Religion & Belief (Alor Pothay) > Hadith
জামায়াতবদ্ধ সালাতের কিছু নিয়ম, ভুল ও বিদআত
(1/1)
arefin:
মসজিদে জামায়াতবদ্ধ সালাতে দাঁড়ানোর ব্যাপারে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সুন্নাত কি আর আমাদের দেশের অধিকাংশ মসজিদ গুলোর ইমামগণ কি করছেন ?
বিভিন্ন হাদিস থেকে জানা যায়,
নামাজের ইকামাত হয়ে গেলে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মুসুল্লীদের দিকে ফিরে তাদের উদেশ্যে কিছু উপদেশ দিয়ে বলতেন,
- সুও সুফুফাকুম (কাতার গুলো সোজা কর)
- ইসতাও (সোজা হয়ে দাড়াও)
- তারাছছু (সেটে সেটে দারাও)
- ওআয়ালা তা-জালু খুরুজাতিল শায়তান (শয়তানের জন্য ফাঁকা জায়গা রেখোনা)
- সুদ্দুল খালাল (ফাঁকা জায়গা গুলো বন্ধ কর)
- ওআয়ালা তাকতালিফু ফা তাকতালিফু কুলুবুকুম (বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করনা , তাহলে তোমাদের অন্তরে বিচ্ছিন্নতা হবে)
অথচ আমাদের দেশের অধিকাংশ মসজিদের ইমামগণ ইকামতের পর পরই কাতার সোজা হলো কিনা বা কাতারের মধ্যে জায়গা ফাঁকা থাকল কিনা তা না দেখেই নামায শুরু করে দেন।
রাসুল (সা) বলেনঃ
“তোমাদের নামাযে কাতারগুলোকে মিলাও এবং পরস্পর নিকটবর্তী হয়ে যাও, আর কাঁধের সাথে কাঁধ মিলাও। সেই সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ, অবশ্য আমি শয়তানকে কাতারের মধ্যে এমনভাবে ঢুকতে দেখি যেমন ছোট ছাগল ঢোকে।" [আবু দাউদ ১০৯২]
দেখা যায়, মসজিদের জামায়াতে ফরজ নামায শেষ হওয়ার পর ২/৩ জন মুসল্লী মসজিদে এসে হাজির হলে তারা নিজেরা আর জামায়াতবদ্ধ না হয়ে যে যার মত একাকী নামাযে দাঁড়ান। যার ফলে তারা মসজিদে এসেও জামায়াতবদ্ধ নামায আদায়ের সওয়াব থেকে বঞ্চিত হন। ২য় জামায়াত করার নিয়ম সম্পর্কে আমাদের মধ্যে কেউই অবগত নয়।
অথচ বুখারী ২য় খন্ড ৪২৭ অনুচ্ছেদে- দু'ব্যক্তি বা তার বেশী হলেই জামায়াতবদ্ধ হতে আমাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যখন নামাযের সময় হয় তখন তোমাদের দু'জনের একজন আযান দিবে (যদি আযান না দেয়া হয়ে থাকে) এরপর ইকামত দিবে এবং তোমাদের মধ্যে যে অধিক বয়স্ক সে ইমামতি করবে। [বুখারী, ৬২৫]
আমরা অনেকেই সিজদার সময় আমাদের কনুই সহ পুরা হাত মাটিতে মিশিয়ে দিয়ে সিজদা করি যা সুন্নাতের পরিপন্থী
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমরা সিজদায় (অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের) সামঞ্জস্য রক্ষা করো এবং তোমাদের মধ্যে কেউ যেন দু'হাত বিছিয়ে না দেয় যেমন কুকুর বিছিয়ে দেয়। [বুখারী, ৭৮৪]
নামাযে মসজিদে জামআত ধরতে দৌড়ানোঃ
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যখন তোমরা ইকামত শুনতে পাবে, তখন সালাতের দিকে চলে আসবে, তোমাদের উচিৎ ধীরস্থিরতা ও গাম্ভীর্য বজায় রাখা, তাড়াহুড়া করবে না। ইমামের সাথে যতটুকু পাও তা আদায় করবে, আর যা ছুটে যায় তা পরে পূরা করে নিবে। [বুখারী, দ্বিতীয় খন্ড, হাদিস নং ৬০৮, পাতা ৫৪]
মসজিদে বিদআতঃ
প্রতি ফরজ নামাযের পর 'সম্মিলিত মুনাজাত
প্রতি ফরজ নামাযের পর 'মিলাদ'
