Daffodil International University
Health Tips => Health Tips => Fever => Topic started by: Abdul Awal on August 07, 2019, 04:15:22 PM
-
এডিস মশা পানিতে ডিম পাড়ে না, জানালেন বিশেষজ্ঞ
ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার পানিতে ডিম পাড়ার বিষয়টিকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের প্রধান কীটতত্ত্ববিদ ডা. ভুপেন্দর নাগপাল। এ চিকিৎসক গত ৪০ বছর ধরে মশাবাহী রোগ নিয়ে কাজ করছেন। দৈনিক আমাদের সময়
রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে (ডিজিএইচএস) গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে ডা. নাগপাল ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং এডিস মশা নিধনে সফল না হওয়ার কারণগুলো বিশদভাবে তুলে ধরেন।
এডিস ইজিপ্টি প্রজাতির প্রজনন বিষয়ে ডা. ভুপেন্দর নাগপাল বলেন, ‘এ মশা পানিতে ডিম পাড়ে বলে যে কথা প্রচলিত আছে তা ভিত্তিহীন। এ মশা চালাক আছে। একটি নারী এডিস মশা পাত্রের কানায় ডিম দেয়। আদর্শ পরিবেশে ডিমগুলো এক বছরের অধিক সময় পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে। যখন বন্যা হয় বা পাত্রটি পানিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠে তখন দ্রুত ডিম ফুটে যায়। মশার বাচ্চা বা শুককীট ফুটতে সর্বনিম্ন দুই মিলিলিটার পানিই যথেষ্ট। ডব্লিউএইচও বিশেষজ্ঞের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অনুযায়ী, একটি নারী এডিস মশা তার আশপাশের প্রতিটি পাত্রের কানায় ডিম পাড়ে। ডিম হয় মোট ৬০-১০০টি।
শুকনো পরিবেশে এসব ডিম অনেক দূরে পর্যন্ত স্থানান্তরিত হয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করে ডা. নাগপাল বলেন, ‘একটি নারী এডিস মশা এক দিন পরপর রক্ত খায় এবং দিনের বেলা প্রয়োজনীয় রক্ত পেতে এক দিনে অনেককে কামড়ায়। আর যেহেতু আদর্শ পরিবেশে এ মশা ৩০ দিনের মতো বেঁচে থাকতে পারে তাই পুরো জীবনকালে ৭৫ জনের অধিক মানুষকে আক্রান্ত করার ক্ষমতা রাখে।
ডব্লিউএইচওর দক্ষিণপূর্ব এশিয়া অঞ্চলের এ প্রধান কীটতত্ত্ববিদ বলেন, ‘প্রাপ্তবয়স্ক এডিস মশা কখনো খোলা জায়গায় বিশ্রাম নেয় না। এর দরকার হয় আলো থেকে দূরে গরম ও আর্দ্র পরিবেশ। এগুলো বিশ্রাম নেয় সোফার নিচে, বিছানার নিচে….কারণ এগুলোর দরকার অন্ধকার ও আর্দ্রতা।’ এমন অস্বাভাবিক বৈশিষ্ট্যের কারণে রাস্তায় ধোঁয়ার মেশিনের মাধ্যমে কীটনাশক প্রয়োগ করে এডিস মশা মারা যাবে না বলে উল্লেখ করেন তিনি। এক মশায় অধিক মানুষ আক্রান্ত হওয়ার আরেকটি কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘একজন মানুষ যখন কামড় খেয়ে মশাটি মারতে যায় তখন সেটি উড়ে গিয়ে আরেকজনের ওপর বসে।’
ডব্লিউএইচও ধোঁয়া প্রয়োগের সুপারিশ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এ মশা বাড়ির ভেতরে থাকে এবং ওষুধের সংস্পর্শে আসে না। ওষুধ প্রয়োগ আধা-শহুরে বা গ্রামীণ এলাকায় কাজ করতে পারে, কিন্তু শহর এলাকায় ব্যর্থ। ডব্লিউএইচওর তথ্য অনুযায়ী, অতীতের তুলনায় সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের সব অঞ্চলে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব এক সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ‘১৯৭০ সালের আগে মাত্র নয়টি দেশ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলো। বর্তমানে এতে ১২৬ দেশ আক্রান্ত হয়েছে,’ বলেন কীটতত্ত্ববিদ ডা. ভুপেন্দর নাগপাল।
তিনি বলেন, ‘তথ্য-উপাত্তে দেখা যাচ্ছে, ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা আকাশছোঁয়া হলেও রোগীদের মধ্যে মারা যাওয়া হ্রাস পেয়েছে। ২০১১ থেকে সবখানে ডেঙ্গু রোগ বাড়ছে কিন্তু মৃত্যুর হার কমছে…কারণ ব্যবস্থাপনার উন্নতি হয়েছে।’
ডেঙ্গু সংক্রমণ রোধে রাস্তায় কীটনাশক প্রয়োগ নয়, বরং পরিচ্ছন্নতার ওপর জোর দিয়ে ডা. নাগপাল বলেন, ‘ডেঙ্গু সংক্রমণ এড়াতে আপনার বাড়ি পরিষ্কার রাখা জরুরি। সেই সঙ্গে তিনি অব্যবহৃত পাত্র ধ্বংস করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং তার পরামর্শ হলো, মশার ডিম ফোটা রোধ করতে খালি পাত্রগুলো সঠিকভাবে পরিষ্কার করতে হবে ও এমনকি উল্টো করে রাখতে হবে। মশা নিধনে এদের উৎস চিহ্নিত করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে ডব্লিউএইচওর এ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘এই চরম মুহূর্তে এটাই হলো সবচেয়ে ভালো উপায়। সেই সঙ্গে তিনি ধোঁয়ার জায়গায় অ্যারোসল ব্যবহারের পরামর্শ দেন। কারণ অ্যারোসল সহজে এডিস মশার বিশ্রামের জায়গায় পৌঁছাতে পারে। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব প্রতিহত করতে পরিচ্ছন্নতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানান ডা. নাগপাল। তিনি ডেঙ্গু মোকাবিলায় পরিবহন, পুলিশ, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনসহ সরকারের সব সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন। তার মতে, স্কুল, হাসপাতাল, শহরের ঘরবাড়ি, নির্মাণ এলাকা ও অফিসের মতো বিভিন্ন স্থাপনা পরিষ্কার রাখার মাধ্যমে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস করা যায়।
-
Updated and new information.
Thanks for sharing............