The pathetic history of Bangladesh Police.

Author Topic: The pathetic history of Bangladesh Police.  (Read 1396 times)

Offline Smahmud

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 51
    • View Profile
The pathetic history of Bangladesh Police.
« on: June 25, 2012, 11:20:25 AM »
আমাগো কেউ মানুষ বলে মনে করে না। কোনো সরকারই আমাগো কষ্ট বুঝতে চায় না। শুধু খাটায়া নেয়। সারা দিন খাটনির পর রাতে ব্যারাকে ফিরাও দেখি পানি নাই, বিদ্যুৎ নাই। খাবারও নষ্ট হয়ে যায়। অনেক সময় বাধ্য হয়ে নোংরা পোশাকেই আবার ডিউটিতে বাইর হওয়া লাগে। কোথায় যাব কন? আমরা কি আসলেই মানুষ!' আক্ষেপের সুরে কথাগুলো বললেন রাজারবাগ পুলিশ লাইনস ব্যারাকের এক সহকারী উপ-পরিদর্শক।

নীলক্ষেত মোড়ে দায়িত্বরত একজন ট্রাফিক কনস্টেবল বলেন, আমাদের থাকার মতো কোনো বাসস্থানের ব্যবস্থা নাই। কাঠফাটা রোদে কমপক্ষে আট ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করতে হয়। মাসে আমাকে ট্রাফিক অ্যালাউন্স বাবদ দেওয়া হয় মাত্র ২৩ টাকা। এই গরমে একটি ডাব খেতেও ৫০ টাকা লাগে। আরও কয়েকজন পুলিশ সদস্যের সঙ্গে কথা বলে সত্যতা মেলে তাদের এই 'অন্য জীবনের'।

রমনা বিভাগের উপকমিশনার সৈয়দ নূরুল ইসলাম বলেন, 'আসলে ওদের কষ্টগুলো আমরা বুঝি। কিন্তু কী করব বলুন। আমরাও তো সমস্যার বাইরে নই। হরতালসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি এবং বিভিন্ন ধরনের দৈব দুর্বিপাকে পুলিশকেই বেশি দায়িত্ব পালন করতে হয়। এর পরও আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করি নিচের স্তরের পুলিশ সদস্যদের সমস্যার সমাধান করতে।'

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নূরুল হুদা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, যে বাহিনীটি জনগণসহ সব ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সম্পৃক্ত, তাকে নিয়েই দিনের পর দিন অবহেলা করা হচ্ছে। পুলিশ বিভাগের জন্য খরচকে 'বিনিয়োগ' মনে করতে হবে। সরকারের উচিত বাজেটের উন্নয়ন খাতে এই খরচকে অন্তর্ভুক্ত করা। তিনি বলেন, সরকারের কাছ থেকে পর্যাপ্ত গাড়ি বরাদ্দ না পেয়ে পুলিশ বিভাগ বাধ্য হয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে স্পন্সরশিপ হিসেবে গাড়ি নিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে স্পন্সররাও অনেক সময় তাদের সংকীর্ণ স্বার্থে পুলিশকে ব্যবহার করছে। এ বিষয়টি অত্যন্ত হতাশাজনক। সংশ্লিষ্টরা জানান, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও ব্রিটিশদের তৈরি দাসত্বমূলক আইনের বেড়াজালে বন্দী পুলিশ। নূ্যনতম সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত না করে পুলিশের কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত সেবা প্রত্যাশা অনেকটা দিবাস্বপ্নের মতো। বাংলাদেশে পুলিশ ও জনগণের অনুপাত ১:১২০০, ভারতে ১:৭২৮, পাকিস্তানে ১:৪৭৭, নেপালে ১:৩৬৭। ভারতে পুলিশের বাজেট তাদের জিডিপির ১%, পাকিস্তানে ২.১৫%, নেপালে ৬.৮২%। আর বাংলাদেশের ক্ষেত্রে জিডিপির মাত্র ০.৫৮%, যা সত্যি হতাশাজনক।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় আট হাজার পুলিশ সদস্যের আবাসস্থল রাজারবাগ পুলিশ লাইনস। তবে সেখানে কোনো পুলিশ সদস্যের নির্দিষ্ট কোনো বিছানা নেই। পালা করে একাধিক পুলিশ সদস্য থাকছেন একেকটি বিছানায়। ছারপোকার কামড় তাদের নিত্যসঙ্গী। ব্যারাকে ঘুমানোর মতো নির্দিষ্ট কোনো আসন বরাদ্দ নেই এমন পুলিশ সদস্যের হার কমপক্ষে শতকরা ২৫ ভাগ। শুধু থাকার কষ্টই নয়, পুলিশ সদস্যদের খাবারের সমস্যা আরও প্রকট। রাজারবাগ লাইনসে খাবার খেলে কিংবা না খেলেও মেস ম্যানেজার পুলিশ সদস্যদের বরাদ্দকৃত রেশনসামগ্রী তুলে নিচ্ছেন। না খেয়েও খাওয়ার খরচ গুনতে হচ্ছে ছুটি ভোগকারী পুলিশ সদস্যদের। আগের রাতের রান্না করা সবজি পরিবেশন করা হচ্ছে পরের দিনের তিন বেলা। কেবল রাজারবাগ পুলিশ লাইনস নয়, একই চিত্র দেশের প্রায় প্রতিটি পুলিশ লাইনসের পুলিশ সদস্যদের।