উচ্চ স্বরে 'আল্লাহ্ আল্লাহ্/ইল্লাল্লাহ ইল্লাল্লাহ যিকির',
ফরজ নামায শেষে ২/৩ জন মুসল্লী হাজির হলে ২য় জামায়াত না করে যে যার মত একাকী নামায পড়া,
টাকার বিনিময়ে মুনাজাতে বিশেষ ব্যক্তির জন্য নাম উল্লেখ করে দোয়া চাওয়া,
মসজিদের প্রথম কাতারে বিশেষ ব্যক্তি বসে নামায পড়ার জন্য জায়গা নির্দিষ্ট করে রাখা
এরকম আরোও অনেক উদাহরণ দেয়া যাবে। যখন ১ট বিদআত চালু হয় তখন আল্লাহ্ তাআলা ১টি সুন্নাত উঠিয়ে নেন। এভাবে সকল সুন্নাত একদিন বিদআত দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবে।
সবচেয়ে বড় চুরি হচ্ছে নামাযে চুরি করা
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ প্রসংগে বলেছেন, "সবচেয়ে নিকৃষ্ট চোর সেই ব্যক্তি যে নামযে চুরি করে। এ কথা শুনে সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহ্-র রাসূল! (সা) সে কিভাবে নামাযে চুরি করে ? উত্তরে রাসূলুল্লাহ্ (সা) বললেন, সে নামাযে রুকু-সিজদা ঠিকমত করে না"। [আহমাদ ৫/৩১০,ছহীহুল জামে হাদিছ নং ৯৯৭]
জামায়াতবদ্ধ নামাযে সামনের কাতার ফাঁকা রেখে পিছনের কাতারে দাঁড়ানো
আমাদের মধ্যে অনেক ভাই এমন আছেন যারা পিছনের কাতারে দাঁড়াতে পছন্দ করেন। আবার কেউ কেউ সিলিং ফ্যানের নিচে দাঁড়াতে গিয়ে সামনের কাতার ফাঁকা রাখাটাকে দোষের মনে করেন না। অথচ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সামনের কাতার ফাঁকা রেখে পিছনের কাতারে দাঁড়াতে আমাদেরকে নিষেধ করেছেন। নিচের হাদিস গুলো দেখুন-
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর কতিপয় সাহাবী কে প্রায়ই পিছনের কাতারে দাঁড়াতে দেখেন। তিনি তাদের বললেন, তোমরা সামনে এগিয়ে এসে আমার পিছনে ইকতেদা করো। তাহলে তোমাদের পরবর্তীরা তোমাদের পিছনে ইকতেদা করবে। একদল লোক সবসময় দেরী করে এসে পিছনে দাঁড়ায়। আল্লাহ্ও তাদেরকে তাঁর রহমত থেকে পিছনে রাখবেন। [মুসলিম, ৮৭৭]
তিনি আরোও বলেন, লোকেরা যদি জানত যে, সামনের কাতারে দাঁড়ানো কত কল্যাণকর তাহলে তারা এটা লাভ করার জন্য লটারির আশ্রয় নিত। [মুসলিম, ৮৭৮]
তিনি আরোও বলেন, তোমরা নামাযের কাতার পূর্ণ করো, আমি পিছন থেকেও তোমাদের দেখতে পাই। [মুসলিম, ৮৭১]
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি মসজিদ থেকে দূরে বাস করে (নামাযে আসার ক্ষেত্রে) লোকদের মধ্যে তারই সওয়াব বেশী। আর এর চেয়ে যে আরও দূরে বাস করে তার সওয়াব আরোও বেশী। যে ব্যক্তি তাড়াতাড়ি নামায পড়ে ঘুমিয়ে পড়ে তার চাইতে ঐ ব্যক্তির সওয়াব বেশী যে ইমামের সাথে নামায পড়ার জন্য অপেক্ষা করে। [বুখারী, ৬৫১]
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি দুই ঠান্ডা সময়ের (ফজর ও আছর) নামাযদ্বয় আদায়ে অভ্যস্ত হবে সে জান্নাতী হবে। [বুখারী, ৫৭৪]
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উল্লেখ করেন, নামাযী যখন নামাযে দাঁড়ায় তখন সে তার রবের সাথে কথা বলে। [বুখারী, ৫৩২ নং হাদিস]
জাযাকাল্লাহু খাইরান
sumon_acce:
This is a very important post for all of us......Thank you Sir.
Navigation
[0] Message Index
Go to full version