জুমআর দিনের ফযিলত ও প্রাসাঙ্গিক আমল

Author Topic: জুমআর দিনের ফযিলত ও প্রাসাঙ্গিক আমল  (Read 5527 times)

Offline arefin

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 1173
  • Associate Professor, Dept. of ETE, FE
    • View Profile
জুম‘আর দিনের সালাত ও কতিপয় আমল

জুম‘আর দিন প্রসঙ্গে কিছু সহিহ হাদিসঃ

রাসুল (সাঃ) বলেনঃ জুম’আর দিনে এমন একটি সময় আছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায়, তা-ই তাকে দেওয়া হয়। আর এ সময়টি হল জুম’আর দিন আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত, একটি সময়।  [বুখারীঃ ৯৩৫]

হযরত আবু হুরাইরা(রা) হতে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-" যে গোসল করে জুমু'আর উদ্দেশ্যে আসে এবং যে পরিমাণ নফল নামায পড়ার তাওফীক হয় তা পড়ে, এরপর ইমামের খুতবা শেষ হওয়া পর্যন্ত চুপ থাকে এবং ইমামের সঙ্গে নামায আদায় করে, আল্লাহ তা'আলা তার দশ দিনের (সগীরা) গুনাহ মাফ করে দেন।" ---সহীহ মুসলিমঃ ১/২৮৩

জুমুয়ার দিন মুহাম্মদ (সাঃ) এর উম্মত এর জন্য একটি মহান দিন। এ জুম'আর দিনটিকে সম্মান করার জন্য ইহুদী-নাসারাদের উপর ফরজ করা হয়েছিল; কিন্তু তারা মতবিরোধ করে এই দিনটিকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। অতঃপর ইহুদীরা শনিবারকে আর খ্রিষ্টানরা রবিবারকে তাদের ইবাদতের দিন বানিয়েছিল। অবশেষে আল্লাহ তায়ালা মুহাম্মদ (সাঃ) এর উম্মতের জন্য শুক্রবারকে মহান দিবস ও ফযীলতের দিন হিসেবে দান করেছেন। আর উম্মতে মুহাম্মদী তা গ্রহন করে নিল। [বুখারী ৮৭৬; মুসলিমঃ ৮৫৫]
 
আবদুল্লাহ ইবনে আমর [রাযি] থেকে বর্ণিত যে, নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম প্রত্যেক জুমুআর দিনে নিজের গোঁফ ছোট করেতেন এবং আংগুলের নখ কাটতেন। {আখলাকুন নবী [সা], হাদিস নং-৭৭০}

আবু হুরায়রা [রাযি] থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম বলেছেন, জুমুআর দিন মসজিদের দরজায় ফিরিশতারা অবস্থান করেন এবং ক্রমানুসারে আগে আগমনকারীদের নাম লিখতে থাকেন। যে সবার আগে আসে সে ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে একটি মোটাতাজা উট কুরবানী করে। এরপর যে আসে সে ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে একটি গাভী কুরবানী করে। এরপর যে আসে সে ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে একটি দুম্বা কুরবানী করে তারপর আগমনকারী ব্যক্তি মুরগী দানকারীর ন্যায়। এরপর আগমনকারী ব্যক্তি ডিম দানকারীর ন্যায়। তারপর ইমাম যখন [খুৎবার প্রদানের জন্য] বের হন তখন ফিরিশিতা তাঁদের দফতর বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগ সহকারে খুৎবা শুনতে থাকেন। {বুখারি শরীফ হাদিস নং-৮৮২}

আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমআর দিন সূরা কাহ্ফ পড়বে তার জন্য এক জুম'আ থেকে আরেক জুম'আ পর্যন্ত আলো বিচ্ছুরিত হবে। { মুসতাদারেক হাকিমঃ২/৩৯৯, বায়হাকীঃ ৩/২৪৯, ফয়জুল ক্বাদীরঃ৬/১৯৮}

হযরত ইবনে উমর(রা) থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি শুক্রবার দিন সূরা কাহফ পাঠ করবে তার পা থেকে আকাশের উচ্চতা পর্যন্ত নূর হয়ে যাবে, যা কেয়ামতের দিন আলো দিবে এবং বিগত জুমআ থেকে এ জুমআ পর্যন্ত তার সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। { আত তারগীব ওয়া তারহীবঃ ১/২৯৮}

