Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - Md. Siddiqul Alam (Reza)

Pages: [1] 2 3 ... 17
1

করোনাভাইরাসের কারণে এক অনির্ধারিত ছুটির কবলে পড়ে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাপঞ্জিই এলোমেলো হয়ে গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বিভাগে চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশ আটকে আছে। অন্যদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যখন পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখনই এসেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা। সেশনজট বাড়ছে, পড়াশোনা নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

শুধু পড়ালেখা তো নয়, ক্যাম্পাসজীবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে অনেক শিক্ষার্থী এবং তাঁদের পরিবারের আয়রোজগারের বিষয়টিও। কেউ কেউ টিউশনি কিংবা খণ্ডকালীন বিভিন্ন কাজ করে আয় করতেন, পরিবারে সহায়তা করতেন। সেই পথ বন্ধ হয়ে গেছে। যাঁরা ভাড়া বাসায় (মূলত মেস) থাকতেন, তাঁরা অধিকাংশই নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে গেছেন, কিন্তু ভাড়া গুনতে হচ্ছে ঠিকই। সাম্প্রতিক সময়ে এত লম্বা বন্ধ আর হয়নি।


অন্যদিকে ঢাকার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রামের ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি, সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটিসহ ৫৫টির বেশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশসহ আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় আগামী জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে পুরোদমে নতুন সেমিস্টারের অনলাইন ক্লাস নেওয়া শুরু করবে।

এদিকে বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যেমন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। তবে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ‘নানা সমস্যার কারণে’ আনুষ্ঠানিকভাবে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। দীর্ঘ এই ছুটির কবলে পড়ে ঘরবন্দী শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা ও অনিশ্চয়তা বাড়ছে।

দেশের বেশ কয়েকজন শিক্ষাবিদ মনে করেন, ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীদের নানা উপায়ে পড়ালেখায় সক্রিয় থাকা উচিত। এ ক্ষেত্রে শিক্ষকেরাই বড় ভূমিকা পালন করতে পারেন। কেউ কেউ বলছেন, অনলাইনে ক্লাস শুরু করতে হবে। আবার কারও অভিমত, যেকোনো কারণেই হোক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যেহেতু অনলাইনে ক্লাস শুরু করা যাচ্ছে না, সে ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনে বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে শিক্ষার্থীরাও পড়াশোনার প্রতি যতটা সম্ভব সক্রিয় থাকতে পারেন। সবচেয়ে বড় কথা, ‘যুদ্ধকালীন’ ক্ষতির বিষয়টি মাথায় রেখেই যতটা সম্ভব সক্রিয় থাকতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসির) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান অনলাইনে ক্লাস শুরুর ওপরই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে অনলাইন ক্লাসের বিকল্প নেই। এ জন্য শিক্ষকদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ ক্ষতির মুখে ফেলা যাবে না।’ বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এখন অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেছে। ফলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে অনলাইন ক্লাস নেওয়া সম্ভব।

এখন এমনিতেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিচ্ছিন্ন শিক্ষার্থীরা। এর সঙ্গে পড়াশোনা থেকেও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে শূন্যতার সৃষ্টি হবে। বিশেষ করে প্রান্তিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা বেশি সমস্যায় পড়বে। এমনটা মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বিচ্ছিন্ন করে রাখা যাবে না।’

পড়াশোনায় যুক্ত থাকতে বিভিন্ন বিভাগের ফেসবুকভিত্তিক গ্রুপ কাজে লাগতে পারে। বাড়িতে সঙ্গে নেওয়া বইপুস্তক, নোটগুলো দিয়ে নিজের মতো করেও পড়ালেখা চালিয়ে নেওয়া যায়। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘ছাত্রছাত্রীদের উচিত নানাভাবে সক্রিয় থাকা। দূরে থেকেও স্পর্শ করা যায়, সেই সংস্কৃতি এখন আত্মস্থ করতে হবে।’

অনলাইনে ক্লাস নেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের প্রথম দিকেই আলোচনা করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তখন শিক্ষার্থীদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনা করে ডিনস কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হয়নি বলে জানালেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক মাহবুবা নাসরীন। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা থেকে ইন্টারনেটসহ আনুষঙ্গিক সুবিধা বাড়িয়ে কোনো ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে এখন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা যায়। এ ছাড়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থাও করতে হবে।’

করোনা মহামারির এই দুঃসময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও পড়াশোনায় শিক্ষার্থীদের সক্রিয় রাখতে হবে বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদেরা। তাই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতে পড়াশোনা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে না পড়েন, সে জন্য বাস্তবভিত্তিক বিকল্প ব্যবস্থা হতে পারে ভালো সমাধান।

https://www.prothomalo.com/education/article/1662598

2
ডেক্সামেথাসোন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ ওষুধটিই করোনার চিকিৎসায় গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তিদের জীবন রক্ষা করতে সক্ষম। মূলত করোনায় আক্রান্ত যেসব রোগীর ভেন্টিলেশন ও অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়, সেসব রোগীর জীবন বাঁচাতে ডেক্সামেথাসোন অত্যন্ত কার্যকর বলে দেখা গেছে। এটা একধরনের স্টেরয়েড। তবে মৃদু উপসর্গযুক্ত রোগীদের জন্য এই ওষুধ ব্যবহারের প্রয়োজন নেই।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক এ গবেষণাটি চালিয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রায় ২ হাজার করোনা রোগীর শরীরে ডেক্সামেথাসোন পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়েছিল। তা থেকে প্রাপ্ত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ভেন্টিলেশনে থাকা রোগীদের ক্ষেত্রে মৃত্যুঝুঁকি ৪০ শতাংশ থেকে ২৮ শতাংশে কমে আসে। আর যেসব রোগীর অক্সিজেন গ্রহণের প্রয়োজন হয়, সেসব রোগীর মৃত্যুঝুঁকি ২৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে কমে আসে।

3
করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছে বিশ্বের বিশাল অংশের মানুষ। এ সময় মোবাইল ফোন বড় কাছের সঙ্গী। আর যুব সমাজের এক বড় অংশের কাছে সোশ্যাল মিডিয়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে অন্যতম বিচরণক্ষেত্র। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় বুঁদ হয়ে থাকার ফলে মানসিক চাপের মাত্রা বাড়তে পারে। করোনার এই সময় এর মাত্রা আরো বেশি।

সম্প্রতি দিল্লির লেডি শ্রীরাম কলেজ এবং অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস-এর অধ্যাপকরা সম্প্রতি এক সমীক্ষায় এ তথ্য জানান।

গবেষকরা যৌথভাবে মধ্য ও উচ্চ মধ্যবিত্ত যুবক-যুবতীদের নিয়ে একটি সমীক্ষা করেন।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, তাঁরা গড়ে প্রতিদিন সাড়ে ৬ ঘণ্টা সোশ্যাল মিডিয়াতে সময় ব্যয় করছেন। এখানকার কনটেন্টগুলি তরুনদের মনে বিশেষ ছাপ ফেলছে।

লেডি শ্রী রাম কলেজের অধ্যাপক কণিকা আহুজা, অনিশা জুনেজা এবং চিকিৎসক যতন পাল সিং বালহারা এই গবেষণা করেছেন ৩০০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থীদের নিয়ে। শিক্ষার্থীদেরদের বয়স ১৮-২৫ বছর।

এর মধ্যে ১৮৫ জন নারী  এবং ১২৩ জন পুরুষ। ২৭৪ জন স্নাতক কোর্সে এবং ৩৪ জন স্নাতকোত্তর স্তরের ছাত্র।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিদিন গড়ে তাঁরা ৬.৭৫ ঘণ্টা ব্যয় করছেন এবং প্রতিদিন গড়ে ৩.৩৫ ঘণ্টা বিরতি দিচ্ছেন।

আহুজা বলেন, শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা, পরীক্ষা ও প্লেসমেন্ট- সব কিছু নিয়েই অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সম্মুখীন। চূড়ান্ত বছরের স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ। কারণ লকডাউনের জন্য অনেক সংস্থা চাকরির অফারগুলি ফিরিয়ে নিচ্ছে। কভিড-১৯ এর কারণে যত বেশি এই সব চাপ বাড়ছে, ততই সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার বাড়ছে যা তাঁদের সুস্থ থাকার অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, সাধারণ শিক্ষার্থীরা আর্থিক সমস্যা, পড়াশোনার চাপ, উদ্ভূত পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া, ভৌগোলিক পরিবেশ, সম্পর্ক, জীবন যাপনে পরিবর্তন এবং টাইম ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি নিয়ে এমনিতেই চাপে থাকেন। লকডাউন পরিস্থিতি সেই চাপ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, অভূতপূর্ব এই পরিস্থিতিতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি হাত ধোয়া এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, স্বাস্থ্যকর আচরণ নিয়ে যে অস্পষ্টতা আছে তা দূর করতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস

https://www.kalerkantho.com/online/miscellaneous

4
প্রাণঘাতী করোনা মোকাবেলায় মাস্ক এখন আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। তবে মাস্কই যেনো উল্টো বিপদের কারণ না হয়ে দাঁড়ায় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আমরা অনেকে মাস্ক ব্যবহারের সঠিক নিয়ম জানি না্।  মাস্ক ব্যবহারের সঠিক নিয়ম মেনে চললেই অনেকাংশে করোনা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। কয়েকটি ভুল শুধরে নিলেই মাস্ক ব্যবহারে আরো কোন সমস্যার সৃষ্টি হবে না।

