Daffodil International University

Faculty of Allied Health Sciences => Pharmacy => Topic started by: hasanzilani on March 14, 2019, 02:13:45 PM

Title: সচেতনতা চিনির বদলে
Post by: hasanzilani on March 14, 2019, 02:13:45 PM
সাদা চিনি যে কেবল ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য নিষেধ, তা–ই নয়, এখন দেখা যাচ্ছে যে সাদা চিনি উচ্চ সরল শর্করা ও উচ্চ ক্যালরিযুক্ত, এটা রক্তে শর্করার পাশাপাশি ওজনও বাড়ায়। বাড়তি চিনি রক্তে ও যকৃতে চর্বি বা ট্রাইগিস্নাসারাইড হিসেবে জমা হতে থাকে। ফ্যাটি লিভার, হৃদ্‌রোগসহ নানা রোগের ঝুঁকি বাড়ায় এই সাদা চিনি। শুধু তা–ই নয়, বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে চিনি আসলে অ্যাডিকটিভ, মানে এতে আসক্তি জন্মে। ফলে যাঁরা চিনি বা চিনি দিয়ে তৈরি মিষ্টি খেতে পছন্দ করেন, তাঁরা এতে ক্রমেই আসক্ত হয়ে পড়েন, পরে এ ধরনের খাবার আরও বেশি করে খেতে থাকেন। চিনিতে আছে উচ্চ শর্করা, যা খিদে ও রুচি আরও বাড়ায়, ফলে আরও খেতে ইচ্ছে করে। এই সব নানা কারণে সবারই উচিত সাদা চিনি ও চিনি দিয়ে তৈরি মিষ্টান্ন দ্রব্য এড়িয়ে চলা। তাই বলে কি মিষ্টি জিনিস মোটেও খাব না? জীবনটা কেবল তেতো হয়েই থাকবে? আসুন জেনে নিই চিনির বিকল্প কী হতে পারে?

প্রতিদিনি যেসব খাবার বা পানীয়ে আমরা চিনি মেশাই, তার মধ্যে চা–কফি অন্যতম। চেষ্টা করুন রোজকার এই চিনি গ্রহণ কমিয়ে দিতে। দুধ–চিনি দেওয়া ঘন চায়ের চেয়ে লিকার–টি বা গ্রিন–টি বেশি উপকারী। একটু লেবুর রস বা দারুচিনি–এলাচি বা আদার টুকরো তাতে ছেড়ে দিয়ে পান করার অভ্যেস করুন, কদিন পরই দেখবেন, খেতে খুব
ভালো লাগছে। চকলেট খাওয়ার সময় বেছে নিন ডার্ক চকলেট। মনে রাখবেন, ডার্ক চকলেট কিন্তু হৃদ্‌যন্ত্রের জন্য উপকারী। খেতে একটু তিতকুটে লাগলেও সাধারণ চিনিযুক্ত চকলেটের তুলনায় এটি বেশি কাজে আসে। একইভাবে ব্ল্যাক কফিও উপকারী। নিত্যদিনের এই চিনি ত্যাগ করলে অনেকটাই কমে আসবে চিনি খাওয়া।

এবার আসুন জেনে নিই চিনির বিকল্প হিসেবে আমরা কী মিষ্টি খেতে পারি। ডেজার্ট বা শেষ পাতের মিষ্টি হিসেবে বেছে নিন নানা ধরনের তাজা ফল, ফলের তৈরি সালাদ বা দই। ফলমূলের মধ্যে যে চিনি লুক্কায়িত আছে, তা অপকারী নয়। এমনকি ডায়াবেটিসের রোগীরাও নিয়মিত দু–একটা ফল খেতে পারবেন। মধু মিষ্টি বটে, তবে চিনির মতো খারাপ নয়। এতে ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট আছে, যা ক্ষতিকর চর্বি কমায়। চিনির বিকল্প হতে পারে খানিকটা মধু, মধু মেশানো চা বা পানীয় খেলেও আপত্তি নেই। তবে মনে রাখবেন, মধুতে কিন্তু ক্যালরিও অনেক। তাই বেশি খাওয়া যাবে না। মধুর মতোই আরেকটা মিষ্টি তরল হলো ম্যাপল সিরাপ। এতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, জিংক ইত্যাদি আছে; খেতে মিষ্টি হলেও চিনির চেয়ে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। তারপরও এটি বেশি খেলে রক্তে শর্করা
বাড়তে পারে, তাই খেতে হবে হিসাব করে। গুড়ে কিন্তু যথেষ্ট শর্করা আছে, চিনির বিকল্প হিসেবে মাঝেমধ্যে খেলেও হিসাব করে
খেতে হবে।

কিছু সুগার অ্যালকোহল চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো জাইলিটল। খেতে মিষ্টি হলেও এটি চিনি নয়। বিকল্প চিনি তৈরিতে জাইলিটল বা এ–জাতীয় রাসায়নিক ব্যবহৃত হয়। এতে চিনি প্রায় নেই বললেই চলে, ক্যালরিও খুব কম। ইরাইথ্রিটলও এ ধরনেরই একটি রাসায়নিক, যাতে ক্যালরি জিরো এবং চিনিও নয়, কিন্তু স্বাদে মিষ্টি। যাঁরা মিষ্টি ছাড়তেই পারছেন না, তাঁরা এগুলো দিয়ে মিষ্টান্ন দ্রব্য তৈরি করে মাঝেমধ্যে খেতে পারেন।