Daffodil International University

Students' Affairs (DSA Office) => Psychological Support => Topic started by: Abu Tareque on July 14, 2021, 01:46:58 PM

Title: Mental Health Awareness ( তোমার মনে বসত করে কয় জনা ?)
Post by: Abu Tareque on July 14, 2021, 01:46:58 PM
                                                                    তোমার মনে বসত করে কয় জনা ?
                                         (https://res.cloudinary.com/jerrick/image/upload/v1616539145/605a6e0918e784001e22d90d.jpg)

লাবিবা যথারীতি তার দৈনন্দিনের কাজ শেষ করে ঘুমিয়ে পড়েছে। সকালে সে ঘুম থেকে উঠে দেখে যে, কে যেন তাদের কিচেনে প্রবেশ করে সেখানে কফি পান করেছে এবং কোন কিছু রান্না করে খেয়েছে । সেদিন লাবিবার বাবা তার ব্যবসার জরুরী কাজে বিদেশে অবস্থান করেছিলেন। এবং তার মা পাশের রুমে ঘুমিয়েছিলেন। বাসার প্রধান দরজা ভিতর থেকে লক করা ছিল। সকালে তার মাকে জিজ্ঞাসা করলে তার মা কিচেন রুমের ঘটনার কোন ব্যাখ্যা দিতে পারলেন না । লাবিবার দুশ্চিন্তা বেড়ে যেতে শুরু করল। তার মাথায় বারবার কয়েকটি প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে লাগল। যেমন- কে বাসায় প্রবেশ করেছিল? কিভাবে প্রবেশ করেছিল? কী উদ্দেশ্য নিয়ে বাসায় প্রবেশ করেছিল? এটা কিভাবে সম্ভব যখন বাসার দরজা ভিতর থেকে লক করা! তাহলে কি ঘটনাটি অতিপ্রাকৃতিক কিছু? মা ঘুমের ঔষধ খেয়ে সাড়া রাত ঘুমিয়ে থাকেন তার দ্বারা এমন কাজ সম্ভব না! আর আমি তো ভুলেও কফি পান করিনা ! তাহলে.....?
যখন ঘটনাটির  কোন কূলকিনারা পাওয়া যাচ্ছিলনা, তখন লাবিবার মাথায় একটি সমাধান এল। সে তাদের বাসার সিসিটিভির ফুটেজ রিভিউ করল। সে যা দেখতে পেল, তাতে সহজে সে বিশ্বাস করতে পারল না।  ফুটেজে সে দেখতে পেল যে,   রাত তিনটায় সে নিজে তার রুম থেকে বের হয়ে কিচেন রুমে গিয়ে কফি পান করেছে এবং নুডলস রান্না করে খেয়েছে, যদিও সে সাধারণত কফি পান করে না।

তারপর বিষয়টি নিয়ে ইন্টারনেটে কিছুক্ষন ঘাটাঘাটির পর সে একজন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে গেল। লাবিবার অতীত জীবনের ঘটনা এবং বর্তমান ঘটনা জানার পর তিনি লাবিবাকে জানালেন যে সে "বিচ্ছিন্নতামূলক আত্ম-পরিচয়ের বিকৃতি (Dissociative Identity Disorder)” নামক একটি মানসিক রোগে ভুগছেন। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে কমপক্ষে দুইটি, সম্পূর্ণ পৃথক ব্যক্তিত্বের অস্তিত্ব থাকে এবং ব্যক্তিত্ব দুটির মধ্যে আচরণ বা কাজেরও সম্পূর্ণ পৃথক ভঙ্গি থাকে। ব্যক্তিত্বগুলো বিভিন্ন সময়ে উপস্থিত হয় এবং ব্যক্তির আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করে। ব্যক্তি যখন একটি ব্যক্তিত্বে অবস্থান করে তখন অন্য ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে সে কিছুই মনে করতে পারে না। এমনকি অন্য ব্যক্তিত্ব সম্বন্ধে তার কিছুই জানা থাকে না। সাধারণত ব্যক্তিত্বের ধরন গুলোর  পরিবর্তন স্থায়ী হয় ফলে তার জীবনে বিপর্যয় ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।  প্রত্যেকটি ব্যক্তিত্বের নিজস্ব আচরণের ধারা থাকে এবং স্মৃতি থাকে। এই ব্যক্তিত্বগুলো পরস্পর থেকে আলাদা এমনকি বিপরীতধর্মীও হতে পারে। যেমন-এক ব্যক্তিত্বে  ব্যক্তি যদি ডান হাত প্রধান হয়, অন্য ব্যক্তিত্বে  রূপান্তরিত হলে সে  বাম হাত প্রধান হতে পারে।  এক ব্যক্তিত্বে তার একটি পদার্থে এলার্জি হলে  অন্য ব্যক্তিত্বের তা হয় না। উল্লেখ্য যে, এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যক্তিসত্তাগুলোর মধ্যে আচরণের সামঞ্জস্যতা থাকে।
মনঃসমীক্ষণ তত্ত্ব অনুসারে সব ধরনের বিচ্ছিন্নতা মূলক বিকৃতি হলো ব্যাপক অবদমনের ফল। অর্থাৎ ব্যক্তি বিভিন্ন বেদনাদায়ক স্মৃতিকে ভুলে থাকার জন্য অবচেতন মনে সে তার মূল ব্যক্তিত্ব থেকে সড়ে এসে বিভিন্ন নতুন ব্যক্তিত্বের আশ্রয় নেয় বা বিভিন্ন নতুন ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ করার প্রচেষ্টা করে। আচরণবাদীদের ধারণাও অনেকটা মনঃসমীক্ষণ বাদীদের মতই।  তারা মনে করেন বিচ্ছিন্নতামূলক প্রতিক্রিয়া হল, পীড়াদায়ক ঘটনা বা স্মৃতি থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য ব্যক্তির একটি পরিহারমুলক প্রতিক্রিয়া। একটি গবেষণায় দেখা যায় যে, শিশুরা তীব্র পীড়নমুলুক পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা হিসাবে আত্ম-সম্মোহন (Self-hypnosis) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচ্ছিন্নতা মূলক প্রতিক্রিয়া অর্থাৎ অন্য একটি নতুন ব্যক্তিত্বের মতো আচরণ করা শিখতে পারে।