প্রথমত: শুধু মুখের অংশ ঢাকার জন্য অনেকে মাস্ক ব্যবহার করে। এ থেকে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে এবং অন্য কেউ আক্রান্ত হতে পারে। মাস্ক পরলে অবশ্যই নাক ঢাকা থাকতে হবে। কারণ নাক দিয়ে নিশ্বাস নেওয়ার সময় পাশের কেউ সহজে সংক্রমিত হতে পারে।

দ্বিতীয়ত: অনেকে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সাথে মাস্ককে স্পর্শ করে। সেক্ষেত্রে সংক্রমণ খুব দ্রুত ছড়াতে পারে। মাস্কের ভেতরের অংশের মত বাইরের অংশ স্পর্শ করাও ঠিক নয়। মাস্ক খোলার সময় অবশ্যই ফিতা ধরে খুলতে হবে। কোনভাবেই সামনের অংশে হাত দেওয়া যাবেনা।

তৃতীয়ত: চিকিৎসকরা যে এন৯৫ মাস্ক ব্যবহার করে সেগুলো খুব সুন্দর ভাবে মুখের সাথে লেগে থাকে। কিন্তু সার্জিকাল মাস্ক বা বাসায় বানানো মাস্ক গুলো অনেকসময় মাপ মত হয়না। মুখের সাথে লেগে থাকে না। মাস্কের কাজ  হলো যতটা সম্ভব বাইরের বাতাস আটকানো। সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে মাস্কের দু পাশের ফিতা টাইট করে নেওয়া যেতে পারে।

চতুর্থত: নাকের একেবারে উপরাংশ পর্যন্ত যে জায়গাকে ব্রিজ বলে সে অংশ পর্যন্ত মাস্ক দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। অনেকে শুধুমাত্র নাকের ডগা পর্যন্ত মাস্ক দিয়ে ঢেকে রাখে। এতে দেখা যায় খুব সহজেই বাইরের বাতাস চলাচল করতে পারে, যা পরবর্তীতে বিপদ ডেকে আনে।

পঞ্চমত: একবার ব্যবহারের পর মাস্ক অবশ্যই ধুতে হবে। এক্ষেত্রে গরম পানি ব্যবহার করা যেতে পারে। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এন৯৫ মাস্কও এই একই পরিষ্কার করতে হবে।

করোনা প্রতিরোধে মাস্কের সাথে সাথে নিয়মিত হাত ধোওয়া, অ্যালকোহলযুক্ত স্যানিটাইজার ব্যবহার করা এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা এ বিষয়গুলো অনুসরণ করতে হবে।


http://www.allbanglanewspapersbd.com/kalerkantho

5
আপনার একটি মহৎ গুণের কারণে যখন আল্লাহ এবং তার রাসুলের পক্ষ থেকে একের পর এক সুসংবাদ আসতে থাকবে তখন আপনার অনুভূতি কেমন হবে?


অনেকে বলবেন আল্লাহ ও রাসুলের পক্ষ থেকে সুসংবাদ আসা সম্ভব? এখন কি নবীর যুগ যে, আসমান থেকে ওহি পাঠিয়ে আল্লাহ সুসংবাদ দিবেন!

এমনটি যারা ভাবছেন তারা সম্ভবত ভুলে গেছেন যে, আমাদের মাঝে আছে আল্লাহর কোরআন ও রাসুলের হাদিস।

কোরআন ও হাদিসের মাঝেই আল্লাহ পাক ও তার মাহবুব (সা.) সুসংবাদ দিয়েছেন ওই মানুষের ব্যাপারে যারা প্রতিকূল মুহূর্তে, বৈরী পরিবেশে মোটকথা সর্বাবস্থায় ধৈর্য ধারণ করে।

ধৈর্যকে নিজ জীবনের প্রতিটি সেকেন্ডে অলংকার হিসেবে ব্যবহার করে। এরা আল্লাহতায়ালার কাছে শ্রেষ্ঠ মানুষের মর্যাদা পায়। শ্রেষ্ঠত্বের মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হয়ে মাথায় পরে নানাবিধ সুসংবাদের মুকুট।

আল্লাহর পক্ষ থেকে পুরষ্কার

আল্লাহতায়ালা ধৈর্যশীলদের জন্য আল কোরআনে সুসংবাদের ডালি সাজিয়েছেন।

১. হে ঈমানদারগণ! তোমরা ধৈর্য ও নামাজ দ্বারা সাহায্য প্রার্থনা কর, নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন। (সুরা বাকারা, আয়াত নং ১৫৩)

২. এবং নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে ভয়, ক্ষুধা, ধন, প্রাণ এবং ফল-ফসলের দ্বারা পরিক্ষা করব; এবং ওইসব ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ প্রদান কর। যাদের ওপর কোন বিপদ নিপতিত হলে তারা বলে, নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য এবং অবশ্যই আমরা তার দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী। এদের ওপর তাদের রবের পক্ষ হতে শান্তি ও করুনা বর্ষিত হবে এবং এরাই সুপথগামী। (সুরা বাকারা, আয়াত নং ১৫৫-৫৭)

ধৈর্যের আলোচনা আসলেই হযরত আইয়ুব (আ.) এর ঘটনা সামনে চলে আসে। রাজকীয় জীবন ছিল হযরত আইয়ুব (আ.) এর। আর আল্লাহ পাক যখন তার পরীক্ষা নিলেন তখন তার অবস্থা এমন পর্যায়ে গিয়ে উপনীত হল যে, জীবন উৎসর্গকারিনী এক গুণবতী, ধৈর্যশীলা স্ত্রী বিবি রহিমা ছাড়া আর কেউ তার সঙ্গ দিল না।

লোকালয়ের আশ্রয় হারিয়ে বনে হল তার ঠিকানা। দীর্ঘ আঠারো বছর যাবত পোকা মাকড় তাকে কুরে করে খেতে থাকল। তবে আশ্চর্যের বিষয় হল, লম্বা এ সময়ে এক সেকেন্ডের জন্য অভিযোগ তো দুরের কথা অনুযোগের সুর পর্যন্ত আনার কল্পনা করেননি; অথচ তখনও তিনি নবি এবং জিবরাঈল আলাইহিসসালাম তার কাছে নিয়মত যাতায়াত করেন।

ধৈর্যের এমন কোন পথ নেই যে পথে তিনি হাটেননি! কঠিন এ পরীক্ষায় আল্লাহর রহমতে ধৈর্যের মাধ্যমে তিনি উত্তীর্ণ হলেন।

পবিত্র কোরআনে একাধিকবার আল্লাহ তাকে উল্লেখ করে কেয়ামত পর্যন্ত জীবন্ত রাখলেন। ধৈর্য কেমন ধরতে হয়, ধৈর্যের রূপ কেমন হয় তার সবটাই দেখালেন হযরত আইয়ুব (আ.)।

তাঁর সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, আমি তাকে পেলাম ধৈর্যশীল। কত উত্তম বান্দা সে! সে ছিল আমার অভিমুখী। (সুরা সোয়াদ, আয়াত নং ৪৪)

সুবহানাল্লাহ! ধৈর্যের জন্য কি বিষ্ময়কর স্বীকৃতি!

