1
Brand Image of DIU / পাঁচ বছরের মধ্যেই শীর্ষে উঠে আসবে বেসরকার
« on: September 15, 2012, 05:08:58 PM »
বাংলানিউজকে ড্যাফোডিল ভিসি
পাঁচ বছরের মধ্যেই শীর্ষে উঠে আসবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
সিজারাজ জাহান মিমি, নিউজরুম এডিটর

ঢাকা: দেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আগামী ৫ বছরের মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে ছাড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদী ‘ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির’ ভিসি প্রফেসর ড. লুৎফর রহমান।
বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপে খ্যাতনামা এ শিক্ষাবিদ এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
সম্প্রতি স্পেনের ‘ওয়েবোমেট্টিক্স র্যাংকিং অব ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটিজ’ এর ওয়েবভিত্তিক কার্যক্রমের মূল্যায়ণে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি দ্বিতীয় স্থান লাভ করার পর তার মুখোমুখি হয় বাংলানিউজ।
এ সময় স্প্যানিশ ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিল (সিএসআইসি) পরিচালিত ওই ওয়েব র্যাংকিং-এর গ্রহণযোগ্যতা, গবেষণাকর্ম ছাড়াও দেশের শিক্ষা পরিস্থিতি, প্রযুক্তিশিক্ষার সম্ভাবনা ও ভবিষ্যৎ ইত্যাদি নিয়েও বেশ খোলামেলা কথা বলেন ড. লুৎফর রহমান। সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক আলোচনাও উঠে আসে তার সুচিন্তিত বক্তব্যে। পাওয়া যায় গবেষণা ও অর্থবহ প্রকাশনায় উদ্যোগী হওয়ার পাশাপাশি আরও কিছু মূল্যবান পরামর্শ।
তার মতে, কেবল প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যা কিছুটা পিছিয়ে। বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান অত্যন্ত ভাল। আন্ত:বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতাগুলোতেও অনেক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে ভালো করছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই স্ব স্ব পোগ্রাম শেষ করতে পারছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ``প্রতিটি সময়ের সঠিক ব্যবহার হচ্ছে এখানে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান পর্যবেক্ষণ করে অনেক শির্ক্ষাথী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছে। তাই ১৯৯২ সালে দেশে প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন হওয়ার মাত্র দু’দশকের মাথায় এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬২টিতে।
ব্যবস্থাপনার বিচারেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে রাখতে চান তিনি।
এমনকি তার বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জন ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নপূরণের পথে বাংলাদেশকে অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে গেছে বলেও মনে করেন তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর বিশ্ববিদ্যালয় ড্যাফোডিলের ভিসি।
যদিও আধুনিক শিক্ষা উপকরণ, আইসিটি বেজড বিভিন্ন উপকরণ থেকে শুরু করে শিক্ষা কার্যক্রমের প্রতিটি মাধ্যম ব্যয়বহুল হওয়া ছাড়াও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাদাতাদের অধিক ফিন্যান্সিয়াল ডিমান্ডের কথা স্বীকার করেন তিনি।
বাংলানিউজ পাঠকদের জন্য তার সঙ্গে কথোপকথনের বিস্তারিত তুলে ধরা হলো:
বাংলানিউজ: সিএসআইসির র্যাংকিং আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কতটা ইতিবাচক বলে মনে করছেন?
