সেরা ৭ দুর্লভ রত্নপাথরপৃথিবীতে সবচেয়ে দামি রত্নপাথর বলতে আমরা শুধু হীরা বা ডায়মন্ডকেই বলে থাকি। কিন্তু বাস্তবে পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্লভ ও মহামূল্যবান রত্নপাথরগুলোর মধ্যে হীরা কেবল একটি। বাকি সবই দুর্লভ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন বিভিন্ন রত্নপাথর। সেগুলোর কোনো কোনোটি আবার অমূল্য বলে বিবেচিত। কারণ সেসব পাথর টাকা দিয়ে কেনা বা মালিকানা নেওয়া সম্ভব নয়। কোনোটির সমতুল্য দ্বিতীয় কোনো পাথর আজ অবধি পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পৃথিবীর সেরা সাতটি দুর্লভ ও মহামূল্যবান রত্নপাথর নিয়ে লিখেছেন - তানভীর আহমেদ
০১. জাডেইট
পৃথিবীতে যত মহামূল্যবান রত্নপাথর রয়েছে তার মধ্যে জাডেইট সবচেয়ে দুর্লভ। মূল্য দিয়ে এটিকে বিচার করা যায় না বলেই একে অমূল্য রত্নপাথর বলে ধরা হয়ে থাকে। পৃথিবীর নিচে মাটির স্তর থেকে প্রাথমিকভাবে এটি খনিজ হিসেবে তুলে আনা হয়। এটি প্রথম তুলে আনা হয় ক্যালিফোর্নিয়ার গুয়ানতেমালা এলাকা থেকে। ১৯৯৭ এর নভেম্বর হংকংয়ে ক্রিস্টি নামক একটি জুয়েলারি কোম্পানি মোট ২৭ টুকরা (০.৫ মি.মি) জাডেইট খাঁজ কেটে বসানো একটি গলার হার বিক্রি করেছিল বাংলাদেশি টাকায় ৬০ কোটি ৪৫ লাখ টাকায়।
০২. গ্রেনডিডেরিট
মাদাগাস্কার এলাকায় খুবই ছোট আকৃতির নীলচে-সবুজ বর্ণের একটি গ্রেনডিডেরিট সর্বপ্রথম পাওয়া যায়। আলফ্রেড গ্রেনডিডেরিট নামক এক ব্যক্তি এটি ক্রয় করেছিলেন বলে এটির নাম রাখা হয় গ্রেনডিডেরিট। তবে তিনি এটি কত টাকায় কিনেছিলেন সেটা গোপন রাখা হয়েছিল। এর সমতুল্য কোনো গ্রেনডিডেরিট আজও পাওয়া যায়নি। খনি থেকে গ্রেনডিডেরিট আলাদা করতে বছরের পর বছর কেটে যায়।
০৩. টাফেইট
১৯৪৫ সালে শ্রীলঙ্কায় এডওয়ার্ড টাফেইট নামক এক ব্যক্তি এই দুর্লভ রত্নপাথরটি খুঁজে পেয়েছিলেন। এটি বিভিন্ন রংয়ের হয়ে থাকে- উজ্জ্বল বেগুনি, টকটকে লাল এবং স্বচ্ছ। বেশিরভাগ স্বচ্ছ টাফেইট সামনের দিকে ও পেছনের দিকে একই সঙ্গে দ্বি-প্রতিবিম্ব ফেলতে পারে। দুর্লভ বলে এটিও অমূল্য।
০৪. পেইন্ট
১৯৫০ সালে অর্থার সিডি পেইন এটি মিয়ানমারে খুঁজে পেয়েছিলেন। তিনি জানতেন না এটি পৃথিবীর অন্যতম বিরল খনিজ এবং অমূল্য রত্নপাথর। এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে মাত্র তিনটি রত্নপাথর_ পেইন্ট পাওয়া গেছে। প্রধানত লালচে ও খয়েরি বর্ণের এই রত্নপাথরটি দুর্লভ বলে এটি বিক্রি করা হয় না। অর্থাৎ এটিও অমূল্য।
০৫. রেড ডায়মন্ড বা লাল হীরা
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রেড ডায়মন্ড ৫.১১ ক্যারেটের। রত্ন সংগ্রহকারীদের সবচেয়ে আগ্রহের রত্নপাথর এটি। অনেকেই এটি কিনতে চেয়েছেন কিন্তু রেড ডায়মন্ড এতটাই দুর্লভ যে, তার সমতুল্য কোনো রেড ডায়মন্ডের কথা আজ অবধি না কেউ দেখেছে না কেউ শুনেছে। বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, এটি নিলামে তোলা সম্ভব হলে এটিই হতো পৃথিবীর সবচেয়ে দামি রত্ন।
০৬. জারমজেভিট
এটিও খুবই দুর্লভ এবং অমূল্য রত্নপাথর। নাম্বিয়ার সমুদ্রতীরে ১৯৭৩ সালে এটি প্রথম পাওয়া গিয়েছিল। অন্য কোথাও জারমজেভিট পাওয়া গেছে এমনটা নিশ্চিত করে বলা যায় না। স্বচ্ছ জারমজেভিট সাধারণ আলোতেই অসম্ভবরকম উজ্জ্বল এবং চোখ ধাঁধানো।
০৭. ব্লু গারনেট
ব্লু গারনেট বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্লভ এবং মহামূল্যবান রত্নপাথর। খুব নগণ্য পরিমাণ ব্লু গারনেটের মালিক নিঃসন্দেহে পৃথিবীর সেরা ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় থাকবেন। ২০০৩ সালে ৪.২ ক্যারেট ব্লু গারনেট বিক্রি হয়েছিল বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪৪ কোটি ২০ লাখ টাকায়। এটি দিনের আলোয় নীলচে সবুজ ও রাতের আলোয় গোলাপি বর্ণ ধারণ করে। এমন ব্যতিক্রমী বর্ণচোরা রত্নপাথর দ্বিতীয়টি আর নেই বললেই চলে।
সম্পাদক : নঈম নিজাম, ইষ্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের পক্ষে মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন কর্তৃক প্লট নং-৩৭১/এ, ব্লক-ডি, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, বারিধারা, ঢাকা থেকে প্রকাশিত এবং প্লট নং-সি/৫২, ব্লক-কে, বসুন্ধরা, খিলক্ষেত, বাড্ডা, ঢাকা-১২২৯ থেকে মুদ্রিত। ফোন : পিএবিক্স-৮৪০২৩৬১-৩, ফ্যাক্স : বার্তা-৮৪০২৩৬৪, বিজ্ঞাপন-৮৪০২৩৬৫।
E-mail : bdpratidin@gmail.com, bd_mofossal@bangladesh-pratidin.com