প্রিয় পাঠক, মুসলমান মাত্রই সবার মন চায় মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন স্বীকৃতি পাওয়া। চেষ্টা করলে সবই সম্ভব। সুতরাং রমজানুল মুবারকের এই রহমতময় দিনে আমরা ধৈর্যের গুণ অর্জনের সাধনায় নিজেদের নিয়োজিত করি।

http://www.allbanglanewspapersbd.com/jugantor

6
করোনা মহামারিতে দেশজুড়ে যখন সাধারণ চিকিৎসা সেবাই ব্যাহত, তখন রোগীদের সেবায় অনলাইনে এগিয়ে এসেছেন হাজারের অধিক ডাক্তার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে কোভিড-১৯ ও সাধারণ রোগীদের নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তারা। অ্যাম্বুলেন্স, হাসপাতাল ও জরুরি সেবার প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিতে তৈরি করেছেন অ্যাপস, খুলেছেন শত শত হটলাইন নাম্বার।ঘরে বসে ফোন দিলেই বিনামূল্যে মিলছে এ চিকিৎসা সেবা।

সংকটকালীন এ সময়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে  ask doctor অ্যাপস। ২৬ মার্চ উন্মুক্ত হবার ১ সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশে গুগলের হেলথ অ্যান্ড ফিটনেস ক্যাটাগরিতে টপ চার্টে চলে এসেছে অ্যাপসটি। প্রতিদিন গড়ে ৭ হাজার মানুষ ফোন কলে ২৪ ঘণ্টা সেবা নিচ্ছেন। যার পেছনে বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করছেন প্রায় ১২শ’ চিকিৎসক। আস্ক ডক্টর অ্যাপস মেডিকেল অ্যাডভাইজার ডা. মুহিব্বুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ সরকারকে সহযোগিতার অংশ হিসেবে তারা এই অ্যাপসের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। যেকোনো পেশার মানুষ এই অ্যাপস ব্যবহার করতে পারবেন।

‘ফ্রি ভার্চুয়াল মেডিকেল ক্যাম্প’ নামে অনলাইনে বিনামূল্যে জরুরি চিকিৎসা পরামর্শ দিচ্ছে বেস্ট এইড। এতে ১৫ জন জুনিয়র এবং ১৭ জন সিনিয়র ডাক্তার রয়েছেন। মানুষ স্বাস্থ্যগত যেকোন সমস্যা নিয়ে বেস্ট এইডের ফেসবুক পেইজে মেসেজ পাঠালে ডাক্তাররা তার উত্তর দিচ্ছেন। সব ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যায় আলোচনা করা যাবে এই প্লাটফর্মে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের সঙ্গে। গুরুতর কোন কিছু হলে বেস্ট এইড থেকে ফোন করে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

বেস্ট এইড এর সিইও মীর হাসিব মাহমুদ জানান, এরই মধ্যে ৭০০ এর অধিক মানুষকে অনলাইনে ফ্রি সেবা দিয়ে আমরা দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে মানুষের পাশে থাকতে পেরেছি। এখানে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রয়েছেন  ১৭ জন। যে কেউ যেকোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যার জরুরি সমাধান পেতে হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন এই ০১৫৩৩৪৪৩১১৮ নাম্বারে, অথবা ফেসবুক পেইজ www.facebook.com/bestaidbd/ তে।

দীর্ঘদিন থেকে ফেসবুকের মাধ্যমে সেবা দিয়ে আসা ডেসপারেটলি সিকিং ডক্টরস গ্রুপ যুক্ত করেছে ১০টি হটলাইন নাম্বার। এই গ্রুপে রোগীর যে কোনো সমস্যা ছবি তুলে পাঠালে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
ডেসপারেটলি সিকিং ডক্টরস গ্রুপ প্রতিষ্ঠাতা ডা. সাকলায়েন রাসেল বলেন, ‘প্রায় ৩০০ জনের মতো ডাক্তার আমরা এখানে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। নিয়ম মেনে যেসব ওষুধ দেয়া সম্ভব সেগুলো দিয়ে দেয়া হচ্ছে।’

এছাড়া চিকিৎসকদের পেশাজীবী সংগঠন এফডিএসআর ৬টি শিফটে অনলাইনে সেবা দিচ্ছে। যেখানে রোগী হটলাইন নাম্বারের মাধ্যমে তার সমস্যা অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সেবা পাচ্ছেন।

২০১৫ সালে যাত্রা শুরু করা ডক্টরোলা তাদের ওয়েবসাইট ও অ্যাপের মাধ্যমে রোগী ও চিকিৎসকের মধ্যে যোগাযোগের কাজটি করে দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের এ সংকটে তারা বিভিন্ন বিষয়ে সাধারণ মানুষকে জানাতে সামাজিক মাধ্যমে লাইভে নিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের। ফলে রোগ ও প্রয়োজনীয় খাবার ইত্যাদি বিষয়ে জানতে পারছে সাধারণ মানুষ।

এছাড়া ব্যক্তি উদ্যোগেও অনেক ডাক্তার সামাজিক মাধ্যমে রোগীদের করোনাভাইরাস ও খাবারের বিষয়ে নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের অন্যতম ফ্যামিলি মেডিসিন, ডায়াবেটিস, অ্যাজমা এবং শ্বাস রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জাহাঙ্গীর কবির। যিনি ইতিমধ্যে ফেসবুক ও ইউটিউবে ওষুধ ছাড়াই সুস্থ হওয়ার পথ বাতলিয়ে রোগীদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। এছাড়া রোগীদের ভেষজ ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন মডার্ন হারবাল গ্রুপের চেয়ারম্যান ডা. আলমগীর মতি। যিনি সব ধরণের শাক-সবজি, ফল-ফলাদি ইত্যাদির পুষ্টিকর দিক মানুষের সামনে তুরে ধরছেন সামাজিক মাধ্যমে। 


http://www.allbanglanewspapersbd.com/kalerkanth

7
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের কারনে সবার মাঝেই মরণঘাতী এই রোগ থেকে কিভাবে বাঁচা যাবে? বাঁচলেও পরবর্তী সময় কেমন হবে। এমন অসংখ্য চিন্তা ঘিরে রেখেছে পরিবারকে। এর মধ্যে লকডাউনে ঘরের বাইরেও বের হতে মানা।

সারাদিন বাড়িতে থেকে একঘেয়ে লাগতে শুরু করে। বদলে গেছে প্রতিদিনকার রুটিনও। অনেকেই বাড়িতে থেকেই করছেন অফিসের কাজ। এমন পরিস্থিতিতে দুশ্চিন্তা থেকে ঘুম না এলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কিন্তু সুস্থ থাকার জন্য আর যাই হোক না কেন নিয়মিত ঘুম খুব জরুরি। ঘুম না হওয়ার সমাধান জেনে নিন।
রুটিন তৈরি করুন : যেহেতু জীবনযাপন আগের মতো নেই তাই নতুন একটি রুটিন তৈরি করতে হবে। রাত জেগে কাজ করার অভ্যাস বাদ দিন। রাতে ঘুম পেলে সোজা বিছানায় গিয়ে বাতি নিভিয়ে শুয়ে পড়–ন। আর ঘুমানোর আগে সকালে ওঠার সময় ঘড়িতে অ্যালার্ম দেবেন না। স্বাভাবিকভাবে ঘুমটা ভাঙতে দিন। এতে প্রথম ক’দিন আপনি একটু বেশি ঘুমাতে পারেন ঠিকই। কিন্তু শিগগিরই একটা ছন্দ চলে আসবে, তখন আর সমস্যা হবে না।
শোয়ার ঘরে বসে কাজ করবেন না : যদি সম্ভব হয়, কাজের সময় শোয়ার ঘরটা এড়িয়ে চলুন। বিছানায় নয়, চেয়ার-টেবিলে বসে কাজ করুন। ঘড়ি ধরে কাজ করুন যেমনটা অফিসে করেন। তাতে খানিকটা অফিসে বসে কাজ করার অনুভ‚তি আসবে।
দুপুরে ঘুম নয় : বাড়িতে থাকলে দুপুরের খাওয়ার পর একটু ঘুমাতে মন চাইতেই পারে। কিন্তু ভুলেও ঘুমোবেন না। আপনার অফিসের কাজ তো বটেই, এমনকী রাতের ঘুমও নষ্ট হয়ে যাবে। তবে আগের রাতে যদি একদম ঘুম না হয়ে থাকে, তবে একটু চোখ বুজে নিতে পারেন। কোনোভাবেই তা যেন ১০-১৫ মিনিটের বেশি না হয়।
কফি কম খান : অতিরিক্ত ক্যাফেইন ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। তাই ঘুমের সমস্যা থাকলে বিকেলের দিকে বা সন্ধ্যার পর কফি খাবেন না। কফির নেশা থাকলে দিনের বেলায় খেতে পারেন। তবে দুই থেকে তিন কাপের বেশি নয়।
দুশ্চিন্তা নয় : আপনি যদি ক্রনিক অনিদ্রার রোগী না হন, এবং শুধু বাড়তি স্ট্রেসের কারণেই অনিদ্রায় ভুগতে শুরু করেন, তাহলে আপনার প্রথম কাজ মানসিক চাপ কমানো। যে বিষয়গুলোর উপর আপনার কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করেও লাভ নেই, এটা মনকে বোঝান।
ব্যায়াম করুন : সারাদিন বাড়িতে বসে কাটাবেন না। কিছু শারীরিক কসরত করুন। বাড়ির বারান্দায় বা ছাদে হাঁটুন, জগিং করুন। ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করতে পারেন। কিছু না হলে সিঁড়ি ভেঙে ওঠানামা করুন। দিনের শুরুতেই ব্যায়ামের কাজটা সেরে ফেললে সারা দিন বাড়তি এনার্জি পাবেন।
ঘুমের পরিবেশ তৈরি করুন : রাতের খাবার খুব দেরি করে খাবেন না। ঘুমতে যাওয়ার প্রায় এক ঘণ্টা আগে টিভি বন্ধ করে দিন। এড়িয়ে চলুন মোবাইল। ঘরের আলো কম রাখুন। ঘরের পরিবেশ যেন যথাসম্ভব আরামদায়ক থাকে। ঘুম না এলেও রোজ নির্দিষ্ট সময়ে শুতে যান।

https://www.dailyinqilab.com/article

8
করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যে নানা রকম উদ্ভট ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বা দাবি অনলাইনে নিয়মিত ছড়াচ্ছে।