লুৎফর রহমান: এ ফলাফল নি:সন্দেহে আমাদের জন্য ইতিবাচক। কারণ, ক্রমান্বয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রগতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। বিগত বছরগুলোর ফলাফল লক্ষ্য করলে দেখা যায়, ২০১০ সালে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ডিআইইউ’র অবস্থান ছিল ৯৯। তার পরের বছর ৯২। আর এবার হলো ৭৪। এ তালিকার শীর্ষে রয়েছে মুম্বাইয়ের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি। বাংলাদেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে এ তালিকার ২৫ নম্বরে।
যদিও এ তালিকা প্রযুক্তিভিক্তিক ইনস্টিটিউট, কলেজ ও ইউনির্ভার্সিটি মিলিয়ে, তবুও এককথায় বলতে পারি, প্রতিষ্ঠার মাত্র বছর দশেকের মাথায় এটা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভাল অর্জন। আমরা প্রথমত অনেক নার্ভাস ছিলাম, কিন্তু চেষ্টা ছিল অব্যাহত।আগামীতেও এ চেষ্টার ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।
বাংলানিউজ: আমরা জানি, ২০০২ সালে তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয় ড্যাফোডিল। কোন সময়টা থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের এ ধরনের ওয়েব র্যাংকিংএ ডিআইইউ’র সন্তোষজনক স্থান লাভ বা অগ্রগতি আসতে শুরু করে?
লুৎফর রহমান: ওয়েব র্যাংকিং’র বিষয়টি দেখলে গত ২০০৫ সালের পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান প্রত্যাশার মধ্যে ছিল।আর দেশের মধ্যে শুরু থেকেই ভাল সাড়া পেয়েছি। আমরা কখনোই হঠাৎ
করেই ভাল কিছু পাওয়ার আশা করি নি। তাছাড়া ড্যাফোডিলকে সম্পূর্ণরুপে একটি তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানরূপে দেখতে চেয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সবুর খান। আজ ঠিক সেটাই হয়েছে। এখানে এখন প্রযুক্তির সব মাধ্যমই আছে।পরিপূর্ণ তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক অবকাঠামো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তার প্রবল আগ্রহ, প্রচেষ্টা ও প্রতিটি মুহূর্তের অনুপ্রেরণা, সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সবারই ঐকান্তিক সহোযোগিতার জন্য আজ ড্যাফোডিল এ পর্যন্ত আসতে পেরেছে।
বাংলানিউজ: বাংলাদেশ সম্ভাবনাময় একটি দেশ, কিন্তু অনেক প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের ৬ টি বিশ্ববিদ্যালয় শীর্ষ ১০০ তে আছে, তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশের জন্য এ ফলাফল কতটা আশানুরূপ?
লুৎফর রহমান: জনসংখ্যার দিক থেকে বিচার করলে এ ফলাফল সন্তোষজনক নয়। কারণ, দক্ষিণ এশিয়ার জনসংখ্যা প্রায় ১৫০ কোটি, যেখানে বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি। সে অনুপাতে কম করেও ১০টি বিশ্ববিদ্যালয় থাকা উচিত ছিল।এ অবস্থা থেকে উঠে আসতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অধ্যবসায়ী হতে হবে। তবে একেবারে নিরাশ হওয়ার কিছু নেই। কারণ, এ মহাদেশের এমনও দেশ আছে যেখানকার কোন বিশ্ববিদ্যালয়ও শীর্ষ ১০০’র তালিকায় আসতে পারেনি।
বাংলানিউজ: প্রতি বছরই তো র্যাংকিং করা হয়, প্রতি বছর আপনার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত এ ধরনের গবেষণামুলক কাজের সংখ্যা আনুমানিক কত হয়ে থাকে?
লুৎফর রহমান: মূলত রিসার্চ, পাবলিকেশন করে থাকেন শিক্ষক ও মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা।তাছাড়া শিক্ষকদের মধ্যেও ক্যাটাগরি অনুযায়ী, বিশেষ করে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসররা এসব কাজ বেশি করে থাকেন।পাবলিকেশনস ও গবেষণা কর্মের সঠিক সংখ্যা এ মুহূর্তে বলা সম্ভব না হলেও আনুমানিক ২শ’ এর অধিক প্রকাশ হয়।
বাংলানিউজ: যেসব কাজের জন্য আপনার ইউভার্সিটি এ অবস্থানে উঠে এসেছে সেগুলোর মধ্যে আপনার বিবেচনায় বেশি গুরত্বপূর্ণ কি কি?
