আমাদের জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপেই জয় পরাজয়, অথবা সফলতা ব্যর্থতার হিসেব কষে এগুতে হয়। জীবনের কোনো ক্ষেত্রে সফল্য এলে যেমন আমরা খুশির স্রোতে ভাসি, ঠিক তেমনি কোনো ক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে অনেকের জীবনেই নেমে আসে হতাশার অন্ধকার।
কিন্তু আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার ওপর যদি আমাদের পূর্ণ আস্থা এবং বিশ্বাস থাকে তাহলে জীবনের এসব কঠিন মুহূর্তেই নিশ্চিন্ত থাকা সম্ভব। দুনিয়ার জীবনের কোনো ব্যর্থতা তখন আখিরাতের পুরস্কারের তুলনায় বড় হয়ে উঠতে পারে না। জীবনের হিসেব তখন আমাদের ইচ্ছাধীন না রেখে আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত মনে সুখে শান্তিতে থাকা সম্ভব। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা পবিত্র কুরানে সূরা আত্ব-ত্বালাক্ব এ বলেছেন
"যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট।" (সূরা আত্ব-ত্বালাক্ব -৩)
আমরা অনেকেই মানুষ হয়ে সীমিত ক্ষমতার অধিকারী অন্য কারো ওপর অনেক বেশি ভরসা করে থাকি, আর ফল স্বরূপ অনেক ক্ষেত্রেই আশাহত হই। কিন্তু আল্লাহ হচ্ছেন অসীম ক্ষমতার অধিকারী, তিনিই পারেন যাকে ইচ্ছা সাহায্য করতে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা এই সম্পর্কে বলেন,
“আর তুমি ভরসা কর এমন চিরঞ্জীব সত্ত্বার ওপর যিনি মরবেন না।” (সূরা আল ফুরকান: ৫৮)
মানুষ হচ্ছে আল্লাহ তা’আলার সৃষ্ট জীব, তাই তার অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে, আর তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, মানুষ অনেক সময়ই ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় অন্যের সাহায্যে এগিয়ে আসতে পারে না। কিন্তু আল্লাহর ওপর ভরসা করলে আল্লাহ তার প্রতিদান অবশ্যই দেবেন। আর মুমিনদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তারা আল্লাহর ওপর আস্থা রাখে, এই বিষয়ে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন,
“আর আল্লাহর ওপরই মুমিনদের ভরসা করা উচিত।” (সূরা ইবরাহীম : ১১)
তাকদিরে বিশ্বাস স্থাপন করা ইমানের মূল সাতটি বিষয়ের একটি। অর্থাৎ আমাদের জীবনের প্রতিটি ঘটনা, ভালো কিংবা মন্দ যা-ই ঘটুক না কেন তা আল্লাহর পক্ষ থেকেই আমাদের কাছে আসে, এই বিশ্বাস আমাদের রাখতে হবে। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে,
"আল্লাহর নির্দেশ ব্যতিরেকে কোনো বিপদ আসে না এবং যে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস করে, তিনি তার অন্তরকে সৎপথ প্রদর্শন করেন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত।"