Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Topics - Abdul Awal

Pages: [1] 2
1

এডিস মশা পানিতে ডিম পাড়ে না, জানালেন বিশেষজ্ঞ



 ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার পানিতে ডিম পাড়ার বিষয়টিকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের প্রধান কীটতত্ত্ববিদ ডা. ভুপেন্দর নাগপাল। এ চিকিৎসক গত ৪০ বছর ধরে মশাবাহী রোগ নিয়ে কাজ করছেন। দৈনিক আমাদের সময়

রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে (ডিজিএইচএস) গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে ডা. নাগপাল ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং এডিস মশা নিধনে সফল না হওয়ার কারণগুলো বিশদভাবে তুলে ধরেন।

এডিস ইজিপ্টি প্রজাতির প্রজনন বিষয়ে ডা. ভুপেন্দর নাগপাল বলেন, ‘এ মশা পানিতে ডিম পাড়ে বলে যে কথা প্রচলিত আছে তা ভিত্তিহীন। এ মশা চালাক আছে। একটি নারী এডিস মশা পাত্রের কানায় ডিম দেয়। আদর্শ পরিবেশে ডিমগুলো এক বছরের অধিক সময় পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে। যখন বন্যা হয় বা পাত্রটি পানিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠে তখন দ্রুত ডিম ফুটে যায়। মশার বাচ্চা বা শুককীট ফুটতে সর্বনিম্ন দুই মিলিলিটার পানিই যথেষ্ট। ডব্লিউএইচও বিশেষজ্ঞের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অনুযায়ী, একটি নারী এডিস মশা তার আশপাশের প্রতিটি পাত্রের কানায় ডিম পাড়ে। ডিম হয় মোট ৬০-১০০টি।

শুকনো পরিবেশে এসব ডিম অনেক দূরে পর্যন্ত স্থানান্তরিত হয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করে ডা. নাগপাল বলেন, ‘একটি নারী এডিস মশা এক দিন পরপর রক্ত খায় এবং দিনের বেলা প্রয়োজনীয় রক্ত পেতে এক দিনে অনেককে কামড়ায়। আর যেহেতু আদর্শ পরিবেশে এ মশা ৩০ দিনের মতো বেঁচে থাকতে পারে তাই পুরো জীবনকালে ৭৫ জনের অধিক মানুষকে আক্রান্ত করার ক্ষমতা রাখে।

ডব্লিউএইচওর দক্ষিণপূর্ব এশিয়া অঞ্চলের এ প্রধান কীটতত্ত্ববিদ বলেন, ‘প্রাপ্তবয়স্ক এডিস মশা কখনো খোলা জায়গায় বিশ্রাম নেয় না। এর দরকার হয় আলো থেকে দূরে গরম ও আর্দ্র পরিবেশ। এগুলো বিশ্রাম নেয় সোফার নিচে, বিছানার নিচে….কারণ এগুলোর দরকার অন্ধকার ও আর্দ্রতা।’ এমন অস্বাভাবিক বৈশিষ্ট্যের কারণে রাস্তায় ধোঁয়ার মেশিনের মাধ্যমে কীটনাশক প্রয়োগ করে এডিস মশা মারা যাবে না বলে উল্লেখ করেন তিনি। এক মশায় অধিক মানুষ আক্রান্ত হওয়ার আরেকটি কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘একজন মানুষ যখন কামড় খেয়ে মশাটি মারতে যায় তখন সেটি উড়ে গিয়ে আরেকজনের ওপর বসে।’

ডব্লিউএইচও ধোঁয়া প্রয়োগের সুপারিশ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এ মশা বাড়ির ভেতরে থাকে এবং ওষুধের সংস্পর্শে আসে না। ওষুধ প্রয়োগ আধা-শহুরে বা গ্রামীণ এলাকায় কাজ করতে পারে, কিন্তু শহর এলাকায় ব্যর্থ। ডব্লিউএইচওর তথ্য অনুযায়ী, অতীতের তুলনায় সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের সব অঞ্চলে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব এক সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ‘১৯৭০ সালের আগে মাত্র নয়টি দেশ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলো। বর্তমানে এতে ১২৬ দেশ আক্রান্ত হয়েছে,’ বলেন কীটতত্ত্ববিদ ডা. ভুপেন্দর নাগপাল।

তিনি বলেন, ‘তথ্য-উপাত্তে দেখা যাচ্ছে, ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা আকাশছোঁয়া হলেও রোগীদের মধ্যে মারা যাওয়া হ্রাস পেয়েছে। ২০১১ থেকে সবখানে ডেঙ্গু রোগ বাড়ছে কিন্তু মৃত্যুর হার কমছে…কারণ ব্যবস্থাপনার উন্নতি হয়েছে।’

ডেঙ্গু সংক্রমণ রোধে রাস্তায় কীটনাশক প্রয়োগ নয়, বরং পরিচ্ছন্নতার ওপর জোর দিয়ে ডা. নাগপাল বলেন, ‘ডেঙ্গু সংক্রমণ এড়াতে আপনার বাড়ি পরিষ্কার রাখা জরুরি। সেই সঙ্গে তিনি অব্যবহৃত পাত্র ধ্বংস করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং তার পরামর্শ হলো, মশার ডিম ফোটা রোধ করতে খালি পাত্রগুলো সঠিকভাবে পরিষ্কার করতে হবে ও এমনকি উল্টো করে রাখতে হবে। মশা নিধনে এদের উৎস চিহ্নিত করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে ডব্লিউএইচওর এ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘এই চরম মুহূর্তে এটাই হলো সবচেয়ে ভালো উপায়। সেই সঙ্গে তিনি ধোঁয়ার জায়গায় অ্যারোসল ব্যবহারের পরামর্শ দেন। কারণ অ্যারোসল সহজে এডিস মশার বিশ্রামের জায়গায় পৌঁছাতে পারে। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব প্রতিহত করতে পরিচ্ছন্নতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানান ডা. নাগপাল। তিনি ডেঙ্গু মোকাবিলায় পরিবহন, পুলিশ, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনসহ সরকারের সব সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন। তার মতে, স্কুল, হাসপাতাল, শহরের ঘরবাড়ি, নির্মাণ এলাকা ও অফিসের মতো বিভিন্ন স্থাপনা পরিষ্কার রাখার মাধ্যমে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস করা যায়।

2
হত্যা করে গরু কুরবানী করছেন না তো?

""একটি ছোট্ট ভুল এবং বাতিল হয়ে যাওয়া কুরবানী।""
♦সকল কুরবানী দাতাদের জন্য অত্যন্ত জরুরী একটি বিষয়।

১০-১৫ মিনিট সময় বাঁচাতে গিয়ে আমাদের করা, ছোট্ট একটি ভুলের কারনে সম্পূর্নরুপে বাতিল হয়ে যেতে পারে আমাদের অত্যন্ত যত্নের সাথে আদায়কৃত আল্লাহর মহান হুকুম কুরবানী।

★পশু জবেহ সম্পন্ন হবার পর, একটি ছোট তীক্ষ্ণ ছুড়ি দ্বারা জবেহের স্থানে খোঁচা দেয়ার একটা সিস্টেমের সাথে আমরা কমবেশি প্রায় সবাই পরিচিত, আমাদের অনেকেরই ধারনা এই কাজটার মাধ্যমে পশু দ্রুত মারা যায় এবং কষ্ট কম পায়।
এই ছোট্ট একটা ভুলই আমাদের কুরবানী বরবাদ করে দেবার জন্য যথেষ্ট।

★পশু জবেহ সহীহ হবার শর্ত হলো:-
পশুর অন্তত মূল তিনটি রগ কেটে দেয়া। আর মূল তিনটি রগ কেটে দিলে, রক্তক্ষরনের স্বাভাবিক ফলস্বরুপ পশুটি খুব দ্রুত মারা যায়।

★আমরা একটু অতিরিক্ত তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে, পশুটার মেরুদন্ডের ভেতর তীক্ষ্ণ ছুড়ি ঢুকিয়ে "মেরুরজ্জু বা স্পাইনাল কর্ড" বিচ্ছিন্ন করে দ্রুত মেরে ফেলার চেষ্টা করি। স্পাইনাল কর্ড বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে পশুর মস্তিষ্ক, দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় আর এর ফলে পশুটি হার্ট এটাক করে এবং মারা যায়।
অনেক সময় এভাবে দ্রুত পশুটিকে শান্ত করতে গিয়ে, কুরবানীর উদ্দেশ্য ব্যাহত হয় এবং পশুটি জবেহ না হয়ে, হত্যা হিসেবে পরিগনিত হয়।

★চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতেও এই পন্থা অত্যন্ত গর্হিত এবং বিপদজনক। স্পাইনাল কর্ড কেঁটে গেলে পশুর দেহের মাংশপেশিতেই রক্ত জমাট বেঁধে যায় এবং ফলশ্রুতিতে গোশত দূষিত হয়ে পরে। এই গোশত ভক্ষনে ক্যান্সার, এইচবিএএস, সহ অন্তত ১৮ প্রকার জটিল রোগ সৃষ্টি হতে পারে।

এতএব,
কুরবানী দাতা সকলের কাছে বিনীত অনুরোধ থাকবে, ১০-১৫ মিনিট সময় বাঁচাতে গিয়ে, দয়া করে আপনার কুরবানী কে বরবাদ হয়ে যাবার সুযোগ দিবেন না।

3

হজযাত্রীর খাবার
০৬ জুলাই ২০১৯, ১২:৫৪
আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৯, ১২:৫৫
প্রিন্ট সংস্করণ
 
 

যেকোনো বিদেশভ্রমণ ও পবিত্র হজযাত্রার মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। কেননা, হজের সময় কিছু নির্দিষ্ট বিধিবিধান মেনে চলতে হয়, সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে হয় এবং প্রচুর পরিশ্রমও হয়। হজের পুরোটা সময় নিজের সুস্থতার দিকে নজর দেওয়া বিশেষভাবে জরুরি। পরামর্শ দিয়েছেন পুষ্টিবিদ আখতারুন নাহার


অতিরিক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন
প্রচুর হাঁটাহাঁটিসহ পরিশ্রমের কারণে এ সময় ক্যালরি ক্ষয় হয় অনেক। এ কারণে অনেকে বাড়তি খেয়ে পুষিয়ে নিতে চান। কিন্তু অতিভোজন ভালো নয়। এ কারণে বদহজম, পেটে গ্যাস, ডায়রিয়া হতে পারে। সাধারণ দৈনন্দিন চাহিদার চেয়ে একটু বেশি খাওয়া ভালো, তাই বলে অতিরিক্ত নয়। এমন খাবার খেতে হবে, যা দীর্ঘক্ষণ পুষ্টি জোগায়।