লুৎফর রহমান: বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান ড. আকতার হোসেন উদ্ভাবিত ‘ব্রেইল সফটওয়্যার’ দেশে বিদেশে প্রচুর প্রশংসিত হয়েছে।সফটওয়্যারটি দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য তৈরি- যার মাধ্যমে তারা প্রযুক্তিপণ্য সম্পর্কে জানতে ও শিখতে পারে। এছাড়া ইনফরমেশন সিকিউরিটি, ইন্টারনেট সিকিউরিটি ও ডিপার্টমেন্ট অব ইটিই’র বেশ কিছু প্রজেক্ট দেশীয় পর্যায়ে স্বীকৃতি পেয়েছে।
বাংলানিউজ: এ ধরনের সাফল্য শিক্ষার্থীদের জন্য কতটা অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে?
লুৎফর রহমান: একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যে কোন সাফল্য, সৃষ্টিকর্ম অবশ্যই শিক্ষার্থীদের উপরের দিকে উঠতে প্রেরণা যোগায়। এক্ষেত্রে শিক্ষাদাতাদের দক্ষতা এবং দায়িত্ববোধ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। যেমন একজন শিক্ষক যদি ভালমানের বই প্রকাশ, বিশেষ ধরনের কিছু সৃষ্টি করেন সেটা নি:সন্দেহে শিক্ষার্থীদের গৌরবের বিষয় হয়ে ওঠে। কাজেই শিক্ষাদাতাদের এদিকটাতে সচেতন হতে ও কাজে মনোনিবেশ করতে হবে।
বাংলানিউজ: যারা দেশের জন্য এমন সাফল্য বয়ে আনছেন, আরও এগিয়ে যেতে তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কি?
লুৎফর রহমান: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার মূল অংশ হচ্ছে গবেষণা, তাদের উদ্দেশ্যে একটি কথাই বলব, তারা যেন বেশি বেশি গবেষণা করেন। আর এজন্য অধিকতর প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোকে গবেষণাকর্মে রাখতে হবে। আধুনিকমানের কাজ করতে হবে। প্রগতিশীল হতে হবে।এতে নিজেদের যোগ্যতা তো বাড়বেই, সেইসঙ্গে দেশ ও নতুনরা তাদের মাধ্যমে অগ্রগামী হবে। এ র্যাংকিং’এ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়টিও প্রযুক্তিভিত্তিক।কাজেই এ মাধ্যমের ক্রমবিকাশ করতে হবে এবং বেশি বেশি অ্যাপলিকেশন তৈরি করতে হবে।
বাংলানিউজ: মূলত এসব প্রকাশনা, কাজের কোন দিকগুলোকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে মূল্যায়ন করা হয়?
লুৎফর রহমান: বিশ্বমানদণ্ড ও জনপ্রিয়তার দিকটিকে গুরত্ব দেওয়া হয় এসব কাজের মূল্যায়নে। এক্ষেত্রে ভিজিটরের সংখ্যা মূখ্য নয়। তাই কিছু ওয়েব ইনডিকেটরের ভিত্তিতে এগুলোর মূল্যায়ন পক্রিয়া হয় যাতে মানসম্মত ও সম্প্রসারিত এবং অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত হয়।
বাংলানিউজ: প্রতিযোগিতামুলক কার্যক্রমে দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর যে ব্যবধানের কথা শোনা যায় সে সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কি?