এর মধ্যে কিছু এসেছে বড় বড় রাজনৈতিক নেতার মুখ থেকে।

হাসপাতালের ফেস মাস্ক চুরি থেকে শুরু করে করোনাভাইরাস সংক্রমণের চিকিৎসা এবং জীবাণু যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে এই ভাইরাস ব্যবহারের কথা – সব রকম দাবিই শোনা গেছে রাজনীতিবিদদের মুখে।
আসুন জেনে নিই এরকমই কিছু দাবির কথা।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প

তিনি শুরুতে করোনাভাইরাসকে তেমন পাত্তা দিতে চাননি, তবে পরে বলেন এটা বিশ্বব্যাপী মহামারীতে পরিণত হয়েছে।

যখন ফেসমাস্কের চাহিদা বেড়ে গেল, তখন ট্রাম্প দাবি করেছিলেন নিউইয়র্কের হাসপাতাল থেকে বিপুল সংখ্যক সার্জিক্যাল মাস্ক চুরি হয়ে যাচ্ছে।

তিনি প্রশ্ন করেন এত মাস্ক কোথায় যাচ্ছে? এগুলো কি পেছনের দরজা দিয়ে অদৃশ্য হযে যাচ্ছে?

কিন্তু এরকম বিপুল সংখ্যায় মাস্ক চুরির কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

করোনাভাইরাসের উৎপত্তি যুক্তরাষ্ট্রে

বেশ কিছু চীনা কর্মকর্তা এটা বারবার বলার চেষ্টা করেছেন যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সূচনা চীনে হয়নি।

চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজান বারবার এ কাজ করেছেন।

চীনের রাষ্ট্রীয় মিডিয়াও বারবার এসব মিথ্যা দাবি তুলে ধরার চেষ্টা করেছে যে কোভিড ১৯ হয়তো সৃষ্টি করেছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।

আরেকটা দাবি ছিল যে চীনের অনেক আগেই ইতালিতে এ ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছিল।

কিন্তু এরকম দাবির সত্যতার পক্ষে কোনও প্রমাণই পাওয়া যায়নি।

বৈজ্ঞানিকরা একমত যে, ২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনের উহানে প্রথম অন্য প্রাণী থেকে করোনাভাইরাস মানবদেহে সংক্রমিত হয়েছিল।

চীনের সৃষ্টি করোনাভাইরাস

ইতালির জাতীয়তাবাদী নেতা মাত্তিও সালভিনি তার সমর্থকদের উদ্দেশে বলেছেন যে চীনই একটি ল্যাবরেটরিতে করোনাভাইরাস সৃষ্টি করেছে।

এটাও আরেকটা মিথ্যা দাবি।

কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ দাবি ব্যাপকভাবে শেয়ার হয়।

যদিও বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত যে কোভিড ১৯ মানুষের তৈরি কোনও ভাইরাস নয়।

ম্যালেরিয়ার ওষুধে কোভিড ১৯ সেরে যাবে

ভুয়া তথ্য প্রচারের জন্য ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জায়ার বোলসোনারোর অনেক উক্তি সেন্সর করেছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার এবং ইউটিউবের মত সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলো।

এসব পোস্টের একটিতে তিনি দাবি করেছিলেন ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন সম্পূর্ণরূপে করোনাভাইরাস সারাতে পারে।

আসলে এ নিয়ে পরীক্ষা হয়েছে, ওষুধটি পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগও হচ্ছে কিন্তু সার্বিকভাবে এর কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়নি।

দুর্বল মিউটেশন

ভারতের একজন ঊর্ধ্বতন রাজনীতিবিদ সুব্রামানিয়াম স্বামী দাবি করেন, ভারতে যে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে তা এ ভাইরাসের একটি দুর্বল মিউটেশন এবং মানবদেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা একে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে পারে।

তবে গবেষকরা কিন্তু এমন কথা বলছেন না।

সব ভাইরাসেরই মিউটেশন বা পরিবর্তন হয় কিন্তু বিজ্ঞানীরা এমন কোনও নমুনা এখনও পাননি যে কোভিড ১৯ কত মারাত্মক হতে পারে ।

আসলে এ ব্যাপারে অনেক কিছুই এখনও মানুষের অজানা।

এই কোভিড ১৯ আমাদের সবার জন্যই বিপদের কারণ – কিন্তু তা অনলাইনে ভুয়া দাবির যে ভাইরাস বিশ্বব্যাপী ছড়াচ্ছে - তা ঠেকাতে পারেনি। সূত্র: বিবিসি বাংলা

বিডি প্রতিদিন/কালাম

9
দেশজুড়ে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। যে কারণে নমুনা পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য হাসপাতালগুলোতে ভিড় বাড়ছে প্রতিদিন। করোনা সংক্রমিত অনেক রোগীর বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিতে হয়। তবে রোগীর অবস্থা খারাপ হলে হাসপাতালে নেওয়ার প্রয়োজন হয়। বাড়িতে বসে চিকিৎসার মাধ্যমেই অধিকাংশ আক্রান্ত ব্যক্তিকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব।

যেকেউ যেকোনো সময়ে করোনায় সংক্রমিত হতে পারেন। তাই আপনার বাসাটিকে সেভাবে প্রস্তুত রাখা প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্রের একটি রিসার্চ প্রজেক্ট এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে।

বাড়িতে বসে করোনা বা কোভিড–১৯ এ সংক্রমিত ব্যক্তিদের চিকিৎসা দিতে হলে প্রথমেই বাসার পরিবেশটিকে স্বাস্থ্যকর ও সেবা উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। আয়তন যাই হোক না কেন, তার মাঝেই প্রয়োজনীয় আয়োজন ও সতর্কতা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। রোগীর সেবা ও পরিচর্যার জন্য আলাদা স্থান নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি পরিবারের অন্য সদস্যদের দিকেও বাড়তি নজর থাকতে হবে এবং যত্ন নিতে হবে। কারণে এই সময় বাকিদের সংক্রমণ থেকে মুক্ত রাখাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

* পাঁচটি মূল বিষয়

বাড়িতে বসে করোনা সংক্রমিত ব্যক্তিদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ৫টি মূল বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রথমত, আইসোলেশন রুম, দ্বিতীয়ত নিরাপত্তা ও পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা, তৃতীয়ত চিকিৎসা ও থেরাপি, চতুর্থত প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ, পঞ্চমত পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষা।

* যে উদ্যোগগুলো নিতে হবে

১. আপনার বাসার একটি রুমকে করোনা সংক্রমিত রোগীর জন্য আইসোলেশন রুম তৈরি করতে হবে।

২. রোগীর রুমের সঙ্গে সংযুক্ত বাথরুমের ব্যবস্থা ও আলাদা রুম করতে পারলে সবচেয়ে ভালো।

৩. রুমটিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করুন ও রুমটি থেকে বাড়তি ফার্নিচার সরিয়ে ফেলুন।

৪. যে রুমটিতে সবচেয়ে বেশি জানালা আছে, সেটা রোগীর সেবার জন্য তৈরি করুন। খোলা জানালা, মুক্ত হাওয়া, সূর্যের আলো এবং জানালা দিয়ে বাইরের দৃশ্য রোগীর শরীর ও মন দুটাই ভালো রাখবে।

৫. ঘরটিতে কার্পেট থাকলে তা সরিয়ে ফেলুন। পরিষ্কার করা কঠিন এমন আসবাবপত্র থাকলে তা বের করে ফেলুন।

৬. যদি রোগীর রুমে পরিবারের অন্য সুস্থ সদস্যকে থাকতে হয়, তবে রুমটিকে পর্দা দিয়ে আলাদা করে ফেলতে পারলে ভালো হয়।