কম খাওয়াও ভালো নয়
অনেকে আবার পেট খারাপের ভয়ে খাওয়াদাওয়াই ছেড়ে দেন। মনে রাখবেন, টানা প্রায় ৪০ দিন ছোটাছুটির মধ্যেই থাকতে হবে। সে জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালরি দরকার। ভাত, রুটি কম খেতে চাইলে মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল বেশি করে খান। অপর্যাপ্ত আহারের কারণে ক্লান্তি, দুর্বলতা, অবসাদ হতে পারে। সকালের নাশতা খুবই জরুরি। অনেকে নাশতা না করেই মসজিদে চলে যান। পরে আর খাবার সময় পান না। এটা ঠিক নয়। ফজরের নামাজ সেরে নাশতা করে নিন। তারপর একটু বিশ্রাম নিয়ে দিন শুরু করুন। চেষ্টা করুন প্রতি বেলার খাবার ঠিকঠাক মতো খেতে।


চাই যথেষ্ট পানি
পানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সৌদি আরবের আবহাওয়া খুব শুষ্ক। সব সময় পানির বোতল সঙ্গে রাখবেন। সময়-সুযোগ পেলে জমজমের পানি ইচ্ছেমতো পান করুন। পানির সঙ্গে দুধ, ফলের জুস বা অন্যান্য তরলও নিতে পারেন। তবে শরীরের পানিশূন্যতা দূর করতে সাধারণ পানিই সেরা। কোমল পানীয় ও চিনিযুক্ত জুস বেশি পান না করাই ভালো।

বাসি খাবার নয়
পুরোনো ও বাসি খাবার একেবারেই খাবেন না। এতে পেটব্যথা, পেট খারাপ, বমি হতে পারে। যেসব খাবার আপনার জন্য নিষেধ, তা-ও পরিহার করুন।


অসুস্থতাকে আমলে নিন
প্রত্যেকে নিজের শারীরিক সমস্যা বিষয়ে সচেতন থাকবেন। শুকনা খাবার, যেমন বিস্কুট, মুড়ি, খেজুর, বাদাম, আপেল, নাশপাতি, কিশমিশ, শুকনা মিষ্টি ইত্যাদি সঙ্গে রাখুন। ডায়াবেটিসের রোগীরা তিন ঘণ্টা পরপর কিছু খাবেন। অযথা চিনিযুক্ত খাবার খেয়ে শর্করা বাড়াবেন না। বরং গোটা শস্যের খাবার, যেমন রুটি, খই, সিরিয়াল খেতে পারেন বেশি করে। হৃদ্রোগীরা বেশি তেল-চর্বিযুক্ত খাবার, কেনা পরোটা, গরুর মাংসের পদ, ফাস্ট ফুড পরিহার করুন। উটের মাংসে চর্বির পরিমাণ গরু, খাসি ও দুম্বার চেয়ে কম। মাছ ও মুরগির মাংস খেতে পারেন যথেষ্ট।

4
মহাকাশ থেকে শুধু মক্কা আর মদিনা দেখা যাচ্ছিল, বাকি সব অন্ধকার : প্রথম নারী অভিযাত্রী সুনিতা উইলিয়াম

প্রকাশের সময় : এপ্রিল ২৯, ২০১৯, ১২:৩১ অপরাহ্ণ

আপডেট সময় : এপ্রিল ২৯, ২০১৯ at ১২:৩১ অপরাহ্ণ

নিউজ ডেস্ক : শুধু মক্কা আর মদিনা – মহাকাশ অঙ্গনে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা সম্পর্কে সুনিতা উইলিয়াম নিজেই বলেছেন যে, ‘আমি যখন পৃথিবী থেকে প্রায় ২৪০ মাইল উপরে উঠলাম, তখন পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে পৃথিবীপৃষ্ঠে দুটি তারা (আলো) দেখতে পেলাম। এরপর একটি টেলিস্কোপের মাধ্যমে আলো দুটি দেখার চেষ্টা করলে দেখি, একটি আলোর অবস্থান মক্কায় আর অন্যটি মদিনায়। এই দৃশ্য দেখার পর আমি প্রচণ্ডভাবে অভিভূত হই এবং তখনই ইসলাম গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিই। পরে ইসলাম গ্রহণ করি ফিরে এসে।

একটি নভোযান পাঠানো হলো বরাবরের মতোই মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা থেকে। ২০০৬ সালের কথা। যে অভিযানের মূল উদ্দেশ্য ছিল ছিল মহাকাশের খোঁজখবর সংগ্রহ করাই।অন্য গবেষকদের সঙ্গে সে নভোযানে অবস্থান করছিলেন সুনিতা উইলিয়াম। মহাকাশ গবেষণাযানটি যখন পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে ২৪০ মাইল উপরে, হঠাৎ নিচের দিকে চোখ আটকে যায় সুনিতার। পৃথিবী পৃষ্ঠে তারার মতো তিনি দুটি আলো জ্বলতে দেখলেন। তখন চিন্তায় পড়ে গেলেন সুনিতা; ভাবলেন, পৃথিবীপৃষ্ঠে তো কোনো আলোকশিখা থাকার কথা নয় এভাবে জ্বলে থাকার মতো।

সঙ্গীদের ডেকে দেখালেন এবং টেলিস্কোপের সাহায্যে আলো দুটিকে নির্ণয় করার চেষ্টা চালালেন। তবে এই আলোকরশ্মি দুটি কি? নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে কষ্ট হলো সুনিতার। আরো কাছে, আরো পরিষ্কারভাবে দেখলেন, আলো দুটির কেন্দ্রস্থল পৃথিবীর মক্কা ও মদিনা। মহাকাশমুখি এই আলোকরশ্মি দুটি বিকিরিত হচ্ছে মক্কা শহরের কেন্দ্রস্থল ও মদিনা শহরের কেন্দ্রস্থ থেকে। ভারতীয় বংশোদ্ভূত সুনিতা উইলিয়াম ১৯৬৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ায়ো অঙ্গরাজ্যের ‘ইউক্লিডে’ জন্মগ্রহণ করেন। বাবা দীপক পাণ্ডে ও মা বনি পাণ্ডে উভয়ই ছিলেন ভারতীয় হিন্দু।

সব জল্পনা-কল্পনা এবং সন্দেহ-কানাকানির ইতি টেনে গত রমজান মাসে ওমরাহ পালন করতে এসে নিজের মুসলমান হওয়ার ঘোষণা দিলেন সুনিতা উইলিয়াম এবং গর্ব করে বললেন, ‘আমি এখন একজন মুসলমান, এটা ভাবতেই আমার ভালো লাগছে।’ নাসার প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক সুনিতার ইসলাম গ্রহণ করা বিষয়ে তাঁকে চেনেন বা জানেন এমন অনেকের মন্তব্য ছিল অনেকটাই এরকম- ‘আর কারো পক্ষে সম্ভব হলেও সুনিতার পক্ষে এটা কখনো সম্ভব নয়। কারণ সে ছিল ইসলাম বিদ্বেষী’। আর আমি এখন একজন মুসলমান।’

ইসলাম গ্রহণ করা নিয়ে শত জল্পনা-কল্পনার ইতি টেনে ওমরাহ পালন করতে আসা সুনিতা উইলিয়াম জেদ্দার হোটেল হিলটনে বসে এভাবেই ব্যক্ত করছিলেন তাঁর ইসলাম গ্রহণ করার কাহিনী। সাংবাদিকদের শোনাচ্ছিলেন তাঁর মুসলমান হওয়ার রোমাঞ্চকর গল্প। এ সময় তিনি ইসলাম গ্রহণ করার নেপথ্যে থাকা ঘটনা ব্যক্ত করার পাশাপাশি উত্তর দেন উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নেরও। মক্কা-মদিনার দুর্লভ কিছু তথ্য: পবিত্র মক্কা ও পবিত্র মদিনা শরিফে যাবার নসিব সবার হয় না। যাদের হয় তারা বড়ই ভাগ্যবান। যারা যেতে পারেন না তারাও অধীর আগ্রহে জানতে চান এ পবিত্র দুই হারাম সম্পর্কে। আসুন, ঈমানদীপ্ত মানুষের স্বপ্নের ঠিকানা.. হৃদয়ের তীর্থস্থান..দুই হারাম শরিফের কিছু তথ্য জেনে নিই ,,,

মক্কাস্থ হারাম শরিফের মূল কাঠামোর আয়তন: ৬১১, ৮০৩ স্কোয়ার ফিট আর মদিনা হারাম শরিফের আয়তন: ৩৭৬,৫০৩ স্কোয়ার ফিট মক্কার হারাম শরিফে হজ্ব ও ওমরাকারীদের সেবায় রয়েছে: ১২,০০০ হাতচালিত ট্রলি, ২০ গল্ফ কার, ৩০০ বৈদ্যুতিক ট্রলি আর মদিনার মসজিদে নববিতে জিয়ারতকারীদের জন্য রয়েছে: ৩,৫০০ হাতচালিত ট্রলি ও ৪০ গল্ফ কার: বছরে পবিত্র কুরআনের ১,২০০,০০০ টি কপি মক্কা শরিফে এবং ৪৯৬,০৮০টি কপি মদিনা শরিফে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। মৌসুমে প্রতিদিন মক্কায় ৮৪০ টন আর মদিনায় ৪৫০ টন জমজমের পানি পান করে থাকেন হজ্ব, ওমরা ও জিয়ারতকারীগণ। হারামে মক্কিকে প্রতিদিন ৫ বার আর হারামে মদিনাকে ৩ বার পরিস্কার ও পরিচ্ছন্ন করা হয়।

৩৬২৮ লাউডস্পিকার রয়েছে মক্কায়। মদিনায় রয়েছে ৩০৪৭ লাউডস্পিকার।
বছরে মক্কা শরিফে ৪০০০ টি ইলমি দরস আর মদিনা শরিফে ৬৯৫৪ ইলমি দরসের ব্যবস্থা করা হয়। মক্কার হারাম শরিফের দরজা সংখ্যা: ২১০ আর মদিনার হারাম শরিফের দরজা সংখ্যা: ১০০ বিগত ১০ বছরে ২৪, ০০০, ০০০ মিলিয়ন মু’মিন-মুসলমান পবিত্র হজ্ব ও ওমরা পালন করেছেন। আল্লাহ সবাইকে পবিত্র মক্কা ও মদিনার জিয়ারত নসিব করুন। -টেকনোলজি লাইফস্টাইল