লুৎফর রহমান: এ বিষয়টির সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করছি। একমাত্র প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যা কিছুটা পিছিয়ে। লক্ষ্য করলে দেখবেন দেশে যেসব কনটেস্ট হয়ে থাকে সেগুলোতে কোনভাবেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পিছিয়ে পড়ছে না।বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান অত্যন্ত ভাল। তাই আমার আত্মবিশ্বাস থেকে বলছি- আগামী ৫ বছরের মধ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে তালিকার শীর্ষে।
বাংলানিউজ: শিক্ষার্থীরা অনেক সময় সেমিস্টারের সময়কে অপর্যাপ্ত মনে করে, এ ব্যাপারে কি বলবেন।
লুৎফর রহমান: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সৌভাগ্য তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই স্ব স্ব পোগ্রাম শেষ করতে পারছে। প্রতিটি সময়ের সঠিক ব্যবহার হচ্ছে এখানে। একমাত্র সরকারি ছুটি ও ধর্মীয় ছুটি ছাড়া কোনো সময় অপচয় হচ্ছে না। তাছাড়া প্রচুর সুবিধা পাচ্ছে এবং শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে নিত্য নতুন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।এক্ষেত্রে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দুর্ভাগ্যই বলব, নানা ধরনের সমস্যার কারণে মূল্যবান সময়ের অনেকটা নষ্ট হচ্ছে।যেজন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান পর্যবেক্ষণ করে অনেক শির্ক্ষাথী এখানে আসছে। ১৯৯২ সালে দেশে প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন হয়, বর্তমানে এর সংখ্যা ৬২ টি।
বাংলানিউজ: গবেষণা কর্মের উন্নয়নের সঙ্গে আর্থিক দিকটার গুরুত্ব কতখানি আছে।এক্ষেত্রে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা আছে কি?
লুৎফর রহমান: নিজ অর্থায়নে পরিচালিত হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। আর আধুনিক ও গুণগতমানের উদ্ভাবনার সঙ্গে আর্থিক সম্পর্কটা অবশ্যই যুক্ত। আধুনিক শিক্ষা উপকরণ, আইসিটি বেজড বিভিন্ন উপকরণ থেকে শুরু করে শিক্ষা কার্যক্রমের প্রতিটি মাধ্যম ব্যয়বহুল। তাছাড়া এখানকার শিক্ষাদাতাদের ফিন্যান্সিয়াল ডিমান্ড বেশি।
বাংলানিউজ: আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গবেষণাকেন্দ্রের সংখ্যা কত?
লুৎফর রহমান: বিজনেস অ্যান্ড ইকোনোমিক্স, সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ও হিউম্যানিটিজ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্স অনুষদ অনুযায়ী গবেষণাকেন্দ্রের সংখ্যা তিনটি।
বাংলানিউজ: আপনি যে র্যাংকিংয়ের কথা বলছেন, তা নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনাও শোনা যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, এ ফলাফল আন্তর্জাতিক মানের নয়।এর কারণ হিসেবে দায়ী করা হচ্ছে গবেষণা কাজে অদক্ষতা এবং অনীহা। এবিষয়ে কি বলবেন?
লূৎফর রহমান: এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কারণ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্বল ব্যবস্থাপনা। নিয়ম নীতিকে অবহেলা করে স্বেচ্ছাচারিতা চলে সেখানে। যার ফলে মানসম্মত কাজ হচ্ছে না। সংশ্লিষ্টদের সদিচ্ছার অভাবে আজ এমনটা হচ্ছে। সেখানে কোন ইলেকশন নেই। এই দিক থেকে তুলনা করলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনেক এগিয়ে। বিশেষ করে উন্নত ব্যবস্থাপনা। তাছাড়া সবক্ষেত্রেই নীতিমালার বিষয়টি কঠিনভাবে অনুসরণ করা হয়। যার ফলে অভ্যন্তরীণ জটিলতা মুক্ত থাকে।
বাংলানিউজ: বর্তমান সময়ের জোরালো একটি উচ্চারণ ‘তরুণরাই গড়তে পারে ডিজিটাল বাংলাদেশ’ তো বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের এই অর্জন সরকারের সেই প্রত্যাশা পূরণে কতটা ভূমিকা রাখছে?