আবু দারদা রাঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, যেব্যক্তি সুরায়ে কাহাফের প্রথম দশটি আয়াত মুখস্থ করবে সে দাজ্জালের ফেৎনা হতে রক্ষা পাবে। {সহিহ মুসলিম,হাদিসঃ ১৩৪২, মুসনাদু আহমদ,হাদিসঃ২০৭২০, আবু দাউদ,হাদিস- ৩৭৬৫}

হযরত ইয়াযীদ ইবনে আবি মারয়াম(র) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একদিন পায়ে হেঁটে জুম'আর জন্য যাচ্ছিলাম। এমন সময় আমার সাথে আবায়া ইবনে রিফায়া (র) এর সাথে সাক্ষাৎ হয়। তিনি বললেন, সুসংবাদ গ্রহণ কর! তোমার এই পদচারণা আল্লাহর পথেই।আমি আবু আবস (রা) কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তির পদদ্বয় আল্লাহর পথে ধূলিময় হলো, তার পদদ্বয় জাহান্নামের জন্য হারাম করা হলো। { জামে তিরমিযি,হাদিস নং-১৬৩৮, সহীহ বুখারী, হাদিস নং-৯০৭}

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, জুম‘আতে তিন ধরনের লোক আসে। (ক) যে ব্যক্তি অনর্থক আসে, সে তাই পায় (খ) যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনার জন্য আসে। আল্লাহ চাইলে তাকে দেন, অথবা না দেন (গ) যে ব্যক্তি নীরবে আসে এবং কারু ঘাড় মটকায় না ও কষ্ট দেয় না, তার জন্য এই জুম‘আ তার পরবর্তী জুম‘আ এমনকি তার পরের তিনদিনের (সগীরা) গোনাহ সমূহের কাফফারা হয়ে থাকে। এ কারণেই আল্লাহ বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি একটি নেকীর কাজ করে, তার জন্য দশগুণ প্রতিদান রয়েছে’ (আন‘আম ৬/১৬০)। আবুদাঊদ, মিশকাত হা/১৩৯৬, অনুচ্ছেদ-৪৪।

জুম’আর দিনের প্রয়োজনীয় কিছু আমলঃ

জুমু'আর এই পবিত্র দিনে আসুন আমরা সবাই আল্লাহ্ তা'আলার কাছে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) শেখানো দোয়া পাঠের মাধ্যমে জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও "জান্নাতুল ফিরদাউস" লাভের জন্য দোয়া করি।

"আল্লা-হুম্মা ইন্নী আউযুবিকা মিন্ 'আযা-বি জাহান্নাম"
অর্থঃ হে আল্লাহ্ ! আমি তোমার নিকট জাহান্নামের শাস্তি হতে মুক্তি চাই।[বুখারী]

"আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকা জান্নাতাল ফিরদাউস"
অর্থঃ হে আল্লাহ্ ! আমি তোমার নিকট "জান্নাতুল ফিরদাউস" প্রার্থনা করছি। [বুখারী, মুসলিম]

