Entertainment & Discussions > Tennis

মারিয়া শারাপোভা, লাল দুর্গের নতুন রানি

(1/1)

Mohammed Abu Faysal:
এবারের রানারআপ মারিয়া শারাপোভা’! ফ্রেঞ্চ ওপেনের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থাপকের এমন ঘোষণায় উঠল হাসির রোল। কেউ কেউ দিলেন দুয়ো। ভুলটা শুধরে নিয়ে ক্ষমা চাইলেন তিনি, ‘দুঃখিত, এবারের রানারআপ সারা এরানি’। দুজনের নামের আগেই ‘শারা’ থাকায় হয়তো গুলিয়ে ফেলেছিলেন উপস্থাপক। মারিয়া শারাপোভার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে কম বিম্মিত হননি বিশেষজ্ঞরাও। চোটের জন্য ২০০৮ সালেই শেষ হয়ে যেতে পারত যে মেয়ের ক্যারিয়ার, সেই শারাপোভাই কিনা চ্যাম্পিয়ন রোলাঁ গারোঁয়। সে সঙ্গে ফিরে পেয়েছেন র‌্যাঙ্কিংয়ের মুকুটও!
অথচ এই ফ্রেঞ্চ ওপেনের লাল সুড়কির রহস্য ভেদ করতে না পেরে একটা সময় বলেছিলেন, ‘এখানে খেলাটা বরফে গরুর হাঁটার মতো’। উইম্বলডনে ব্যর্থ হয়ে ঠিক একই বিরক্তি ছিল লেন্ডনের কণ্ঠেও, ‘ঘাস গরুর খাবার’। সেই উইম্বলডনে শিরোপা জিতে আবার ঘাস খেয়ে ফেলেছিলেন জোকোভিচ! ভাগ্যিস এবার শারাপোভা মুখে মেখে বসেননি লাল মাটিটা। মাখার দরকার কী? তাঁর সাফল্যে তো টেনিসের দুনিয়াটা এমনিতেই রঙিন। কেউ কেউ খুঁজছেন মুক্তির সুবাতাসও। কেন, মুক্তি কেন?
আসলে মেয়েদের টেনিসটা প্রস্তরযুগে না থাকলেও হয়ে পড়েছে পাথুরে কাঠিন্যের। শিল্পের বদলে শক্তির জয়গান। অধারাবাহিক আধিপত্য। উইলিয়ামস বোনদের শাসনের সূর্য ডোবার আগ বেলায় নতুন মুখের ছড়াছড়ি। একজন এক টুর্নামেন্টে হাতি-ঘোড়া মারেন তো আরেক টুর্নামেন্টে শিকার হয়ে যান চঞ্চলা কোনো হরিণীর। সেই হরিণী বাঘিনীর সামনে পড়লে হয়ে পড়ছেন বেতাল। লি না, ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কা, পেত্রা কেভিতোভা, সামান্তা স্টোসুর, ক্যারোলিন ওজনিয়াকিরা তাই অধারাবাহিকতার প্রতিমূর্তি। পাওয়ার টেনিসের জন্য সবাই জিমে কাটান দুই ঘণ্টা। এবারের ফ্রেঞ্চ ওপেনের ফাইনাল খেলা ছোটখাটো গড়নের (পাঁচ ফুট সাড়ে চার ইঞ্চি) সারা ইরানিও ‘দানবী’ উচ্চতার খেলোয়াড়দের সামলাতে বদলেছেন র‌্যাকেট। জোরে শট নিতে খেলেছেন ভারী আর লম্বা হাতলের র‌্যাকেটে। অথচ শক্তির এই প্রদর্শনীতে বিরক্ত সবাই। এমন সময় শারাপোভার শিল্পিত টেনিসের জয়টা কেন মুক্তির বার্তা নয়?
চোখ ধাঁধানো স্লাইস আর ড্রপ শটে মেয়েদের পরিচিত সেই ‘কোমল’ টেনিসের জয়টা আরও একবার হলো শারাপোভার হাত ধরে। অবশ্যই সেটা অনন্য ধারাবাহিকতায়। ২০১১ উইম্বলডনের পর এবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনেরও ফাইনাল আর ফ্রেঞ্চ ওপেনে বিজয় কেতন ওড়ানোটা সে কথাই বলছে। তা ছাড়া ২০০৮ সালে কাঁধে অস্ত্রোপচারের পর একটা সময় পিছিয়ে পড়েছিলেন র‌্যাঙ্কিংয়ের ১২৬ নম্বরে। যে পরিমাণ অর্থ, যশ, খ্যাতি পেয়েছেন তাতে ব্যথা না সয়ে টেনিসটাই ছেড়ে দিতে পারতেন। কিন্তু খেলাটা রক্তে মিশে যাওয়ায় আর পারেননি সেটা। অদম্য জেদে রোলাঁ গারোঁর গেরো খুলে এবার তো পূরণ করে ফেললেন ক্যারিয়ার স্লামই। মেয়েদের টেনিসে এই কীর্তি রয়েছে মাত্র ১০ জনের। সবার আগে ক্যারিয়ার স্লাম পূর্ণ করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের মরিন কনোলি ব্রিংকার। ১৯৫৩ সালের উইম্বলডন জয়ে এই বৃত্ত পূরণের সময় তাঁর বয়স ছিল ১৮ বছর ২৫৪ দিন। আর ২০০৪ সালে উইম্বলডন জয়ের পর দশম প্রমীলা খেলোয়াড় হিসেবে এই চক্র পূরণের সময় শারাপোভার বয়স ২৫ বছর ৫১ দিন।
সে সঙ্গে ২০৯ সপ্তাহ পর ফিরে পেয়েছেন শীর্ষস্থানও। হারানো মুকুট ফিরে পেতে তাঁর চেয়ে বেশি সময় লেগেছিল কেবল সেরেনা উইলিয়ামস (২৬৫ সপ্তাহ, ২০০৩ আগস্ট থেকে ২০০৮ সেপ্টেম্বর) আর কিম ক্লাইস্টার্সের (২৫৬ সপ্তাহ, ২০০৬ মার্চ থেকে ২০১১ ফেব্রুয়ারি)। ফ্রেঞ্চ ওপেনের আগে রোম আর স্টুটগার্ট ওপেন জিতে শারাপোভা যে ধারাবাহিকতা দেখিয়েছেন, তাতে মেয়েদের টেনিসে নতুন রোমান্স খুঁজতেই পারেন ভক্তরা।

গ্র্যান্ড স্লাম রেকর্ড
অস্ট্রেলিয়ান ওপেন: ২০০৮
ফ্রেঞ্চ ওপেন: ২০১২
উইম্বলডন: ২০০৪
ইউএস ওপেন: ২০০৬

sumon_acce:
Thats great.

Navigation

[0] Message Index

Go to full version