5
ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পেয়ারপ্রকাশের

 
স্বাস্থ্য ডেস্ক : পেয়ারায় রয়েছে প্রচুর পরিমান ভিটামিন সি, ক্যারোটিনয়েডস, ফোলেট, পটাশিয়াম, আঁশ এবং ক্যালসিয়াম। ১০০ গ্রাম পেয়ারায় কমলার চেয়ে চার গুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে, পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট ও পলিফেনল বিদ্যমান যা ক্যান্সার প্রতিরোধক। পেয়ারা পাতার রস ক্যান্সার প্রতিরোধী এবং সংক্রমণ, প্রদাহ, ব্যথা জ্বর, বহুমূত্র, আমাশয় প্রভৃতি রোগে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। পেয়ারাতে আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি ও বি। যা শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরিয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে। পেয়ারাতে আছে উপকারি ভিটামিন এ। ভিটামিন এ চোখের জ্যোতি বৃদ্ধিতে কাজ করে।
এই ফলটিতে আছে ভিটামিন বি৩ ও বি৬ যা মষ্তিষ্কে রক্ত চলাচল করতে সাহায্য করে। মষ্তিষ্ক সতেজ রাখে। মষ্তিষ্কে রক্ত চলাচল বৃদ্ধির মাধ্যমে মানুষের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে। পেয়ারাতে আছে অতিমাত্রায় ভিটামিন সি এবং আয়রণ। শরীরে ঠান্ডা জমতে দেয় না এই ভিটামিন সি এবং আয়রণ। তাই পেয়ারা খেলে খুব সহজেই ঠান্ডা কাশির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। পেয়েরা জ্বর সারাতে খুব ভালো কাজ করে।
ত্বকে নেচারাল ক্রিম ও টোনার জেল হিসেবে কাজ করে। পেয়ারা খেলে ত্বক ভেতর থেকে পরিষ্কার করে। ত্বককে যে কোন সমস্যা থেকে রক্ষা করে। কুচকে যাওয়া থেকে ত্বককে রক্ষা করে ত্বক করে টানটান। পেয়ারায় আছে ভিটামিন এ,বি,সি ও পটাশিয়াম যা ত্বকে এন্টি-অক্সাইড বৃদ্ধি করে। এন্টি-অক্সাইড ত্বক উজ্জ্বল করে ও বয়সের ছাপ দূর করে। পেয়ারা রক্ত থেকে কলেস্ট্রোল দূর করে। অতিরিক্ত কলেস্ট্রোল দূর করার মাধ্যমে উচ্চরক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণ করে। পেয়ারায় বিদ্যমান হাই-ফাইবার রক্তের চিনি কমানোর মাধ্যমেও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
থাইরয়েডের জন্য উপকারি কপারের খুব ভালো উৎস হচ্ছে পেয়ারা। কপার আমাদের দেহের খুব গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থি যা দেহের হরমোন ও অর্গান সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ করে। আর কপার দেহের হরমোন উৎপাদন ও শোষণকে নিয়ন্ত্রণে সাহায্য এবং এর পটাশিয়াম ও শক্তিশালী প্রদাহনিরামক গুণাগুণ থাইরয়েডের কাজকে উন্নত করতে সহায়তা করে। তাই থাইরয়েড সংক্রান্ত সমস্যা দূর করার জন্য পেয়ারা ও পেয়ারা পাতাকে খাদ্য তালিকার গুরুত্বপূর্ণ অংশ করে নিতে হবে।
পেয়ারা ক্যান্সারের জীবাণুর বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা পেয়ারা খায় তাদের ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা ৩০ ভাগ কম থাকে। বিশেষ করে নারীদের স্তনের ক্যান্সার প্রতিরোধে পেয়ারা অনেক কার্যকর। যারা পেয়ারা খান তাদের ডায়েবেটিকস হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। যারা ডায়েবেটিকস রোগে আক্রান্ত তারা রোজ একটি করে পেয়ারা খেলে তাদের ডায়েবেটিকস নিয়ন্ত্রণে থাকে। পেট ভালো রাখতে পেয়ারা খাওয়া যেতে পারে। পেয়ারায় রয়েছে অ্যাস্ট্রিনজেন্ট ও অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল প্রপার্টিস। যা ডায়ারিয়াতে বেশ ভালো কাজ দেয়।

6

অর্থনীতি সংবাদ
শ্রমবাজারে নতুন দুয়ার, কর্মক্ষম তরুণ নেবে জাপান
শাকিলা হক
২৬ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:০২
আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৮, ০৯:৪৮
 
 
১৩

জাপানে প্রতি বছর জন্ম মৃত্যুর ব্যবধান ৪ লাখ। জীবন প্রত্যাশা ৮৪ বছর পর্যন্ত। ছবি: রয়টার্সজাপানে প্রতিবছর জন্ম–মৃত্যুর ব্যবধান ৪ লাখ। জীবন প্রত্যাশা ৮৪ বছর পর্যন্ত। ছবি: রয়টার্সনবজাতককে কোলে নিয়ে কপালে চুমু খেয়ে তার শতবর্ষ আয়ুর প্রার্থনা করি আমরা কমবেশি সবাই। তবে এটাও মানি, ১০০ বছর কজনইবা বাঁচে। জাপানের ক্ষেত্রে অবশ্য শত বছর বেঁচে থাকাটা তেমন আশ্চর্যজনক কিছু নয়। বর্তমানে দেশটির গড় আয়ু ৮৪ বছর হলেও ১০০ বা তার অধিক বয়সী মানুষের সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার। আর এই বয়স্ক জনগোষ্ঠীই মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের জন্য। দেশের কলকারখানার চাকা সচল রাখতে বিদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাপান। আর এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারে বাংলাদেশের মতো জনবহুল দেশগুলো। শ্রমবাজারে নতুন দুয়ার খুলতে পারে।

‘জন্মহার কমার পাশাপাশি বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে—এ সতর্কবার্তা জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের। সম্প্রতি ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এই সমস্যা এখনই মোকাবিলা করার জন্য সরকারের প্রয়োজনীয় নীতিগুলোকে বেশ জোরে ঠেলা দিতে হবে। তিনি মনে করেন, শ্রমসংখ্যা ও বয়স্ক ব্যক্তিদের পেছনে ব্যয় কমাতে বেশ কিছু সংস্কার করার এখনই সময়।

বরাবরই বিদেশি নেওয়ার ব্যাপারে জাপান কিছুটা রক্ষণশীল। ফলে, মেধাবী ও দক্ষ শ্রমিকেরাও দেশটিতে কাজের সুযোগ পান কম। তবে শ্রমিকের ঘাটতি পূরণ করতে চাইলে আর দুয়ার বন্ধ করে রাখা চলে না—এটা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন আবে। সম্প্রতি কর্মক্ষম মানুষের ঘাটতি পূরণ করতে বিদেশি শ্রমিক নেওয়ার কথা জানিয়েছে জাপান। বার্তা সংস্থা রয়টার্স, দ্য ইকোনমিস্ট ও টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির মন্ত্রিসভা এ–সংক্রান্ত একটি খসড়া আইন অনুমোদন করেছে। তবে ঠিক কতজন নেওয়া হবে, সে বিষয়ে সরকারি কোনো তথ্য না এলেও দেশটির গণমাধ্যম থেকে জানা গেছে, এ সংখ্যা ৩ লাখ ৪০ হাজারের মতো। ২০১৯ সাল থেকে শুরু করে আগামী পাঁচ বছরে এই কর্ম ভিসা প্রদান করা হবে। এই সিদ্ধান্ত জাপানের জন্য খুবই ব্যতিক্রমী এক সিদ্ধান্ত।

আসলে বলা যায়, ‘উপায় নেই গোলাম হোসেন’ টাইপ অবস্থায় পড়েছেন শিনজো আবে। জাপানে প্রতিবছর জন্ম–মৃত্যুর ব্যবধান ৪ লাখ। জীবন প্রত্যাশা ৮৪ বছর পর্যন্ত, যা পৃথিবীর যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি। ৬৫ বা তার চেয়ে বেশি বয়সের জনসংখ্যা ২৮ দশমিক ১ শতাংশ। জাতিসংঘের হিসাবে জাপানের এই সংখ্যা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ, যা ইতালিতে ২৩ দশমিক ৩ শতাংশ, পর্তুগালে ২১ দশমিক ৯ শতাংশ এবং জার্মানিতে ২১ দশমিক ৭ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রের ১৫ ও ভারতের ৬ শতাংশ। জাপানের শতবর্ষী বা তার বেশি মানুষের সংখ্যা বর্তমানে ৬৯ হাজার ৭৮৫ জন। দুই দশক আগের চেয়ে যা ৭ গুণ বেশি।

টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী বছর বিভিন্ন খাতে জাপানের ৬ লাখ কর্মীর সংকট হবে। আর পাঁচ বছরে তা বেড়ে দাঁড়াবে ১ কোটি ৩০ লাখ। প্রতিটি চাকরির বিপরীতে আবেদন হচ্ছে ১ দশমিক ৬ জন। গত বছর মোট কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর পরিমাণ ছিল ৬ কোটি ৭০ লাখ। ২০৩০ সাল নাগাদ তা কমে ৫ কোটি ৮০ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে বয়স্ক মানুষ দেখাশোনা করার মতো পর্যাপ্তসংখ্যক তরুণ নেই দেশটিতে।

সম্প্রতি কর্মক্ষম মানুষের ঘাটতি পূরণ করতে বিদেশি শ্রমিক নেওয়ার কথা জানিয়েছে জাপান। ছবি: রয়টার্সসম্প্রতি কর্মক্ষম মানুষের ঘাটতি পূরণ করতে বিদেশি শ্রমিক নেওয়ার কথা জানিয়েছে জাপান। ছবি: রয়টার্সকল্যাণমূলক রাষ্ট্রটি বয়স্ক মানুষের অবসর ভাতা টানতে টানতে এখন বিপাকে পড়েছে। সরকারি ঋণের পরিমাণ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২৫০ শতাংশ। এখন যেভাবেই হোক, তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতির এই দেশের কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা বাড়াতে হবে। তিনটি উপায় আছে আবে সরকারের হাতে—১. বর্তমান কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর কাজের বয়স বাড়ানো, ২. নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো ও ৩. বিদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়া।

আবে চান মানুষ অবসর না নিয়ে সারা জীবনই কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকুক। তাঁর সরকার সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য অবসরকালীন সময় ৬০ বছর থেকে বাড়িয়ে ৬৫ করেছে। এ ছাড়া বেসরকারি কোম্পানিগুলোকেও এই নীতি গ্রহণে উৎসাহিত করছে। সরকারের চাহিদামতো অনেক কোম্পানিই অবসর নেওয়ার বয়স বাড়িয়েছে এবং অবসরে যাওয়া কর্মীদের নতুন করে খণ্ডকালীন চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে ৬৫ বছরের ওপরে কর্মক্ষম মানুষের হার ২৩ শতাংশ। যা অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি। দেরি করে অবসরের সময় শুরু হলেও অবসর ভাতার পরিমাণ বাড়াচ্ছে সরকার। অবশ্য দীর্ঘ মেয়াদে অন্য পরিকল্পনা আছে আবে সরকারের। রোবট ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে শ্রমিকঘাটতি পূরণ করতে চান তিনি।