আবাসন সংকট : চরম আবাসন সংকটে রয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। ডিএমপির সম্পত্তি শাখা সূত্র জানায়, মাত্র ৬১৮ জন পুলিশ আবাসন সুবিধা পাচ্ছেন। আবাসন সুবিধার দাবিদার ৭৫০ জন সাব-ইন্সপেক্টরের মধ্যে ৩৫৯ জন এবং ১৮ হাজার কনস্টেবলের মধ্যে মাত্র ১৮৬ জন এ সুবিধা পাচ্ছেন। ৭৪ জন সহকারী কমিশনারের (এসি) মধ্যে ৩৪ জন, ১৫ জন অতিরিক্ত কমিশনারের মধ্যে ১০ জন এবং উপকমিশনার (ডিসি) থেকে তদূধর্্ব পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তা সবাই আবাসন সুবিধা পেয়েছেন।

ছুটি চাইলে বিড়ম্বনা : পাওনা ছুটি চাইতে গেলেও নিম্নস্তরের পুলিশ সদস্যদের পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। টাকা ছাড়া ছুটি মেলে না তাদের। রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের এক কনস্টেবল বলেন, 'ছুটি চাইলেই স্যারেরা খেপে যান। ফরম পূরণ করতে করতে হাঁপিয়ে উঠতে হয় আমাদের। প্রথমে এলসি (লার্নড কনস্টেবল), পরে সিএইচএম (কোম্পানি হাবিলদার মেজর), সবশেষে সিসির (কোম্পানি কমান্ডার) অনুমতি নিতে হয়। তবে দিনপ্রতি ছুটির জন্য এলসিকে ১০০ টাকা না দিলে ছুটি কল্পনাও করা যায় না।'

চিকিৎসা : বাহিনী হওয়ার পরও রাজারবাগ কেন্দ্রীয় হাসপাতালসহ দেশের অন্য সাতটি বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালে স্থায়ী কোনো জনবল নেই। পুলিশ হাসপাতালগুলোকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীনস্থ চিকিৎসক, টেকনিশিয়ানের ওপর নির্ভর করেই চলছে এর কার্যক্রম। বিভাগীয় শহর ছাড়া জেলার অবস্থা আরও করুণ। অভিযোগ রয়েছে, সেবার বদলে জাতিসংঘ মিশনে যাওয়ার টার্গেট নিয়েই পুলিশ হাসপাতালে পোস্টিং নেন মেডিকেল কর্মকর্তারা। ইতোমধ্যে বিভিন্ন পুলিশ হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকেরা বেশ কয়েকবার জাতিসংঘ মিশনে যাওয়ার সুযোগ করে নিয়েছেন।