মনঃসমীক্ষণ ও আচরণবাদ তত্ত্ব পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে যে, বিচ্ছিন্নতা মূলক মনোবিকৃতির সঙ্গে তীব্র পীড়নের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। অন্য একটি গবেষণায় দেখা যায় যে, শিশুদের জীবনে পীড়নের প্রধান কারণ হলো শারীরিক শাস্তি এবং যৌন নিপীড়ন। যে সব চিকিৎসক  বিচ্ছিন্নতা মূলক আত্মপরিচয় বিকৃতির চিকিৎসা করেন, তাদের রোগীদের উপর একটি জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, প্রায় ৮০% রোগী বলেছিল যে, শৈশবে তারা শারীরিক নির্যাতন ভোগ করেছে, এবং ৭০% বলেছে তারা যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে।বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যৌন নিপীড়ক ছিল তাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজন।
মনোচিকিৎসক লাবিবাকে আরো জানালেন যে, সঠিক চিকিৎসা পেলে বিচ্ছিন্নতা মূলক আত্ম-পরিচয়ের বিকৃতি নামক মানসিক রোগটি হতে বেশিরভাগ ব্যক্তি  সম্পূর্ণ সুস্থ হতে পারেন। তবে যত শীঘ্র চিকিৎসা শুরু করা যাবে রোগী তত দ্রুত  আরোগ্য লাভ করবে। রোগ শুরু হওয়ার পর যত বেশি দিন যাবে, আরোগ্যলাভ কত কঠিন হবে।


লেখক: মোঃ আবু তারেক, সাইকোলজিস্ট, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।





References:
Davison, Gerald C., and John M. Neale. 2001. Abnormal psychology. 8th ed. New York: John Wiley &  Sons, Inc.   
        pp: 177-175
American Psychiatric Association. (2013). Diagnostic and statistical manual of mental disorders: DSM-5™ (5th
        ed.). Arlington, VA: Author. Pp: 291-298
অধ্যাপক নীহাররঞ্জন সরকার,ডাঃ তনুজা সরকার (২০১৩),অস্বাভাবিক মনোবিজ্ঞান : মানসিক ব্যাধির লক্ষণ কারণ ও
            আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি, তৃতীয় সংস্করণ ,জ্ঞানকোষ প্রকাশনী, ঢাকা-১১০০, পৃ: ২৯২-২৯৪

Title: Re: Mental Health Awareness ( তোমার মনে বসত করে কয় জনা ?)
Post by: Fahmi Hasan on July 15, 2021, 11:36:20 AM
চমৎকার ভাবে লিখেছেন। আশা করি যারা যারা এই লেখা পড়বেন উপকৃত হবেন।
Title: Re: Mental Health Awareness ( তোমার মনে বসত করে কয় জনা ?)
Post by: Abu Tareque on July 15, 2021, 02:43:00 PM
Thank you so much