Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Topics - Md. Neamat Ullah

Pages: [1] 2 3 ... 9
1
লিডারশিপ ডেস্ক
প্রতিটি সফল মানুষের ব্যর্থতার গল্প আছে।  একবারে কেউ সফল হননি।  সফল উদ্যোক্তা, রাজনীতিবিদ, শিল্পী, লেখক, বিজ্ঞানী – যার কথাই বলা যাক, সবাইকেই ব্যর্থতার কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে অবশেষে সফল হতে হয়েছে।  আবার এই সাফল্য পাওয়ার পরও অনেকে আবার ব্যর্থ হয়েছেন। আবারও তাঁরা উঠে দাঁড়িয়েছেন, এবং আবার সফল হয়েছেন।  এইসব সফল মানুষের সবার মধ্যেই একটা আশ্চর্য মানসিক শক্তি আর আত্মবিশ্বাস আছে।  যত বড় ব্যর্থতার মুখেই তাঁরা পড়েন না কেন – কখনওই কাজ করা বন্ধ করেন না।  কখনওই তাঁরা বিশ্বাস হারান না। তাঁদের এইসব ব্যর্থতার গল্প থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। প্রতিটি গল্প থেকেই অনুপ্রেরণা নেয়ার মত কিছু না কিছু আছে।

আপনি যে ধরনের বিপদ বা খারাপ পরিস্থিতিতেই পড়েন না কেন, এইসব অসাধারণ সফল মানুষদের ব্যর্থতার গল্প এবং ব্যর্থতাকে জয় করার গল্প যদি মাথায় রাখেন – তবে কোনও অবস্থাতেই সাহস আর বিশ্বাস হারাবেন না।  কোনও বড় লক্ষ্যকেই আর অসম্ভব মনে হবে না। যে কোনও ব্যর্থতা থেকেই আপনি আবার ঘুরে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা পাবেন। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক পৃথিবীর সেরা সফল ৫ জন মানুষের ব্যর্থতার কাহিনী।

১. আব্রাহাম লিংকন

১৮০৯ সালে জন্ম নেয়া এই মানুষটি আমেরিকার ১৬তম প্রেসিডেন্ট। আমেরিকার সর্বকালের সেরা প্রেসিডেন্ট হিসেবে ধরা হয় তাঁকে। আমেরিকায় দাসদের স্বাধীনতা লাভের পেছনে তাঁর অবদানই সবচেয়ে বেশি। রাজনীতি ও খ্যাতির দিক দিয়ে তিনি নিঃসন্দেহে পৃথিবীর ইতিহাসের সফলতম মানুষদের একজন। কিন্তু তাঁর শুরুটা কিন্তু ব্যর্থতার গল্প দিয়েই।


২৩ বছর বয়সে তাঁর চাকরি চলে যায়। সেই সময়ে তিনি তাঁর প্রথম নির্বাচনেও হারেন। ২৯ বছর বয়সে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ এর সদস্য হওয়ার জন্য নির্বাচন করে হারেন।

১৮৪৮ সালে, ৩৯ বছর বয়সী লিংকন ওয়াশিংটনের জেনারেল ল্যান্ড অফিসের কমিশনার হওয়ার জন্য নির্বাচন করে পরাজিত হন। ৪৯ বছর বয়সে সিনেটর হওয়ার জন্য নির্বাচনে দাঁড়িয়ে শোচনীয় ভাবে পরাজিত হন। এত ব্যর্থতার পরও তিনি রাজনীতি না ছেড়ে চেষ্টা করে যান। অবশেষে ১৮৬১ সালে, ৫২ বছর বয়সে তিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগের প্রায় পুরোটাই ছিল ব্যর্থতার গল্প। কিন্তু এরপর তিনি ইতিহাস বদলে দেন।

২. আলবার্ট আইনস্টাইন

পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে বিখ্যাত ও সফল বিজ্ঞানীদের একজন তিনি। তিনি এতটাই সফল যে, ‘বিজ্ঞানী’ শব্দটা মাথায় আসলেই বেশিরভাগ মানুষ তাঁর কথা ভাবেন। পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম সেরা মেধাবী বলা হয় তাঁকে। কিন্তু ১৮৭৯ সালে জন্ম নেয়া এই জার্মান জিনিয়াসকে একটা সময় পর্যন্ত গর্ধভ মনে করা হত। কিছুতেই তিনি ভালো ছিলেন না। কথা বলা শিখতেই তাঁর ৪ বছর লেগেছিলো। পড়াশুনায় ছিলেন একদম কাঁচা। ১৬ বছর বয়সে জুরিখের সুইস ফেডারেল পলিটেকনিক স্কুলের ভর্তি পরীক্ষায় শোচনীয় ভাবে ফেল করেন।


ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময়ে প্রতিটি বিষয়ে তিনি এতই বাজে রেজাল্ট করতেন যে, একাধিক বার পড়াশুনা বাদ দেয়ার চিন্তা করতে হয়েছিল।  মারা যাওয়ার সময়ে তাঁর বাবার একমাত্র দুঃখ ছিল যে এই গর্ধভ ছেলে জীবনে কিছুই করতে পারবে না। বাবার এই কথায় আইনস্টাইন বহুদিন ধরে মনে কষ্ট চেপে রেখেছিলেন।
 
কোনও কাজ না পেয়ে তিনি বাধ্য হয়ে ইন্সুরেন্স সেলস ম্যানের কাজ নেন। কোনও কাজ না পারলে মানুষ এই ধরনের চাকরি করতো। দুই বছর পর তিনি পেটেন্ট অফিসে কাজ পান। যেখানে নতুন ডিভাইস পেটেন্ট করার আগে পরীক্ষা করা হতো।

কিন্তু একটা সময়ে এই মানুষটাই পৃথিবীর চেহারা পাল্টে দিয়েছেন।  তাঁর সেই ‘ডাল ব্রেন’ নিয়ে তিনি পদার্থ বিজ্ঞানের বেশ কয়েকটি মূল সূত্র সৃষ্টি করে গেছেন। বিজ্ঞানে অবদানের জন্য নোবেল প্রাইজ জিতেছেন। প্রমাণ করেছেন যে চেষ্টা করলে সবাইকে দিয়েই সবকিছু সম্ভব।

৩. বিল গেটস

যদিও এখন পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি আমাজনের জেফ বেজোস, কিন্তু এখনও অনেকে মনে করেন যে বিল গেটসই পৃথিবীর ধনীতম মানুষ। কারণ, এতদিন ধরে তিনি বিশ্বের এক নম্বর ধনী ছিলেন যে, অন্য কেউ তাঁর জায়গা দখল করেছে – এটাই অনেকে জানে না।


আজকের বিশ্বের কম্পিউটারের বিপ্লবের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান যাদের, তাঁদের অন্যতম হলেন তিনি।  এইযে লেখাটি পড়ছেন, এটিও লেখা হয়েছে তাঁর বানানো অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ কম্পিউটারে, তাঁর বানানো মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ব্যবহার করে।  পৃথিবীর বেশিরভাগ কম্পিউটার এখনও তাঁর কোম্পানীর সফটঅয়্যারে চলে।

কিন্তু আপনি কি জানেন, বিল গেটসের প্রথম প্রজেক্ট অপমানজনক ভাবে ব্যর্থ হয়েছিল? মাইক্রোসফট এর কো-ফাউন্ডার এবং বাল্যবন্ধু পল এ্যালেন আর বিল গেটস মিলে “Traf-O-Data” নামে একটি মেশিন তৈরী করেছিলেন যেটি ট্রাফিক কাউন্টার গুলো থেকে ডাটা সংগ্রহ করে সরকারি ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারদের তা গুছিয়ে সরবরাহ করবে। এমনিতে কাজটি হাতে করতে হতো।

এই যন্ত্রটির ওপেনিং এ স্বয়ং শিয়াটলের ট্রাফিক সুপারভাইজার এসেছিলেন। কিন্তু যন্ত্রটি চালু করার পর কোনওভাবেই কাজ করেছি।  এমন লজ্জা আর অপমান গেটসের জীবনে আর আসেনি।  কিন্তু তাঁরা থেমে যাননি।  এই ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়েই বিল আর পল মিলে পরে মাইক্রোসফটকে সফল করেন।

৪. জ্যাক মা

আলিবাবা প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা – এর সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার নেই। সবাই জানেন যে চীনের এই ধনকুবের ব্যবসায়ী একদম সাধারণ অবস্থা থেকে উঠে এসে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী আর বিখ্যাত মানুষদের একজন হয়েছেন। গড়ে তুলেছেন আজকের দুনিয়ার সবচেয়ে বড় কোম্পানীগুলোর একটি। আর এই অসাধারণ সফল মানুষটির ব্যর্থতার গল্প যেন একটি ট্রাজেডি সিরিয়াল।

কলেজে ভর্তি হবার সময়ে ৩ বার ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করে ৪র্থ বার সুযোগ পান।  এরপর চাকরি করতে গিয়ে বহুবার বার ব্যর্থ হন! পুলিশে ১০ জন পরীক্ষা দিয়ে ৯জন চাকরি পেল, বাদ পড়লেন জ্যাক।  কেএফসিতে ২৪ জনের মধ্যে জ্যাক ছাড়া ২৩ জনের চাকরি হলো।  হার্ভার্ডে ১০ বার চেষ্টা করেও তিনি সুযোগ পাননি।  এভাবে অনেক ব্যর্থতার পর চেষ্টা করতে করতে অবশেষে তিনি আলিবাবা প্রতিষ্ঠা করে সাফল্য পান।

৫. চার্লি চ্যাপলিন

১৮৮৯ সালে জন্ম নেয়া বিশ্ব বিখ্যাত অভিনেতা ও পরিচালক চার্লি চ্যাপলিনকে তো সবাই চেনে।  সিনেমার শুরুর সময় থেকে আজ পর্যন্ত সব সিনেমা পাগল তাঁকে ভালোবাসে ও শ্রদ্ধা করে। পৃথিবীর সফলতম অভিনেতা ও পরিচালকদের একজন তিনি। কমেডির রাজা বলা হয় তাঁকে। এসব কথাও সবাই জানে। তাহলে চলুন আজ জেনে নেয়া যাক এমন কিছু কথা যা সবাই জানে না:

চ্যাপলিনের বাবা ছিলেন একজন পাঁড় মাতাল। কোনও কাজ করতেন না, দিন-রাত মদ খেয়ে পড়ে থাকতেন। চ্যাপলিনের ২ বছর বয়সে তাঁর বাবা বাড়ি ছেড়ে চলে যান। মা নামেমাত্র একটি কাজ করতেন যাতে সংসারের খরচ কোনওভাবেই মিটতো না।

৭ বছর বয়সে চার্লি “ওয়ার্কহাউজ” এ যেতে বাধ্য হন। সেই সময়ে বৃটেনে গরিবদের জন্য একটি ব্যবস্থা চালু ছিল, যেখানে পরিশ্রমের বিনিময়ে খাবার ও শোয়ার জায়গা দেয়া হত।

কিছুদিন পর আবার চার্লি সেখান থেকে ফিরে আসেন এবং আবার তাঁর ৯ বছর বয়সে তাঁর মা পাগল হয়ে যান, এবং তাকে মানসিক হাসপাতালে যেতে হয়। মায়ের মানসিক হাসপাতালে যাওয়ার কারণে চ্যাপলিনকে আবারও ওয়ার্কহাউজে ফিরে যেতে হয়। কিছুদিন পর তাঁর বাবা লিভার নষ্ট হয়ে মারা যান।

এরপর তাঁর মায়ের পাগলামি এতই বেড়ে যায় যে তাকে সব সময়ের জন্য পাগলা গারদে বন্দী করে রাখার প্রয়োজন পড়ে। চ্যাপলিন ও তাঁর ভাই সিডনি একদম পথে বসে পড়েন। দিনের পর দিন না খেয়ে রাস্তায় ঘুরে কাটান।

এভাবে চলতে চলতেই এক সময়ে তিনি মঞ্চে কাজ নেন। বিভিন্ন মঞ্চ নাটকে অভিনয় করতে করতে নিজের কমেডি প্রতিভাকে শক্তিশালী করেন। পরে হলিউডে পাড়ি জমিয়ে সর্বকালের সেরা নির্বাক অভিনেতা হয়ে ওঠেন।

2
বিলিয়নেয়ার বা শতকোটি ডলারের মালিক হওয়া মোটেই সহজ কাজ নয়। কারো কারো কাছে এটি ধরা দেয় অল্প বয়সেই। অনেকে আবার সারাজীবন কঠোর পরিশ্রম করেও বিলিয়নেয়ার হওয়া তো দূরের কথা উল্টো ঋণে জর্জরিত হয়ে জীবন কাটায়। বিশ্লেষকরা বলছেন, কয়েকটি ব্যবসায় আপনি যদি সঠিকভাবে কাজ করতে পারেন তাহলে আপনার বিলিয়নেয়ার হওয়ার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। এ ব্যবসাগুলোর কথাই তুলে ধরা হলো এ লেখায়-



৪. তথ্য-প্রযুক্তি: ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ যেমন তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবসায় নেমে ৩০ বছরের আগেই যথেষ্ট ধন-সম্পদ কামিয়েছেন, তেমন বিল গেটসও এই ব্যবসাতেই দীর্ঘদিন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ছিলেন। তারা যে সময়ে এ সম্পদ কামিয়েছেন, তা এখনও শেষ হয়ে যায়নি। এখনও প্রতিবছর তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবসা করে বহু মানুষ বিলিয়নেয়ার হয়ে উঠছেন। ফোর্বস ম্যাগাজিন জানিয়েছে, ২০১৭ সালে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবসায় ১৮৩ জন বিলিয়নেয়ার হয়েছেন, যা গত বছরের চেয়ে ১৪ শতাংশ বেশি।

৩. গৃহায়ন ব্যবসা: রিয়েল এস্টেট ব্যবসা অতীতে যেমন রমরমা ছিল এখনও তা রয়েছে। তবে আপনাকে এ ব্যবসায় সাফল্য পেতে হলে বেশ কিছু অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে। সাধারণত পারিবারিক ঐতিহ্য রয়েছে এমন ব্যক্তিরা এ ব্যবসায় অন্যদের তুলনায় সুবিধা পান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ ব্যবসার সফল ব্যক্তিদের একটি উদাহরণ। ট্রাম্পের মোট সম্পদের পরিমাণ ৩.১ বিলিয়ন ডলার। চীন ও হং কংয়ের রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীরাও বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যবসায়ীদের অন্যতম। বিশ্বে গৃহায়ণ ব্যবসা করে বিলিয়নেয়ার হয়েছেন এমন ব্যক্তির সংখ্যা দুই শতাধিক।

২. ফ্যাশন ও খুচরা পণ্য: এ ব্যবসাকে অনেকেই তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের কাজে ব্যবহার করেছেন। বিশ্বের ২৩৭ জন বিলিয়নেয়ার ফ্যাশন ও খুচরা পণ্যের ব্যবসায় বিলিয়নেয়ার হয়েছেন। বিশ্বের বড় বড় ব্র্যান্ড তারা নিজ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