৭. রোগীর বিছানার চারদিকে যথেষ্ট পরিমাণে জায়গা থাকা উচিত। কমপক্ষে ২ ফুট, যাতে করে দুজন মানুষ রোগীর যত্ন নিতে পারেন।

৮. রোগীর বিছানা যথাসম্ভব জানালার কাছাকাছি রাখুন।

৯. বিছানার পাশে ছোট একটা টেবিল রাখুন, জিনিসপত্র রাখার জন্য। যেটা খুব সহজেই পরিষ্কার করা যায়।

১০. রোগীর রুমে সব সময় বাতাসের প্রবাহ থাকা ভালো। তবে খেয়াল রাখতে হবে বাতাস যেন, ভেতর থেকে জানালা দিয়ে বাইরের দিকেই যায়। বাতাস যেন রোগীর রুম থেকে অন্য রুমের দিকে না যায়।

১১. রোগীর রুমে ‘নেগেটিভ বাতাসের প্রবাহ’ তৈরি করা দরকার। এডাজাস্ট ফ্যান অথবা স্ট্যান্ড ফ্যান এই ক্ষেত্রেই কাজে দেবে।

১২. ঘরে আর্দ্রতা ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ হলে সংক্রমণের আশঙ্কা কম হয়।

১৩. রোগীর বাথরুম থেকেও অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরিয়ে ফেলুন।

১৪. সংক্রমণ রোধ ঠেকাতে রোগীর বাথরুম অন্য সুস্থ সদস্য ব্যবহার না করা উচিত।

১৫. রোগীর ময়লা বা নোংরা ফেলার জন্যই একটি অ্যালুমিনিয়াম এর তৈরি পাত্র রোগীর বিছানার কাছেই রাখুন। পাত্রটি ঢাকনাসহ হলে ভালো।

১৬. রোগীর ময়লা বাড়ির অন্য ময়লা থেকে আলাদা রাখা ভালো। একটা পলিথিনের ব্যাগে করে রোগীর ময়লা ফেলুন। যাতে এখান থেকে সংক্রমণ ছড়াতে না পারে। সবচেয়ে ভালো হয়, এই ময়লা বাড়ির বাইরে কোথাও পুড়িয়ে ফেলতে পারলে।

১৭. বাসায় থাকার সময় রোগীর মানসিক সুস্থতার জন্য প্রার্থনা ও বিনোদনের ব্যবস্থা করা উচিত।

১৮. বিভিন্ন ধরনের থেরাপি আছে যা এই সময়ে কাজে লাগানো যায়। যেমন, আরোমা বা সুগন্ধি থেরাপি, অথবা সংগীত থেরাপি।

১৯. রোগীর রুমের দেয়ালে প্রাকৃতিক দৃশ্য আছে এমন সুন্দর ছবি রাখার চেষ্টা করুন। এটা রোগীর স্ট্রেসের মাত্রা কমাতে সাহায্য করবে।

* বাসার বাকি জায়গার প্রস্তুতি

১. পুরো বাসা আবর্জনামুক্ত করুন।

২. বাড়ির ভেতরে রোগীর থাকার জায়গা বা সংক্রমিত স্থান এবং এর বাইরে পরিষ্কার জায়গা চিহ্নিত করুন।

৩. রোগীর হাঁটাচলার জায়গা আবর্জনামুক্ত করুন এবং রোগীর ব্যবহারের পরপরই তা পরিষ্কার করুন।

৪. শিশুদের জন্য নির্ধারিত জায়গা ঠিক করুন। তাদের খেলার ব্যবস্থা এবং সৃজনশীল কাজের ব্যবস্থা করে দিন।

৫. পরিবারের সদস্যদের মানসিক সুস্থতার কথা ভেবে প্রার্থনা ও বিনোদনের ব্যবস্থা করা উচিত।

৬. বাড়ির একটা বারান্দা ও অন্য কোনো স্থান সুন্দর করে গুছিয়ে তৈরি করে নিন। যেখানে পরিবারের সদস্য নিজের মতো কিছু সময় কাটাতে পারেন।

ওপরে তালিকাটিতে শুধু খুব দরকারি ও কিছু গাইডলাইন তুলে ধরা হয়েছে। এর বাইরেও আরও অনেক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এই গাইডলাইন অনুযায়ী বাসার আয়োজনটি নিশ্চিত করা গেলে, একই সঙ্গে রোগীর সেবা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের সুস্থ রাখা সম্ভব হতে পারে।


http://www.dainikamadershomoy.com/post

10
করোনাভাইরাস আতঙ্কে এখন সারা বিশ্ব। মহামারি আকারে এটি ছড়িয়ে পড়েছে সবখানে। পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২৩ লাখ মানুষ প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে আর মৃত্যুবরণ করেছে দেড় লাখের বেশি মানুষ। এখনো পর্যন্ত এই ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক তৈরি হয়নি। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, প্রাণঘাতী এই ভাইরাস থেকে বিশ্ববাসী মুক্তি পেতে বেশ সময় লাগবে। আর আক্রান্ত রোগী পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতেও লাগবে লম্বা সময়।

তবে সুস্থ হয়ে ওঠার বিষয়টি নির্ভর করবে, রোগী কতটা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তার ওপরে। অনেক মানুষ সামান্য কিছু উপসর্গ নিয়েই দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন কেউ কেউ। আবার অনেকের জন্য এটা দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে বয়স, লিঙ্গ এবং অন্যান্য শারীরিক বিষয়ও গুরুতর অসুস্থতার কারণ হয়ে দাঁড়ায় বলে বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়।

*সামান্য কয়েকটি উপসর্গ থাকলে কী হবে?

করোনায় আক্রান্ত বেশির ভাগ রোগীর ক্ষেত্রে কাশি বা জ্বরের মতো প্রধান উপসর্গগুলো দেখা গেছে। সঙ্গে শরীরের ব্যথা, ক্লান্তি, গলা ব্যথা এবং মাথা ব্যথা অনুভব করতে পারেন। কিছু কিছু রোগীর ক্ষেত্রে পাতলা পায়খানা, অণ্ডকোষে ব্যথা, পায়ে সংক্রমণসহ বেশকিছু লক্ষণও দেখা যাচ্ছে।

প্রথমদিকে শুষ্ক কাশি হতে পারে। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ভাইরাসের খেয়ে ফেলা ফুসফুসের মৃত কোষমুক্ত শ্লেষ্মাযুক্ত কাশি শুরু হতে পারে। মূলত বিশ্রাম, বেশি করে তরল পান এবং প্যারাসিটামলের মতো ব্যথানাশক ব্যবহার এসব ক্ষেত্রে চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে।

যাদের লক্ষণ হালকা থাকে। তারা দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন। এক সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে জ্বর চলে যায়। তবে কাশি আরও কিছুদিন থাকতে পারে। চীনের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব ক্ষেত্রে সুস্থ হয়ে উঠতে গড়পড়তা দুই সপ্তাহ সময় লাগে।

*গুরুতর লক্ষণ-উপসর্গ থাকলে কী হবে?

কোভিড-১৯ অনেকের ক্ষেত্রে গুরুতর হয়ে উঠতে পারে। এটি সংক্রমণের সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে ঘটে থাকে। পরিবর্তন অনেক সময় হঠাৎ করেই হয়ে থাকে। শ্বাস নিতে কষ্ট হয় এবং ফুসফুস ফুলে যায়। এর কারণ হলো, শরীরের ভেতরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার চেষ্টা করে। শরীরের প্রতিক্রিয়া তৈরির চেষ্টা করার ফলে শরীরের ভেতরের অনেক ক্ষতি হয়ে যায়। এই সময়ে অনেক মানুষকে অক্সিজেন সহায়তা দেওয়ার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।

চিকিৎসক ও ব্রডকাস্টার ডা. সারাহ জার্ভিস বলছেন, ‘শ্বাসকষ্টের এই ব্যাপারটি ভালো হয়ে উঠতে অনেক সময় লেগে যায়। শরীর তার ভেতরের কষ্টের ব্যাপারগুলো কাটানোর চেষ্টা চালিয়ে যায়। সুস্থ হয়ে উঠতে দুই থেকে আট সপ্তাহ সময় লেগে যেতে পারে। যদিও আরও কিছুদিন ক্লান্তি ভাব থেকে যাবে।’

* নিবিড় পরিচর্যা দরকার হয়, তাহলে কী হবে?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ধারণা করছে, প্রতি ২০ জন রোগীর মধ্যে একজনের নিবিড় পরিচর্যার দরকার হয়ে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে ঘুম পাড়িয়ে রাখা এবং ভেন্টিলেটর দেওয়ার মতো ব্যবস্থাগুলো। যেকোনো ধরনের অসুস্থতাই হোক না কেন, নিবিড় পরিচর্যা ইউনিট থেকে ফিরে সুস্থ হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে বেশ সময় লাগে। বাড়ি যাবার আগে রোগীদের নিয়মিত ওয়ার্ডে পাঠানো হয়ে থাকে।

ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন ফ্যাকাল্টির ডিন অ্যালিসন পিটার্ড বলছেন, ‘ক্রিটিক্যাল কেয়ার বা ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) থেকে বেরিয়ে পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে ১২ থেকে ১৮ মাস লেগে যেতে পারে। হাসপাতালের বিছানায় দীর্ঘদিন শুয়ে থাকলে শরীরের পেশির ক্ষয় হয়ে যায়। রোগীরা দুর্বল হয়ে পড়েন এবং পেশী পুনরায় তৈরি হতে সময় লেগে যায়। অনেকের এজন্য ফিজিওথেরাপির সহায়তাও দরকার হয়। আইসিইউতে থাকার কারণে অনেকের মধ্যে প্রলাপ বকা এবং মানসিক সমস্যা হওয়ারও সম্ভাবনা দেখা দেয়।’

চীন ও ইতালির রোগীদের ক্ষেত্রে শরীরের দুর্বলতা, সামান্য শারীরিক পরিশ্রমের পরেও শ্বাসকষ্ট হওয়া, ক্রমাগত কাশি এবং অনিয়মিত শ্বাসপ্রশ্বাসের খবর পাওয়া গেছে। সেইসঙ্গে অনেক ঘুমেরও দরকার হয়।

কার্ডিফ এন্ড ভেল ইউনিভার্সিটি হেলথ বোর্ডের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ফিজিওথেরাপিস্ট পল টুজ বলছেন, ‘আমরা জানি, পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে রোগীরা অনেক সময় নেন। অনেক বলতে, সেটা কয়েক মাস হয়ে যায়। অনেক মানুষ ক্রিটিক্যাল কেয়ারে তুলনামূলকভাবে অল্প সময় থাকেন। আবার অনেককে দীর্ঘদিন ভেন্টিলেটরের সহায়তাও দিতে হয়।’

* করোনাভাইরাস কি স্বাস্থ্যের জন্য দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলবে?

যেহেতু এই বিষয়ে এখনো দীর্ঘমেয়াদী কোনো তথ্য উপাত্ত নেই, তাই এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কারো জানা নেই। কিন্তু অন্যান্য অবস্থার কথা বিবেচনা করে দেখা যেতে পারে।

অ্যাকুইট রেসপিরেটরি ডিসট্রেস সিনড্রোম (যাকে আরডস বলা হয়ে থাকে) এমন সব রোগীদের মধ্যে তৈরি হয় যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বিষয়টি অতিরিক্ত চাপের ভেতর দিয়ে যায়। যা তাদের ফুসফুসের ক্ষতি করে দেয়।

পল টুজে বলছেন, ‘এক্ষেত্রে আমরা দেখেছি যে, মানুষজন পাঁচ বছর পরেও শারীরিক ও মানসিক জটিলতার মুখোমুখি হয়েছেন।’

ওয়ারউইক মেডিকেল স্কুলের প্রভাষক ডক্টর জেমস গিল বলছেন, ‘পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তারও দরকার। আপনার যদি শ্বাসকষ্ট হয়, তখন হয়তো চিকিৎসক বলছেন, আমরা তোমাকে এখন ভেন্টিলেটরে নিয়ে যাবো। আমরা তোমাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখবো। আপনি কি আপনার পরিবারকে বিদায় জানাতে চান? এই রোগীদের মধ্যে পিটিএসডি (পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার) দেখা দেয়া আশ্চর্যজনক নয়। অনেকের উল্লেখযোগ্য মনস্তাত্ত্বিক ক্ষত তৈরি হতে পারে। অনেক সময় হালকাভাবে আক্রান্ত হলেও সেটা দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ানোর সম্ভাবনাও রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘তবে আতঙ্কিত হবেন না। করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে উঠতে বেশি দিন সময় লাগে না। গড়ে আক্রান্ত হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যেই অধিকাংশ রোগী সুস্থ হয়ে উঠে। কেউ আতঙ্কিত হবেন না। ভয় পাবেন না। প্রথমেই নিজেকে শান্ত রাখুন। সর্দির জন্য সাধারণ যে ওষুধগুলো রয়েছে ব্যবহার করুন। বেশি বেশি পানি পান করুন। এতে কিছুটা স্বস্তি পাবেন। কোনোভাবেই হতাশ হবেন না। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।

http://www.dainikamadershomoy.com/post

11
করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মোকাবিলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। জারি করা হয়েছে অনেক বিধি-নিষেধ। আর কিছু দিন পরই শুরু হচ্ছে রমজান মাস। করোনাভাইরাসের সময়ে মুসলামনদের এই পবিত্র মাসকে ঘিরে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও)।

রমজানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ :

*মসজিদে নামাজ আদায় করার সময় কমপক্ষে ১ মিটার বা ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

*কোলাকুলি করা, গায়ের ওপর হাত দিয়ে ডাকা, শরীরের ওপর হাত রাখা-এসব অভ্যাস ত্যাগ করুন।

*রমজানে দোকানে বা বাজারে একসাথে অনেক মানুষ জমায়েত বন্ধ করুন।

*অসুস্থ মানুষ এবং করোনার সামান্যতম লক্ষণ আছে তাদের বাসায় থাকতে বলুন। সেই সঙ্গে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলুন।

*প্রবীণ এবং অসুস্থদের সমাবেশে অংশ নিতে নিষেধ করুন।

রমজানে সমাবেশ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ :

*বাইরের যেকোনো সমাবেশ পরিত্যাগ করতে হবে এবং একান্ত প্রয়োজন হলে বাড়ির ভিতর খোলামেলা জায়গায় ব্যবস্থা করতে হবে।

*সমাবেশের সময়সীমা যতটা সম্ভব কম করুন।

*বড় বড় সমাবেশে যোগ দেওয়ার চেয়ে কম অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে ছোট সমাবেশের আয়োজন করুন।

*দাঁড়িয়ে থাকার সময়, নামাজ পড়ার সময়, ওযু করার সময় এবং জুতা সংরক্ষণের স্থানেও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলুন।

*মসজিদে প্রবেশ এবং বের হওয়ার মুহূর্তে সব সময় নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

*সমাবেশের মধ্যে যদি কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা যায় তবে তার ঠিকানায় যোগাযোগ করতে হবে।

*মসজিদের প্রবেশ দ্বারে এবং ভিতরে হ্যান্ড ওয়াশ ও পর্যাপ্ত পরিমাণে পানির ব্যবস্থা থাকতে হবে। সেই সঙ্গে অ্যালকোহল সমৃদ্ধ স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা থাকতে হবে।

*পর্যাপ্ত পরিমাণে টিস্যু থাকতে হবে, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।

*মসজিদে কারপেটের উপরে ব্যবহারে জন্য ব্যক্তিগত জায়নামাজ ব্যবহারের বিষয়ে সবাইকে উৎসাহিত করতে হবে।

*কোভিড-১৯ সম্পর্কে জনসচেতনমূলক বার্তাগুলোকে ভিজ্যুয়াল ডিসপ্লেতে দেখাতে হবে।

*জীবাণুনাশক ও ডিটারজেন্ট ব্যবহার করে নামাজের আগে পরে মসজিদ পরিষ্কার রাখতে হবে।

*মসজিদের প্রাঙ্গন, ওযুখানা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

* কিছুক্ষণ পর পর দরজা, লাইটের সুইচ, সিড়ির রেলিং পরিষ্কার করতে হবে।

http://www.dainikamadershomoy.com/post

12
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ চীনের জ্ঞাতসারে ঘটে থাকলে তার ফল ভোগ করতে হবে। শনিবার হোয়াইট হাউসের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এমন মন্তব্য করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার মতে, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার আগে চীনেই এটি থামানো যেতো। তা হয়নি। আর এখন পুরো বিশ্ব এর কারণে ভুগছে। প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে চীনের ধীরগতির ভূমিকা নিয়েও তীব্র সমালোচনা করেন যুক্তরাষ্ট্রের এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট। খবর রয়টার্সের

কোভিড-১৯ এর এই বিপর্যয়ের সময়ে যখন প্রযুক্তি ও অর্থনীতিতে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দেশদুটোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা দরকার, তখন দুইদেশের এই রশি টানাটানি ও বিদ্বেষমূলক আচরণ বিশ্বের জন্য অশনিসংকেত হয়ে দেখা দিয়েছে। ট্রাম্প বলেন, এটা যদি ভুল হয়ে থাকে, তাহলে ভুলই। কিন্তু ইচ্ছে করে এই ভুল করা হলে দায়ীদের চরম পরিণতির জন্য তৈরি থাকতে হবে।

