নিজস্ব প্রতিবেদক
বার্তা২৪ ডটনেট
ঢাকা, ২৮ মার্চ: অবশেষে কিছুটা রদবদল সাপেক্ষে একই সঙ্গে তৃতীয় প্রজন্ম (থ্রি-জি), চতুর্থ প্রজন্ম (ফোর-জি) এবং লং টার্ম ইভাল্যুশান(এলটিই) লাইসেন্সের সুযোগ রেখে থ্রিজি মোবাইল সার্ভিস লাইসেন্স খসড়া নীতিমালা তৈরি করে বুধবার তা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে বিটিআরসি।ডাক ও টেলি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আগামী ৭ মে থেকে নিলাম প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং ৩ সেপ্টেম্বর নিলাম আয়োজনের পর নভেম্বরের মধ্যে এই লাইসেন্স প্রদান করা হবে।
লাইসেন্সপ্রাপ্ত অপারেটরদের ১৫০ কোটি টাকা ব্যাংক গ্যারান্টি দেয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছে খসড়া নীতিমালায়। তবে নেটওয়ার্ক টার্গেট পূরণ করতে না পারলে প্রতিধাপে ব্যাংক গ্যারান্টি থেকে ৫০ কোটি করে টাকা কেটে নেবে আর সফল হলে ৫০ কোটি টাকা ফেরত দেয়া হবে।
সূত্রমতে, আগামী ৩ সেপ্টেম্বর থ্রিজি মোবাইল সার্ভিস লাইসেন্সের নিলামের সময় নির্ধারণ করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি চারটির পরিবর্তে পাঁচটি অপারেটরকে থ্রিজি লাইসেন্স দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে খসড়া নীতিমালায়।
মন্ত্রণালয় সূত্র মতে, আগামী ৭ মে থ্রিজি লাইসেন্স নিলামের জন্য বিজ্ঞাপন দেয়া হবে বলে। ১২ জুলাই অপারেটরদের আবেদন নেয়া হবে এবং ১৯ জুলাই যোগ্য অপারেটরদের নাম ঘোষণা করা হবে।
জানা গেছে, বহুল আলোচিত এই খসড়া নীতিমালার নাম ‘সেলুলার মোবাইল ফোন সার্ভিস (থ্রিজি/ফোরজি/এলটিই) রেগুলেটরি লাইসেন্স গাইডলাইন ২০১২’।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় নীতিমালা চূড়ান্ত করার পরই লাইসেন্স দেয়ার ধারাবাহিক কাজ শুরু করবে বিটিআরসি।
খসড়া নীতিমালায় প্রস্তাব রাখা হয়েছে বাংলাদেশের বেসরকারি পাঁচ মোবাইল অপারেটরদের মধ্যে তিনটি এবং দেশের বাইরের একটি অপারেটরকে লাইসেন্স দিতে। নতুন অপারেটরটি ভারতের রিলায়েন্স অথবা টাটা হতে পারে। তবে টেলিটক সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই লাইসেন্স পাবে। টু-জি অপারেটরের মতো থ্রি-জি অপারেটরাও ১৫ বছরের জন্য লাইসেন্স পাবে।
পাঁচটি মোবাইল অপারেটরকে ১০ মেগাহার্টজ করে মোট ৫০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ নিলামের সিদ্ধান্ত নিয়ে খসড়া নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়। অন্যদিকে নিলামে প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গের জন্য ৩০ মিলিয়ন (তিন কোটি) মার্কিন ডলার বিড মানি নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া থ্রিজি লাইসেন্সের জন্য পাঁচ লাখ টাকা আবেদন ফি, লাইসেন্স ফি ১০ কোটি টাকা এবং প্রতি বছর লাইসেন্স নবায়নের জন্য পাঁচ কোটি টাকা, রেভিনিউ শেয়ারিং ৫.৫ শতাংশ এবং সোসাল অবলিগেশন ফি ১ শতাংশ রাখার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
টেলিটক টেলিটক নিলামে অংশ না নিলেও চলবে। তবে নিলামে যে দর উঠবে, সে পরিমাণ টাকা দিয়েই লাইসেন্স নিতে হবে। প্রস্তাবনায় দুটি অপারেটর লাইসেন্স না নিলে নিলাম প্রক্রিয়া বাতিল করে পুনরায় নিলাম ডাকার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
নিলামে যে অপারেটর সর্বোচ্চ দর দেবে সে দর সমমানের দর দিয়ে বাকি অপারেটরদের লাইসেন্স নেয়ার প্রস্তাব রয়েছে খসড়া নীতিমালায়।
৩ সেপ্টেম্বর নিলাম হওয়ার পর ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে অপারেটরদের লাইসেন্স নিতে হবে বলে খসড়া নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে। নিলামের পর টাকা জমা দিলেই লাইসেন্স দেয়া হবে।
লাইসেন্স নেয়ার তিন বছরের মধ্যে সারা দেশে থ্রিজি সেবার প্রস্তাব রেখে খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। তিনটি ধাপে অপারেটরদের থ্রিজি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করতে হবে।
প্রথম ধাপে পুরনো টু-জি অপারেটরদের ছয় মাসের মধ্যে এবং নতুন অপারেটরকে এক বছরের মধ্যে সাতটি বিভাগে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করতে হবে।
দ্বিতীয় ধাপে পুরনো অপারেটরদের ১৮ মাসের মধ্যে এবং নতুন অপারেটরকে ২৪ মাসের মধ্যে শতকরা ৩০ ভাগ জেলায় নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করতে হবে।
তৃতীয় ধাপ অর্থাৎ শেষ ধাপে ৩৬ মাসের মধ্যে পুরো দেশে পুরাতন অথবা নতুন অপারেটরকে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করতে হবে।
বার্তা২৪ ডটনেট/জিসা