স্বল্প মেয়াদে সমস্যা মেটাতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছেন আবে। তাঁর ছয় বছরের শাসন আমলে নতুন প্রায় ২০ লাখ নারী কর্মক্ষেত্রে যোগ দিয়েছেন। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও জাপানে কর্মক্ষম নারীর অংশগ্রহণ বেশি। নারীদের সন্তান রাখার সুবিধার জন্য নার্সারির সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। এমনকি আগামী বছর থেকে নার্সারিতে কোনো ধরনের ফি না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বড় বড় কোম্পানি নারীবান্ধব করতে নির্দেশ দিয়েছে সরকার। বর্তমানে মা হওয়ার পর ৫০ শতাংশ নারীই কর্মক্ষেত্রে ফিরে আসেন। ২০১০ সালে যা ছিল ৩৮ শতাংশ।

তবে এত কিছু করেও কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর চাহিদা পূরণ হচ্ছে না আবে সরকারে। কারণ, বয়স্ক ভাতা বাড়িয়ে দেওয়ায়, সামাজিক কল্যাণমূলক বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে সরকারের। ফলে, আয়–ব্যয়ের হিসাবে লোকসানেই আছেন আবে। সরকারের হিসাবে ২০৪০ নাগাদ সামাজিক কল্যাণমূলক ব্যয় বর্তমানের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ হবে। এ অবস্থায় বিদেশ থেকে কর্মক্ষম লোক নেওয়ায় অধিক যুক্তিযুক্ত।

বিদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার ক্ষেত্রে আবে সরকারের নিজের সমর্থকদেরই তেমন সমর্থন নেই। অপরাধপ্রবণতা বেড়ে যাওয়ার ভয়ে বিদেশি শ্রমিক নেওয়ার ক্ষেত্রে সব সময় নিরুৎসাহিত বোধ করেন তাঁরা। বর্তমানে জাপানে বিদেশি শ্রমিকের হার মাত্র ২ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রে যা ১৭ শতাংশ। এ ছাড়া যাঁরা আছেন বেশির ভাগই হয় ছাত্র না হয় প্রশিক্ষণার্থী। তাই নির্মাণ, হোটেল, নার্সিং, কৃষিসহ ১৪টি খাতে বিদেশি শ্রমিকদের নিয়োগ দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে দেশটি।

ভিসাপ্রত্যাশীরা প্রাথমিকভাবে পাঁচ বছরের ভিসা পাবেন। পরিবার নিয়ে যেতে পারবেন না এবং অবশ্যই জাপানি ভাষা জানতে হবে তাঁদের।

নানা পদক্ষেপ নিয়েও কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর চাহিদা পূরণ হচ্ছে না আবে সরকার। ছবি: রয়টার্সনানা পদক্ষেপ নিয়েও কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর চাহিদা পূরণ হচ্ছে না আবে সরকারের। ছবি: রয়টার্সজাপানের এই বিদেশি কর্মী নেওয়ার বিষয়টি বাংলাদেশ কীভাবে কাজে লাগাতে পারবে, তা জানতে চাইলে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্স ইউনিট (রামরুর) প্রোগ্রাম পরিচালক মেরিনা সুলতানা বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে খুব বড় একটি সুযোগ। জাপান খুবই ভালো একটি বাজার। আমাদের অনেক শিক্ষিত ছেলেমেয়ে দেশে চাকরি পাচ্ছে না। এটা তাদের জন্য একটা সুযোগ। কোনো দেশেই অদক্ষ কর্মী নেয় না। তাই এই শ্রমশক্তি রপ্তানির মাধ্যমে দক্ষ কর্মী বাহিনী তৈরি হবে। এটা খুবই সম্ভবনাপূর্ণ। যদি বাংলাদেশিরা সেখানে ভালো করে চাহিদা আরও বাড়বে।’

ভাষা শিক্ষার বিষয়ে জানতে চাইলে মেরিনা সুলতানা বলেন, ‘জাপানে শ্রমশক্তি রপ্তানির বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে সরকার ভাবতে শুরু করেছে। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ২৪টি ট্রেইনিং সেন্টারে জাপানি ভাষা শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অবশ্যই আমাদের জন্য এটি সম্ভাবনার খবর।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক জাহান প্রথম আলোকে বলেন, এই বিষয়কে খুবই গুরুত্বসহকারে নেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে সরকারিভাবে জাপানের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলা হবে। তিনি বলেন, জাপানে যেনতেনভাবে লোক পাঠানো হবে না। সেখানে মেধাবী ও নৈতিকতাবোধসম্পন্ন লোকদের পাঠানো হবে।

সরকারের এই সচিব বলেন, জাপান একটি রক্ষণশীল জাতি। তারা সাধারণত বাইরের দেশ থেকে শ্রমিক নিতে চায় না। ওরা লোক নেওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্ক থাকে। ওদের পরিবেশের ওপর যেন কোনো প্রভাব না পড়ে, সেটা দেখে। তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে জাপানি ভাষা শেখাচ্ছি। জাপান থেকে প্রশিক্ষকেরা এসে এটা করছেন। এখন জাপান কিছু দক্ষ, মেধাবী ইন্টার্ন নিচ্ছে। আমরা মানের দিকে নজর দিচ্ছি, যেন জাপানে বাংলাদেশের মানুষ সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়।’

রওনক জাহান বলেন, ‘জাপানে লোক পাঠানোর ব্যাপারে যদি কোনো এজেন্ট নিয়োগ করার কথা ভাবা হয়, তবে আমরা নীতিমালা তৈরির ক্ষেত্রে সতর্ক থাকব। সেখানে লোক পাঠানোর ব্যাপারে কোনো লাভের হিসাব করা হবে না।’

7

প্রস্তুতি
বিসিএস নিয়ে প্রচলিত ১০ ভুল ধারণা
২৫ নভেম্বর ২০১৮, ১২:২১
আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৮, ১২:২৯
প্রিন্ট সংস্করণ
 
 


রহমত আলী। ছবি : খালেদ সরকাররহমত আলী। ছবি : খালেদ সরকার৪০তম বিসিএসের জন্য জমা পড়েছে রেকর্ডসংখ্যক আবেদন। একদিকে একদল তরুণ পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, অন্যদিকে চলছে নানান আলোচনা-সমালোচনা। সাধারণের মধ্যে বিসিএস নিয়ে কিছু প্রচলিত ভুল ধারণা আছে। এ প্রসঙ্গে লিখেছেন রহমত আলী। তিনি ৩৭তম বিসিএসে পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম হয়েছেন।

১.

বিসিএস একটি মুখস্থনির্ভর সাধারণ জ্ঞানের পরীক্ষামাত্র

যাঁদের বিসিএসের সিলেবাস বা পরীক্ষার প্রক্রিয়া সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই, তাঁরাই সাধারণত এমনটা ভেবে থাকেন। ফেসবুকে নানান রকম ট্রল দেখে বা আশপাশ থেকে শুনে কেউ কেউ এই ধারণা পোষণ করেন। আদতে বিসিএস পরীক্ষায় সাধারণ জ্ঞানের পাশাপাশি বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, কম্পিউটার জ্ঞান কিংবা মানসিক দক্ষতারও পরীক্ষা নেওয়া হয়। তোতাপাখির মতো মুখস্থ করলেই বিসিএস ক্যাডার হওয়া যায় না। বড়জোর টেনেটুনে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পাস করা যেতে পারে। ভাইভাতে আপনাকে অবশ্যই সৃজনশীলতা ও মেধার পরিচয় দিতে হবে।

২.

পরীক্ষার আগে মাস কয়েক পড়লেই ক্যাডার হওয়া যায়

প্রায়ই একটা প্রশ্নের মুখোমুখি হই, ‘কবে থেকে আপনি বিসিএসের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন?’ আমি বলি, ‘ক্লাস ওয়ান থেকে।’ শুনে অনেকে চমকে যায়। কিন্তু সত্যিই তো। ক্লাস ওয়ান থেকে আমি লেখা শিখেছি, পড়া শিখেছি। এক সময় দ্রুত লেখার চর্চা করেছি, পত্রিকা পড়েছি, গল্প পড়েছি, সহশিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছি। এই সবই তো বিসিএসের প্রস্তুতি। অনেকে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনটা নিশ্চিন্তে কাটিয়ে দিয়ে পাস করার পর লাইব্রেরির সামনে সকাল থেকে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন। তারপর একটা সিট নিশ্চিত করে দিন-রাত পড়েন। এরপর যখন চাকরি পান না, তখন এ দেশের পরীক্ষা পদ্ধতিকে গালিগালাজ করেন। বিসিএসের সিলেবাসটাই এমন, যে বিষয়ে আপনার দুর্বলতা যত বেশি, সে বিষয়েই বেশি করে প্রস্তুতি নিতে হবে। মূল কথা হলো, ছাত্রজীবনে ফাঁকিবাজি করে যেসব পড়া এড়িয়ে যাবেন, সেই ঘাটতি পরে পূরণ করা অনেক কঠিন। তাই আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করা ভালো।

৩ .

