Daffodil International University

Entertainment & Discussions => Sports Zone => Cricket => Topic started by: Anuz on July 15, 2019, 12:16:20 PM

Title: সুপার ওভারে সুপার চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড
Post by: Anuz on July 15, 2019, 12:16:20 PM
এমন ফাইনালের অপেক্ষাতেই তো ছিল বিশ্ব। শেষ ওভারের আগেও বোঝা যাচ্ছে না কে জিতবে। সেই কবে, ১৯৯২ সালে বিশ্বকাপ ফাইনালে শেষ দিকেও একটু উত্তেজনা ছিল। এরপর বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনাল মানেই একপেশে লড়াই। ম্যাচ শেষ হওয়ার বহু আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল সব উত্তেজনা। সব ম্যাচ রূপ পেয়েছিল ম্যাড়ম্যাড়ে এক ওয়ানডেতে। কিন্তু আজ ইংল্যান্ড যখন সুপার ওভারে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জিতল, সে ফাইনালের গায়ে অন্তত কেউ অপবাদ দিতে পারবেন না।

শেষ ওভারে দরকার ১৫ রান। স্ট্রাইকিং প্রান্তে বেন স্টোকস। ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ফাইনালে শেষ ওভারে ৪ ছক্কা খেয়ে এক বিশাল দায় বইছেন যিনি। প্রথম দুই বলে কোনো রান এল না। তৃতীয় বলেই ছক্কা। নড়েচড়ে বসলেন সবাই। পরের বল কাউ কর্নারে পাঠিয়ে দৌড় দিলেন স্টোকস। মার্টিন গাপটিল যে দুর্দান্ত থ্রো করলেন, সেটা গিয়ে লাগল স্টোকসের ব্যাটে। সে বল সেই ছুট লাগাল, সীমানা পেরোনোর আগে আর থামল না! দুই রানের বদলে এল ৬ রান! ২ বলে মাত্র ৩ রান দরকার ইংল্যান্ডের!পঞ্চম বল লং অফে পাঠিয়ে ২ রান নেওয়ার চেষ্টা করলেন স্টোকস। কিন্তু ননস্ট্রাইকিং প্রান্তে রানআউট হলেন আদিল রশিদ। ১ বলে দরকার ২ রান। এবার লং অনে বল ঠেলে দিয়েই আবার ২ রানের চেষ্টা, এবারও রানআউট। দ্বিতীয় রানের চেষ্টা করতে গিয়ে রানআউট মার্ক উড। ৮৪ রানে অপরাজিত স্টোকস, কিন্তু ওতেও লাভ নেই। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ফাইনাল টাই হলো! যে বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো ফাইনাল ও সেমিফাইনাল টাই হলে সুপার ওভার হওয়ার নিয়ম করা হলো, সেবারই ফাইনাল গড়াল সুপার ওভারে।

সুপার ওভারেও বল হাতে তুলে দেওয়া হলো ট্রেন্ট বোল্টের হাতে। ইংল্যান্ডের পক্ষে নামলেন বাটলার ও স্টোকস। সে ওভারে ২ চার ও ১ তিনে এল ১৫ রান। ১৬ রানের লক্ষ্য পেল পুরো বিশ্বকাপে বাজে ব্যাটিং করা নিউজিল্যান্ড। স্ট্রাইকিং প্রান্তে গেলেন জিমি নিশাম। প্রথম বলটাই হলো ওয়াইড! পরের বলেই ২ রান, পরের বলেই ছক্কা। ৪ বলে মাত্র ৭ রান দরকার। এমন অবস্থায় পরের ২ বলে এল ৪ রান। ২ বলে দরকার ৩ রান। পরের বলে এল ১ রান। শেষ বলে দুই রান দরকার। স্ট্রাইকে ভয়ংকর এক বিশ্বকাপ কাটানো গাপটিল। গাপটিল কোনো রূপকথা লেখার সুযোগ পেলেন না। ডিপ মিড উইকেটে বল পাঠিয়ে ২ রান নেওয়ার চেষ্টা করলেন, কিন্তু জেসন রয়ের থ্রো বাটলারের কাছে এসে পৌঁছাল একটু আগে। রানআউট হয়ে গেলেন গাপটিল। সুপার ওভারও টাই হলো!

কিন্তু তবু বাটলার কেন অত আনন্দে ছুটে বেড়াতে লাগলেন, কেন পুরো ইংল্যান্ড দল ওভাবে পাগলের মতো ছুটতে লাগল? কারণ, সুপার ওভারের নিয়মেই যে লেখা, যদি দুই দল সমান রান করে, তখন বাউন্ডারির হিসাব চলে আসে। মূল ম্যাচ ও সুপার ওভার মিলিয়ে যে দল সবচেয়ে বেশি বাউন্ডারি মারবে, তারাই জিতবে সুপার ওভার। সেখানে যদি দুই দলে সমতা থাকে, তখন দেখা হবে সুপার ওভারে কারা বাউন্ডারি বেশি মেরেছে। নিউজিল্যান্ড মূল ইনিংসে ১৬টি বাউন্ডারি মেরেছিল। আর ইংল্যান্ড মেরেছিল ২৪টি। ফলে সুপার ওভারে নিউজিল্যান্ড যত বাউন্ডারিই মারুক না কেন, ইংল্যান্ডকে টপকাতে পারত না তারা। আর তাতেই মহানাটকীয় এক ম্যাচ শেষে ইংল্যান্ড অবশেষে দেখা পেল সেই বহু আকাঙ্ক্ষিত বিশ্বকাপ ট্রফির। তিনটি ফাইনাল হারার দুঃখ সেই লর্ডসেই ভুলল ইংল্যান্ড।