১. ফাইন্যান্স ও বিনিয়োগ: ফোর্বস বিশ্বের যত বিলিয়নেয়ারের তালিকা করেছে তাদের মধ্যে ৩০০ জনই ফ্যাইন্যান্স ও বিনিয়োগ ক্ষেত্রে ব্যবসা করে সাফল্য পেয়েছেন। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যতম প্রবাদপুরুষ ওয়ারেন বাফেটের মোট সম্পদের পরিমাণ ৭৮.১ বিলিয়ন ডলার। তিনি বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী ব্যক্তি। শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু সঠিকভাবে বিনিয়োগ করা সম্ভব হলে এখান থেকেই ব্যবসার মাধ্যমে বিপুল অর্থ তুলে নেওয়া সম্ভব, যা প্রমাণ করেছেন বিনিয়োগকারীরা। এ কারণে এটি বিলিয়নেয়ার হওয়ার সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র। সূত্র : এমএসএন

3
ডি সাইফ
জীবনের লক্ষ্য যদি কেউ খুঁজে পেতে চায়, শুধু এই একটি মানুষের জীবনই তার জন্যে পাথেয় হতে পারে। ‘পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি’- প্রবাদ যদি কেউ বুঝতে না পারে এই অস্থির স্বার্থপর যুগে, তাকে কেউ বলে দিও একজন স্যার ফজলে হাসান আবেদের গল্প।

স্যার ফজলে হাসান আবেদ, যদিও স্যার নয়, কেউ ভাই বলে ডাকলে তিনি বেশি খুশি হতেন। জীবনের শুরুতে তিনি হতে চেয়েছিলেন কবি, রবীন্দ্রনাথ তাকে ভালোই প্রভাবিত করেছিলেন। আক্ষরিক অর্থে কবি হয়ে ওঠা হয় নি, কিন্তু তিনি সত্যিকার অর্থে বাংলায় এমন কবিতা সৃষ্টি করেছেন যা জীবনব্যবস্থার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। আবেদ ভাইয়ের কবিতাটির নাম ‘ব্র্যাক’। হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং, এশিয়ার সর্ববৃহৎ গ্রাম যেটি, সেই গ্রামে জন্মেছিলেন ফজলে হাসান আবেদ। সেই মানুষটা একদিন হবেন পৃথিবীর বৃহত্তম এনজিও’র উদ্যোক্তা৷ তার আগে মেমোরি লেনে তার জীবনের গল্পে ঘুরে আসি৷

মেমোরি লেনে আবেদ ভাই

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষে ব্রিটেন গিয়েছিলেন, গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের নেভাল আর্কিটেকচার বিষয়ে পড়তে শুরু করেছিলেন। কিন্তু, কিছুদিন বাদে মনে হয়েছে, এই বিষয়ে পড়া চালিয়ে যাওয়া ঠিক হবে না। তিনি বিষয় বদলে ফেললেন। লন্ডনে চলে গেলেন, পড়লেন চাটার্ড একাউন্টিংয়ের উপর। ভেতর থেকে প্রেরণাজাত সহজাত প্রবৃত্তির উপর বিশ্বাস রেখে নিজের জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে ফেরার প্র‍য়াসটা তার ছাত্রজীবন থেকেই যে ছিল, তার প্রমাণ এই বিষয়বদলের ঘটনাটি। আমরা দেখবো আরো পরে, যখন পথ দেখানোর কেউ ছিল না, তখন ফজলে হাসান আবেদ কিভাবে নিজের মনের বিশ্বাসে ভর করে দারুণ সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।

এখানে বলা প্রয়োজন, লন্ডনে থাকার সময়ে তিনি সাহিত্যের প্রতি বিশেষভাবে দূর্বল হয়ে পড়েন। ইউরোপীয় সাহিত্য, ইংরেজি সাহিত্যের সাথে তার ঘনিষ্ঠতা হয়। তিনি প্রচুর পড়তেন। আজকের দিনে বই পড়া এক দুর্লভ গুনাবলি হয়ে উঠছে। বই মানুষকে মানবিক করে তোলে, গল্প মানুষকে কোমল করে তোলে, ভাবনার দিগন্তকে ছড়িয়ে দেয় তেপান্তরে। কেন একজন ফজলে হাসান আবেদ সারাজীবন মানুষের জন্যেই কাজ করলেন, শেষ দিন অবধি ভেবে গেছেন মানুষের কথা, গেয়েছেন মানুষের গান তার উৎস, প্রেরণা বুঝতে হলে সাহিত্যের প্রতি মানুষটার অনুরাগকে উপলব্ধি করতে হবে।

সত্তুরের ঘূর্ণিঝড় ও জীবনের মানে খুঁজে পাওয়া

নিশ্চিন্তের একটা জীবন চাইলেই যাপন করার দারুণ সুযোগ ছিল তার। লন্ডন, কানাডা, আমেরিকায় চাকরি করেছেন। তারপর যখন স্থায়ীভাবে দেশে ফিরলেন ১৯৬৮ সালে তখনো বহুজাতিক শেল ওয়েল কোম্পানির লোভনীয় চাকরিতে যুক্ত ছিলেন তিনি। কিন্তু, ১৯৭০ সাল তার জীবনকে এলোমেলো করে দিলো। ৫ নভেম্বরের সেই ভয়াল রাত, প্রলয় ঘটাতে বাংলাদেশে আঘাত হানলো ভয়ংকর এক ঘূর্ণিঝড়৷ ফজলে হাসান আবেদের মনে কেবল একটাই কথা ঘুরতে থাকলো। আজ রাতই হবে কত সহস্র মানুষের জীবনের শেষ রাত। যারা এই লড়াইয়ে বেঁচে থাকবেন, তাদের জীবনেও অসংখ্য রাত আর কোনো সুখবর বয়ে আনবে না।


৫ লক্ষ মানুষ মারা গিয়েছিল সত্তুরের নভেম্বরে। এই ঘটনাটি প্রবলভাবে আঘাত করেছিল স্যার ফজলে হাসান আবেদকে৷ তিনি তখন সুখী, নিশ্চিন্তের এক জীবন কাটাচ্ছিলেন। কিন্তু, নভেম্বর তার মনে মানুষের প্রতি মমত্ববোধ, মানুষের দুঃখে সহমর্মিতাবোধের সেই সহজাত প্রবৃত্তিকে নাড়া দিলো৷ স্বচ্ছল, সুখী জীবন, এই বহুজাতিক কোম্পানির আরামের চাকরিকে তার অবাস্তব মনে হলো। বাস্তবতা এড়িয়ে গিয়ে স্বার্থপরের মতো বাঁচতে চান নি তিনি। তিনি ভাবলেন, অন্যদের জীবন থেকে নিজেকে আলাদা করে বেঁচে থাকার কি কোনো মানে আছে? যখন চারদিকে আর্তনাদ, দুঃখ বিষাদ তখন ব্যক্তিগত সুখে ডুবে থাকাটা কোনো মানুষের উদ্দেশ্য হতে পারে না। এমনই ছিল তার উপলব্ধি।

তিনি বসে থাকতে পারলেন না। ঘর ছেড়ে বেরুলেন। শোকে কাতর, ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙ্গে পড়া জীবনগুলোর কাছে গেলেন। করলেন হেল্প নামে একটি সংগঠন কজন বন্ধু নিয়ে। ত্রাণকার্য পরিচালনা করলেন মনপুরা দ্বীপে, বিপন্ন জনপদের মানুষগুলোর দরবারে বাড়িয়ে দিলেন নিজের আত্মা।

অহিংস এক বিপ্লবীর জন্ম যখন…

সেই যে জীবনের অন্য দৃষ্টিভঙ্গি খুঁজে পেলেন মানুষটা, তারপর থেকে তার বিরাম ছিলো না একটুকুও। তিনি কেবলই ছুটে বেড়িয়েছেন। ‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই’ প্রবাদের উপর আমরা লিখে গেছি ভাবসম্প্রসারণ। কিন্তু, স্যার ফজলে হাসান আবেদ নিজেই এই প্রবাদের সমার্থক হয়ে উঠেছেন, প্রবাদতুল্য এক মহামানবের জন্ম দেখেছে বাংলাদেশ। যার উত্থানে উন্মেষ ঘটেছে গ্রামবাংলায়, যিনি নীরবে শুরু করেছিলেন অদ্ভুত এক অহিংস বিপ্লব।

সেই সময়টা এমনিতেই উত্তাল। চার মাস বাদে একাত্তরের মার্চ। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু ঘোষণা দিলেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।” সেই মাতাল হাওয়ায় ফজলে হাসান আবেদ পাকিস্থানের তরফে একটি অফার পেয়েছিলেন। শেল ওয়েল কোম্পানির লিয়াজোঁ কর্মকর্তা হিসেবে সারা দেশে তেল সরবরাহ অব্যাহত রাখতে হবে তাকে। এক সপ্তাহ করেছিলেন কাজটা। কিন্তু, বাঙ্গালির উপর পাকিস্তানিদের নির্মমতা দেখে তিনি চাকরিটা ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন।

একাত্তরে অন্য এক যুদ্ধ

মানবযোদ্ধা এই মানুষটা ভাবলেন স্বাধীনতা সংগ্রামে তাকে কিছু কর‍তে হবে। তিনি ইসলামাবাদ, কাবুল হয়ে চলে গেলেন লন্ডনে। মুক্তিবাহিনীতেও যোগ দিতেই পারতেন কিন্তু ওই যে তার ভেতরের একটা ইন্সটিংক্ট সবসময়ই চিরজাগরুক, তার দ্বারা তিনি উপলব্ধি করলেন মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেয়ার বদলে তিনি লন্ডন থেকে এই সংগ্রামে বেশি সাহায্য করতে পারবেন।

লন্ডনে তিনি দুইটা সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন- ‘অ্যাকশন বাংলাদেশ’ ও ‘হেল্প বাংলাদেশ’। দুটো সংগঠনের উদ্দেশ্য দুইরকম। ‘অ্যাকশন বাংলাদেশ’ সংগঠনের মাধ্যমে তিনি স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গড়ে তোলার কাজটি শুরু করলেন। আন্তজার্তিক পরিমন্ডলে রাজনৈতিক সমর্থন আদায়ের কাজে নেমে পড়লেন। সুশিক্ষিত ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষটি টের পেয়েছিলেন, স্বাধীনতার পক্ষে আন্তজার্তিকভাবে আওয়াজ তৈরি করার গুরুত্বটি। এর পাশাপাশি অর্থ সংগ্রহ করে মুক্তিবাহিনীকে সহায়তার জন্যে করলেন ‘হেল্প বাংলাদেশ’। তিনি বহির্বিশ্বে বন্ধু-সজ্জন মিলে বাংলাদেশের যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি তুলে ধরতে সাক্ষাৎকার, বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা, লেখালেখি করার কাজটা চালিয়ে গেলেন।


 
লন্ডনে তার নিজের একটা ফ্ল্যাট ছিল। তিনি মনে করেছিলেন, এই যুদ্ধ দীর্ঘ হলে টাকার দরকার হবে। দেশকে সাহায্য করতে হবে। তিনি বিক্রি করে দিলেন নিজের ফ্ল্যাটটি। বাংলাদেশ স্বাধীন হলো ন’মাসে। অর্থগুলোর অনেকটুকুই তখনো ছিল তার কাছে। তিনি দেখছেন হাজার হাজার যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষ, শরনার্থীরা ফিরছে ঘরে। দেশটা ধ্বংসস্তুপের উপর দাঁড়িয়ে। তিনি সেই ফ্ল্যাট বিক্রির টাকা এবার কাজে লাগাতে চাইলেন এই মানুষদের জীবনকে গোছাবার কাজে।

দ্বীপ জ্বেলে যান..

বাহাত্তরের জানুয়ারিতে জন্মভূমিতে ফিরে আসলেন ফজলে হাসান আবেদ। গেলেন সিলেটের শাল্লায়৷ ধ্বংসস্তুপের উপর ঝুলে থাকা মানুষের ভাগ্য, সেই করুণ নিয়তি, মানুষের অনিশ্চিত ভবিষ্যতকে তিনি দেখলেন কাছ থেকে। জন্মভূমির মাটিতে নতুন দিনের লড়াইটা শুরু করলেন শাল্লা থেকেই। সব হারানো মানুষের ত্রাণ ও পুনর্বাসনকল্পে শুরু করলেন ‘Bangladesh Rehabilitation Assistance Committee’ সংক্ষেপে যা ‘BRAC’। পরে ১৯৭৩ সালে যা হয়, Bangladesh Rural Advancement Committee (BRAC)। এভাবেই জন্ম নিলো ব্র্যাক, দিনে দিনে যে সংগঠন পৃথিবীর বৃহত্তম বেসরকারি এনজিও হয়ে আলোর জোগান দিয়েছে। পৃথিবীকে দেখিয়েছে নতুন পথ।

সেই দিনগুলোতে ফিরলে আপনাকে কল্পনা করে নিতে হবে, কিভাবে কাজটা কর‍তেন ফজলে হাসান আবেদ। বিধ্বস্ত দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পুনর্বাসন কর্মসূচি দিয়ে শুরু করেছিলেন। কিন্তু, তিনি জানেন তলাবিহীন ঝুড়ি খেতাব পাওয়া দেশকে বদলাতে হলে একদম তলা থেকেই কাজ করতে হবে। শিশুমৃত্যু, মাতৃমৃত্যুর হার কমানো, শিক্ষা প্রদানের উপর জোর দিয়েছিলেন তিনি। হারিকেনের আলোয় দোচালা ঘরে বসে একাগ্রচিত্তে কাজ করে যেতেন তিনি। নারী, শিশুকন্যাদের পড়াচ্ছেন গাছতলায় দাঁড়িয়ে, খোলা আকাশের নিচে।

রাইজ অফ ব্র্যাক: দ্য প্যাথব্রেকিং এনজিও!