 ১। জুম’আর দিন গোসল করা। যাদের উপর জুম’আ ফরজ তাদের জন্য এ দিনে গোসল করাকে রাসুল (সাঃ) ওয়াজিব করেছেন। [বুখারীঃ ৮৭৭]
 ২। জুম’আর সালাতের জন্য সুগন্ধি ব্যবহার করা। [বুখারীঃ ৮৮০]
 ৩। মিস্ওয়াক করা। [বুখারীঃ ৮৮৭]
 ৪। গায়ে তেল ব্যবহার করা। [বুখারীঃ ৮৮৩]
 ৫। উত্তম পোশাক পরিধান করে জুম’আ আদায় করা। [ইবনে মাজাহঃ ১০৯৭]
 ৬। মুসুল্লীদের ইমামের দিকে মুখ করে বসা। [তিরমিযীঃ ৫০৯]
 ৭। মনোযোগ সহ খুৎবা শোনা ও চুপ থাকা- এটা ওয়াজিব। [বুখারীঃ ৯৩৪]
 ৮। আগে ভাগে মসজিদে যাওয়া। [বুখারীঃ ৮৮১]
 ৯। সম্ভব হলে পায়ে হেঁটে মসজিদে গমন। [আবু দাউদঃ ৩৪৫]
 ১০। জুম’আর দিন ও জুম’আর রাতে বেশী বেশী দুরুদ পাঠ। [আবু দাউদঃ ১০৪৭]
 ১১। নিজের সব কিছু চেয়ে এ দিন বেশী বেশী দোয়া করা।। [বুখারীঃ ৯৩৫]
 ১২। খুৎবা চলাকালীন সময়ে মসজিদে প্রবেশ করলে তখনও দু’রাকা’আত ‘তাহিয়্যাতুল মাসজিদ’ সালাত আদায় করা ছাড়া না বসা। [বুখারীঃ ৯৩০]
 ১৩। কেউ মসজিদে কথা বললে ‘চুপ করুন’ এটুকুও না বলা। [বুখারীঃ ৯৩৪]
 ১৪। মসজিদে যাওয়ার আগে কাঁচা পেয়াজ, রসুন না খাওয়া ও ধুমপান না করা। [বুখারীঃ ৮৫৩]
 ১৫। ইমামের খুৎবা দেওয়া অবস্থায় দুই হাঁটু উঠিয়ে না বসা। [ইবনে মাজাহঃ ১১৩৪]
 ১৬। খুৎবার সময় ইমামের কাছাকাছি বসা। কোনো ব্যাক্তি যদি জান্নাতে প্রবেশের উপযুক্ত হয়, কিন্তু, ইচ্ছা করে জুমুয়ার নামাজে ইমাম থেকে দূরে বসে, তবে সে বিলম্বে জান্নাতে প্রবেশ করবে। [আবু দাউদঃ ১১০৮]
 ১৭। সালাতের জন্য কোন একটা জায়গাকে নির্দিষ্ট করে না রাখা, যেখানে যখন জায়গা পাওয়া যায় সেখানেই সালাত আদায় করা [আবু দাউদঃ৮৬২] অর্থাৎ আগে থেকেই নামাজের বিছানা বিছিয়ে জায়গা দখল করে না রাখা বরং যে আগে আসবে সেই আগে বসবে।
 ১৮। এতটুকু জোরে আওয়াজ করে কোন কিছু না পড়া, যাতে অন্যের সালাত ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা মনোযোগে বিঘ্ন ঘটে। [আবু দাউদঃ ১৩৩২]
 ১৯। খুৎবার সময় খতীবের কোন কথার মার্জিত ভাবে সাড়া দেওয়া বা তার প্রশ্নের জবাব দানে শরীক হওয়া জায়েজ। [বুখারীঃ ১০২৯]

পবিত্র জুম্মার দিনে আমরা অবশ্যই চেষ্টা করব (ইনশাআল্লাহ) -

১! গোসল করে
২! সুন্দর কাপড় / ভালো কাপড় পড়ে
৩! সুগন্ধি লাগিয়ে (যার পক্ষে সম্ভব)
৪! যথা সম্ভব পায়ে হেটে/ নতুবা সাইকেলে/ গাড়িতে/ বাসে করে (মসজিদ যাদের ক্ষেত্রে দুরে মূলত কাফের রাষ্ট্রে যারা থাকেন)
৫! মসজিদে ঢুকে যথা সম্ভব সামনের কাতারগুলোতে যেখানে খালি জায়গা পাউয়া যায় (কাউকে ঠেলে বা সরিয়ে নয়),
৬! অবশ্যই বসে যাউয়ার আগে দুই রাকাত তাহিয়্যাতুল মসজিদ আদায় করে
৭! তারপর বসব (মসজিদে ঢুকেই কেউ বসব না)
৮! ''কাবলাল জুম্মা'' নামক বিদাতি সালাত টি পড়ব না (কেননা এই সালাতের পক্ষে কোনই সহিহ দলিল নাই)
৯! খুতবা শুরু হলে মনোযোগ দিয়ে শুনব (এমন কি ''চুপ'' কথাটিও বলব না)
১০! খুৎবা চলা অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করলে কেবল দু’রাক‘আত ‘তাহিইয়াতুল মাসজিদ’ সংক্ষেপে আদায় করে বসে পড়ব
১২! কাতারে গায়ে গা লাগিয়ে পায়ে পা লাগিয়ে দাড়াব যেন শয়তান কোনো জায়গা না পায়
১৩! দুই রাকাত সালাত ইমামের সাথে আদায় করব
১৪! সালাত শেষে সম্মিলিত মুনাজাত এ অংশ নেব না
১৫! সালাত শেষের তাসবীহ গুলো পাঠ করব
১৬! একা একা হাত তুলে ব্যক্তিগত ভাবে যত মনে চায় দুআ করব
১৭! অত:পর দুই দুই করে চার বা একবারে চার রাকাত নফল সালাত আদায় করব
১৮! যথা সম্ভব ভিন্ন রাস্তায় পায়ে হেটে/ নতুবা সাইকেলে/ গাড়িতে/ বাসে করে যার যার গন্তব্যে ফিরে যাব!
১৯! এই দিন বেশি বেশি দুরুদ পাঠ করব ইনশাআল্লাহ (নিয়ামুল কুরআন / পাঞ্জেগানা অজিফা প্রভৃতি বিদাতি পুস্তকের দুরুদ নয় বরং সালাতে তাশাহুদের পর যেই দুরুদ পড়ি সেটা)
২০! এই দিন বিকালের দিকে যথা সম্ভব বেশি বেশি দুআ করব নিজের জন্য পরিবারের জন্য সকল মুসলিম এর জন্য!