লুৎফর রহমান: বাংলাদেশের আইসিটি মন্ত্রী, বলতে গেলে তিনিও তরুণ।তথ্যপ্রযুক্তিতে নিত্য নতুন যেসব উদ্ভাবন আসছে সেগুলোর অধিকাংশই আসছে নতুন প্রজন্ম থেকে এবং এক্ষেত্রে জড়িত সবাই প্রায় তরুণ। অসম্ভব রকমের আগ্রহ দক্ষতা এদের মধ্যে সুস্পষ্ট। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অর্জন নিশ্চয় ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পুরণ করছে।
বাংলানিউজ: বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জিত মূল্যবান অর্জন বা অ্যাওয়ার্ড সম্পর্কে কিছু বলেন?
লুৎফর রহমান: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষায় ও তথ্যপ্রযুক্তিতে অবদান, পরিবেশ উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচন বিষয়ক অনেক কাজের স্বীকৃতি পেয়েছে ড্যাফোডিল। অতি সম্প্রতি এশিয়ার সেরা বিজনেস স্কুল অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে। অসাধারণ ব্র্যান্ডিং এবং মার্কেটিংয়ের জন্য বাংলাদেশে এই প্রথম ড্যাফোডিলের শীর্ষস্থানীয় তিন শিক্ষককে ‘তৃতীয় সিএমও এশিয়া- ব্র্যান্ড লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম স্থানে আছে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়।
মুল নিউজ লিংক:
http://banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=861ad02466a4fb50ecb4725d5c3ca6d4&nttl=15092012138922
পাঁচ বছরের মধ্যেই শীর্ষে উঠে আসবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
সিজারাজ জাহান মিমি, নিউজরুম এডিটর

ঢাকা: দেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আগামী ৫ বছরের মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে ছাড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদী ‘ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির’ ভিসি প্রফেসর ড. লুৎফর রহমান।
বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপে খ্যাতনামা এ শিক্ষাবিদ এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
সম্প্রতি স্পেনের ‘ওয়েবোমেট্টিক্স র্যাংকিং অব ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটিজ’ এর ওয়েবভিত্তিক কার্যক্রমের মূল্যায়ণে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি দ্বিতীয় স্থান লাভ করার পর তার মুখোমুখি হয় বাংলানিউজ।
এ সময় স্প্যানিশ ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিল (সিএসআইসি) পরিচালিত ওই ওয়েব র্যাংকিং-এর গ্রহণযোগ্যতা, গবেষণাকর্ম ছাড়াও দেশের শিক্ষা পরিস্থিতি, প্রযুক্তিশিক্ষার সম্ভাবনা ও ভবিষ্যৎ ইত্যাদি নিয়েও বেশ খোলামেলা কথা বলেন ড. লুৎফর রহমান। সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক আলোচনাও উঠে আসে তার সুচিন্তিত বক্তব্যে। পাওয়া যায় গবেষণা ও অর্থবহ প্রকাশনায় উদ্যোগী হওয়ার পাশাপাশি আরও কিছু মূল্যবান পরামর্শ।
তার মতে, কেবল প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যা কিছুটা পিছিয়ে। বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান অত্যন্ত ভাল। আন্ত:বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতাগুলোতেও অনেক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে ভালো করছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই স্ব স্ব পোগ্রাম শেষ করতে পারছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ``প্রতিটি সময়ের সঠিক ব্যবহার হচ্ছে এখানে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান পর্যবেক্ষণ করে অনেক শির্ক্ষাথী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছে। তাই ১৯৯২ সালে দেশে প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন হওয়ার মাত্র দু’দশকের মাথায় এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬২টিতে।
ব্যবস্থাপনার বিচারেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে রাখতে চান তিনি।
এমনকি তার বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জন ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নপূরণের পথে বাংলাদেশকে অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে গেছে বলেও মনে করেন তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর বিশ্ববিদ্যালয় ড্যাফোডিলের ভিসি।
যদিও আধুনিক শিক্ষা উপকরণ, আইসিটি বেজড বিভিন্ন উপকরণ থেকে শুরু করে শিক্ষা কার্যক্রমের প্রতিটি মাধ্যম ব্যয়বহুল হওয়া ছাড়াও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাদাতাদের অধিক ফিন্যান্সিয়াল ডিমান্ডের কথা স্বীকার করেন তিনি।
বাংলানিউজ পাঠকদের জন্য তার সঙ্গে কথোপকথনের বিস্তারিত তুলে ধরা হলো:
বাংলানিউজ: সিএসআইসির র্যাংকিং আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কতটা ইতিবাচক বলে মনে করছেন?