তিনি দীর্ঘমেয়াদে ভাবতেন সব কিছু৷ একটা উক্তি আছে এরকম, ‘কাউকে যদি একটা মাছ দাও, সে একদিন খেয়ে বাঁচবে; কিন্তু কাউকে যদি মাছ ধরা শিখিয়ে দাও সে নিজেই বেঁচে থাকার অর্থ খুঁজে নিতে পারবে।’ ঠিক তা-ই। ত্রাণ দিয়ে সাহায্য করে প্রারম্ভিক কাজটা শুরু করেছিলেন, তারপর তিনি ভাবলেন এই মানুষগুলোকে কিভাবে স্বাবলম্বী করা যায়। সেই ভাবনার ফসল আজকের ব্র্যাক।

ব্র্যাক বাংলাদেশের জন্য কি দারুণ বিপ্লব ঘটিয়েছে তা অনুভব করতে পারবেন পেছনে ফিরলেই। যখন দেখবেন ১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড ঘটলো, বাংলাদেশে এক অন্ধকার সময় নেমে আসলো। মৌলবাদী গোষ্ঠীর উত্থান হয়েছে এসময়। এতো রক্তঝরা যে স্বাধীনতা, সে স্বাধীনতার বিরুদ্ধাচারণ যারা করলো তারাও এই ভূমিতে প্রতাপ দেখাতে শুরু করলো। এমনই এক সময়ে ব্র্যাক নীরবে নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করতে শুরু করলো। মেয়েরা শিখবে, পড়বে, মাথা উঁচু করে নিজের পায়ে দাঁড়াবে – এরকম ভাবনার কথা যেসময় কেউ ভাবেনি, তখন ব্র্যাক এই কাজগুলোই করতে থাকলো গ্রামীণ পল্লীতে৷


 
কারণ, স্যার ফজলে হাসান আবেদ শিকড় শক্ত করতে চেয়েছিলেন। আজকের দিনে শহরে নারী স্কুটার চালিয়ে যাচ্ছে এই দৃশ্য অস্বাভাবিক ঠেকে না আর কারো চোখে। একসময় নারী সাইকেল চালাচ্ছে সেটাও কেউ ভাবতে পারতো না। এই দৃশ্য বাংলাদেশে আমরা দেখেছি, ফজলে হাসান আবেদের ভিশনারি চিন্তার ফল হিসেবে। সমাজের মনস্তত্ত্বকে একদিনে তিনি পাল্টে ফেলেন নি, ধীরে ধীরে তিনি এগিয়েছেন। এগিয়েছে ব্র্যাক৷ এগিয়েছে বাংলাদেশও।

কী না করেছে ব্র্যাক!

২০০০ সালের দিকে অ্যাপল প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসের সাথে সাক্ষাৎ হলো ফজলে হাসান আবেদের। স্টিভ জবস বললেন, আবেদ এই মডেলটা এতো চমৎকার, তুমি কেন আন্তর্জাতিকভাবে কাজ করছো না? স্যার ফজলে হাসান আবেদ দেশের বাইরেও কাজ করতে শুরু করলেন তারপর থেকে। পৃথিবীর ১১টি দেশে ব্র্যাক এখন কাজ করে। এখন ১ লাখ মানুষের পরিবার ব্র্যাক, সেই ব্র্যাকের ৭০ ভাগ কর্মরতই নারী!

ব্র্যাকের ভাসমান স্কুল

আমি সুনামগঞ্জের প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে দেখেছি ব্র্যাকের নৌকা স্কুল। কত প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্র্যাক পৌঁছে গেছে তাদের কাজ নিয়ে তা অবিশ্বাস্য। প্রায় ১ কোটি সন্তানকে ব্যাক প্রাথমিক শিক্ষা অফার করেছে। যার প্রায় ৭০ শতাংশ কন্যা শিশু! এক সময় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু সাধারণ ঘটনা ছিল। আশির দশকে ঘুরে ঘুরে ব্র্যাক খাবার স্যালাইন বানানো শিখিয়েছে। পয়োনিষ্কাশন নিয়ে কাজ করেছে। টিকাদান নিয়ে কাজ করেছে। নারীদের স্বাবলম্বী করতে তাদের বানানো পণ্য বাজারজাত করতে আড়ং শুরু করেছে। ব্র্যাক প্রবাসে অভিবাসন প্রকল্পে কাজ করছে। ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে কাজ করছে।


ব্র্যাকের ভাসমান স্কুল । ছবি : সংগ্রহ
তবুও আবেদ ভাই রেখেছেন আড়াল..

সব মিলিয়ে ব্র্যাক পৃথিবীখ্যাত হয়েছে। বিশ্ববাসী দেখেছে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ খেতাব পাওয়া দেশের সংগঠন ব্র্যাক নিজের দেশ তো বটেই, সীমান্ত ছাড়িয়ে বিশ্বের কাছেও নিজেদের হাত বাড়িয়েছে। যার পেছনে ছিলেন এক কর্মপাগল মানুষ, স্যার ফজলে হাসান আবেদ। কিন্তু, তিনি কখনো ব্র্যাক ছাপিয়ে নিজেকে হাইলাইট কর‍তে চান নি কখনো। আমাদের দেশে যা হয়, প্রতিষ্ঠান ব্যক্তিসর্বস্ব হয়ে যায়। মানুষ নিজেকে অবিসংবাদিত রুপে হাজির করতে চায়। চারদিকে শুধু নিজের নামে জিন্দাবাদ ধ্বনি শুনতে হয়। কিন্তু, এই মানুষটা নিজেকে নয় ব্র্যাককেই প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন।

যাকে ভুলবে না বাংলাদেশ…

ব্র্যাককে সঠিক পথে রাখলে ব্র্যাকের লক্ষ্য উদ্দেশ্যও কখনো থেমে থাকবে না- এমনই চেয়েছেন তিনি আজন্ম। ব্র্যাকের অন্যদের মতো তিনিও বেতনভুক্তই ছিলেন। বলতেন, “আমি ব্র্যাক থেকে বেতন নিই। কিন্তু আমার নিজের কিছু নেই। আমার নিজের বাড়ি নেই, ভাড়া করা ফ্ল্যাটে থাকি। যখন ব্র্যাক প্রতিষ্ঠা করি, তখনই নিজের জন্য কিছু করব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কারণ নিজের সম্পদ গোছানোর ব্যবসা করতে গেলে গরিবদের সাহায্য করতে পারব না।”

এই নেতাকে ব্র্যাক ভুলবে কী করে!

তিনি ধীরে ধীরে কিভাবে ব্র্যাককে তৈরি করে গেছেন তা বোঝা যায়, নেতৃত্ব তৈরির রুপরেখা দেখেও। আজকের ব্র্যাকের দিকে তাকান, কি অবিশ্বাস্য মেধাবী মানুষদের কলতান এই সংগঠনজুড়ে। মানবপ্রেম আসলে কি, তা বুঝবে যদি একদিন ব্র্যাকের বৃহত্তর কর্মযজ্ঞের স্বাক্ষী হয় কেউ। সম্ভব হয়েছে কারণ, এ সংগঠনের নেতা শুধু একা নেতৃত্ব কুক্ষিগত করে রাখেন নি।

৬৫ বছর বয়সে তিনি ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালকের পদ ছেড়ে দিয়েছেন, সেই ২০০১ সালের দিকে। এরপর তিনি ব্র্যাককে গাইড করেছেন চেয়ারপারসন হয়ে। এব ছর সেই পদ থেকেও সরে দাঁড়িয়ে নতুন নেতৃত্বের কাছে ব্র্যাককে তুলে দিয়ে অবসর নিয়েছেন। আজকের দিনে এরকমটা আপনি খুব সচারাচর ঘটতে দেখবেন না। একজন মানুষ এরকম পূর্ণতা নিয়ে নিজের জীবনকে সাজাতে পেরেছেন ওই যে মানবপ্রেম, ভিশন আর ইনস্টিংক্ট – যা তাকে কখনো বিচ্যুত করে নি আলোর পথযাত্রা থেকে।

জীবনের শেষ দিকে এসে নিজের সম্পর্কে মূল্যায়ন করতে গিয়ে তাই তিনি কি সরল অভিব্যক্তি দিতে পারেন এই বলে, ‘আমি আনন্দিত এই ভেবে যে আমার জীবন বৃথা যায় নি।” জীবনের লক্ষ্য যদি কেউ খুঁজে পেতে চায় শুধু এই একটি বাক্যও তার জন্যে পাথেয় হতে পারে। “পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি”- প্রবাদ যদি কেউ বুঝতে না পারে এই অস্থির স্বার্থপর যুগে, তাকে কেউ বলে দিও একজন স্যার ফজলে হাসান আবেদের গল্প।

সূত্র: এগিয়ে চলো

4
উদ্যোক্তা হতে হলে যে বইগুলো পড়া উচিৎ !!!

নিজের স্বপ্ন নিয়ে যাঁরা মাঠে নামেন তাঁরাই উদ্যোক্তা। নিশ্চিত জীবনের হাতছানি উপেক্ষা করে তাঁরা এগিয়ে যান অনিশ্চয়তার দিকে। স্বপ্নই তাঁদের পথ দেখায়। তবে হঠাৎ করে কেউ উদ্যোক্তা হন না। এর পেছনে থাকে কঠোর অধ্যবসায়, সময়ের সঠিক ব্যবহার ও একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণের অভিপ্রায়।স্টিভ জবস, বিল গেটস বা জেফ বেজোস এঁরাই আজকের দিনের উদ্যোক্তাদের কাছে অনুসরণীয়। পৃথিবী বদলে দেওয়া প্রযুক্তি তৈরি করেছেন তাঁরা। মানুষের জীবনকে তাঁরা এমনভাবে বদলে দিয়েছেন যে তাঁদের সময়ে যেটা কেউ ভাবতেই পারেননি।

সফল উদ্যোক্তা হতে হলে বাকিদের থেকে কিছুটা এগিয়ে তো থাকতেই হবে। আর সেজন্য দরকার প্রচুর পড়াশোনা। চারপাশ থেকে শেখার পাশাপাশি উদ্যোক্তারা শেখেন বই পড়ে। এমনকি বিল গেটস শত ব্যস্ততার মাঝে এখনো নিয়মিত বই পড়েন। উদ্যোক্তার পড়া উচিত এমন ১০টি বইয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে বাণিজ্য সাময়িকী বিজনেস ইনসাইডার।

IMG_7578916307১. দ্য ফাউন্টেন হেড : আয়ান রান্ড

বিলিওনিয়ার মার্ক কিউবান বিজনেস ইনসাইডারকে বলেন, ‘এই বই সব উদ্যোক্তার জন্যই পড়া উচিত’। ব্রুকলিন ব্রিজ ভেঞ্চার্সের পার্টনার চার্লি ও’ডেনেলেরও প্রিয় বই এটা। তিনি বলেন, ‘উদ্যোক্তাদের কেন স্বপ্ন এবং সাহস থাকতে হয় সেটা অন্য কোনো বইয়ে এত সুন্দর করে বর্ণনা করা হয়েছে কি না আমি জানি না। কে আপনাকে সাহায্য করবে সেটা না ভেবে কে আপনাকে বাধা দেবে সেটাই উদ্যোক্তাদের মনে রাখতে হবে।’

২. দ্য এফেক্টিভ এক্সিকিউটিভস : পিটার ড্রাকার

অ্যামাজনের প্রধান নির্বাহী জেফ বেজোস তাঁর সিনিয়র ম্যানেজারদের এই বইসহ আরো দুটি বই পড়ার পরামর্শ দেন। অফিস ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছেন লেখক পিটার ড্রাকার। এ ছাড়া নির্বাহীদের সময় ব্যবস্থাপনা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পর্কেও বিস্তারিত লিখেছেন তিনি।

৩. দ্য ইনোভেটরস ডিলেমা : ক্ল্যাটন ক্রিস্টেনসন

জেফ বেজোসের পছন্দের আরেকটি বই। এটিও তিনি কর্মীদের পড়ার পরামর্শ দেন। উদ্যোক্তাদের খুবই পছন্দের বই এটি। সামাজিক উদ্যোক্তা স্টিভ ব্ল্যাংক বইটি সম্পর্কে বলেছেন, ‘বড় বড় প্রতিষ্ঠান কেন ডাইনোসরের মতো আচরণ করে সেটার একটা যুক্তিসংগত কারণ ও উত্তর দিয়েছেন ক্ল্যাটন। উদ্যোক্তাদের অবশ্যই বইটি পড়া উচিত। তাহলে বাজারে বড় প্রতিদ্বন্দ্বীদের কীভাবে মোকাবিলা করতে হয় সেটা তাঁরা বুঝতে পারবেন।’

1453703533-books-1৪. বিজনেস অ্যাডভেঞ্চার্স : জন ব্রুকস

বিল গেটসের খুবই পছন্দের বই। ১৯৯১ সালে ওয়ারেন বাফেট এই বই তাঁকে পড়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস বইটি সম্পর্কে বলেছেন, ‘সব ব্যবসাতেই উদ্যোক্তাদের কিছু শক্তি ও দুর্বলতা থাকে। তাদের সবসময় চ্যালেঞ্জ নিয়েই কাজ করতে হয়। কিন্তু বিজনেস অ্যাডভেঞ্চার্স বইটি সব পরিস্থিতিতে উদ্যোক্তাদের কাজে লাগবে।’

৫. বেঞ্জামিন ফ্র্যাঙ্কলিন : ওয়াল্টার ইসাকসন

গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী ও বিলিওনিয়ার এলোন মুস্কের পছন্দের বই এটি। বইটি সম্পর্কে মুস্ক বলেন, ‘বইটা পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন ফ্রাঙ্কলিন কেন উদ্যোক্তা ছিলেন। তিনি একেবারে শূন্য থেকে শুরু করেছিলেন। বাড়ি থেকে পালিয়েও গিয়েছিলেন তিনি।’

ওয়াল্টার ইসাকসনের লেখা বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের জীবনী ‘আইনস্টাইন : হিজ লাইফ অ্যান্ড দ্য ইউনিভার্স’ও  পড়ার পরামর্শ দেন মুস্ক।

৬. থিংক অ্যান্ড গ্রো রিচ : ন্যাপোলিওন হিল

ফ্যাশন হাউস ফুবুর সহপ্রতিষ্ঠাতা ডায়মন্ড জন বইটি সম্পর্কে বলেন, ‘থিংক অ্যান্ড গ্রো রিচ – আমার জীবন বদলে দিয়েছে। এই বই আমাকে শিখিয়েছে কীভাবে নিজের লক্ষ্য ঠিক করতে হয়। আমাদের বেশির ভাগ মানুষেরই লক্ষ্য ঠিক থাকে না বলে আমরা সাফল্য পাই না।’

৭. কনশাস ক্যাপিটালিজম : জন ম্যাকি ও রাজ সিসোদিয়া

দ্য কনটেইনার স্টোরের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কিপ টিনডেলের মতে উদ্যোক্তা এবং ব্যবসায়ীদের জন্য এটা অবশ্যই পাঠ্য বই। কিপ টিনডেল বলেন, ‘সবাই মুনাফা চায়, কেউ লোকসান চায় না। বিজনেস স্কুলগুলো এ নিয়ে অনেক গবেষণা করেছে, ছাত্রদের পড়িয়েছি কিন্তু এই বই সবচেয়ে ভালোভাবে মুনাফা তুলে আনার বিষয়টি বর্ণনা করেছে।’

৮. অ্যাজ আ মেন থিংকেথ : জেমস অ্যালেন

হেজ ফান্ডের এক্সিকিউটিভ কোচ টনি রবিনস বলেন, ‘আমি অ্যাজ আ ম্যান থিংকেথ বইটি ১২ বারেরও বেশি পড়েছি। বইটির ভাষা সাবলীল এবং খুব নির্দিষ্টভাবে বিষয়গুলো বর্ণনা করা হয়েছে এতে।’