অবশ্য চীনের বিরুদ্ধে সেক্ষেত্রে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হতে পারে, সে ব্যাপারে পরিষ্কার করে কিছু বলেননি ট্রাম্প। গত বছরের শেষ দিকে চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর চীন এ বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য দেয়নি বলে বেশ কিছুদিন ধরেই ট্রাম্প ও তার শীর্ষ সহযোগীরা অভিযোগ করে আসছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে ‘চীন ঘেঁষা’ অ্যাখ্যা দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট গত সপ্তাহে সংস্থাটির তহবিলও স্থগিত করেছেন।

ভাইরাসটিকে ঘিরে ওয়াশিংটন ও বেইজিং এখন প্রকাশ্যেই তর্কযুদ্ধে লিপ্ত। প্রথমদিকে প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে ভূমিকার জন্য চীন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের উচ্চ প্রশংসা করেছিলেন ট্রাম্প। তবে তিনি ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তখনও ভাইরাসটিকে ‘চীনা ভাইরাস’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। একই সময় দুই পক্ষের উত্তেজনা অতি চরমে পৌছালে সম্ভাব্য নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার বিষয়েও সজাগ আছেন হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা। তবে ট্রাম্পের এই সুর ছড়ানোকে ভোটের রাজনীতি হিসেবেও দেখছেন অনেক সমালোচক।


https://samakal.com/international/article

13
করোনাকে প্রথমে ভাবা হয়েছিল স্বাস্থ্যসমস্যা, পরে দেখা গেল হাজারো মানসিক জটিলতাকেও বাড়াচ্ছে। জীবনের সব ক্ষেত্রকেই সংক্রামিত করার ক্ষমতা রাখে করোনা। দুঃখ-কষ্ট বাড়ে, অভাব বাড়ে, অস্থিরতা ও নৈরাজ্য বাড়ে, অন্যায়ও বাড়ে। তাই শুধু হাত ধুলে আর মাস্ক পরলে এ থেকে রেহাই মিলছে না। লকডাউন যদি মানুষ না মানে, যদি ডাক্তারদের জন্য সরবরাহ করা মাস্ক নকল হয়, যদি ত্রাণের চাল চুরি করে কর্তারা, যদি রোগী ডাক্তারের কাছে তথ্য গোপন করে, সরকার যদি স্বচ্ছতার নীতি শিকেয় তোলে, ধর্মীয় নেতারা লাখো মানুষের জমায়েত আহ্বান করে, তাহলে হাত ধুয়ে কী লাভ?

ভুল দৃষ্টিভঙ্গী সকল ভাইরাসের চাইতে বড় ভাইরাস। মনের চোখ যদি সহি না দেখে, তাহলে কিছুতেই কোনো লাভ হয় না।

করোনার বিপদের প্রকৃতিটা হলো, শুধু আমি সুস্থ থাকলে হবে না, তোমাকেও সুস্থ থাকতে হবে। না হলে তোমার ভাইরাস দশজন ঘুরে আমার দুয়ারেও কোনো না কোনোভাবে আসবে। তাই একটা অংশ যদি নিয়ম না মানে, তাহলে সকলের সকল চেষ্টা বৃথা যেতে পারে। দেশের ভেতরেও এটা যেমন সত্য, দেশের বাইরের বেলাতেও। যদি দুনিয়ার সব দেশ এই ভাইরাসকে পরাস্ত করতে না পারে, কোনো কোনো দেশ পারে, তাহলেও সফল দেশগুলো নিরাপদ হবে না। ব্যর্থ দেশগুলো থেকে ভাইরাস আবার সেসব দেশে যেতে পারে।

শরীর সুস্থ রাখতে তাই মনের সুস্থ চিন্তাও জরুরি। মন যদি কথা না শোনে, মন যদি কেবল নিজের কথা ভাবে, অথবা মন যদি আপনাকে ঠেলে নিয়ে ফেলে সংক্রমণের বাজারে, তখন শুধু হাত ধুয়ে আর কাজ হবে না। হাত ধোয়ার পাশাপাশি মন ধুয়ে নেওয়ার জরুরত এখন সবচে বেশি। এ সময়ে যদি মানসিকভাবে সবল না থাকি, মনে যদি দুর্নীতি, মিথ্যা, লোভ থাকে, অপরের জন্য ভালোবাসা কাজ না করে, তাহলে করোনায় কাবু হতেই হবে। আমাদের সমাজ এসবে আগে থেকেই কাবু ছিল। করোনা সেই কাবু সমাজদেহটাকে পেয়েছে শিকার হিসেবে।

কেউই সুপারম্যান নয়। ক্ষুধা ও ভয় মানুষ নিজের ভেতর চেপে রাখতে পারে না। দেশের কোটি কোটি মানুষ ক্ষুধার্ত, বরাদ্দের সাহায্য সবার কাছে পৌঁছাচ্ছে না। মানুষ ভীত, সরকারি আয়োজনের অবস্থা তো সবাই দেখছে। ভয় থেকে তারা দৈবশক্তির কাছে আশ্রয় চাইবে, ধর্মীয় গুরুদের ভরসায় ঘর থেকে বের হবে। কারণ, রাষ্ট্র অভয় দিতে পারছে না। এ রকম অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া বা লক্ষ্মীপুরে হাজারো মানুষের জমায়েত হলে ‘কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়’ বলে পার পাওয়া যাবে না। বেতন দেওয়ার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে শত কিলোমিটার হাঁটিয়ে নিয়ে আসা শ্রমিকের মিছিলকে দায়ী করা যাবে না, দায়ী করতে হয় তাদের, যারা এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে, উসকানি দিয়েছে, যারা মানুষকে ঘরে থাকার ভরসা দিতে পারছে না।

মন ধুতে হবে আরেক কারণেও। বড় শহরগুলোয় সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ঘর বলতে এক ঘরে পাঁচের ওপর মানুষের বসবাস। এসব মানুষের কাছে ঘরে থাকা মানে কারাভোগ। বহুকাল হলো পুরুষেরা বাইরের জন্য নিজেদের তৈরি করেছে। বাইরের কাজ, বেড়ানো, আড্ডা, মেলামেশা তাদের জীবনের জরুরি অংশ। এসব মানুষ হঠাৎ ঘরের ছোট্ট পরিসরে দমবন্ধ বোধ করবে। তা ছাড়া লকডাউনে ঘরের যাবতীয় কাজ অনেক বেড়ে গেছে: রান্না, কাপড় ধোয়া, পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি। ঘরে থাকা পুরুষ ও শিশুদের যাবতীয় সেবা কিন্তু নারীরা একটানা করে যেতে পারবেন না। তখনই পুরুষদের সঙ্গে তাঁদের বিবাদ লাগবে। তা ছাড়া আমাদের অধিকাংশ পুরুষ দীর্ঘ সময় নারীদের সঙ্গে সময় কাটানো, কথা বলা, কাজের অংশীদার হওয়া ইত্যাদিতে অভ্যস্তও না।

আমাদের সম্পর্কগুলো অনেক ক্ষেত্রে মাইনফিল্ড হয়ে থাকে। পরস্পরের মধ্যে অনেক রকম সংঘাতের জলবায়ু আগে থেকেই আছে। বাইরের চাপে সেসবের জ্বালামুখ খুলে যায়। চলে সামাজিক, পারিবারিক ও দাম্পত্য সহিংসতা। জাতিসংঘ মহাসচিবও করোনার সময়ে পারিবারিক সহিংসতার তুমুল বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

সব মিলিয়ে করোনা মনের পরীক্ষাও নিচ্ছে। দারিদ্র্য, সহিংসতা, বিশৃঙ্খলা, দুর্নীতি ও কুশিক্ষায় এই সমাজ নিজেই এক সোশ্যাল মাইনফিল্ড হয়ে আছে। ঘরে ও বাইরে তার বিস্ফোরণ ঘটছে। হাত ধোয়ার পাশাপাশি, মুখ ঢেকে রাখার সঙ্গে সঙ্গে তাই মনটাও ধুয়ে নেওয়া দরকার, মনের কুডাকের মুখ চাপা দেওয়া দরকার।

ফারুক ওয়াসিফ: লেখক ও সাংবাদিক।
faruk.wasif@prothomalo.com

https://www.prothomalo.com/opinion/article

14
গত সপ্তাহে প্রথম আলোয় করোনাভাইরাস চিকিৎসার জটিলতা নিয়ে লিখেছিলাম। গত এক সপ্তাহের মধ্যে ঘটে গেল অনেক ঘটনা, জানা গেল অনেক নতুন তথ্য। পাওয়া গেল আশার নতুন আলো।