বিসিএসের প্রস্তুতি মানেই একাডেমিক পড়াকে ছুটিতে পাঠানো

বিসিএস দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তুতির ব্যাপার, এর সিলেবাস একাডেমিক সিলেবাস থেকে একেবারে ভিন্ন। এসব কারণে যাঁরা একাডেমিক পড়াশোনাকে গুরুত্ব না দিয়ে প্রথম বর্ষ থেকেই বিসিএসের বই নিয়ে সারা দিন পড়ে থাকেন, তাঁরা বোকার স্বর্গে আছেন। বিসিএসের প্রস্তুতি একটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার এবং এখানে আপনি পরীক্ষা দিলেই যে সফল হবেন, সেই নিশ্চয়তাও কিন্তু নেই। তাই আপনি যদি একাডেমিক পড়াশোনা ভালোভাবে করেন এবং পাশাপাশি বিসিএসের প্রস্তুতিও নেন, তবে আপনার সামনে নিজের বিষয়সংক্রান্ত সুযোগ খোলা থাকবে, আবার বিসিএসও হাতে থাকবে। আর যদি আপনার বিষয়ের ওপর প্রফেশনাল/টেকনিক্যাল ক্যাডার থাকে, সে বিষয়ে লিখিত পরীক্ষা ও ভাইভা দিতেই হবে। আর হ্যাঁ, জেনারেল ক্যাডারের ভাইভাতেও কিন্তু পড়ার বিষয়ের ওপর প্রশ্ন করা হয়।



শুধু ভালো কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই বিসিএসে টেকে

মূলত যাঁরা মফস্বল এলাকায় থাকেন, ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েননি কিংবা রেজাল্ট তুলনামূলকভাবে ভালো নয়, তাঁরা এ ধরনের হীনমন্যতায় ভোগেন। তাঁরা ভাবেন, শুধু ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালো ছাত্রছাত্রীরাই ক্যাডার হতে পারে। আসলে বিসিএসের সাফল্যের সঙ্গে একাডেমিক রেজাল্ট কিংবা কোথায় পড়েছেন—সেটার কোনো সম্পর্ক নেই। প্রিলিমিনারি কিংবা লিখিত পরীক্ষায় নিশ্চয়ই আপনার ভার্সিটি কিংবা রেজাল্ট আপনাকে পাস করিয়ে দেবে না। আপনার ভিত কতটা শক্ত, আপনি নিজে কতটা প্রস্তুত, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।



ভাইভা বোর্ডেই ক্যাডার নির্ধারণ করা হয়ে যায়

৪ নম্বর পয়েন্টটা পড়ে নিশ্চয়ই অনেকে ভাবছেন, ‘তাতে কী? ভাইভা বোর্ডে তো ঠিকই ভার্সিটি কিংবা একাডেমিক রেজাল্ট দেখে ভালো ক্যাডার দিয়ে দেবে!’ অবাক হয়ে দেখেছি, অনেক ক্যাডারের মধ্যেও এই ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যে ভাইভা বোর্ডে ঠিক হয়ে যায়—আপনি কোন ক্যাডার পাবেন। বিসিএসের প্রিলিমিনারি টেস্টে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে যাঁরা ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় মোট নম্বরের ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নম্বর পান, তাঁরাই ভাইভায় ডাক পান। আর ভাইভা হচ্ছে ২০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষামাত্র, যেখানে ন্যূনতম ১০০ নম্বর পেলে আপনি পাস করবেন। এরপর লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বর একত্রিত করে মেধাক্রমের ভিত্তিতে বিপিএসসি ক্যাডারদের তালিকা সুপারিশ করে, সেই সঙ্গে যাঁরা উভয় পরীক্ষায় পাস করেও ক্যাডার পান না, তাঁদের থেকে মেধাক্রমের ভিত্তিতে প্রথম/দ্বিতীয় শ্রেণির নন-ক্যাডার গেজেটেড পদে সুপারিশ করে থাকে। বুঝতেই পারছেন, আপনার ক্যাডার নির্ধারণের ক্ষমতা ভাইভা বোর্ডের নেই।



বিসিএস ক্যাডার হতে সহশিক্ষা কার্যক্রমের কোনো প্রয়োজন নেই

শুধু বিসিএস নয়, যেকোনো চাকরির ভাইভা বোর্ডেই আত্মবিশ্বাস আপনাকে এগিয়ে রাখবে। এই আত্মবিশ্বাস এবং যোগাযোগের দক্ষতা গড়ে ওঠে সহশিক্ষা কার্যক্রমের (এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটি) মাধ্যমে। একজন বিতার্কিক নিশ্চয়ই নিজেকে উপস্থাপন কিংবা যুক্তিতর্কের ক্ষেত্রে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থাকেন, তাই না? মঞ্চে গান গাওয়ার অভিজ্ঞতা যাঁর আছে, তাঁর নিশ্চয়ই মুখোমুখি বসে কথা বলার জড়তা থাকবে না। এটাই বাস্তবতা।



বিসিএসের রেজাল্ট হওয়ার পরপরই সবাই চাকরিতে যোগদান করে

রেজাল্ট হওয়ার পর সবচেয়ে বেশি যে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছি এবং হচ্ছি, তা হলো, ‘বাবা, তোমার জয়েনিং কবে?’ আমার সঙ্গে সুপারিশপ্রাপ্ত অনেক ক্যাডারের কাছ থেকে শুনেছি, তাঁদের এলাকার মানুষ নাকি আড়ালে বলে, ‘গিয়া দেখ, মনে হয় ভুয়া ক্যাডার। জয়েন করতে এত দিন লাগে নাকি!’ আসলে বিসিএসের ফল প্রকাশের পর আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো প্রথমে তথ্য যাচাই করে, স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়। তারপর গেজেট প্রকাশিত করতে মাস কয়েক সময় লেগেই যায়। সর্বশেষ ৩৬তম বিসিএসের রেজাল্টের সাড়ে নয় মাস পর তাঁদের গেজেট প্রকাশিত হয়। বিসিএস মানেই দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া, আর দশটা চাকরির মতো এখানে নিয়োগপ্রক্রিয়া এতটা সহজ নয়।



প্রথম বিসিএসেই ভালো ক্যাডার পাওয়া যায় না

এই ধারণাটা যদি ভুল না-ই হতো, তাহলে লেখাটা আমি না লিখে আজ হয়তো অন্য কেউ লিখত! শুধু আমিই নই, ৩৭তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে প্রথম হওয়া হালিমুল হারুন, প্রশাসন ক্যাডারের প্রথম ত্বকী ফয়সাল—তাঁদেরও এটাই প্রথম বিসিএস ছিল। আপনার প্রস্তুতি ভালো হলে প্রথম বিসিএসেই হবে, আর প্রস্তুতি ভালো না হলে বারবার পরীক্ষা দিলেও হবে না—এটাই তো স্বাভাবিক।



অনৈতিক উপায় অবলম্বন না করে বিসিএস ক্যাডার হওয়া যায় না

এই ধারণা একেবারেই হাওয়া থেকে পাওয়া। যাঁরা কখনোই বিসিএস পরীক্ষা দেননি বা এ সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই—তাঁরাই এ ধরনের কথা বলেন। আপনাকে যদি কেউ বলে, টাকার বিনিময়ে বিসিএস ক্যাডার পাইয়ে দেবে, তার থেকে ১০০ হাত দূরে থাকুন।

১০

বিসিএস ক্যাডার হওয়ার উদ্দেশ্যই হলো ঘুষ খেয়ে বড়লোক হওয়া

যাঁরা এ ধরনের কথা বলেন, ৯ নম্বর পয়েন্টের শেষ অংশটা তাঁদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আপনি যদি বিসিএস পরীক্ষা দিতে চান, যদি নিজের কাছে সৎ থাকেন, আশপাশের মানুষের কথা শুনে নিরুৎসাহিত হবেন না। মূলত বিনা অভিজ্ঞতায় কেবল ‘অ্যাপিয়ার্ড সার্টিফিকেট’ দিয়েই আবেদনের সুযোগ, প্রত্যেক বছরই কোনো না কোনো বিসিএস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়া, গেজেটেড কর্মকর্তা হিসেবে দেশের উন্নয়ন ও সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সরাসরি অংশগ্রহণের সুযোগ এবং সরকারি চাকরির বেতন, চাকরির নিরাপত্তা ও অন্যান্য সুবিধাই বিসিএসকে শিক্ষিত তরুণদের পছন্দের প্রথম অবস্থানে নিয়ে এসেছে।

8
অস্ট্রেলিয়ায় বৃত্তি নিয়ে পিএইচডি করতে চাইলে...
২৬ আগস্ট ২০১৮, ১১:৩৯
আপডেট: ২৬ আগস্ট ২০১৮, ১১:৪৫
প্রিন্ট সংস্করণ (প্রথম আলো)
 
আবু সিনা
আবু সিনা

অস্ট্রেলিয়ায় যাঁরা পিএইচডি করতে চান, তাঁদের জন্য লিখেছেন অস্ট্রেলিয়ার ইনস্টিটিউট ফর বায়োইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ন্যানোটেকনোলজি, কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত বাংলাদেশি ক্যানসার গবেষক আবু সিনা
উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বৃত্তির জন্য কোথায়, কীভাবে আবেদন করা যায়, এ নিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন। তাঁদের জানাতে চাই, অস্ট্রেলিয়ায় এ ক্ষেত্রে বেশ কিছু সুযোগ আছে। এখানে একজন বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী যেমন ‘টিউশন ওয়েভার’ পান, তেমনি এ দেশে বসবাসের জন্যও বেশ ভালো অঙ্কের ‘লিভিং অ্যালাউন্স’ বা ভাতা পেয়ে থাকেন।
২০১৮ সালের হিসাব অনুযায়ী এই অঙ্কটা বছরে ন্যূনতম ২৭ হাজার ৮২ ডলার। অর্থাৎ প্রতি মাসে একজন শিক্ষার্থী প্রায় ২ হাজার ২৫০ ডলার পান নিজের খরচের জন্য। বৃত্তির পরিমাণ অবশ্য মূল্যস্ফীতির ওপর প্রতিবছর কিছুটা বাড়ে। এই বৃত্তির নাম রিসার্চ ট্রেনিং প্রোগ্রাম বা আরটিপি স্কলারশিপ। এর চেয়ে বেশি ভাতা পাওয়া যায় এমন বৃত্তিও আছে, যেমন এনডেভর ও সায়েনসিয়া স্কলারশিপ।
কানাডা ও আমেরিকায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই লিভিং অ্যালাউন্স পাওয়ার জন্য গবেষক বা শিক্ষকের সহকারী (টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট) হিসেবে কাজ করতে হয়। অস্ট্রেলিয়ায়ও এই নিয়ম আছে। গবেষক বা শিক্ষকদের সহকারী হিসেবে কাজ করে যা আয় হয়, তা-ও মোটামুটি মন্দ নয়। আরও একটি সুবিধা হলো, কানাডা বা আমেরিকায় যেখানে পিএইচডি শেষ করতে একজন শিক্ষার্থীর অনেক ক্ষেত্রেই পাঁচ-ছয় বছর সময় লেগে যায়, অস্ট্রেলিয়ায় লাগে সাড়ে ৩ থেকে ৪ বছর।
অস্ট্রেলীয়দের ভাষা যেহেতু ইংরেজি, পিএইচডি শেষে পৃথিবীর যেকোনো দেশেই চাকরি পাওয়ার ভালো সুযোগ থাকে। অস্ট্রেলিয়া অভিবাসীনির্ভর দেশ, এখানে পিএইচডি শেষে প্রত্যেক শিক্ষার্থী চার বছরের ‘ওয়ার্ক ভিসা’ পান। যাঁদের পড়ার বিষয়টি অস্ট্রেলীয় সরকারের ‘প্রায়োরিটি জব লিস্ট’-এ আছে, তাঁরা সহজেই স্থায়ী ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।Eprothomalo

বৃত্তির আবেদন করার আগে
১. পড়ালেখায় ভালো ফল
বৃত্তির ক্ষেত্রে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের ফলাফলকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। যার ফল যত ভালো, তাঁর সম্ভাবনা তত বেশি। তবে ন্যূনতম সিজিপিএ-৩.৫ (৪-এর মধ্যে) হলে আপনি কিছুটা এগিয়ে থাকবেন। কারও সিজিপিএ যদি এর চেয়ে কম হয়, তাহলে এগিয়ে থাকার জন্য তাঁকে জার্নালে গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশের দিকে জোর দিতে হবে।

২. গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশনা
বৃত্তি পাওয়ার অন্যতম প্রধান শর্ত হলো ‘ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর’ আছে এমন জার্নালে মূল লেখক (ফার্স্ট অথর) হিসেবে গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ (পাবলিকেশন) করা। যাঁর ‘পাবলিকেশন’ যত বেশি, তাঁর বৃত্তি পাওয়ার সম্ভাবনা তত জোরালো। পাবলিকেশনকে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কারণ হলো, এটা দিয়েই গবেষণার অভিজ্ঞতা যাচাই করা হয়। তাই মূল লেখক হিসেবে অন্তত একটি গবেষণা থাকা উচিত। সহ-লেখক হিসেবে কয়েকটি পাবলিকেশন থাকলে আরও ভালো হয়।

৩. কাজের অভিজ্ঞতা
এই ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার ব্যাপারটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। যেমন সফটওয়্যার প্রকৌশলী বা বায়োইনফরম্যাটিকসের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারের ওপর ভালো জ্ঞান থাকাটাই অভিজ্ঞতা। আর লাইফ সায়েন্সের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বেসিক ল্যাব টেকনিকগুলো যেমন ডিএনএ, আরএনএ, প্রোটিন এক্সট্রাকশন এবং কোয়ান্টিফিকেশন, পিসিআর, সেল কালচার—এসব বিষয়ে জ্ঞান থাকা জরুরি।

৪. আইইএলটিএস স্কোর
অস্ট্রেলিয়ায় বৃত্তির জন্য আইইএলটিএসে টোটাল ব্যান্ড স্কোর ৬.৫-সহ সব ব্যান্ডে ৬ থাকতে হবে। তাই স্নাতকের পরপরই আইইএলটিএস স্কোর করে নিতে পারলে ভালো। আইইএলটিএস স্কোর হাতে পাওয়ার পর শিক্ষকদের ই-মেইল করলে তাঁরা বেশি আগ্রহী হন।

৫. বিকল্প উপায়
এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে গবেষণার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি নবীন দেশ এবং আমাদের দেশে গবেষণার সুযোগ-সুবিধা অনেক সীমিত। তারপরও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় এখন গবেষণার সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। অনেকেই ভালো ভালো গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করছেন। যাঁদের একাডেমিক রেজাল্ট ভালো, কিন্তু কোনো ভালো পাবলিকেশন নেই, তাঁরা বিকল্প উপায় হিসেবে সময় নষ্ট না করে সাউথ কোরিয়া বা মালয়েশিয়ায় একটি গবেষণানির্ভর স্নাতকোত্তর শুরু করে দিতে পারেন। এর ফলে সহজেই কয়েকটি ‘ফার্স্ট অথর পাবলিকেশন’ করে ফেলতে পারবেন। পরে বৃত্তির জন্য অস্ট্রেলিয়ায় আবেদন করা সহজ হবে।

শিক্ষার্থী ও সহকর্মীদের সঙ্গে লেখক
শিক্ষার্থী ও সহকর্মীদের সঙ্গে লেখক
বৃত্তির আবেদনের ধাপ
১. বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারণ
প্রথম কাজ হলো, নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করা। আপনার ‘প্রোফাইল’ যদি ভালো হয়; যেমন ভালো একাডেমিক রেজাল্টের পাশাপাশি কয়েকটি খুব ভালো পাবলিকেশন, তাহলে চোখ বন্ধ করে অস্ট্রেলিয়ার গ্রুপ ৮-এর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় আবেদন করতে পারেন। অস্ট্রেলিয়ার সেরা আটটি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গঠন করা হয় গ্রুপ ৮। এই আটটি বিশ্ববিদ্যালয় হলো ইউনিভার্সিটি অব অ্যাডেলেড, অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব মেলবোর্ন, ইউনিভার্সিটি অব কুইন্সল্যান্ড, ইউনিভার্সিটি অব সিডনি, ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলস, মোনাশ ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া। আর প্রোফাইল যদি মোটামুটি হয় তাহলে এগুলোর পাশাপাশি অন্য ভালো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয়ও আবেদন করতে পারেন। যেমন ম্যাকুয়ারি ইউনিভার্সিটি, কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, ওলংগং ইউনিভার্সিটি, গ্রিফিথ ইউনিভার্সিটি, পার্থ ইউনিভার্সিটি ইত্যাদি।

২. উপদেষ্টা নির্বাচন
বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনের পর কাজ হলো এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে এমন একজন শিক্ষক বা গবেষককে উপদেষ্টা হিসেবে খুঁজে বের করা, যিনি আপনার পিএইচডির তত্ত্বাবধান করবেন। বিষয় অনুযায়ী শিক্ষক খুঁজে বের করার পর তাঁকে ই-মেইল করুন। ই-মেইল করার ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খেয়াল রাখতে হয়। অনেকে বেশ বড় ই-মেইল লিখে ফেলেন, যেটা ঠিক নয়। আর বিশেষণের পর বিশেষণ দিয়ে ই-মেইল সাজালে শিক্ষকেরা বিরক্ত হন। স্নাতক, স্নাতকোত্তরের ফল, পাবলিকেশনের সংখ্যা, আইইএলটিএস স্কোর—এগুলোই বরং গুরুত্বপূর্ণ। এই বিষয়গুলো ই-মেইলে বোল্ড করে দিতে পারলে ভালো। পাশাপাশি নিজের পরিচয় এবং আপনি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উল্লেখ করে শিক্ষককে পিএইচডি অ্যাডভাইজার হওয়ার আবেদন জানাতে হবে। সঙ্গে যোগ করতে হবে আপনার সিভি। এটুকুই যথেষ্ট। আরেকটি বিষয় হলো, উপদেষ্টা খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে অনেকেই শুধু বিভাগের নাম দিয়ে গুগলে সার্চ করেন। বিজ্ঞানের বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা ক্লাস নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, ফলে অনেকেই গবেষণার সঙ্গে ভালোভাবে যুক্ত হতে পারেন না। অনেকের গবেষণার জন্য আলাদা তহবিল থাকে না। বিজ্ঞানের বিষয়ে সবচেয়ে ভালো গবেষণা হয় ইনস্টিটিউটগুলোতে। এই ইনস্টিটিউটগুলো তৈরিই করা হয় গবেষণার জন্য। ইনস্টিটিউটে গবেষণার তহবিল থাকে, ভালো পাবলিকেশনের সুযোগ থাকে। অতএব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ইনস্টিটিউটগুলোর শিক্ষক ও গবেষকদের ই-মেইল করলে সাড়া পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

৩. বৃত্তির জন্য আবেদন
শিক্ষক-উপদেষ্টাকে রাজি করাতে পারলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করে নির্দেশনা অনুযায়ী বৃত্তি এবং ভর্তির জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদনের জন্য একটি সুন্দর সিভি এবং একটি ভালো রিসার্চ প্রপোজাল লাগবে। বৃত্তির আবেদনের জন্য রিসার্চ সিভি তৈরির একটি লিঙ্ক দিয়ে দিচ্ছি। এটা সবার কাজে লাগবে (goo.gl/NvvycW)। আর ‘রিসার্চ প্রপোজাল’ লিখতে হবে উপদেষ্টার গবেষণার বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে।

9

তুরস্কের ‘গণিত গ্রাম’
আলতাফ পারভেজ
০১ জুলাই ২০১৮, ০৯:১৫
আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৮, ১১:৩২
প্রথম আলো[/size]


  ১
তুরস্কের ইজমির প্রদেশের সিরিঞ্চ নামে পাহাড়ি এলাকার ঢালুতে গড়ে ওঠা ছোট্ট একটা গ্রাম এটি। ছবি: নেসিন ম্যাথ ভিলেজের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া।
তুরস্কের ইজমির প্রদেশের সিরিঞ্চ নামে পাহাড়ি এলাকার ঢালুতে গড়ে ওঠা ছোট্ট একটা গ্রাম এটি। ছবি: নেসিন ম্যাথ ভিলেজের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া।
প্রায় ১১ বছর হলো এই ‘গ্রাম’-এর। বিশ্বে এই রকম গ্রাম এখনো কেবল একটিই। তুরস্কের এই ‘গ্রাম’-এর কথা আন্তর্জাতিক কিছু প্রচারমাধ্যমে এলেও বাংলাদেশে বেশি প্রচারিত নয়।

এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আলী নেসিন। বর্তমানে ৬১ বছর বয়সী এই গণিতবিদ ইস্তাম্বুলের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান। পিএইচডি করেছিলেন ইয়েল থেকে গাণিতিক যুক্তিবিদ্যার ওপর। ২০০৭ সালে গণিত গ্রামের ধারণা নিয়ে কাজ শুরু করেন। সেই হিসাবে বিকল্প ধারার সবুজে ঘেরা এই গণিতকেন্দ্রের বয়স ইতিমধ্যে দ্বিতীয় দশকে পড়েছে।

গণিতভীতি দূর করা এবং একে বিশ্বজুড়ে আনন্দদায়ক এক চর্চার বিষয় করে তোলাই আলী নেসিনের উদ্দেশ্য। তাঁর পরিকল্পনা ছিল, ‘আয় থেকে দায় শোধ’ ভিত্তিতে এমন এক শিক্ষা পরিমণ্ডল গড়ে তোলা, যা কেবল গণিতের জন্য নিবেদিত হবে।

বর্তমানে গ্রামটি পরিচালিত হয় একটি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে এবং তার পরিচালনায় রয়েছে একটি উপদেষ্টামণ্ডলী। এই মণ্ডলীর সবাই শিক্ষাবিদ। যুক্ত হয়েছেন তাঁরা বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে। আলী নেসিন এখনো তাঁর পুরানো কর্মস্থলে যুক্ত রয়েছেন। পাশাপাশি চলছে তাঁর গণিত গ্রাম বিকশিত করার সাধনাও।

তুরস্কের ইজমির প্রদেশের সিরিঞ্চ নামে পাহাড়ি এলাকার ঢালুতে গড়ে ওঠা ছোট্ট একটা গ্রাম এটি। ইস্তাম্বুল থেকে বিমানে ইজমির এক ঘণ্টার দূরত্ব। সেখান থেকে বাসে এক ঘণ্টায় গণিত গ্রামে পৌঁছানো যায়।