৯. থিংস হিডেন সিন্স দ্য ফাউন্ডেশন অব দ্য ওয়ার্ল্ড : রেনে গিরার্ড


 
ফ্রেঞ্চ দার্শনিক রেনে গিরার্ডের এই বইটি খুব পছন্দের পেপ্যালের সহপ্রতিষ্ঠাতা পিটার থিয়েলের। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে আন্ডারগ্র্যাডের ছাত্রাবস্থায় বইটি প্রথম পড়েছিলেন পিটার থিয়েল। তাঁর মতে, ‘এই বই থেকে দুটি জিনিস শেখার আছে। প্রথমত প্রতিদ্বন্দ্বীদের কথা ভাবতে গিয়ে অনেক সময় উদ্যোক্তারা নিজেদের লক্ষ্য থেকে দূরে সরে যান। দ্বিতীয়ত প্রতিযোগিতা সবসময় আপনার যোগ্যতার পরিমাপক নয়।’

১০. সিউরলি ইউ আর জোকিং মিস্টার ফেনিম্যান : রিচার্ড পি. ফেনিম্যান

গুগলের সহপ্রতিষ্ঠাতা সার্গেই ব্রিন বলেছেন, ‘রিচার্ড ফেনিম্যানের এই আত্মজীবনী আমাকে সবসময় অনুপ্রাণিত করেছে। এই কারণেই প্রযুক্তি এবং সৃষ্টিশীল কাজের সাথে নিজেকে জড়িয়েছি আমি।’ কোয়ান্টাম ইলেকট্রোডায়নামিক্স নিয়ে কাজ করার জন্য ১৯৬৫ সালে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন রিচার্ড পি. ফেনিম্যান।

ব্রিনের ভাষ্যমতে, ‘নিজের কাজের ক্ষেত্রে তো তিনি সফল ছিলেনই। এ ছাড়া তিনি ছিলেন উদার মনের মানুষ। বইতে তিনি লিখেছেন, তিনি লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির মতো একজন বিজ্ঞানী ও শিল্পী হতে চেয়েছিলেন। এই বিষয়টা আমাকে খুব অনুপ্রাণিত করেছে। আমার মনে হয় এ ধরনের স্বপ্নই আপনার জীবনকে পরিপূর্ণ করে।

https://the-prominent.com/entrepreneur-startup-article-6030/

5
পেশা হিসেবে হোটেল ম্যানেজমেন্ট বর্তমান সময়ের বহুল আঙ্খাখিত পেশা । তরম্নন প্রজন্মের কাছে এ পেশার চাহিদা দিন দিন বাড়ছে । বর্তমানে হোটেল এন্ড ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট একটি অপার সম্ভাবনাময় শিল্পে পরিনত হয়েছে এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশেও এর প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে দেশে অসংখ্যা হোটেল, মোটেল ও রেস্টুরেন্ট রয়েছে এবং ২০২০ সালে দেশে নতুন আরও প্রায় ১২টি হোটেল যাত্রা শুরু করবে যেখানে প্রায় তিন হাজারেরও অধিক দক্ষ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া বিদেশে বিশেষ করে যুক্তরাজ্য,কানাডা, জার্মানীসহ বিভিন্ন দেশের ভালো বিশ্ববিদ্যায়গুলোতে পড়ালেখার খরচ আমাদের দেশের তুলনায় অনেক বেশি তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকেই স্বপ্নের এই দেশে পড়তে পারেন না। এই সীমাবদ্বতা অতিক্রম করে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপদানের লক্ষে সরকার অনুমোদিত এবং আর্ন্তজাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্কিল ডেভেল্পমেন্ট ইন্সটিটিউট (বিএসডিআই) ২০০৩ সাল থেকে কনফেডারেশন অব ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি (সিটিএইচ) ইউকের অধীনে ডির্পাটমেন্ট অব হোটেল অ্যান্ড ট্যুরিজমের আওতায় ডিপ্লোমা ইন হোটেল ও ডিপ্লোমা ইন ট্যুরিজম কোর্স পরিচালনা করে আসছে। এই কোর্সে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করে তারকা হোটেল ছাড়াও ক্যারিয়ার গড়তে পারেন এয়ার লাইন্স, হসপিটাল, চেইনসপ এবং ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেল এজেন্সিতে । বাংলাদেশ স্কিল ডেভেল্পমেন্ট ইন্সটিটিউট (বিএসডিআই)-এর পাশকৃত শিক্ষার্থীরা দেশে এবং বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে এবং দেশ-বিদেশের স্বনামধন্য হোটেল এয়ারলাইন্সে বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছে। ডির্পাটমেন্ট অব হোটেল অ্যান্ড ট্যুরিজমের আওতায় বিভিন্ন মেয়াদে সরকারি সনদে বেশ কিছু সার্িটফিকেট কোর্স রয়েছে যেমন- ফুড অ্যান্ড বেভারেজ প্রোডাকশন, সার্ভিস, হাউজ কিপিং এবং ফ্রন্ট ডেস্ক। বিস্তারিত জানতে কল করতে পারেন ০১৭১৩৪৯৩২৪৬ নম্বরে। প্রতি ক্লাসে হাতে কলমে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পাঠদান করা হয়। পাশাপাশি থিওরি, আইটি স্কিলস, স্পিকিং স্কিলস, জব স্কিলস এবং ইন্ডাস্ট্রি ট্যুর পূনাঙ্গ কোর্সটি সাজানো। যার ফলে একজন শিক্ষার্থী সম্পূর্ণভাবে দক্ষ হয়ে প্রফেশনাল জীবনে আত্ম প্রকাশ করতে পারে। এ প্রোগামের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীকে চাকরি পাবার সকল কৌশল শেখানোর পাশাপাশি চাকরির বাজারে শিক্ষার্থীকে আরো দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলা হয়। এছাড়াও রয়েছে অ্যাটাচমেন্ট সুবিধা। এ শিক্ষা ব্যবস্থায় যুক্তরাজ্যের সিটিএইচ কর্তৃক ডিপ্লোমা/এডভান্স ডিপ্লোমা সার্টিফিকেট প্রদান করা হয় এবং বাংলাদেশ টেকনিক্যাল এডুকেশন বোর্ডের সার্টিফিকেট কোর্সের সরকারি সনদ প্রদান করা হয়


ভর্তি সেশন :বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটে (বিএসডিআই) বছরে ৪টি সেশনে (র্মাচ, জুন সেপ্টেম্বর,ডিসেম্বর) ভর্তি কার্যক্রম পরিচালিত হয়। চাকরিজীবীরা সান্ধ্যকালীন ব্যাচে অংশগ্রহণ করতে পারেন। বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (বিএসডিআই) বাড়ী-২, রোড-১২, মিরপুর রোড, ধানমন্ডি, ঢাকা। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করতে পারেন www.bsdi-bd.org ঠিকানায়।

6
১৮৮ সহকারী পরিচালক নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক!!!

সম্প্রতি সহকারী পরিচালক চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এবারের প্রক্রিয়ায় ১৮৮ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। আগ্রহীদের আবেদন করতে হবে অনলাইনের মাধ্যমে। ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে আবেদন প্রক্রিয়া, চলবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৯ পর্যন্ত। বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক পদে আবেদনের বিস্তারিত নিয়ে লিখেছেন মাহবুব শরীফ

আবেদনের পদ্ধতি
উল্লিখিত পদে শুধুমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইট erecruitment.bb.org.bd এর মাধ্যমেই আবেদন করতে হবে। অনলাইনে আবেদন করার পর সিভি আইডেন্টিফিকেশন নম্বর ও পাসওয়ার্ড প্রার্থীদের সংগ্রহ করতে হবে। পরীক্ষার প্রবেশপত্র প্রার্থীকেই ডাউনলোড করে নিতে হবে। আবেদনের সময় প্রাথমিকভাবে প্রার্থীদের কোনো কগজপত্র প্রেরণ করতে হবে না। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর প্রার্থীদের যাবতীয় কাগজপত্র প্রয়োজন হবে। এছাড়াও আরও তথ্য পাওয়া যাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়োগ সংক্রান্ত ওয়েবসাইটে।

আবেদনের যোগ্যতা
উল্লিখিত পদে আবেদন করতে হলে প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে প্রয়োজন হবে স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যেকোনো বিষয়ে চার বছর মেয়াদি স্নাতক (সম্মান) অথবা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকলে সহকারী পরিচালক পদে আবেদন করা যাবে। মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট এবং তদূর্ধ্ব পর্যায়ের পরীক্ষাগুলোর কমপক্ষে দুটিতে প্রথম বিভাগ/শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএ থাকতে হবে। শিক্ষা জীবনের কোনো অবস্থাতেই তৃতীয় বিভাগে উত্তীর্ণরা এই পদের জন্য আবেদন করতে পারবে না। সরকারী সব প্রতিষ্ঠানে বিশেষ করে বাংলাদেশ ব্যাংকে যেকোনো পদে আবেদনের জন্য গ্রেডিং পয়েন্টে প্রকাশিত ফলের ক্ষেত্রে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৩.০০ বা তদূর্ধকে প্রথম বিভাগ, জিপিএ ২.০০ থেকে ৩.০০-এর চেয়ে কমকে দ্বিতীয় এবং জিপিএ ১.০০ থেকে ২.০০-এর কম হলে তৃতীয় বিভাগ হিসেবে ধরা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় হতে প্রাপ্ত পয়েন্টের ক্ষেত্রে ৪ পয়েন্ট স্কেলে সিজিপিএ ৩.০০ বা তারও বেশি হলে প্রথম শ্রেণি, ২.২৫ থেকে ৩.০০ পর্যন্ত দ্বিতীয় শ্রেণি বা বিভাগ, ১.৬৫ থেকে ২.২৫ এর মধ্যে হলে তৃতীয় বিভাগ হিসেবে গণ্য করা হবে। এছাড়াও পয়েন্ট স্কেল ৫ হলে ৩.৭৫ বা এর ওপরে প্রথম বিভাগ, ২.৮১৩ থেকে ৩.৭৫-এর কম দ্বিতীয় বিভাগ এবং ২.০৬৩ বা ২.৮১৩-এর কম তৃতীয় বিভাগ হিসেবে গণ্য করা হবে।

বয়সসীমা

উল্লিখিত পদে আবেদন করতে হলে ইচ্ছুক প্রার্থীদের ১ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে বয়স হতে হবে অনূর্ধ্ব ৩০ বছর। মুক্তিযোদ্ধা/শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৩২ বছর। বয়সের ক্ষেত্রে এফিডেভিট গ্রহণযোগ্য হবে না।

বেতনসীমা

নিয়োগপ্রাপ্তদের জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী ২২,০০০-৫৩,০৬০ টাকা স্কেলে বেতন এবং তত্সহ নিয়মানুযায়ী প্রদেয় অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হবে।

পরীক্ষা পদ্ধতি

এই পদের জন্য বিগত পরীক্ষাগুলোতে ৩০০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। আর এতে সময় ছিল ১০০ নম্বরের প্রিলিমিনারিতে ১ ঘণ্টা এবং ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় বরাদ্দ থাকে ২ ঘণ্টা। লিখিত পরীক্ষায় ফোকাস রাইটিং ইন ইংলিশ ৩০, ক্রিয়েটিভ রাইটিং ইন ইংলিশ ৩০, ইংলিশ কম্প্রিহেনশন ৩০, ফোকাস রাইটিং ইন বাংলা ৩০, অনুবাদ—বাংলা থেকে ইংরেজি ২৫, ইংরেজি থেকে বাংলা ২৫ ও গণিতে থাকে ৩০ নম্বর। প্রিলিমিনারিতে বাংলায় ২০, সাধারণ জ্ঞানে ২০, কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তিতে ১০, ইংরেজিতে ২০ ও গণিতে বরাদ্দ থাকে ৩০ নম্বর।

পরীক্ষার প্রস্তুতি

উল্লিখিত পদে আবেদনের পর পরীক্ষার প্রস্তুতি হিসেবে আপনি পূর্বের প্রশ্নগুলো অনুসরণ করে এ সংক্রান্ত ২০-৩০টি টপিক নির্ধারণ করে সেগুলোর ওপর প্রস্তুতি নিতে পারেন। এতে আপনার আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে টপিক কমন নাও পড়তে পারে। তাই মনস্থির করে ফ্রিভাবে লেখার অভ্যাস করুক। এজন্য কোনো টপিকের ওপর ধারণা নিয়ে নিজের মতো করে লিখতে পারেন।

নির্দিষ্ট পরিসরে গুছিয়ে লিখতে হয় বলে এক্ষেত্রে উপস্থাপনা, তথ্য ও উপাত্ত প্রদান এবং যুক্তি উপস্থাপন গুরুত্বপূর্ণ। পরীক্ষার আগে সহজে রিভিশন দেয়া যায়, আবার পরীক্ষায় যে টপিকে লিখতে হোক না কেন যুক্তি, তথ্য ও উপাত্ত সাবলীলভাবে ব্যবহার করার উপযোগী করে তুলুন। ইংরেজি ও বাংলা দৈনিক পত্রিকা থেকে অর্থনীতি সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো এবং উপ-সম্পাদকীয় নিয়মিত পড়তে পারেন ও প্রয়োজনীয় তথ্য টুকে রাখতে পারেন এবং অর্থনৈতিক বিষয়ে বেশ ধারণা হবে আপনার।

বাংলা

নিয়োগ পরীক্ষায় বাংলা অংশে সাহিত্য ও ব্যাকরণ থেকে প্রশ্ন করা হয়। সাহিত্য অংশে কবি-সাহিত্যিকদের জীবনী, তাঁদের সাহিত্যকর্ম, প্রকাশকাল প্রভৃতি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। ব্যাকরণ অংশে শুদ্ধীকরণ, প্রবাদ-প্রবচন, বাগধারা, সন্ধি, পদ, সমাস, কারক, প্রত্যয়, উপসর্গ, ক্রিয়ার কাল, পারিভাষিক শব্দ প্রভৃতি বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। বোর্ডের নবম-দশম শ্রেণির ‘বাংলা ভাষার ব্যাকরণ’ বই কাজে দেবে। দেখতে পারেন মাহবুবুল আলমের ‘বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস’, হুমায়ুন আজাদের ‘লাল নীল দীপাবলী বা বাংলা সাহিত্যের জীবনী’ ও সৌমিত্র শেখরের ‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের জিজ্ঞাসা’।

ইংরেজি

ইংরেজিতে গ্রামারের নানা টপিক থেকে প্রশ্ন আসে। অঢ়ঢ়ত্ ড়ঢ়ত্রধঃব চত্বঢ়ড়ংরঃরড়হ, এত্ড়ঁঢ় ঠবত্ন, ওফরড়স চযত্ধংব মুখস্থ রাখতে হবে। ভোকিব্যুলারি জানার কোনো বিকল্প নেই। ইংরেজি সংবাদপত্র, বই, ম্যাগাজিন পড়ার অভ্যাস করতে হবে এবং সঙ্গে সঙ্গে অজানা শব্দের অর্থ জেনে নিতে হবে। সহকারী পরিচালক পদে এর আগে উত্তীর্ণ হওয়া কারও পরামর্শ গ্রহণ করতে পারেন।

সাধারণ জ্ঞান

ভালো করার জন্য দৈনিক সংবাদপত্র নিয়মিত পড়তে হবে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নোট করে রাখলে পরে প্রস্তুতিতে কাজে দেবে। বাজারে প্রচলিত সাধারণ জ্ঞানের বই পড়তে পারেন। সংবাদপত্রের বিশ্ব সম্পর্কিত বিভিন্ন সংবাদগুলো থেকে আপনি সহয়তা পেতে পারেন। নিয়মিত পড়তে হবে সাম্প্রতিক বিষয়াবলির ওপর প্রকাশিত ম্যাগাজিন ও পত্রিকা।

গণিত
গণিতে সঠিক উত্তরে ফুল মার্কস পাওয়া যায়, যা অন্য কোনো অংশে সম্ভব নয়। প্রতিদিন বুঝে অনুশীলন করতে হবে। বিগত বছরের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর এমবিএ ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন, এজঊ, এগঅঞ-এর ম্যাথ সমাধান করতে পারেন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
বিগত পরীক্ষাগুলোর প্রশ্নের সঙ্গে এবারের পরীক্ষায় বিজ্ঞান, কম্পিউটার ও প্রযুক্তি বিষয়ক অনেক প্রশ্নে হুবহু মিল থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য বিগত সালের বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশ্ন ও বিভিন্ন ব্যাংকের প্রশ্নের তথ্যপ্রযুক্তি অংশ সমাধান করলে কাজে দেবে। নবম-দশম শ্রেণি ও এইচএসসির কম্পিউটার বই পড়তে পারেন। বিগত বছরগুলোর লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন পর্যালোচনা করে দেখা যায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে অনুবাদগুলো বেশ কঠিন হয়ে থাকে।

7
ব্যাংকার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে!!!

ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির (বিসিসি) সদস্যভুক্ত জনতা ব্যাংকে ‘অ্যাসিস্ট্যান্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার (এইও-টেলর)’পদে নিয়োগের প্রিলি বা এমসিকিউ পরীক্ষা হবে ১২ ডিসেম্বর সকাল ১০টায়। ঢাকার ১৫টি কেন্দ্রের ৬৪ হাজার ৩৪৫ জন প্রার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নেবেন। আমাদের এবারের আয়োজন সরকারি ব্যাংকগুলোতে পরীক্ষার জন্য কেমন যোগ্যতা লাগে ও কেমন প্রস্তুতি প্রয়োজন তা নিয়েই। বিস্তারিত লিখেছেন মাহবুব শরীফ


আবেদন পদ্ধতি

সাধারণত সরকারি ব্যাংকগুলোতে নিয়োগ সংক্রান্ত যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় তা বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েব সাইটেই পাওয়া যায়। এছাড়াও জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলোতেও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সম্প্রতি প্রকাশিত জনতা ব্যাংকের লোকবল বৃদ্ধির বিজ্ঞপ্তিটি বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইট (www.erecruitment.bb.org.bb) -এ রয়েছে। আবেদন ফরম পূরণের নিয়ম ও অন্য শর্তাবলি ওয়েবসাইটেই পাওয়া যায়। আবেদনের আগে শর্তাবলি ভালো করে দেখে নেওয়া ভালো। অনলাইনে আবেদন করার পর পাওয়া ট্র্যাকিং নম্বরসংবলিত ফরমটি যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হয়। ইংলিশ মিডিয়ামের শিক্ষার্থী হলে দেশীয় সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ড থেকে ইস্যুকৃত সমমান সার্টিফিকেট এবং বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রিপ্রাপ্ত হলে দেশীয় সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়/বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে ইস্যুকৃত সমমান সার্টিফিকেট অনুযায়ী ডিগ্রি ও ফলাফলের (শ্রেণি/বিভাগ/জিপিএ/সিজিপিএ উল্লেখসহ) তথ্য প্রদান করতে হয়।

আবেদনের যোগ্যতা

সাধারণত প্রার্থীদের যোগ্য হিসেবে প্রয়োজন হয়- কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ন্যূনতম দ্বিতীয় শ্রেণির (সমমানের সিজিপিএ) চার বছর মেয়াদি স্নাতক (সম্মান) বা স্নাতকোত্তর (সমমানের) পাস। একাডেমিক পরীক্ষায় কোনো তৃতীয় বিভাগ/শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএ/জিপিএ গ্রহণযোগ্য হয় না। এ পদে নিয়োগ পাওয়ার জন্য কম্পিউটার চালনায় ধারণা থাকতে হয়। প্রার্থীদের প্রাথমিকভাবে কোনো কাগজপত্র পাঠাতে হয় না। লিখিত পরীক্ষা গ্রহণের পর উত্তীর্ণ প্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদনে উল্লিখিত তথ্যাদি ও সমর্থনে প্রয়োজনীয় দলিলাদি আহ্বান করা হবে। দাখিলকৃত দলিলাদির সঠিকতা যাচাই সাপেক্ষে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। চাকরিরত প্রার্থীরা তাঁদের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদনক্রমে আবেদন করতে পারবেন। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে দলিলাদি দাখিলের সময় তাঁদের নিজ নিজ নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পাঠাতে হবে। অসম্পূর্ণ/ভুল তথ্যসংবলিত দরখাস্ত কোনো প্রকার যোগাযোগ ছাড়াই বাতিল করা হবে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বা প্রতিবন্ধী প্রার্থী ব্যতীত অন্য সব প্রার্থীর ক্ষেত্রে বয়স সর্বনিম্ন ২১ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ বছর। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩২ বছর। নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটাসংক্রান্ত সরকারি নীতিমালা ও অন্যান্য বিধি-বিধান অনুসরণ করা হবে। বিবাহিত মহিলা প্রার্থীদের ক্ষেত্রে স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে স্বামীর স্থায়ী ঠিকানা ব্যবহার করতে হয়।

পরীক্ষাপদ্ধতি

প্রার্থীদের বাছাই পরীক্ষা হবে তিনটি ধাপে—এমসিকিউ পরীক্ষা, লিখিত পরীক্ষা ও সর্বশেষ ভাইভা। পরীক্ষার মানবণ্টন কেমন হতে পারে—এ বিষয়ে জনতা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার রাজীব কুমার বলেন, প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয় এমসিকিউ পদ্ধতিতে। বাংলা সাহিত্য ও ব্যাকরণে ১৫ নম্বর বরাদ্দ থাকে। ইংলিশ থেকে ২০ আর গণিত থেকে ২০ নম্বরের প্রশ্ন আসে। বাংলাদেশ বিষয়াবলি ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি থেকে প্রশ্ন করা হয় ৩০ নম্বরের। আর কম্পিউটার ও তথ্য-প্রযুক্তি থেকে প্রশ্ন করা হয় ১৫ নম্বরের ওপর। সব বিষয় মিলে ৮০টি প্রশ্ন থাকে। তার জন্য নম্বর বরাদ্দ থাকে ১০০। তারপর লিখিত পরীক্ষা হবে তিনটি বিষয়ের ওপর সর্বমোট ২০০ নম্বরের। বাংলা, ইংলিশ ও গণিত থেকে প্রশ্ন করা হবে। বাংলায় সমসাময়িক বিষয়ের ওপর একটি রচনা লিখতে আসে। এতে ২০ নম্বর বরাদ্দ থাকে। সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য প্রতিবেদন লিখতে আসে। সেখানে নম্বর থাকে ২০। ইংলিশের ক্ষেত্রে ফোকাস রাইটিং বা রচনা লেখার জন্য ৩০ নম্বর বরাদ্দ থাকে। একটি প্যাসেজ দেওয়া থাকে। সেখান থেকে ৫টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। এর জন্য ২০ নম্বর বরাদ্দ থাকে। অন্যদিকে বাংলা থেকে ইংলিশ অনুবাদে ২০ নম্বর। আবার ইংলিশ থেকে বাংলা অনুবাদে ২০ নম্বর বরাদ্দ থাকে। আর গণিতের জন্য ৭০ নম্বর বরাদ্দ থাকে। মাঝেমধ্যে অন্যান্য বিষয় থেকে নম্বর কমিয়ে গণিতের জন্য ৮০-৯০ নম্বরের প্রশ্ন হতে পারে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে প্রার্থীদের সর্বশেষ মৌখিক পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে। মৌখিক পরীক্ষার জন্য নম্বর বরাদ্দ থাকে ২৫।

https://www.ittefaq.com.bd/print-edition/features/jobnews/110804

8
এনআইডি সংশোধন করতে যেসব কাগজ ও তথ্য লাগে
ছেলেমেয়েদের স্কুলে ভর্তি থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন কাজে প্রতিনিয়ত প্রয়োজন পড়ছে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি)। কিন্তু বড় একটা অংশেরই এনআইডিতে নানা ধরনের ভুল-ত্রুটি রয়ে গেছে। এসব ভুল-ত্রুটি থাকার কারণে পড়ত হচ্ছে নানা ধরনের জটিলতায়। এনআইডির ভুল-ত্রুটির সংশোধন করতে প্রতিনিয়তই মানুষ ছুটছে নির্বাচন কার্যালয়ে। সঠিক তথ্য জানা না থাকায় অনেকেই ভোগান্তিরও শিকার হন অনেক সময়।

কোনো ধরনের সংশোধনের জন্য কী কী কাগজপত্র লাগবে, তা অনেকেই জানেন না। এসব না জানার কারণেও অনেকে হয়রানির শিকার হন। এনআইডির কোনো সংশোধনের জন্য কী ধরনের কাগজপত্র লাগবে, নির্বাচন কমিশনের দেয়া তথ্যগুলো জাগো নিউজের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

১. জাতীয় পরিচয়পত্রধারীর নাম (বাংলা/ইংরেজি) এবং জন্মতারিখ সংশোধন

এই ধরনের সংশোধনের জন নিচে বর্ণিত কাগজপত্র/তথ্যাদি জমা দিতে হবে-

ক. শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম এসএসসি/সমমান হলে এসএসসি/সমমান সনদপত্র;

খ. শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম এসএসসি/সমমান না হলে এবং তিনি সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত কিংবা সংবিধিবদ্ধ কোনো সংস্থায় চাকরিরত হলে, চাকরি বই/মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার (এমপিও);


গ. অন্যান্য ক্ষেত্রে, জাতীয় পরিচয়পত্রধারীর পাসপোর্ট/জন্মনিবন্ধন সনদ/ড্রাইভিং লাইসেনস/ট্রেড লাইসেনস/কাবিননামার সত্যায়িত অনুলিপি;

ঘ. নামের আমূল পরিবর্তনের ক্ষেত্রে, প্রার্থিত পরিবর্তনের যথার্থতা সম্পর্কে গ্রহণযোগ্য দলিলাদি [এসএসসি সনদ/পাসপোর্ট/চাকরি বই/মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার (এমপিও)/ড্রাইভিং লাইসেনস, যার ক্ষেত্রে যেটি প্রযোজ্য] ছাড়াও ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সম্পাদিত হলফনামা ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির কপি;

ঙ. ধর্ম পরিবর্তনের কারণে নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে, ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সম্পাদিত হলফনামা ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির কপি এবং আবেদনের যথার্থতা সম্পর্কে গ্রহণযোগ্য দলিলাদি (শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র/পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেনস/জন্মনিবন্ধন সনদ, ইত্যাদি যাহার ক্ষেত্রে যেটি প্রযোজ্য)।

২. বিবাহ বা বিবাহবিচ্ছেদ বা অন্য কোনো কারণে কোনো নারী তার নামের সঙ্গে স্বামীর নামের অংশ (টাইটেল) সংযোজন বা বিয়োজন বা সংশোধন করতে চাইলে, তাকে কাবিননামা/তালাকনামা/মৃত্যু সনদ/ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সম্পাদিত হলফনামা/বিবাহবিচ্ছেদ ডিক্রির সত্যায়িত অনুলিপি জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, প্রয়োজনে, সরেজমিন তদন্ত করতে পারবেন।


 
৩. পিতা/মাতার নাম সংশোধনের ক্ষেত্রে, জাতীয় পরিচয়পত্রধারীর এসএসসি, এইচএসসি বা সমমান সনদপত্র (যদি তা বাবা/মায়ের নাম উল্লিখিত থাকে) এবং জাতীয় পরিচয়পত্রধারীর পিতা, মাতা, ভাই ও বোনের জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত অনুলিপি জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, প্রয়োজনে, সরেজমিন তদন্ত করতে পারবেন।

৪. বাবা/মায়ের নামের আগে ‘মৃত’ অভিব্যক্তিটি সংযোজন বা বিয়োজন করতে চাইলে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, পিতা/মাতার মৃত্যু সনদের সত্যায়িত অনুলিপি বা তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত অনুলিপি ও জীবিত থাকবার সমর্থনে সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান/পৌর মেয়র/কাউন্সিলরের প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হবে।

৫. ঠিকানা (বাসা/হোল্ডিং/গ্রাম/রাস্তা/ডাকঘর) সংশোধনের ক্ষেত্রে, সঠিক ঠিকানার স্বপক্ষে বাড়ির দলিল/টেলিফোন, গ্যাস বা পানির বিল/বাড়িভাড়ার চুক্তিপত্র/বাড়িভাড়া রশিদের সত্যায়িত অনুলিপি জমা দিতে হবে।

৬. রক্তের গ্রুপ সংযোজন বা সংশোধনের ক্ষেত্রে, এটার স্বপক্ষে চিকিৎসকের সনদপত্র জমা দিতে হবে।

৭. শিক্ষাগত যোগ্যতা সংশোধনের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রধারীর সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্রের সত্যায়িত অনুলিপি জমা দিতে হবে।

৮. টিআইএন/ড্রাইভিং লাইসেনস নম্বর/পাসপোর্ট নম্বর সংশোধনের ক্ষেত্রে, প্রয়োজনে, টিআইএন সনদ/ড্রাইভিং লাইসেনস/পাসপোর্টের সত্যায়িত অনুলিপি জমা দিতে হবে।

৯. অন্য যেকোনো সংশোধনের ক্ষেত্রে, এ-রকম সংশোধনের স্বপক্ষে উপযুক্ত সনদ, দলিল ইত্যাদির সত্যায়িত অনুলিপি জমা দিতে হবে।

আবেদনপত্রের সঙ্গে দাখিল করা অনুলিপিগুলো নিম্নবর্ণিত ব্যক্তিরা সত্যায়িত করতে পারবেন: সংসদ সদস্য, স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, গেজেটেড সরকারি কর্মকর্তা ও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান। অসম্পূর্ণ বা ত্রুটিপূর্ণ আবেদন বাতিল হয়ে যাবে।

পিডি/বিএ/এমকেএইচ

9
ব্যবসার ধরন যাই হোক; যে কেউ পেতে পারেন রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক রূপালীর ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা (এসএমই) ঋণ। পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে যেকোনো ধরনের ব্যবসার জন্য এই ঋণ পাওয়া যায় জামানত বিহীন ও সহায়ক জামানত দিয়ে। দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে রূপালী ব্যাংক এসএমই কার্যক্রম জোরদার করেছে। এজন্য চারটি খাতে সহজ শর্তে এসএমই ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে রূপালী ব্যাংকের সব শাখা থেকে।