বড় খবর হলো, কোভিড-১৯–এর মৃত রোগীদের পোস্টমর্টেম বা শবব্যবচ্ছেদ থেকে জানা গেল অনেক তথ্য, ভুল প্রমাণিত হলো আমাদের অনেক ধারণা। আমাদের ধারণা ছিল Cytokine storm বা ফুসফুস থেকে তৈরি পদার্থ ফুসফুসকে ধ্বংস করছে। এখন আমেরিকা ও ইউরোপের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, ব্লাড ক্লটের (embolism) কারণে শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এই তথ্যের ফলে করোনা-১৯–এর চিকিৎসার পদ্ধতি ও কৌশল বদলে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।


প্রাপ্ত নতুন তথ্যের ভিত্তিতে এখন ধারণা করা হচ্ছে, করোনাভাইরাস রক্তের হিমোগ্লোবিনের সঙ্গে আটকে থাকে, এ কারণে অক্সিজেন হিমোগ্লোবিনের সঙ্গে আটকাতে পারে না। এ জন্যই শ্বাসকষ্ট হয়। আর সে কারণেই উচ্চমাত্রায় অক্সিজেন দিলে উপকার পাওয়া যাচ্ছে। আরও বলা হচ্ছে, যাদের থ্যালাসেমিয়া (যা একধরনের রক্তের সমস্যা) রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে হিমোগ্লোবিনের প্রোটিন পরিবর্তিত হওয়ার কারণে করোনাভাইরাস হিমোগ্লোবিনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে না।

এর উদাহরণ হিসেবে বলা হচ্ছে, দক্ষিণ ইতালির একটি ছোট্ট শহর, সেখানে বহু লোকের এই থ্যালাসেমিয়ার সমস্যা আছে, সেখানে করোনার সংক্রমণ নেই। বাংলাদেশের অনেক মানুষের এই থ্যালাসেমিয়ার সমস্যা আছে। এর ফলে বাংলাদেশের বহু লোক এই রোগের সংক্রমণ থেকে অব্যাহতি পাবে। আরও ধারণা করা হচ্ছে, যাঁরা সমুদ্র থেকে অনেক উঁচুতে থাকেন (যেমন নেপাল), সেখানে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বেশি থাকায় তাঁদের এই ভাইরাসের সংক্রমণ অনেক কম হবে। নতুন এই তথ্য থেকে ধারণা করা হচ্ছে, যেসব ওষুধ এই ভাইরাসকে রক্তের সঙ্গে আটকাতে প্রতিরোধ করে (যেমন: Hydroxyclochloriquine, zinc sulphate, ascorbic acid বা ভিটামিন সি), এই রোগ প্রতিরোধে তা কার্যকর হতে পারে।

হার্ভার্ড থেকে প্রকাশিত নামকরা মেডিকেল পত্রিকা নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বহুল আলোচিত ওষুধ Hydroxycholoquine কার্যকর নয়, বরং অনেক ক্ষেত্রে ভালোর চেয়ে ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়েছে। ২৩ জন মারাত্মকভাবে আক্রান্ত কোভিড-১৯ রোগীর ওপর পরিচালিত পরীক্ষার পরে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এ খবর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে এই কারণে যে এই মুহূর্তে আমরা বহু রোগীকে এই ওষুধ দিয়ে নিরাময়ের চেষ্টা করছি। অনুমান করা হচ্ছে এই রোগ প্রতিরোধে প্রাথমিক পর্যায়ে Hydroxycholoquine কার্যকর হতে পারে। কিন্তু ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে তা আর কার্যকর হয় না। এই মুহূর্তে শতাধিক ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে এই ওষুধের কার্যকারিতা নির্ধারণ করার জন্য। খুব শিগগির এর ফলাফল আমরা জানতে পারব।

এই সপ্তাহের বড় সুখবর হলো রেমডেসিভির নামের একটি ওষুধ এই রোগের নিরাময়ে কার্যকর বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। শিকাগোতে এই ওষুধ ব্যবহার করে ভালো হয়ে গেছে বেশ কিছু করোনা রোগী। এই ওষুধটির ব্যাপারে চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীরা আগে থেকেই আশাবাদী ছিলেন। সীমিত আকারে হলেও এখন প্রমাণ মিলেছে যে এর ব্যবহার করোনাভাইরাসকে দ্রুত মেরে ফেলে। এই তথ্য সত্যি প্রমাণিত হলে বহু রোগীকে এর প্রয়োগের মাধ্যমে নিরাময় সম্ভব হবে।

শেষ কথা, কোভিড-১৯–এর চিকিৎসা–কৌশল বিতর্কিত এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল। নতুন কিছু পরীক্ষামূলক চিকিৎসা শুরু হচ্ছে। এর অন্যতম হলো এক্সচেঞ্জ ট্রান্সফিউশন, যার মাধ্যমে রক্তের ভাইরাসযুক্ত হিমোগ্লোবিন বের করে দিয়ে নতুন রক্ত দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই পদ্ধতিতে দ্রুত ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এই ব্যবস্থার কার্যকারিতা জানা যাবে খুব শিগগির।

সবশেষে, সুস্থ হয়ে যাওয়া রোগীদের রক্ত থেকে নেওয়া অ্যান্টিবডি (ইমিউনোগ্লোবিন) দেওয়া হচ্ছে মৃত্যুপথযাত্রী রোগীদের ক্ষেত্রে। এর ব্যবহার এখনো সীমিত, কারণ এটা ব্যাপকভাবে ব্যবহারের ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। এই মুহূর্তে সব ওষুধই পরীক্ষামূলক ও প্রশ্নসাপেক্ষ। তবে সঠিক ওষুধ কোনটি, সে তথ্য প্রকাশিত হওয়া কেবল সময়ের ব্যাপার।

আমর আশরাফ: নিউইয়র্কে কর্মরত সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ

লেখকের আরও লেখা:
করোনা সংক্রমণ: শুধু অক্সিজেনেই বাঁচানো যাবে শত শত জীবন
কোভিড-১৯: চিকিৎসার জটিলতা ও আশার আলো


https://www.prothomalo.com/technology/article

15
হে আল্লাহ! করোনাভাইরাসের ছোবল থেকে আমাদেরকে রক্ষা করুন। যারা করোনায় আক্রান্ত তাদেরকে দ্রুত সুস্থ্যতার নেয়ামত দান করুন। বাংলাদেশসহ বিশ্ববাসীকে করোনা সংক্রমণ থেকে মুসলিম উম্মাহকে হেফাজত করুন। এ মহামারী কারণে গোটা বিশ্ববাসী এখন গৃহবন্দি। হে আল্লাহ! মহামারী দেয়ার মালিকও আর মহামারী তুলে নেয়ার মালিকও তুমি। হে আল্ল্হা অবরুদ্ধ জীবন থেকে স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দাও।

আজ শুক্রবার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদসহ সারাদেশের মসজিদগুলোতে সীমিত আকারে জুমার নামাজ শেষে মোনাজাতে ইমাম সাহেবরা এসব কথা বলেন। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সংক্ষিপ্ত জুমার নামাজ শেষে মোনাজাত পরিচালনা করেন মসজিদের ইমাম মাওলানা এহেসানুল হক জিলানী।

বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজের আগ থেকেই মসজিদের গেইট বন্ধ রাখা হয়। স্বল্প সংখ্যক মুসল্লি নিয়েই জুমার নামাজ আদায় করা হয়। সারাদেশের মসজিদগুলোর মাইক থেকে মুয়াজ্জিনরা সকাল থেকেই দফায় দফায় ঘোষণা দিয়েছেন, জুমার নামাজে মসজিদে না এসে নিজ নিজ বাসায় যোহরের নামাজ আদায় করুন।
নামাজ শেষে ইমাম সাহেব মোনাজাতে বলেন, হে আল্লাহ! প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস থেকে আমাদের বাংলাদেশসহ বিশ্ববাসীকে হেফাজত করুন। হে আল্লাহ! বায়তুল্লাহসহ বিশ্বের সকল মসজিদগুলোতে আগের মতো স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে দিন। হে মহান আল্লাহ তোমার রহমাতের দৃষ্টি থেকে আমাদেরকে বঞ্চিত করো না। আমরাতো গুনাহগার আমাদের গুনার দিকে না তাকিয়ে রাসূল্লা (সা.) এর উছিলায় আমাদের দোয়া কবুল করুন।

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে সরকার প্রতি ওয়াক্তের নামাজে ইমাম ও মুয়াজ্জিনসহ ৫ জন ও জুমার দিনে সর্বোচ্চ ১০জনের বেশি নামাজে অংশ নিতে পারবে না বলে নির্দেশনা প্রদানের ফলে মসজিদে মুসল্লিদের আগমন বন্ধ রয়েছে।

https://www.dailyinqilab.com/article

Pages: [1] 2 3 ... 17