এটি প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনে ভরা একটি অঞ্চল। আছে প্রচুর জলপাইগাছ। এর মাঝেই গণিত কার্যক্রমের জন্য প্রথমে একটি ভবন গড়ে তোলা হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের চাপ বাড়তে থাকায় এ মুহূর্তে প্রায় ৩০টি ভবন রয়েছে এখানে। আরও রয়েছে ছোট ছোট নানা স্থাপনা। সবই শিক্ষার্থীদের বিবিধ প্রয়োজনকে মাথায় রেখে নির্মিত। প্রতিটি স্থাপনার গায়ে লেখা রয়েছে কাদের অর্থ সহায়তায় তা নির্মিত।

শুরু থেকেই স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি গ্রাম হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে একে। আলী নেসিনের নামের সূত্রেই এটি এখন ‘নেসিন গণিত গ্রাম’ নামে পরিচিতি পেয়ে গেছে। আলী নেসিনের প্রয়াত বাবা আজিজ নেসিন ছিলেন লেখক ও শিক্ষাব্রতী ব্যক্তি। তুরস্কে তাঁকে নিয়ে অনেক বিতর্কও রয়েছে। বিশেষ করে প্রভাবশালী ইসলামপন্থীদের সঙ্গে তাঁর বিরোধ ছিল। ছেলে আলী নেসিন রাজনীতি থেকে দূরের মানুষ। তবে বাবার রেখে যাওয়া সম্পদ দিয়েই গণিত গ্রামের প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করেছিলেন।

বিকল্প ধারার বিশ্বমানের এক বিদ্যাপীঠ
কল্পনায় যেমনটি আসে, ‘নেসিন গণিত গ্রাম’ অনেকটাই তা-ই। একদল স্বেচ্ছাসেবী গণিতবিদ গ্রামের প্রাণ। যাদের অনেকেই বিশ্বমানের গণিতজ্ঞ। ছাত্র-শিক্ষক সবাই এখানে বন্ধু। কখনো কাঠের চৌকিতে বসে, কোথাও আবার ঘাসে পা ছড়িয়ে গণিত বিষয়ে আড্ডা হচ্ছে। চলছে সেমিনার। ‘সমস্যা’র সমাধান নিয়ে ভাবিত সবাই। এখানে কোনো পরীক্ষা নেই, মার্কিং নেই, পাস-ফেল নেই। নেই সাজার ব্যবস্থাও। শুরুতে উদ্যোগটি ছিল মূলত বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য। পরে কম বয়সীদের জন্যও উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে এখন আছে সব বয়সী; মাধ্যমিক স্তর থেকে শুরু করে পিএইচডি পর্যন্ত। এমনকি অনেক প্রবীণও।

আলী নেসিনের নামের সূত্রেই এটি এখন ‘নেসিন গণিত গ্রাম’ নামে পরিচিতি পেয়ে গেছে। ছবি: নেসিন ম্যাথ ভিলেজের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া।
আলী নেসিনের নামের সূত্রেই এটি এখন ‘নেসিন গণিত গ্রাম’ নামে পরিচিতি পেয়ে গেছে। ছবি: নেসিন ম্যাথ ভিলেজের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া।
গ্রামটির বসবাসগত ব্যবস্থাপনাও শিক্ষার্থীরাই চালায়। বিভিন্ন গ্রুপ বিভিন্ন দায়িত্বে রয়েছে। যারা একটু পুরোনো, তাদের গ্রুপপ্রধান করে দেওয়া হয়। থাকা ও বসার জায়গাগুলো ছোট ছোট পাথরখণ্ড দিয়ে খোলামেলাভাবে তৈরি করা হয়েছে এলাকার প্রাচীন ঐতিহ্যের সঙ্গে মিলিয়ে; যাতে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস খেলা করতে পারে। স্থাপনামাত্রই অনেকটা উন্মুক্ত থিয়েটারের মতো। শব্দদূষণকে এখানে খুবই খারাপ চোখে দেখা হয়। টেলিভিশন তাই এখানে নিষিদ্ধ।

‘গণিত গ্রামে’ বর্তমানে বছরজুড়ে বিভিন্ন সময় মেয়াদে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী আসে। সম্পূর্ণ মাল্টি কালচারাল একটা পরিবেশে প্রতিনিয়ত একত্র হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের গণিত-আগ্রহীরা। আবেদনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় গণিত গ্রামের উদ্যোক্তরা এখন আগ্রহীদের মধ্যে গণিতের প্রতি অতিনিবেদিতদেরই অগ্রাধিকার দিচ্ছে। গণিতপ্রেমের গভীরতা বুঝতে আবেদনের সঙ্গে আগ্রহের কারণ-সংবলিত একটা রচনাও চাওয়া হয় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে।

অর্থের জন্য কাউকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় না
থাকার জন্য গণিত গ্রামে কিছু খরচপাতি আছে বটে (দৈনিক ১৫-২০ ডলার) তবে যারা দিতে অসমর্থ, তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থাও আছে। নেসিন গণিত গ্রামের একটা নীতি হলো, অর্থের জন্য কাউকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে না। চার বেলা খাবারের আয়োজন আছে এখানে। লেকচারগুলোর মতোই চা ও পানি ফ্রি। কেউ তাঁবুতে থাকে, কেউবা কক্ষে। তবে সবাই সকাল সাতটার মধ্যে ঘুম থেকে উঠে যায়। আটটা থেকে বিভিন্ন স্থানে লেকচার শুরু হয়। বিকেলেও এক দফা লেকচার হয়। রাতে যে যার মতো একা কিংবা দল বেঁধে সমস্যা সমাধানে চিন্তার আসরে বসে।

বৃহস্পতিবার কোনো শিক্ষা কার্যক্রম নেই। সেদিন সবাই গ্রামটিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজ করে দল বেঁধে। থালা-বাসন থেকে বাগান পর্যন্ত সব সেদিন সাফসুতরো করা হয়। খাবার তৈরি ও পরিবেশনেও হাত লাগায় অনেকেই। মূল উদ্যোক্তা অধ্যাপক নেসিনের ভাষায়, ‘শুধু গণিতের জন্য নয়, সহযোগিতা, শ্রদ্ধা ও জীবনের সঙ্গে গণিতের সুষমাকে মেশাতেই এত সব আয়োজন।’

‘গণিত গ্রামে’ বর্তমানে বছরজুড়ে বিভিন্ন সময় মেয়াদে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী আসে। ছবি: নেসিন ম্যাথ ভিলেজের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া।
‘গণিত গ্রামে’ বর্তমানে বছরজুড়ে বিভিন্ন সময় মেয়াদে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী আসে। ছবি: নেসিন ম্যাথ ভিলেজের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া।
বর্তমানে প্রায় সব মহাদেশ থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগ তাদের শিক্ষার্থীদের এখানে অন্তত একটা ম্যাথ-ক্যাম্প পাঠাচ্ছে। সেই অর্থে এই গণিত গ্রাম প্রকৃতই এক ‘বিশ্ব বিদ্যাপীঠ’।

অধ্যাপক নেসিনের শিক্ষাদর্শন খানিকটা প্রথাবিরোধী। তিনি মনে করেন, সব শিক্ষার্থীর ওপর কেন্দ্রীভূত একক পরিকল্পনার কোন মডেল চাপিয়ে দেওয়া ভুল। সবাই একই সিলেবাস, একই সময়ে, একই শিক্ষক দ্বারা সমস্যার সমাধান করতে পারবে, এমন ভাবাও পদ্ধতিগত ভুল। প্রতিটি দেশেই প্রত্যেক শিক্ষার্থীর প্রয়োজনীয়তা, ভাষাগত দক্ষতা এবং বিশ্লেষণী ক্ষমতা এক রকম থাকে না। ফলে দরকার হলো বৈচিত্র্যপূর্ণ শিক্ষা পরিবেশ।

প্রথম জীবনে নেসিন যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন, তখন তাঁর লক্ষ্য ছিল তুরস্কের জন্য বছরে অন্তত ১০ জন করে উচ্চমানের গণিতবিদ তৈরি করা। এভাবে ৩০ বছর শিক্ষকতা করতে চেয়েছিলেন তিনি। সেই লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজ বিভাগের জন্য নিজেই বিশ্বমানের একটা সিলেবাস তৈরি করেন। কিন্তু তাঁর তৈরি সিলেবাস শিক্ষার্থীদের জন্য কঠিন হয়ে উঠেছিল। এই সমস্যাগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের বাড়তি সময় দিয়ে সাহায্য করতে গিয়েই তাঁর কল্পনায় একটি স্থায়ী অনানুষ্ঠানিক গণিত সেন্টারের কথা। তাঁর বিবেচনায় মূলত ভীতি ও বৈচিত্র্যপূর্ণ শিক্ষা পরিবেশের অভাব গণিত মেধার স্ফূরণে বাধা দেয়।

নতুন উদ্যোগ
গণিত গ্রামে গণিত শিখতে আসা মানুষদের সঙ্গে কৌতূহলী এমন মানুষও আসছেন, যাঁদের আগ্রহের বিষয় ভিন্ন। বিশেষ করে শিল্পী ও ভাবুকদের উপস্থিতি বাড়ছে এখানে। সেই সূত্রে বর্তমানে এখানে শিল্পকলা ও দর্শনচর্চারও বিকাশ ঘটছে। ফলে শিল্পকলা ও দর্শনচর্চার জন্য আরও কিছু এলাকা নিয়ে নতুন দুটি শিক্ষাকেন্দ্র গড়ে তোলার চেষ্টা শুরু হয়েছে। নিশ্চিতভাবেই এতে তুরস্কের এই গ্রাম নিয়ে বৈশ্বিক কৌতূহল আরও বাড়বে।

আলতাফ পারভেজ: সাংবাদিক ও লেখক

10
‘ডিজিটাল আসক্তি’ কেড়ে নিচ্ছে স্বাভাবিক জীবন
প্রকাশের সময় : জুন ৩, ২০১৮, ৮:৫৯ অপরাহ্ণ

আপডেট সময় : জুন ৩, ২০১৮ at ৮:৫৯ অপরাহ্ণ

 
 

প্রমা সঞ্চিতা:বর্তমান সময়ের একটি অন্যতম সমস্যা হলো ডিজিটাল আসক্তি বা যন্ত্রের প্রতি অতি-নির্ভরতা। আধুনিক জীবনে যন্ত্র ছাড়া চলার উপায় নেই এটা যেমন সত্যি তেমনি আবার যন্ত্রের প্রতি মাত্রাতিরিক্ত নির্ভরতা অনেক সময় বিষিয়ে তুলছে আমাদের সামাজিক জীবন। কিছু নিয়ম মেনে চললে আমরা বেরিয়ে আসতে পারি এ আসক্তি থেকে। চলুন জেনে নেই কি করে মুক্তি পাওয়া যাবে ‘ডিজিটাল আসক্তি’ থেকে।


 
ডিজিটাল আসক্তি কী?

