পোশাকদুটো সাধারণ, তবে একটির সঙ্গে আরেকটি হাতার মিল নেই। শুধু এটুকু পার্থক্যই একটা পোশাককে করে তুলেছে আরেকটা থেকে অসাধারণ। এই পোশাকে আর নিজেকে গতানুগতিক মনে হবে না। নিজেকে অন্যদের চেয়ে দেখাবে আলাদা; সেই সঙ্গে যোগ হবে বৈচিত্র্য।
সব সময় একই ধরনের হাতার কামিজ বা ফতুয়া না পরে ভিন্ন ধরনের হাতার পোশাক পরে রোজ পাল্টে নিতে পারেন নিজেকে। যে ধরনের হাতাই পছন্দ করুন না কেন, তা যেন আপনার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মানানসই হয়। একটা সময় পর্যন্ত সেমিশর্টস্লিভ আর ফুলস্লিভ পোশাকই বেশি দেখা যেত। সেই সঙ্গে গ্রীষ্মকালে কেউ কেউ স্লিভলেস পোশাকেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন। কিন্তু এখন সালোয়ার-কামিজ ও ফতুয়ার কাপড়ের ধরন, নকশার জাঁকজমকের সঙ্গে সমানভাবে প্রাধান্য পাচ্ছে হাতার ডিজাইন ও কারুকাজ। আর এসেছে হরেক রকম হাতার সংযোজন। শর্টস্লিভ, ফুলস্লিভ, স্লিভলেসের মধ্যেও আছে রকমফের।
টিনএজার ও তরুণীর পছন্দ
তরুণী ও টিনএজার মেয়েরা থ্রি-কোয়ার্টার হাতার ফতুয়া ও কামিজই বেশি পছন্দ করছে। আছে ম্যাগিস্লিভ, ক্যাপস্লিভ, ঘটিহাতা ও বেলস্লিভ। বিবিআনার ফ্যাশন ডিজাইনার লিপি খন্দকার বলেন, 'এখন সবচেয়ে বেশি চলছে থ্রি-কোয়ার্টার। গরমের জন্য আমরা ম্যাগিস্লিভের কামিজও তৈরি করছি। এ ক্ষেত্রে হাতার দৈর্ঘ্য দুই থেকে তিন ইঞ্চি পর্যন্ত হয়। এ ছাড়া ক্যাপস্লিভও হচ্ছে, যেখানে হাতার বিশেষ শেপ থাকে। পাশাপাশি টিনএজার মেয়েদের পছন্দ ঘটিহাতা। ফতুয়ার ক্ষেত্রে প্রধানত বেলস্লিভ পছন্দ করা হয়। এই হাতা একদম চাপা, নিচের দিকে গিয়ে অনেকটা বেলের মতো ছড়িয়ে পড়ে।'
কেমন কাটিং
শুধু হাতার দৈর্ঘ্যেই নয়, হাতার কাটিংয়ের ক্ষেত্রেও রয়েছে ভিন্নতা। কখনো চওড়া কম, আবার কখনো চওড়া বেশি দিয়ে কাটিংয়ে পরিবর্তন আনা হয়। কিছু কিছু থ্রি-কোয়ার্টার আর ফুলস্লিভ কামিজের বেলায় হাতার কিছু অংশ কেটে ডিভাইডার দেওয়া হয়। কখনো আবার এই ডিভাইডারের কাটিংয়েও আনা হয় বৈচিত্র্য। ফুলস্লিভে অনেক সময় নিচের দিকে কুঁচি দেওয়া থাকে, যার ফলে পোশাকটা সাধারণ হলেও দেখায় জাঁকজমকপূর্ণ।
কাপড় আর কারুকাজ
কাপড় ও এমব্রয়ডারির ধরনের ওপরও হাতার বৈচিত্র্য অনেকখানি নির্ভর করে। অনেক জাঁকজমকপূর্ণ পোশাকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, পুরো পোশাকে ভারী কাজ করা হলেও হাতাটা তৈরি করা হয় একদম স্বচ্ছ কোনো কাপড়ে। ফলে পোশাকের কাজ ও হাতার ডিজাইন_দুটিতেই থাকে সমান বৈচিত্র্য। কখনো আবার একদমই সাধারণ কোনো কামিজ কিংবা ফতুয়ার হাতায় বেশি কারুকাজ করে আনা হয় নতুনত্ব। সেই সঙ্গে অন্য কাপড়ের পাইপিং, হাতার কর্নারের ডিজাইন, ফুলস্লিভে বোতাম এবং সব ধরনের হাতায় লেস, জরি, চুমকি, ফিতার ব্যবহার দিয়ে পরনের পোশাকটি করে তোলা যায় আরো আকর্ষণীয়। অঞ্জনসের ফ্যাশন ডিজাইনার শাহিন আহম্মেদ বলেন, 'আগে যদিও হাফস্লিভ বেশি চলত, কিন্তু কিছুদিন ধরে থ্রি-কোয়ার্টার বেশ চলছে। আবার গরমে হাফস্লিভও প্রাধান্য পাচ্ছে। এ কারণে আমরা হাফস্লিভ ও থ্রি-কোয়ার্টার_দুটি হাতার জন্যই ডিজাইন করছি। আবার সিল্ক, মসলিন, এন্ডি সিল্কের এঙ্ক্লুসিভ ড্রেসে ট্রান্সপারেন্ট হাতা ব্যবহার করা হয়। এ ক্ষেত্রে মসলিন কাপড় বেশি প্রযোজ্য। হাতার দৈর্ঘ্যের রয়েছে চারটি ধরন_স্লিভলেস, হাফস্লিভ, থ্রি-কোয়ার্টার ও ফুলস্লিভ। এর কাটিংয়ে চওড়া কম বা বেশি রেখে ভিন্নতা আনা যায়। হাতার যে কর্নার, তাতেও কাটিংয়ের ডিজাইনে ভেরিয়েশন থাকে। অনেক সময় পুরো হাতায় বা কিছু অংশে এমব্রয়ডারি করা হয়। সেই সঙ্গে পাইপিং দিয়েও ভেরিয়েশন আনা যায়। কখনো কখনো কামিজ ও সালোয়ার দুই ধরনের কাপড় বা রঙের হলে হাতাটা সালোয়ারের সঙ্গে ম্যাচ করে বানানো হয়। আবার কোনো ক্ষেত্রে দেখা যায়, কামিজের গায়ে যে এমব্রয়ডারি থাকে, তার রঙের সঙ্গে মিলিয়ে হাতা ডিজাইন করা হয়।'
পাবেন
আড়ং, ওটু, এবি ফ্যাশন, মায়াসির, বিবিআনা, অঞ্জন'স, কে-ক্র্যাফটসহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে। এ ছাড়া চাইলে কাপড় কিনে যেকোনো টেইলার্সে দিয়ে নিজের ইচ্ছামতো ডিজাইন করা হাতার পোশাক বানিয়েও নিতে পারেন।