Daffodil International University
Faculty of Humanities and Social Science => Journalism & Mass Communication => Topic started by: milan on April 20, 2017, 05:56:06 PM
-
ভালো থেকো তুমি
প্রিয় জন্মভূমি, ভালো থেকো তুমি। মঙ্গল হোক তোমার
আহাদ আদনান
১৬ এপ্রিল ২০১৭, ০৮:১৮
প্রিন্ট সংস্করণ
৮ এপ্রিল সৈয়দপুরে (নীলফামারী) মাদকবিরোধী সাইকেল শুভাযাত্রা ও মাদকবিরোধী শপথ গ্রহণের আয়োজন করে প্রথম আলো বন্ধুসভা৮ এপ্রিল সৈয়দপুরে (নীলফামারী) মাদকবিরোধী সাইকেল শুভাযাত্রা ও মাদকবিরোধী শপথ গ্রহণের আয়োজন করে প্রথম আলো বন্ধুসভা
মানিক থাকবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ২০ বছর হয়ে গেছে, আমাকে ভোলেনি। ঠিক বের করে ফেলেছে ফেসবুকে। ‘দোস্ত, একটিবার আয় না দেশে। সামনের পয়লা বৈশাখটা গ্রামে ঘুরে যা।’ সুদূর কানাডায় বসে আমি পারিনি এই আকুতি অবহেলা করতে।
পদ্মার তীর ঘেঁষে ছিল আমাদের গ্রাম। ভাঙনে একবার কেড়ে নিল ঘরবাড়ি এই নদী। আজ অবাক হয়ে দেখি মহাসড়ক থেকে গ্রাম পর্যন্ত পাকা রাস্তা। বৈশাখের প্রথম দিন। চারদিকে সাজ-সাজ রব। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখি মানিক রোগী দেখছে। গ্রামের সেই বন্ধুটা এখন চিকিৎসক। আমাকে দেখে জড়িয়ে ধরে পাগল ছেলেটা।
মানিক আমাকে নিয়ে যায় অতীতের স্মৃতিগুলোতে। খেলার মাঠটা চারদিকে দেয়ালে আটকা পড়ে ছোট হয়ে গেছে। কোনায় কিছু মুঠোফোন কোম্পানির টাওয়ার। ‘দোস্ত, সবার হাতে এখন মোবাইল এসে গেছে।’ মনে মনে বলি, ভালো থেকো প্রিয় মাঠ।
‘এখানে আমাদের পুকুরটা ছিল না?’ একটা পাঁচতলা দালানের সামনে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করি। ‘মোবারক চাচার বাড়ি এটা। তার ছেলে দুবাই কাজ করে। গ্রামের আরও ১৫-১৬ জন বাইরে থাকে। টাকা পাঠায় দেশে।’ দুই বন্ধু যাই ঘোষ কাকুর মিষ্টির দোকানে। মানিক পরিচয় করিয়ে দেয়। কাকু জড়িয়ে ধরেন আমাকে। ২০ বছর পর সেই মিষ্টি মুখে দিয়ে তাকিয়ে দেখি কাকুর সজল চোখের ভাষা, ‘ঈশ্বর তোমার মঙ্গল করুক।’
চৌধুরী চাচাকে দেখলাম চায়ের দোকানে। চিনতে সময় লাগেনি এতটুকু। আমাদের বাড়ি যেদিন তলিয়ে গেল পদ্মায়, সেদিন জানতে পারলাম, বাকি সম্পত্তি সব অবৈধ দখল করে নিয়েছেন এই চৌধুরী। আমার শিক্ষক বাবা দিনের পর দিন পরাজিত হতে হতে বাধ্য হন গ্রাম ছাড়তে। তারপর পরিশ্রম, অধ্যবসায়, লড়াই করে পড়ালেখা চালিয়ে নেওয়া, বুয়েটে পড়া, কয়েকটা বৃত্তি, কানাডা, এইতো আমার ইতিহাস। আমি ভেবেছিলাম লোকটাকে আবার কখনো পেলে হয়তো খুন করে ফেলব। অথচ কী আশ্চর্য, আমি ধীরে ধীরে তাঁকে কদমবুসি করতে এগিয়ে যাই, আর মানিক যখন বলে, ‘চাচা, ও আব্বাস মাস্টারের ছেলে’, তখন লোকটা আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ে।
মেলায় ঘুরতে ঘুরতে দিন পার হয়ে যায়। হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো নতুনভাবে ফিরে আসে। কত পাল্টে গেছে এই গ্রাম। কোনো বাড়িতে কাচা পায়খানা নেই, প্রত্যেকটা মেয়ে পড়ালেখা করে, চাষ হয় ট্রাক্টর দিয়ে, মানিকেরা নতুন দিন গড়ে। পদ্মা নদীর মাঝিরা পর্যন্ত সেলফি তুলতে শিখে গেছে।
একসময় ফিরে আসতে হয়। গ্রামের শেষ মাথায় দাঁড়িয়ে দেখি মানিকের জলে ভেজা বিদায়। নিজের অজান্তে বলে উঠি, প্রিয় জন্মভূমি, ভালো থেকো তুমি। মঙ্গল হোক তোমার।
Link: http://www.prothom-alo.com/pachmisheli/article/1146291/%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A7%9F-%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%AD%E0%A7%82%E0%A6%AE%E0%A6%BF-%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%8B-%E0%A6%A5%E0%A7%87%E0%A6%95%E0%A7%8B-%E0%A6%A4%E0%A7%81%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A5%A4-%E0%A6%AE%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A6%B2-%E0%A6%B9%E0%A7%8B%E0%A6%95-%E0%A6%A4%E0%A7%8B%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B0
-
Thank you very much for your post. :)