দুপুরে খাওয়া-দাওয়া শেষেই একরাশ ক্লান্তি আমাদের গ্রাস করে। মাথার ওপর সূর্যের খাড়া কিরণ এসে লাগে। একটু বিশ্রাম চায় আমাদের শরীর-মন। বাসায় থাকলে বিছানায় শরীর এলিয়ে দিতে মন চায়। আর কর্মস্থলে থাকলে চেয়ারে হেলান দিয়ে খানিকক্ষণ চোখ বুজে দিনের সংক্ষিপ্ত নিদ্রাটা সেরে নিই আমরা। মধ্যাহ্নকালীন ক্লান্তির কারণ উদঘাটন ও তা থেকে পরিত্রাণে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
বেশির ভাগ পেশাজীবী অফিস শেষে বাসায় ফিরে অনবরত ফোনে অফিসিয়াল নানা আলাপ সারেন, কাজ করেন ল্যাপটপে। এভাবে তাদের বাসাও যেন হয়ে ওঠে অফিস। আবার অনেকেই মধ্যরাত পর্যন্ত টেলিভিশন দেখেন। ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। প্রতিদিন নিয়ম করে দেরিতে ঘুমাতে যাওয়া এবং পরদিন ভোরে বিছানা ছেড়ে দ্রুত কাজে বের হওয়ার ফলে মধ্যাহ্নে ক্লান্ত হয়ে পড়েন কর্মজীবীরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন অন্তত সাত-আট ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুম দরকার।
আমাদের অধিকাংশেরই দৈনন্দিন ব্যস্ত জীবনে খেলাধুলা বা শরীর চর্চার জন্য কোনো সময় বরাদ্দ থাকে না। ফলে আমাদের প্রাণশক্তি শিগগিরই নিঃশেষ হয়ে যায়। নিয়ম করে জিমনেসিয়ামে যাওয়া সম্ভব না হলেও দ্রুত হাঁটা, জগিং কিংবা বাসায় ট্রেডমিলে দৌড়ানোর মাধ্যমে হালকা গা গরম করে নেওয়া যায়। সন্ধ্যার চেয়ে সকালের শরীরচর্চা দিনের বাকি সময়ে নিজেকে সজীব ও প্রাণবন্ত রাখতে বেশি সহায়ক।
সারাক্ষণ বেশি বেশি চাপ নেওয়ার ফলে আমাদের রক্তের চাপ বেড়ে যায়। আর কাজের প্রতি কমে যায় মনোযোগ। ফলে দ্বিপ্রহরে ক্লান্তি এসে ঘিরে ধরে। এক্ষেত্রে সব সময় হাসি-খুশি ও ঝামেলামুক্ত থাকার পাশাপাশি মাত্রাতিরিক্ত চাপ না নেওয়ারও পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
দুপুরে বেশি করে খাওয়ার চিন্তা থেকে অনেকেই সকালে নাশতা করেন না। এদের অনেকেই দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন। সময়ের খাবার সময়ে না খেলে তা শরীরে হরমোন নিঃসরণে প্রভাব ফেলে। এতে মানুষ অলস ও জড়তাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এ কারণে বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন যথাসময়ে সকালের নাশতা সারার নির্দেশনা দেন। এ ছাড়া সকালের নাশতা হিসেবে সুষম খাবার, পছন্দসই ফল, মাখনের সঙ্গে কয়েকটি টোস্ট খাওয়া যেতে পারে।
মধ্যাহ্নের ক্লান্তি থেকে নিস্তার পেতে আরও বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যে রয়েছে—সকালে নাশতার পর অথবা মধ্যাহ্নভোজের আগে অত্যধিক মাত্রায় চা-কফির অভ্যাস ত্যাগ করা, দুপুরে অতিরিক্ত খাবার পরিহার করা, দুপুরের খাবারে শর্করা, আমিষ ও চর্বির সমন্বয় রাখা, রাতে পর্যাপ্ত ঘুমানো, শরীরচর্চার জন্য নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ, দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান, সকালের নাশতা এবং দুপুরের খাবারে স্ন্যাকস বা জলখাবার পরিহার করা।
courtesy: দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া