দলিলসমূহ যাচাই করে নিতে পারেন:

বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৩৮১-৮২, পরিচ্ছন্নতা অর্জন ও সকাল সকাল মসজিদে যাওয়া, অনুচ্ছেদ-৪৪।
মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১৩৮৪, অনুচ্ছেদ-৪৪।
তিরমিযী, আবুদাঊদ, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১৩৮৮; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/২৩৬; মির‘আত ৪/৪৭১।
তাহিয়াতুল মসজিদের দলিল: মুসলিম, মিশকাত হা/১৪১১; ‘খুৎবা ও সালাত’ অনুচ্ছেদ-৪৫; নায়ল ৪/১৯৩।

জুম‘আর পূর্বে নির্দিষ্ট কোন সুন্নাত সালাত নেই। মুছল্লী কেবল ‘তাহিইয়াতুল মাসজিদ’ দু’রাক‘আত পড়ে বসবে। অতঃপর সময় পেলে খত্বীব মিম্বরে বসার আগ পর্যন্ত যত খুশী নফল সালাত আদায় করবে। জুম‘আর ছালাতের পরে মসজিদে চার রাক‘আত অথবা বাড়ীতে দু’রাক‘আত সুন্নাত আদায় করবে। তবে মসজিদেও চার বা দুই কিংবা দুই ও চার মোট ছয় রাক‘আত সুন্নাত ও নফল পড়া যায়। ইবনু ওমর (রাঃ) চার রাক‘আত সুন্নাত এক সালামে পড়তেন। তবে দুই সালামেও পড়া যায়। জুম‘আর (খুৎবার) পূর্বে এক সালামে চার রাক‘আত পড়ার হাদীছটি ‘যঈফ’।

মুসলিম, মিশকাত হা/১১৬৬ ‘সুন্নাত সালাত সমূহ ও তার ফযীলত’ অনুচ্ছেদ-৩০; তিরমিযী হা/৫২২-২৩ ‘জুম‘আ’ অধ্যায়-৪, অনুচ্ছেদ-২৪; মির‘আত ২/১৪৮; ঐ, ৪/১৪২-৪৩।
মির‘আত ৪/২৫৭-৫৮।
ইবনু মাজাহ হা/১১২৯ ‘সালাত’ অধ্যায়-২, ‘জুম‘আর পূর্বে সালাত’ অনুচ্ছেদ-৯৪।

মহান আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুন! অন্তের খবর আল্লাহ রাখেন! এই জুম্মার দিনে আসুন অন্তরে প্রতিজ্ঞা করি দিনটিকে মর্যাদা দেবার! ইনশাআল্লাহ!
« Last Edit: June 15, 2012, 11:18:37 AM by arefin »
“Allahumma inni as'aluka 'Ilman naafi'an, wa rizqan tayyiban, wa 'amalan mutaqabbalan”

O Allah! I ask You for knowledge that is of benefit, a good provision and deeds that will be accepted. [Ibne Majah & Others]
.............................
Taslim Arefin
Assistant Professor
Dept. of ETE, FE
DIU

Offline sumon_acce

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 359
    • View Profile
Thanks for sharing this........useful post for everyone.