পুলিশের কয়েকজন কনস্টেবল ও উপ-পরিদর্শকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোনো সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে গেলে অনেক সময়ই সেবার বদলে যাতনা নিয়ে ফিরতে হয়। বেশির ভাগ অসুখের ক্ষেত্রেই তাদের প্যারাসিটামল প্রেসক্রাইব করেন চিকিৎসকরা। তবে বিপরীত চিত্র প্রথম শ্রেণীর পুলিশ কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে।

যানবাহন সমস্যা : পুলিশ সুপার থেকে শুরু করে মহাপরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তারা দামি বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহার করলেও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা ভুগছেন যানবাহন সংকটে। অপরাধীরা যেখানে উন্নত মানের যানবাহন ব্যবহার করে দ্রুত অপরাধস্থল ত্যাগ করে, সেখানে চাহিদার তুলনায় পুলিশের যানবাহনের সংখ্যা নিতান্তই নগণ্য, অতি পুরনো ও জরাজীর্ণ। মহানগরীসহ অধিকাংশ এলাকায় যানবাহন অধিগ্রহণ (রিকুইজেশন) করে কাজ সম্পাদনের ফলে জনগণের মধ্যে পুলিশ সম্পর্কে বিরূপ ধারণা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।

আশ্বাসেই সীমাবদ্ধ : পুলিশ ছাড়া সরকারের অন্য সব বাহিনীতে বেতন ছাড়াও আলাদা ভাতার ব্যবস্থা রয়েছে। সাড়ে তিন বছর আগে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া পুলিশ-ভাতার প্রতিশ্রুতিরও কোনো বাস্তবায়ন নেই। এ ছাড়া যেখানে নিম্নপদের পুলিশ সদস্যরা ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন অপারেশনে যান, সেখানে কেবল পরিদর্শক থেকে তদূধর্্ব পদের জন্য ঝুঁকিভাতার ব্যবস্থা রয়েছে। যদিও তা নামে মাত্র।

কর্মঘণ্টা : সরকারের সব বিভাগে নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা আছে। অন্য সব বাহিনীতে। এ সুবিধা থেকে বরাবরই বঞ্চিত শুধু পুলিশ। কর্মকর্তারা বলছেন, বিভিন্ন সময় পুলিশ সদস্যরা বিষয়টি তুলে ধরলেও রহস্যজনক কারণে এটি সুনির্দিষ্ট করার কার্যক্রম থেমে যাচ্ছে। কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করে ওভারটাইমের ব্যবস্থা করা হলে পুলিশ সদস্যরা কিছুটা হলেও স্বস্তি পেতেন।

মিশন নিয়ে হতাশা : জাতিসংঘ মিশনে যাওয়ার প্রক্রিয়াগত জটিলতা নিয়ে অসন্তোষ বিরাজ করছে পুলিশ সদস্যদের মধ্যে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে (ডিবি) কর্মরত এক সহকারী উপ-পরিদর্শক বলেন, 'তিন বছর আগে তিনি মিশনে যাওয়ার জন্য পরীক্ষায় পাস করেন। মন্ত্রী কিংবা ঊধর্্বতন প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের তদবির না থাকায় তিনি মিশনে যেতে পারেননি। আর মাত্র তিন মাস পর তিনি অবসরে যাবেন। তবে পাস না করেও লোকজন থাকায় অনেকেই জাতিসংঘ মিশনে যাচ্ছেন।'

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পুলিশের সমস্যার বিষয়টি সম্পর্কে সরকার অবগত। নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সরকারের আন্তরিকতার ঘাটতি নেই। ধীরে ধীরে সব সমস্যার সমাধান হবে।
Md. Sultan Mahmud
Faculty
Dept. of TE
FSIT, DIU.