জামানতবিহীন সহজ ঋণ: মাছ ধরার নৌকা তৈরি, বেকারি, ফুল চাষ, ড্রাই ফিশ প্রসেসিং, মোবাইল এক্সেসসরিজ, ভেষজ ওষুধ শিল্প, শীতল পাটি, হস্তশিল্প, স্টেশনারি পণ্য, সেলুন ও বিউটি পার্লার, টেইলারিং, পাটজাত ও পাট মিশ্রিত পণ্য, খেলনা তৈরি, বাঁশ ও বেত সামগ্রী, পোল্ট্রি ফার্ম, হোটেল ব্যবসা, খেলনা তৈরি, আগরবাতি ও মোমবাতি তৈরি, ভাঙারি, চশমার ফ্রেম, ফোন-ফ্যাক্স, কাপড় ও জুতার ব্যবসা, নার্সারি, মুদি ও ভুষি মালের ব্যবসা, রেণু পোনা উৎপাদনকারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য দুই ল‍াখ টাকা পর্যন্ত জামানতবিহীন সহজ ঋণ বিতরণ করছে রূপালী ব্যাংক।

জামানতবিহীন পেশাজীবি ঋণ: সৌর বিদ্যুৎ চালিত প্রকল্প, বায়োগ্যাস ভিত্তিক প্রকল্প, কৃষি ভিত্তিক প্রকল্প, দক্ষতা নির্ভর জনশক্তি উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ৫ থেকে ১০ ল‍াখ টাকা পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করছে ব্যাংকটি।

ব্যবসায়ী ঋণ: প্রান্তিক নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সহায়ক জামানত নিয়ে ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যবসায়ী ঋণ বিতরণ করছে রূপালী ব্যাংক।

মাঝারি ঋণ: ফুড প্রসেসিং, পরিবহন ব্যবসা, পিভিসি পাইপ তৈরির কারখানা, গাড়ির বডি তৈরির কারখানা, মিনি সুগার মিল, রেলওয়ের স্লিপার তৈরি, নৌযান ও পারটেক্স শিল্প, ক্রোকারিজ ব্যবসা, হাসপাতাল ও ক্লিনিক, প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, প্লাস্টিক শিল্প, হিমাগার নির্মাণ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি, ওয়্যার হাউজ ও কন্টেইনার সার্ভিস ব্যবসার জন্য ২০ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করছে রাষ্ট্রায়ত্ত এই ব্যাংক।

এছাড়াও আমদানি নির্ভরতা কমানোর জন্য স্বল্প মেয়াদে মাসকলাই, মুগ, মসুর, খেসারি, ছোলা, মটর, সরিষা, অড়হর, তিল, তিষি, চিনাবাদাম, সূর্যমুখী, হলুদ, আদা, রসুন, পেয়াজ, ধনিয়া ও ভূট্টা উৎপাদনের জন্য প্রকৃত চাষিদের জন্য ৪ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করছে।

মেয়াদী ঋণ: মৎস্য চাষ, পশু সম্পদ, ছাগল-ভেড়া পালন, বৃক্ষরোপন কর্মসূচি, সৌরশক্তি ও বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট, যুব-কৃষক কর্মজীবী ঋণ, এনজিও লিংকেজ ঋণ দুগ্ধ উৎপাদন ও কৃত্রিম প্রজনন খাতে সহায়ক জামানত নিয়ে ৩ বছর মেয়াদী ঋণ বিতরণ করছে।

রূপালী ব্যাংক স‍ূত্রে জানা গেছে, গত ৫ বছরে রূপালী ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ মানুষকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় এনেছে। এদের মধ্যে কৃষক অতি দরিদ্র জনগণ, বেকার নারী-প‍ুরুষ, গামের্ন্টস কর্মী, পথ ও শ্রমজীবী শিশু ও স্কুল শিক্ষার্থী রয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির সঞ্চয় স্কিমের মধ্যে রয়েছে- স্পেশাল নোটিশ ডিপোজিট, স্থায়ী আমানত, স্টুডেন্ট সেভিংস, রূপালী মাসিক স্কিম, রূপালী দ্বিগুণ বৃদ্ধি স্কীম, তিনগুণ বৃদ্ধি স্কিম, মাসিক উপার্জন স্কিম, মিলিয়নেয়ার ডিপোজিট স্কিম ও সঞ্চয় স্কিম।

রূপালী ব্যাংকের মোট শাখা ৫৪৭টি। আমানত হিসাব ২৮ লাখ ৪৫ হাজার ২২৩টি, ঋণ হিসাব ১ লাখ ১২৭৩টি, এটিএম বুথ ৪৪টি।

তথ্যসূত্র: বাংলানিউজ২৪

10
সাপ্তাহিক শীর্ষকাগজের সৌজন্যে: জনশক্তি রফতানির বাজারে বেশ কয়েক বছর ধরে মন্দাভাব যাচ্ছে বাংলাদেশের। বাংলাদেশ থেকে যারা জনশক্তি নেয় সেই মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সবগুলো দেশই বাংলাদেশের দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে, পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর বা ব্রুনাইতেও জনশক্তি রফতানি নেই। এরমধ্যে আকারে ছোট হলেও একটা সুখবর এসেছে জাপান থেকে। বড় ধরনের কোনো খরচ ছাড়াই দক্ষ শ্রমিক হিসেবে জাপানে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশিদের জন্য। জাপানে কর্মী নিয়োগের সংবাদে ইতোমধ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরোর কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি (বায়রা) ও তাদের সিন্ডিকেট, বাইরের দালাল-প্রতারক চক্র মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বাংলাদেশিদের জাপানে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়ার কথা বলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে এরা। জাপানে বাংলাদেশিদের চাকরির কথা বলে এমন প্রচুর বিজ্ঞাপন দেখা যাচ্ছে ইন্টারনেটে। আগ্রহী ব্যক্তিদের টানতে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করছে প্রতারকরা। শুধু শ্রমিক প্রেরণই নয়, উচ্চশিক্ষা এবং ছাত্রাবস্থায় পার্টটাইম চাকরি করার সুযোগ উল্লেখ করে বাংলাদেশি তরুণদের আকৃষ্ট করতে নানা লোভনীয় অফারও দেয়া হচ্ছে। জনশক্তি রপ্তানির সাথে জড়িত কয়েকটি এজেন্সি প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে এর আগে ভুয়া কর্মসংস্থানের কথা বলে কোটি কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। সম্প্রতি জাপানের সাথে জনশক্তি রপ্তানি বিষয়ক একটি চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ। ২০১৫ সালে জাপানে শ্রমের চাহিদা পূরণে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের কঠোর অভিবাসন নীতি শিথিল করে পার্লামেন্টে নতুন আইন পাস করা হয়। যেখানে প্রথম ধাপে বলা হয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ৩ লাখ ৪৫ হাজার শ্রমিক নেয়া হবে। কিন্তু তীব্র শ্রমিক সংকট থাকায় দ্বিতীয় ধাপে আরো বেশি শ্রমিক নেয়ার সিধান্ত নেয় দেশটি। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ থেকেও শ্রমিক নেয়ার চুক্তি সই হয় দু’দেশের সরকারের মধ্যে। আর এর পরই তৎপর হয়ে উঠেছে জনশক্তি রফতানি খাতের দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট। আশংকা করা হচ্ছে, এদের হাতে হাজার হাজার মানুষ প্রতারিত হবে, যদি এখনই যথাযথ ব্যবস্থা না হয়। তাতে অনিয়ম-বিশৃঙ্খলার জের হিসেবে এক পর্যায়ে বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানির এই বড় সুযোগটিই বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই এখনই সরকারের এ ব্যাপারে কঠোর ও সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেয়া উচিত মনে করছেন অভিজ্ঞজনরা।

১৪টি খাতে যে পরিমাণ ভিসা দেবে জাপান
আইন শিথিল করার সময় শুরুতে জাপান সরকার বছরে বিভিন্ন দেশ থেকে মোট ৩ লাখ ৪৫ হাজার শ্রমিক নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও পরে তীব্র শ্রমিক সংকটের কারণে এই সিদ্ধান্ত আরো কিছুটা পরিবর্তন করে। জানানো হয়, আগামী পাঁচ বছরে শুধু বাংলাদেশ থেকেই ৩ লাখ ৬১ হাজার ৪শ’ শ্রমিক নেবে জাপান।
নার্সিং কেয়ারে ৬০ হাজার, রেস্টুরেন্ট খাতে ৫৩ হাজার, কনস্ট্রাকশন খাতে ৪০ হাজার, বিল্ডিং ক্লিনিং খাতে ৩৭ হাজার, কৃষি খাতে ৩৬ হাজার ৫০০, খাবার ও পানীয় শিল্পে ৩৪ হাজার, সেবা খাতে ২২ হাজার, ম্যাটারিয়ালস প্রসেসিং খাতে ২১ হাজার ৫০০, ইন্ডাস্ট্রিয়াল মেশিনারি ৭ হাজার, ইলেকট্রিক ও ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রপাতিতে ৪ হাজার ৭০০, জাহাজ নির্মাণ শিল্পে ১৩ হাজার, মৎস্য শিল্পে ৯ হাজার, অটোমোবাইল মেনটেইনেন্স শিল্পে ২১ হাজার ৫০০, এয়ারপোর্ট গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং অ্যান্ড এয়ারক্রাফট মেনটেইনেন্স (এভিয়েশন) খাতে ২ হাজার ২০০ মিলিয়ে ৫ বছরের মধ্যে ৩ লাখ ৬১ হাজার ৪০০ বাংলাদেশি কর্মীকে ভিসা দেবে জাপান সরকার। কি পরিমাণ শ্রমিক যাবে সেটা নির্ভর করবে বাংলাদেশের প্রস্তুতির উপরে।
জাপানে বাংলাদেশি শ্রমিক পাঠানোর বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণায়লেয় সংশ্লিষ্ট শাখার উপসচিব কাজী আবেদ হোসেন শীর্ষ কাগজকে বলেন, বিনা খরচে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ শ্রমিক নেবে জাপান, এটা আমাদের জন্য ভাল খবর। এর আগে জাপানে আমাদের কর্মীর বাজার ছিল না। কিন্তু কিছু অসাধু রিক্রুটিং এজেন্সি জাপানে যেতে আগহী কর্মীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছিল। তার খবর আমরা জেনেছি। এবার আগের মতো জাপানে যেতে চাওয়া কোনো আগ্রহী কর্মীদের কাছ থেকে যাতে অর্থ হাতিয়ে নিতে না পারে সে বিষয়ে মন্ত্রণালয় সজাগ রয়েছে। আগ্রহী শ্রমিকদের সচেতন করতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দিক নির্দেশনামূলক বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে।

১১টি রিক্রুটিং এজেন্সি
জাপানে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন প্রেরণকারী এসও হিসেবে তালিকাভুক্ত ১১টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে  অনুমোদন করে সম্প্রতি একটি তালিকা প্রকাশ করেছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কাজী আবেদ হোসেন স্বাক্ষরিত ওই তালিকায় এক বছরের জন্য তাদেরকে কর্মী প্রেরণের অনুমতি দেয়া হয়েছে। এজেন্সিগুলো জাপানের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী টেকনিক্যাল ইন্টার্ন পাঠাবে। রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো হলো মেসার্স কেএম ইন্টারন্যাশনাল, মেসার্স আল খামিজ ইন্টারন্যাশনাল, মেসার্স গ্রিনল্যান্ড ওভারসিজ, মেসার্স দ্য হিউম্যান রিসোর্স বাংলাদেশ, মেসার্স প্রোসার্চ রিক্রুটমেন্ট কনসালট্যান্টস, মেসার্স আহম্মদ অ্যান্ড কোম্পানি, মেসার্স শুভ্র ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যান্ড ট্রাভেলস, মেসার্স মিতুল ট্রেডিং, কেয়া ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, মেসার্স এসএ ট্রেডিং ও মেসার্স গ্লোবাল রিক্রুটিং এজেন্সি।

যে ১১টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তাদের কাছে স্বচ্ছতার নিশ্চয়তা কতটুকু এই সম্পর্কে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণায়লের উপসচিব কাজী আবেদ হোসেন বলেন, যেসব রিক্রুটিং এজেন্সি জাপানে কর্মী পাঠানোর জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে, সেগুলোর অতীতের পারফমেন্স যাচাই করে। দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাদের সেবার মানসহ বেশ কয়টি ক্যাটাগরিতে যাচাই-বাচাই করে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কোনো কর্মীর কাছ থেকে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই, মেডিকেল পরীক্ষার মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া নিয়মের বাহিরে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করতে না পারে তা দেখভালের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি টিম থাকবে। কোনো রিক্রুটিং এজেন্সি যদি মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেয়া নিয়মের বাহিরে যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে তৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযুক্ত কোম্পানিকে বিদেশে কর্মী পাঠানোর সকল প্রক্রিয়া থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা সহ লাইসেন্স বাতিল করা হবে। বিশেষ করে জাপান যাওয়ার ক্ষেত্রে সরকার ও মন্ত্রণালয় অত্যন্ত সিরিয়াস। তাই জাপান যেতে আগ্রহী কর্মীরা পূর্ণ আস্থা রাখতে পারেন।

তবে মন্ত্রণালয়ের এমন আশ্বাস এবং প্রতিশ্রুতির ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না বিদেশ গমনেচ্ছুরা। কারণ, অতীতের অভিজ্ঞতা ভালো নয়। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, হাজার হাজার মানুষকে সর্বশান্ত করার পর শুধু ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করাই একমাত্র শাস্তি হতে পারে না। একবার লাইসেন্স বাতিল করা হলে এরা আবার অন্য লাইসেন্সে কাজ করার সুযোগ পায়। তাই জেল-জরিমানাসহ কঠোর শাস্তির ব্যবস্থাও থাকতে হবে। পাশাপাশি র‌্যাব এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নিয়মিত পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
জনশক্তি রপ্তানি এজেন্সিগুলোর সংগঠন বায়রা’র একাধিক সদস্য শীর্ষকাগজের এই প্রতিবেদককে বলেন, বিদেশে কর্মী রপ্তানির নতুন বাজার এখন সৃষ্টি হচ্ছে না। যে কয়টি দেশ শ্রমিক নিচ্ছে তারা আগের মতো আর আগ্রহ দেখাচ্ছে না। সৌদি আরব বিনা নোটিশে বৈধ শ্রমিকদের গ্রেফতার করে দেশে পাঠাচ্ছে। কারো কথাতেই কান দিচ্ছে না দেশটি। মালয়েশিয়া বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সির দুর্নীতি আর অনিয়মের কারণে কর্মী নিয়োগ বন্ধ ঘোষণা করেছে সেখানকার বর্তমান মাহাথির সরকার। নিবে নিবে করেও কর্মী নিচ্ছে না। একের পর এক নতুন নতুন কঠিন শর্ত আরোপ করছে দেশটি। প্রতি দিন অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হচ্ছে প্রবাসী কর্মীদের। অনেকে ভিসা জটিলতা ও কাজ না পেয়ে জঙ্গলে মানবতার জীবন-যাপন করছে। ইউরোপের বাজারও ভালো না, নতুন কোনো দেশ শ্রমিক নেয়ার ক্ষেত্রে আগ্রহ দেখাছে না। এমন দুরাবস্থায় জাপান আমাদের দেশ থেকে কর্মী নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। খুব ভাল কথা। আর পাঁচটি দেশের মতো জাপান নয়। স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় আমাদের জাপানে পাঠাতে হবে। ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। সরকারকে ও বায়রাকে অনিয়ম-দুর্নীতির ব্যপারে সচেতন থাকতে হবে। নিখুঁত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জাপানের দৃষ্টি আর্কষণ করতে হবে। সেদেশে আস্তে আস্তে কর্মী রপ্তানির বাজারটি সম্প্রসারণ করতে হবে। আর তা করতে না পারলে মালয়েশিয়ার মতো হলে বিপদ আমাদের অনিবার্য। দক্ষ, অদক্ষ কর্মীর অভাব আমাদের নেই। তাই জাপানের বাজার ধরে রাখতে পুরো প্রক্রিয়া অনিয়ম মুক্ত রাখতে হবে বলেও মনে করেন তারা।

