৃতির মতো বৃহৎ সার্ভিস দিতে কিছুদিন আগ পর্যন্ত প্রয়োজন হতো বড় একটা ক্লাস্টার বা ডেটা সেন্টার। কিন্তু বর্তমানে শুরুতে ক্লায়েন্ট বা ব্যবহারকারী কম থাকলে আমাজনের মতো প্রতিষ্ঠান থেকে ২/১টা সার্ভার ভাড়া নিলেই চলবে। ক্লায়েন্ট বাড়লে ক্লাউড থেকে বেশি সার্ভার ঘণ্টা হিসেবে ভাড়া  নেয়া যাবে। বিশেষ কোনো সময়ে কিংবা রাতে কম ব্যবহারকারী থাকলে সিস্টেম সেট-আপ করে সার্ভারের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট টুইটারের যাত্রা শুরু হয়েছিল আমাজন ডট কমের ক্লাউড ব্যবহার করে। সর্বোপরি যোগাযোগ ক্ষেত্রে এটি চিকিৎসা ও মানবকল্যাণেও এটি এক অনন্য সঙ্গী। এক কথায় ক্লাউড কম্পিউটিং এনেছে অনন্য বিপ্লব।
বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে অবশ্য ক্লাউডের সুবিধা পেতে হলে কিছু সমস্যা এখনো রয়েছে। যেমন- ক্রেডিট কার্ড ব্যবস্থা সহজলভ্য না হওয়া, ইলেকট্রনিক মানি ট্রান্সফারের  ব্যবস্থা না থাকা কিংবা উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ না থাকা প্রভৃতি। ক্লাউড ডেটা সেন্টার বিদেশে থাকতে হবে এমন কথা নেই। কম খরচে কম্পিউটার কিনে বাংলাদেশেই ক্লাউড ডেটা সেন্টার বানানো সম্ভব। এতে সাবমেরিন ক্যাবল কাটা যাওয়ার আশঙ্কা নেই কিংবা পেমেন্ট লেনদেনের ঝামেলা বা ঝুঁকি নেই


তথ সূ ত্রঃ ১।  ‎উইকিপিডিয়া ২. Pro-jukti.com ৩. Subeen.com ৪. Edupointbd.com ৫. Banglate.co ৬. netkotha.com











« Last Edit: June 06, 2023, 01:38:54 PM by Humayun Kabir Polash »
Humayun Kabir
 Officer
Daffodil International University
Cell:+8801847140031