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ইলেকট্রনিক যন্ত্র যেমন- ল্যাপটপ, মোবাইলফোন, আইপড ইত্যাদি নানারকম গ্যাজেট আমরা ব্যবহার করে থাকি প্রতিনিয়ত। কাজের প্রয়োজনে, কখনো বা ¯্রফে সময় কাটাতেই আমরা অভ্যস্ত হয়ে পরছি এ যন্ত্রগুলোতে। পরবর্তীতে এই অভ্যস্ততাই পরণিত হয় আসক্তিতে। যন্ত্র বা সামাজিক যোগাযাগ মাধ্যমের প্রতি এই আসক্তিকেই বিশেষজ্ঞরা বলছেন ‘ডিজিটাল আসক্তি’। আর দশটা আসক্তির মতোই ‘ডিজিটাল আসক্তি’র রয়েছে বেশ ভয়াবহ কিছু দিক।

ডিজিটাল আসক্তি ও আমাদের জীবনে এর প্রভাব ফেলছে

এ কথা কারও অজানা নেই যে যন্ত্র-নির্ভরতা কেড়ে নিচ্ছে আমাদের জীবনের স্বাভাবিকতা। যন্ত্রের মাধ্যমে বিনোদন পেতে অভ্যস্ত হওয়ায় আমরা হারিয়ে ফেলছি আমাদের সামাজিক দক্ষতা যেমন- বন্ধু তৈরির ক্ষমতা, মানুষের সঙ্গে মেলামেশার দক্ষতা, সৃজণশীলতা। ডিজিটাল আসক্তি মানুষকে একা করে দিচ্ছে, ঠেলে দিচ্ছে বিছিন্নবাদিতার দিকে।

যন্ত্র থেকে দূরে থাকার কিছু উপায়:

যন্ত্র ছাড়া আধুনিক জীবন- শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটা সম্ভব! স¤প্রতি এক গবেষণায় পাওয়া তথ্য বলছে বছরে অন্তত ১৫ দিনের জন্য যন্ত্র থেকে দূরে থাকার অভ্যস করা উচিত আমাদের। মানসিক প্রশান্তির জন্য যান্ত্রিক জীবন থেকে বেড়িয়ে প্রকৃতি ও প্রিয় মানুষের সান্নিধ্যে সময় কাটানোর পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। বিশেষজ্ঞদের চোখে যন্ত্র-নির্ভরতা কমিয়ে আনার কিছু উপায়:

. নিয়মিত মেডিটেশন করা:
নিয়মিত মেডিটেশন এবং নিজ নিজ ধর্মানুসারে প্রার্থনায় বসা মানসিক প্রশান্তি ফিরিয়ে আনে। দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় মেডিটেশন করার জন্য রাখতে বলা হয়েছে। ভোরে ঘুম থেকে উঠে কিংবা রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ১৫ মিনিট সময় নিজের সঙ্গে কাটানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

. সময় পেলেই ঘুরতে যাওয়া:
সময় পেলেই ঘুরতে যাওয়া আর ঘুরতে যাওয়ার সময় অবশ্যই মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ইত্যাদি যন্ত্র বাসায় রেখে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বছরে ১৫ দিন বা দুই- তিন মাস পরপর সপ্তাহখানেকের জন্য কোথাও ঘুরতে বেড়িয়ে পরা যেমন মানসিক প্রশান্তির জন্য জুরুরি, তেমনি এ অভ্যাস ডিজিটাল আসক্তি থেকে দূরে রাখবে আমাদের।

. প্রকৃতি ও প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটানো:
ডিজিটাল পণ্যের সঙ্গে সময় কাটানো পরিবর্তে প্রিয় মানুষ বা প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

. অ্যালার্ম ঘড়ির ব্যবহারের অভ্যস:
মোবাইল ফোনের পরিবর্তে ঘড়িতে অ্যলার্ম দিয়ে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কারণ সকালে মোবাইল ফোনের অ্যালার্ম শুনে ফোন হাতে নিয়েই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঢুঁ মারা অভ্যাস রয়েছে অনেকেরই! এমনকি সময় দেখতে হাত-ঘড়ি বা দেয়াল ঘড়ি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

রাত ৯ থেকে সকাল ৯টা পযন্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে দূরে থাকা:

প্রতিদিন রাত ৯টা থেকে সকাল ৯টা পযন্ত ইন্টারনেট বন্ধ করে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রথম দিকে এই অভ্যাসটা আয়ত্তে আনতে একটু কষ্ট হবে। প্রথমে অল্প সময়ের জন্য এ অভ্যাসটা করে ধীরে ধীরে সময় বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে যোগোযোগের জন্য অন্য কোনো উপায় যেমন- মেইল করা, ফোনে মেসেজ পাঠিয়ে রাখা কিংবা চিরক‚ট লেখার অ্যভাস করতে বলা হয়েছে! টাইমস অফ ইন্ডিয়া

11
১ দিনেই ডেঙ্গু ভালো হয়,আপনার ঘরেই ঔষধ,আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত!!!
সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় উদ্ভাবিত হয়েছে যে পেপে পাতা ডেঙ্গুর জন্য বেশ কার্যকরী প্রতিষেধক। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে পেপে পাতার রসে থ্রম্বোসাইটিস (প্লাটিলেট) উৎপাদনে সাহায্যকারী উপাদান রয়েছে।
গবেষণাটির প্রধান গবেষক ছিলেন AIMST ভার্সিটির প্রফেসর ডক্টর এস. কাঠিরেসান। ডক্টর এস. কাঠিরেসান এর মতে ডেঙ্গুর ভাইরাস মূলত আমাদের রক্তের প্লেটলেট কমিয়ে দেয়। সাধারণত প্লেটলেটের জীবনকাল ৫ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত। এরপরে আবার প্রয়োজন অনুসারে নতুন প্লেটলেট উৎপাদন হয়।
ডেঙ্গুর ভাইরাস শরীরে যতদিন কার্যকর থাকে ততদিন পর্যন্ত নতুন শরীরে নতুন প্লেটলেট উৎপাদনের ক্ষমতা নষ্ট করে দিতে ভূমিকা রাখে। সাধারণত একজন সুস্থ মানুষের রক্তের স্বাভাবিক প্লেটলেটের পরিমাণ হলো প্রতি মাইক্রো লিটারে ১৫০,০০০ থেকে ২৫০,০০০ পর্যন্ত। ডেঙ্গু হলে এই প্লেটলেটের সংখ্যা খুব দ্রুত কমে যেতে থাকে।
তার মতে, ১০০,০০০ এর নিচে প্লেটলেট লেভেল চলে আসলে তা মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারেন। প্লেটলেট লেভেল যদি ৫০০০০ এ নেমে আসে তাহলে থ্রমবোসাইটোপেনিয়া হয়ে যায়। ফলে অনেক সময় রোগীর মৃত্যু হতে পারে। তাই ডেঙ্গু হলে প্লেটলেট পরীক্ষা করে দেখা হয়। প্লেটলেট খুব কমে গেলে জরুরী ভিত্তিতে হাসপাতালে ভর্তি করানো উচিত।
প্লেটলেটের পরিমাণ যখন অস্বাভাবিক কমে যায় তখন রক্ত জমাট বাধতে শুরু করে এবং হ্যামোরেজিং হতে পারে। এর ফলে শরীরের অভ্যন্তরীন রক্তক্ষরণ হয় এবং রোগীর মৃত্যু ঘটে।
পেঁপে পাতার রস ডেঙ্গুর প্রতিষেধক এটা নিয়ে অনেক মানুষ দ্বিমত পোষন করেছে। কিন্তু ইউনিভার্সিটি অফ ফ্লোরিডা রিসার্চ সেন্টারের গবেষক নাম ড্যাং এর মতে পেঁপে পাতার রস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং তা ডেঙ্গু জ্বর খুব দ্রুত সারিয়ে তোলে। এমনকি পেঁপে পাতার রস ক্যান্সার প্রতিরোধেও সহায়তা করে। শ্রীলঙ্কার ফিজিশিয়ান ডাক্তার সানাথ হেট্টিগ এর মতে পেপে গাছের কচি পাতার রস ডেঙ্গুর ওষুধ হিসেবে খুবই উপকারী। তার এই গবেষণাটি ২০০৮ সালে শ্রীলংকান জার্নাল অফ ফ্যামিলি ফিজিশিয়ানস এ প্রকাশিত হয়েছিলো।
যেভাবে কাজ করে
ডাক্তার সানাথ হেট্টিগ এর মতে পেঁপে পাতায় কিমোপাপিন ও পাপেইন নামে দুটি এনজাইম আছে। এই উপাদান দুটি প্লেটলেট উৎপাদন বাড়ায় এবং রক্ত জমাট বাঁধা রোধ করে। এছাড়াও এগুলো ডেঙ্গুর কারণে লিভারের কোনো ক্ষতি হয়ে থাকলে সেটা ঠিক হতে সহায়তা করে। এছাড়াও পেঁপে পাতায় আছে প্রচুর পরিমাণে কমপ্লেক্স ভিটামিন যা বোন ম্যারোকে প্রচুর পরিমাণে প্লেটলেট উৎপাদন করতে সহায়তা করে।
যেভাবে খেতে পারেন
ডাক্তার সানাথ হেট্টিগের মতে পেপে পাতার রস খেতে হলে মোটামুটি কচি পাতা বেছে নেয়া উচিত। এরপর এই পাতা খুব ভালো করে ধুয়ে ব্লেন্ডারে দিয়ে অথবা বেটে রস বের করে ছেঁকে নিতে হবে। এর সঙ্গে কোনো চিনি কিংবা লবণ দেয়া যাবে না। প্রাপ্ত বয়স্কদের দিনে দুবার ৮ ঘন্টার বিরতি দিয়ে ১০ মিলি লিটার পরিমাণ পেপের রস খাওয়া উচিত। ৫ থেকে ১২ বছর বয়সিদের ৫ মিলি লিটার ও ৫ বছরের ছোটদের ২.৫ মিলি লিটার পেঁপে পাতার রস খাওয়া উচিত।

12
Business & Entrepreneurship / Marketing
« on: June 27, 2015, 10:55:05 AM »
Learning Objectives:
# When you have completed this module you will be able to define the key concepts associated with Marketing and you will be able to:
                          * Identify the main obstacles to effective marketing
                           *Understand the marketing process




13
Satire / Six Reality of Life
« on: August 21, 2014, 09:22:59 AM »
Six Reality of Life

14
Food and Nutrition Science / New Recipe Hilsa Fish Cooking
« on: August 20, 2014, 10:10:16 PM »
New Recipe Hilsa Fish Cooking

15
One in all PC tips / Laptop Servicing Guide
« on: August 20, 2014, 10:04:21 PM »
Laptop Problem and Maintenance: 50 Tips

Pages: [1] 2