স্পেসিফায়েড স্কিলড ভিসা ক্যাটাগরি-১
জাপান সরকারের স্পেসিফায়েড স্কিল ভিসা ক্যাটাগরি-১ অনুযায়ী ১৪টি খাতের কর্মীরা ৫ বছরের জন্য ভিসা পাবেন। আবেদনকারীকে এই ক্যাটাগরির ভিসার জন্য জাপানি ভাষায় পরীক্ষা এবং দক্ষতার পরীক্ষা দিতে হবে। এই ভিসার আওতায় কর্মীরা তাদের পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে যেতে পারবে না। এই ক্যাটাগরির ভিসা সীমিত সময়ের জন্য নবায়ন করা যাবে। কিন্তু দ্বিতীয় ক্যাটাগরির ভিসায় পরিবর্তন করার জন্য সময় বাড়ানো হবে না। জাপানের ইমিগ্রেশন বিভাগ জানায়, প্রথম বছরে এই ক্যাটাগরিতে ৪৭ হাজার ৫৫০টি ভিসা দেওয়া হবে। বাকিগুলো আগামী ৫ বছরব্যাপী দেওয়া হবে। এই ক্যাটাগরিতে শুধু নার্সিং কেয়ার খাতেই ৬০ হাজার ভিসা দেওয়া হবে।

স্পেসিফায়েড স্কিলড ভিসা ক্যাটাগরি-২
দ্বিতীয় ক্যাটাগরির এই ভিসায় আবেদনের জন্য কর্মীর ক্যাটাগরি-১ ভিসা থাকতে হবে। এই ভিসার আবেদন নেওয়া শুরু হবে ২০২১ সাল থেকে। যারা তাদের কাজের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন, তারা এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে, শুধু কন্ট্রাকশন ও জাহাজ নির্মাণ শিল্পের কর্মীরা এই সুযোগ পাবেন। এই ভিসার আওতায় কর্মীরা তাদের পরিবারের সদস্যদের জাপানে নিয়ে যেতে পারবেন। এমনকি টানা ১০ বছর সেখানে থাকার পর জাপানে স্থায়ী বসবাসের অনুমতিও পাবেন।
যে কারণে শ্রমিক নেবে জাপান
অন্য দেশ থেকে জাপান বিশ্বের একমাত্র উন্নত দেশ যেখানে অভিবাসনের ব্যাপারে বেশি কড়াকড়ি। জাপানের জন্ম হার গত শতকের ৭০ দশক থেকে দুই দশমিক একের নিচে। তখন থেকে জাপানের জনসংখ্যা কমছে। বর্তমানে এই হার এক দশমিক চার। এর বিপরীতে জাপানে মানুষের গড় আয়ু বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। এই কারণে জাপানে কর্মক্ষম মানুষের মারাত্মক সংকটে। কৃষি জমিতে ধান চাষ, সবজি চাষ, জমি চাষাবাদের কাজ করতে হয় আশিরও বেশি বয়সের বৃদ্ধদের। যেখানে এই বয়স্ক লোকগুলো নিজেই চলাফেরা করতে পারেনা, শ্রমিক সংকটের ফলে তাদের চাষাবাদ করতে হচ্ছে। তাই এসব মানুষের সেবার জন্য দক্ষ জনবল দরকার। তবে বিদেশি শ্রমিক নেওয়ার ব্যাপারে জাপান বরাবরই রক্ষণশীল। জাপানের ব্যবসায়ীরা বহু বছর ধরেই যুক্তি দিচ্ছেন যে বিদেশ থেকে কর্মী আনার জন্য ইমিগ্রেশন আইন শিথিল করা দরকার। বিশেষ করে এই সব কারণে জাপানে বিদেশি কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাপান সরকার।

সম্ভাব্য আয়

একজন শ্রমিকদের বেতন নির্ভর করবে কোন শ্রমিক কোন ধরণের কাজে নিয়োগ পাচ্ছে তার উপর। তবে এক জন দক্ষ শ্রমিক হিসেবে জাপানে যাওয়ার পর কাজের ধরণ ভেদে প্রতি মাসে বাংলাদেশি মুদ্রায় দেড় থেকে শুরু করে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ের সুযোগ রয়েছে। জাপানের শ্রম আইন অনুযায়ী, একজন কর্মীর ন্যূনতম বেতন বাংলাদেশি মুদ্রায় ঘণ্টায় প্রায় ৭০০ টাকা। প্রত্যেক কর্মী দিনে ৮ ঘণ্টা কাজ করতে পারবেন। তবে, কিছু কিছু খাতে সপ্তাহে ৪৪ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করার সীমাবদ্ধতা আছে। সে হিসাবে একজন কর্মীর মাসিক বেতন হবে প্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। জাপানে এখন ১৫-১৬ হাজার বাংলাদেশি এখন অবস্থান করছেন। যারা মূলত অপেক্ষাকৃত উচ্চদক্ষতাসম্পন্ন কর্মী। তথ্য প্রযুক্তি, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এসব খাতে বেশ কিছু বাংলাদেশি কাজ করছেন এবং এসব খাতে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন হিসেবে পাঁচবছর মেয়াদের নিয়োগ নিয়ে কাজের সুযোগ আগের মতই অব্যাহত রয়েছে।
শারীরিক যোগ্যতা
দক্ষ শ্রমিক হিসেবে জাপানে যেতে হলে বয়স কোনভাবেই ৩২ বছরের বেশি হওয়া যাবে না। স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে কোন ধরণের রোগ রয়েছে কিনা সেটিও নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া চারিত্রিক সনদ অর্থাৎ কোন আবেদনকারীর বিরুদ্ধে কোন ধরণের অভিযোগ রয়েছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হবে।

পেশাগত দক্ষতা
জাপানে যেতে হলে প্রথমেই দক্ষতার পরীক্ষা দিতে হবে। দক্ষতায় টিকে গেলে শুরু হবে ভাষা শেখা। যারা এরইমধ্যে বিভিন্ন পেশায় রয়েছেন এবং যাদের পেশাগত কাজের সার্টিফিকেট রয়েছে তারা দক্ষ শ্রমিক হিসেবে গণ্য হবেন। তবে যাদের দক্ষতা রয়েছে কিন্তু সার্টিফিকেট নেই তারা পরীক্ষা দিয়ে সার্টিফিকেট নিতে পারবেন। একজন কর্মীকে কমপক্ষে এইচএসসি পাশ হতে হবে। এছাড়া সরকার অনুমোদিত প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান থেকে কয়েক মাসের প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষতার সার্টিফিকেট সংগ্রহ করা যাবে। নার্সিং ইন্সটিটিউটগুলোতে সেবা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। কৃষিকাজের ক্ষেত্রে যারা বিভিন্ন ডিপ্লোমা কোর্স করেছেন এবং সার্টিফিকেট রয়েছে তারা যেতে পারবেন। এছাড়া বিভিন্ন ইন্সটিটিউটে কৃষি বিষয়ক প্রশিক্ষণ নিয়েও সার্টিফিকেট সংগ্রহ করা যাবে। তবে জাপানে বিদেশিদের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় শর্ত হলো জাপানি ভাষা শেখা। জাপানে যেতে হলে জাপানি ভাষা জানতে হবে। এজন্য জাপানি ভাষার এন ফোর লেভেল পর্যন্ত জানতে হবে। জাপানি ভাষায় এন ফাইভ হচ্ছে প্রাথমিক পর্যায়। অর্থাৎ জাপানি ভাষায় বলতে, লিখতে ও পড়তে জানতে হবে। জাপানে যেতে হলে জাপানি ভাষা জানার সর্বনিম্ন স্ট্যান্ডার্ড এটি। এর পরে এন থ্রি বা এন টু জানলে সেটাকে অতিরিক্ত যোগ্যতা বলে ধরা হবে। এছাড়া জাপানে যাওয়ার পরও নিয়মিত ভাষার বিষয়ে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ থাকবে। তা ছাড়াও জাপানের জীবনযাত্রার সাথে মানিয়ে নেবার জন্য অন্যান্য কিছু ‘লাইফ স্কিল’ এবং ‘কর্মসংস্কৃতি’ সম্পর্কেও তাদের অবহিত হতে হবে।

আবেদনের পদ্ধতি
প্রয়োজনীয় দক্ষতা থাকলে অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাপানে শ্রমিক পাঠিয়ে থাকে বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো বা বিএমইটি। এছাড়া জাপান সরকারের সাথে হওয়া নতুন জনশক্তি রপ্তানি চুক্তির আওতায় এরইমধ্যে ১১টি সংস্থাকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এসব সংস্থার যোগ্যতা হলো বাংলাদেশ ছাড়াও জাপানে তাদের অফিস রয়েছে। এদের অনেকেই এরই মধ্যে ভাষা শেখানোর কার্যক্রম শুরু করেছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণায়লয়ের এক কর্মকর্তা শীর্ষ কাগজকে জানান, পেশার দক্ষতার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার আগ পর্যন্ত কাউকে ভাষা শেখার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে না। পেশাগত দক্ষতা এবং ভাষা শিক্ষা শেষে চূড়ান্ত বাছাই অনুষ্ঠিত হবে জাপান দূতাবাসে। সেখানে তাদের অনুমোদিত সংস্থার মাধ্যমে সব ধরণের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। অনুমোদিত সংস্থাগুলো থেকে জাপানি ভাষায় দক্ষতা অর্জনের জন্য কিছু পরিমাণ ফি দিতে হবে। সেক্ষেত্রে অনিয়ম করার সুযোগ নেই। তবে কেউ দলাল ও দুর্নীতিবাজচক্রের প্রতারণার ফাঁদে পা দিলে সেটি ভিন্ন কথা।
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) হিসাব বলছে, গত বছর মাত্র ১৬৩ জন শ্রমিক জাপানে পাঠাতে পেরেছে বাংলাদেশ। চলতি বছর ৪০০ কর্মী পাঠানোর লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও জুলাই পর্যন্ত গিয়েছেন ১১৯ জন। আরও প্রায় এক হাজার কর্মীর ভাষা প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন জেলার ২৭টি কেন্দ্রে ৪০ জন করে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বিএমইটি। চার মাস মেয়াদি জাপানি ভাষা শেখার এসব প্রশিক্ষণের পর পরীক্ষায় বসেন কর্মীরা। উত্তীর্ণ হলে আইএম জাপানের ব্যবস্থাপনায় আরও চার মাসের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরপর শিক্ষানবিশ হিসেবে তাদের জাপানে নিয়ে যাওয়া হয়। অন্য দেশের মতো জাপানে কর্মী রপ্তানির ক্ষেত্রে যেন অনিয়ম না হয় সে ব্যপারে সকলকে সচেতন থাকার কথা বারবার বলেছেন অভিজ্ঞজনরা।
(সাপ্তাহিক শীর্ষকাগজে ২৮ অক্টোবর ২০১৯ প্রকাশিত)

11
উচ্চ রক্তচাপ কমায় তেঁতুল


তেঁতুল মূলত দক্ষিন এশিয়াতেই পাওয়া যায়।টক স্বাদের এ ফলটি বিভিন্ন খাবার ও পানীয় তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এতে শরীরের প্রয়োজনীয় ফাইবার, খনিজ ও ভিটামিন রয়েছে। এ কারণে এটি স্বাস্থ্যের জন্য দারুণ উপকারী। তেঁতুলে যেসব উপকারিতা পাওয়া যায়-

১. প্রাচীনকালে বিভিন্ন চিকিৎসায় তেঁতুল ব্যবহার করা হত। যেসব শিশুরা পেটের সমস্যায় ভূগছে তাদের জন্য এটি বেশ উপকারী। এটি অ্যাসিডিটি দূর করতেও সাহায্য করে। তেঁতুলে থাকা ফাইবার কোষ্টকাঠিন্য দূর করে। তেঁতুলের বীজ ডায়রিয়া ও আমাশয়ের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।

২. তেঁতুলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি রেডিকেলের বিরুদ্ধে কাজ করে। এতে থাকা ফাইবার কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।

৩. তেঁতুলে পটাশিয়াম থাকায় এটি উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে হৃৎপিণ্ডকেও ভাল রাখে। এতে থাকা আয়রন শরীরে লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করে।

৪. প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকায় তেঁতুল চোখের জন্যও উপকারী। এতে থাকা এক ধরনের রাসায়নিক চোখের শুষ্কতা দূর করে।


৫. তেঁতুল শক্তিশালী প্রতিরোধক। এটি স্কার্ভি জাতীয় চর্মরোগ এবং যেকোন ধরনের সংক্রমণ সারায়। জ্বর নিরাময়েও এটি কার্যকরী।

৬. তেঁতুলে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এটি ত্বককে ফ্রি রেডিকেল থেকে রক্ষা করে। ত্বক হালকা পুড়ে গেলে তা সারাতেও তেঁতুল ভুমিকা রাখে।

12
Fruit / চুইঝাল কেন খাবেন?
« on: March 30, 2019, 04:17:28 PM »
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা বাগেরহাট, খুলনা, নড়াইল, যশোর, সাতক্ষীরা এলাকায় জনপ্রিয় একটি ঝাল হলো চুইঝাল। বর্তমানে দেশের অন্যান্য জেলাতেও ঝাল হিসেবে এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। চুই ঝালের উপকারিতা সম্বন্ধে সম্যক ধারণা দিতেই আমার এই লেখা। চুই লতা জাতীয় গাছ। এর কাণ্ড ধূসর এবং পাতা পান পাতার মতো, দেখতে সবুজ রংয়ের। চুইঝাল খেতে ঝাল হলেও এর রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ঔষধি গুণ।


চুইলতার শিকড়, কাণ্ড, পাতা, ফুল- ফল সবই ভেষজ গুণসম্পন্ন। এছাড়াও মসলা হিসেবেও এটি ব্যবহৃত হয়। তবে ঝাল হিসেবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় হাঁসের মাংস ও গরুর মাংস রান্না করতে।

মূলত,রান্নার জন্যে চুইঝালের কাণ্ড ব্যবহার করা হয়। চুইঝালে দশমিক ৭ শতাংশ সুগন্ধি তেল থাকে। এছাড়াও এতে রয়েছে আইসোফ্লাভোন, অ্যালকালয়েড, পিপালারিটিন, পোপিরন, পোলার্টিন,

গ্লাইকোসাইডস,মিউসিলেজ, গ্লুকোজ, ফ্রুকটোজ, সিজামিন, পিপলাস্টেরল থাকে। চুই এর শিকড়ে রয়েছে ১৩.১৫ শতাংশ পিপারিন।

আসুন এবার জেনে নিই চুইঝালের উপকারিতা:-

সমূহরুচি বাড়াতে: সমূহরুচি বাড়াতে খাবারের রুচি বাড়াতে ও ক্ষুধামন্দা দূর করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

ক্যানসার প্রতিরোধে: এতে প্রচুর পরিমাণে আইসোফ্লাভোন ও অ্যালকালয়েড নামক ফাইটোক্যামিকাল রয়েছে যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং ক্যানসার প্রতিরোধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
হৃদরোগ প্রতিরোধে: দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে এটি হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

পাকস্থলীর সমস্যা দূরীকরণে: পাকস্থলী ও অন্ত্রের প্রদাহ দূর করে। তাছাড়া গ্যাস্ট্রিক ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

মানসিক প্রশান্তিতে: স্নায়ুবিক উত্তেজনা ও মানসিক অস্থিরতা প্রশমন করে।

ব্যথা দূর করতে: আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যথা দূর করে শরীর সতেজ রাখতে সহায়তা করে।

ঘুমের ওষুধ হিসেবে: এটি ঘুমের ওষুধ হিসেবে কাজ করে এবং শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে সাহায্য করে।

প্রসূতি ব্যথা: প্রসূতি মায়ের প্রসব-পরবর্তী ব্যথা প্রশমনে ভালো কাজ করে চুইঝাল। সদ্যপ্রসূতি মায়েদের শরীরের ব্যথা কমাতে চুইঝাল ম্যাজিকের মতো কাজ করে।

অ্যাজমা ও ব্রংকাইটিস রোগের ওষুধ হিসেবে: অ্যাজমা ও ব্রংকাইটিস রোগের ওষুধ হিসেবে কাজ করে।ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকজনিত রোগপ্রতিরোধে চুইঝাল বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকজনিত রোগপ্রতিরোধে সাহায্য করে।

সুতরাং, নিঃসন্দেহে বলা যায় যে মরিচের বিকল্প হিসেবে চুইঝালের জনপ্রিয়তা বাড়লে দেশের হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। একই সঙ্গে ভেষজ গুণ থাকার কারণে অনেক রোগব্যাধির আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

শিক্ষার্থী ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগ, জীববিজ্ঞান অনুষদ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।

13
Human Nutrition / আতা ফলের ১০ গুণ
« on: March 30, 2019, 04:03:32 PM »
আতা ফল আমরা সবাই চিনি। অনেকের প্রিয় ফলের মধ্যে হয়তো আতাও আছে। এটি শরীফা, সিতাফল এবং নোনা নামেও পরিচিত। এই ফলের ভিতরে থাকে ছোট ছোট কোষ। প্রতিটি কোষের ভেতরে থাকে একটি করে বীজ, বীজকে ঘিরে থাকা নরম ও রসালো অংশই খেতে হয়।


পাকা ফলের বীজ কালো এবং কাচা ফলের বীজ সাদা। বীজ বিষাক্ত। এটি গুচ্ছিত ফল অর্থাৎ একটি মাত্র পুষ্পের মুক্ত গর্ভাশয়গুলো হতে একগুচ্ছ ফল উৎপন্ন হয় ৷

আতা ফলের বেশ কয়েকটি প্রজাতি ও প্রকরণ আছে। সবগুলোকেই ইংরেজিতে ‘কাস্টার্ড অ্যাপল’, ‘সুগার অ্যাপল’, ‘সুগার পাইন এপল’ বা ‘সুইটসপ’ বলা হয়। অঞ্চলভেদে নামের কিছু পার্থক্য রয়েছে আতা ফলে। এতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান। যা আপনার শরীরের বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে থাকে।

আপনি হয়ত জানেন না, আতা দুগ্ধজাত পণ্যের বিকল্প হিসেবে অনেক দেশে এটি পছন্দ করে। চলুন জেনে নেয়া যাক আতার স্বাস্থ্য উপকারিতা-

(১) ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: আপনি যদি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন, তাহলে রক্তের গ্লুকোজ মাত্রা কমাতে আতা ফল খাওয়া শুরু করুন। এছাড়াও, কাস্টার্ড আপেলের ডায়াবেটিস ফাইবারের উপস্থিতিতে চিনির শোষণ কমানো যায়।

(২) হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ: আতা ফলে থাকা ম্যাগনেসিয়াম আপনার কার্ডিয়াক সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে এতে থাকা ভিটামিন বি-৬ হোমোকিসস্টাইন নিয়ন্ত্রণ করে। এবং এই ফলে আছে অ্যামিনো অ্যাসিড যা হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।

(৩) ক্ষত শুকায়: গবেষকদের মতে, আতা ফলের বীজগুলো ক্ষত শুকাতে সাহায্য করে। এই বীজ ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বকের গভীরে থাকা কোষের পুনঃবৃদ্ধি পায় এবং ক্ষত স্থানের ব্যথা তাৎক্ষণিকভাবে পালায়। এই বীজে এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রোপার্টি রয়েছে।

(৪) বদহজম প্রতিরোধক: তামা ও ডায়াটেরি ফাইবার সমৃদ্ধ এই ফলটি খুব সহজেই হজম হয়। এবং শরীর এর গুণাগুণ তাৎক্ষণিক পেতে থাকে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, আতা ফলের গুড়া এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে খেলে আপনার ডায়রিয়ার সমস্যাও মুহূর্তেই গায়েব হবে।

(৫) ক্যান্সার প্রতিরোধ: এক গবেষণায় দেখা গেছে, আতা গাছের পাতার নির্যাস স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। স্তনের কোষে থাকা বিষাক্ত টক্সিন দূর করে। এছাড়া অ্যান্টি-অক্সিডেন্টপূর্ণ আতা ফল আপনার শরীরের কোষগুলোকে বিভিন্ন ড্যামেজ থেকে রক্ষা করে।

(৬) ত্বক এবং চুলের যত্নে: আতা ফল ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ। যা আপনার ত্বক ও চুলের জন্য জাদুকরী ভূমিকা পালন করে। এটি যখন ত্বক ও চুলে ব্যবহার করা হয় তখন এটি ময়শ্চারাইজিং এজেন্ট হিসাবে কাজ করে। এমনকি এটি আপনার চেহারায় বয়স্কের ছাপ প্রতিরোধ করে। আতা ফলেরর ছোট ছোট কোষগুলো আলসারের বিরুদ্ধে কার্যকরী।

(৭) দাঁত ও মাড়ি মজবুত করে: বিশেষজ্ঞরা সপ্তাহে অন্তত একবার দাঁত পরিষ্কার করার জন্য আতা ফলের চামড়া ব্যবহার করে সুপারিশ করেন। এটি ব্যবহারের ফলে দাঁত ক্ষয় রোধ হয় এবং মাড়িকে আরো মজবুত করে।

(৮) হাঁপানি প্রতিরোধক: হাঁপানি রোগী হিসাবে যদি আপনি মূলার রস খেয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আতা ফলের রস খাবেন। এটি ভিটামিন বি-৬ সমৃদ্ধ যা আপনার হাঁপানি (অ্যাস্থমা) প্রতিরোধে সাহায্য করবে।

(৯) ওজন বাড়ায়: আপনি কি ওজন বাড়াতে চান? আপনাকে যা করতে হবে তা হল- একটি বাটি নিন, কিছু মধু এবং আতা ফলের ছোট ছোট বীজগুলো মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরী করুন। প্রতিদিন এই মিশ্রণটি খান। দেখবেন কয়েক মাসের মধ্যে আপনার ওজন বাড়ছে।
(১০) গর্ভাবস্থায় সহায়ক: গাইনোকোলজির মতে, গর্ভাবস্থায় আতা ফল খাওয়া গর্ভপাতের ঝুঁকি হ্রাস করে। সকালের দূর্বলতা নিয়ন্ত্রণ করে এবং শারীরক ব্যাথার উপশম ঘটায়। গর্ভাবস্থার পরে আতা ফল খাওয়ার ফলে স্তনে দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।

14
বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স সিলেটবাসীর জন্য প্রতিদিন তিনটি ফ্লাইট চালু করছে। আগামী ৩১ মার্চ থেকে চালু হবে এ যাত্রীসেবা।


বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইউএস-বাংলা।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঢাকা-সিলেট-ঢাকা রুটে প্রতিদিন সকাল-দুপুর-সন্ধ্যাবেলায় মোট তিনটি ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউএস-বাংলা।

সিলেটবাসীর প্রত্যাশা অনুযায়ী গত বছর ১২ সেপ্টেম্বর থেকে দুপুরের ফ্লাইটের সঙ্গে একটি সান্ধ্যকালীন ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে ইউএস-বাংলা। আগামী ৩১ মার্চ থেকে দুপুর ও সন্ধ্যার ফ্লাইটের অতিরিক্ত সকালবেলা একটি ফ্লাইট পরিচালিত হবে।

ঢাকা-সিলেট রুটে প্রতিদিন সকাল ৭টা, দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিট ও সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে ঢাকা থেকে দুটি পাতা একটি কুঁড়ির শহর সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে এবং সিলেট থেকে সকাল ৮টা ১০ মিনিট, দুপুর ১টা ৪৫ মিনিট ও রাত ৮টা ৪০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসবে।

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে ঢাকা-সিলেট রুটে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স যাত্রীসাধারণের সুবিধার্থে সকালে ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্তে ট্রাভেল এজেন্টসহ সিলেটবাসী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।

এখন থেকে ৭২ আসনের ব্র্যান্ড নিউ এটিআর ৭২-৬০০ ও ৭৬ আসনের ড্যাশ৮-কিউ৪০০ সিরিজের এয়ারক্রাফট দিয়ে ঢাকা-সিলেট রুটে ফ্লাইট পরিচালিত হবে। বর্তমানে ঢাকা-সিলেট রুট ছাড়াও বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সব রুটে ইউএস-বাংলা ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে।

অভ্যন্তরীণ রুট ছাড়াও কলকাতা, সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুর, ব্যাংকক, গুয়াংজু, মাস্কাট, দোহা রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে ইউএস-বাংলা।

15
এই ফলটি চিনেন? ফলের নামটা জানা, তবে খুব একটা পরিচিত না। বর্ষার এই ফল তেমন জনপ্রিয় না হলেও অসাধারণ ভেষজ পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। ভাবছেন কোন ফল? ডেউয়া বা ডেউফল। টক মিষ্টি স্বাদের ডেউয়া ফল কাঁঠালের মতো ছোট ছোট কোষে বিভক্ত। বৃষ্টির মৌসুমে ভর্তা করে খেতে খুবই সুস্বাদু এই ফল।

বিশাল আকৃতির ডেউয়া গাছ চিরসবুজ বৃক্ষ। পাতাগুলো বড় এবং খসখসে, অনেকটা ডুমুরের পাতার মতো। এক একটি গাছ ২০-২৫ ফুট উঁচু হয়। এর কাঠ বেশ উন্নত মানের, বড় বড় জিনিসের কাঠামো তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। গাছে ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ফুল আসে এবং জুন মাসের দিকে ফল পাকতে শুরু করে।

ডেউয়া ফলটি গোলাকৃতির, ২-৫ ইঞ্চি চওড়া হয়, পাকলে হলুদ রং ধারণ করে। প্রতিটি ফলের মধ্যে ২০-৩০টি বীজ থাকে। বীজের গায়ের মাংসল অংশটাই খাওয়া হয়। প্রতিটি ফল ২০০-৩৫০ গ্রাম হতে পারে।

ডেউয়া গাছ ১০-১৫ মিটার লম্বা হয়। ফল সুস্বাদু এবং উপকারী। ফল কাঁঠালের ন্যায় যৌগিক বা গুচ্ছফল। বহিরাবরণ অসমান। কাঁচা ফল সবুজ, পাকলে বহিরাবরণ হলুদ। ভেতরের শাঁস লালচে হলুদ। ফলের ভেতরে থাকে কাঁঠালের ছোট কোয়ার (কোষের) মতো কোয়া এবং তার প্রতিটির মধ্যে একটি করে বীজ থাকে।

গ্রামাঞ্চলে অত্যন্ত পরিচিত একটি ফল। তবে শহরে তেমন চাহিদা না থাকায় বর্তমানে এর চাষ অনেকটা কমে এসেছে। ফলে না জেনেই আমরা মিস করে যাচ্ছি পুষ্টির এক বড় উৎস।ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়ামের আধার বলা হয় ডেউয়া ফলকে। এগুলো ছাড়াও ডেউয়া ফলে রয়েছে অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। ডেউয়া ফলের খাদ্যযোগ্য প্রতি ১০০ গ্রাম অংশে রয়েছে –

খনিজ- ০.৮ গ্রাম, খাদ্যশক্তি- ৬৬ কিলোক্যালরি, আমিষ- ০.৭ গ্রাম, শর্করা- ১৩.৩ গ্রাম, ক্যালসিয়াম- ৫০ মিলিগ্রাম, লৌহ- ০.৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি১- ০.০২ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি২- ০.১৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি- ১৩৫ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম- ৩৪৮.৩৩ মিলিগ্রাম।

তাই আজ জানবো ডেউয়া ফলের অজানা কিছু উপকারিতা নিয়ে।

১. অনিয়ন্ত্রিত ওজন এ সময়ের একটা বড় সমস্যা। অথচ ঠাণ্ডা পানিতে ডেউয়া ফলের রস মিশিয়ে নিয়মিত পান করলেই আমরা আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি। এমনকি ডেউয়া ফল রোদে শুকিয়ে নিয়ে অফ সিজনেও খেতে পারি।


২. মুখের রুচি ফিরে পেতে খেতে পারেন এই ফল। ডেউয়া ফলের রসের সঙ্গে সামান্য লবণ ও গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে খাওয়ার আগে খেতে হবে। দেখবেন সপ্তাহ না পেরুতেই রুচি ফিরে এসেছে।

৩. পেট পরিষ্কার না থাকলে সারাদিন কাটে অস্বস্তিতে। তাই বলা যেতেই পারে ‘পেট শান্তি তো সব শান্তি’। পেটের গণ্ডগোল থেকে রেহাই পেতে সকালে খালি পেটে খান কাঁচা ডেউয়া। এজন্য গরম পানির সঙ্গে কাঁচা ডেউয়া বাটা মিশিয়ে নিবেন।

৪. এই বিদ্যমান ভিটামিন সি ত্বক, চুল ও দাঁতের নানা রোগ প্রতিরোধ করবে। আর ক্যালসিয়াম দাঁত ও হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধ করে। আর পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।

Pages: [1] 2 3 ... 9