লুৎফর রহমান: এ ফলাফল নি:সন্দেহে আমাদের জন্য ইতিবাচক। কারণ, ক্রমান্বয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রগতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। বিগত বছরগুলোর ফলাফল লক্ষ্য করলে দেখা যায়, ২০১০ সালে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ডিআইইউ’র অবস্থান ছিল ৯৯। তার পরের বছর ৯২। আর এবার হলো ৭৪। এ তালিকার শীর্ষে রয়েছে মুম্বাইয়ের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি। বাংলাদেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে এ তালিকার ২৫ নম্বরে।
যদিও এ তালিকা প্রযুক্তিভিক্তিক ইনস্টিটিউট, কলেজ ও ইউনির্ভার্সিটি মিলিয়ে, তবুও এককথায় বলতে পারি, প্রতিষ্ঠার মাত্র বছর দশেকের মাথায় এটা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভাল অর্জন। আমরা প্রথমত অনেক নার্ভাস ছিলাম, কিন্তু চেষ্টা ছিল অব্যাহত।আগামীতেও এ চেষ্টার ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।
বাংলানিউজ: আমরা জানি, ২০০২ সালে তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয় ড্যাফোডিল। কোন সময়টা থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের এ ধরনের ওয়েব র্যাংকিংএ ডিআইইউ’র সন্তোষজনক স্থান লাভ বা অগ্রগতি আসতে শুরু করে?
লুৎফর রহমান: ওয়েব র্যাংকিং’র বিষয়টি দেখলে গত ২০০৫ সালের পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান প্রত্যাশার মধ্যে ছিল।আর দেশের মধ্যে শুরু থেকেই ভাল সাড়া পেয়েছি। আমরা কখনোই হঠাৎ
করেই ভাল কিছু পাওয়ার আশা করি নি। তাছাড়া ড্যাফোডিলকে সম্পূর্ণরুপে একটি তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানরূপে দেখতে চেয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সবুর খান। আজ ঠিক সেটাই হয়েছে। এখানে এখন প্রযুক্তির সব মাধ্যমই আছে।পরিপূর্ণ তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক অবকাঠামো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তার প্রবল আগ্রহ, প্রচেষ্টা ও প্রতিটি মুহূর্তের অনুপ্রেরণা, সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সবারই ঐকান্তিক সহোযোগিতার জন্য আজ ড্যাফোডিল এ পর্যন্ত আসতে পেরেছে।
বাংলানিউজ: বাংলাদেশ সম্ভাবনাময় একটি দেশ, কিন্তু অনেক প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের ৬ টি বিশ্ববিদ্যালয় শীর্ষ ১০০ তে আছে, তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশের জন্য এ ফলাফল কতটা আশানুরূপ?
লুৎফর রহমান: জনসংখ্যার দিক থেকে বিচার করলে এ ফলাফল সন্তোষজনক নয়। কারণ, দক্ষিণ এশিয়ার জনসংখ্যা প্রায় ১৫০ কোটি, যেখানে বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি। সে অনুপাতে কম করেও ১০টি বিশ্ববিদ্যালয় থাকা উচিত ছিল।এ অবস্থা থেকে উঠে আসতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অধ্যবসায়ী হতে হবে। তবে একেবারে নিরাশ হওয়ার কিছু নেই। কারণ, এ মহাদেশের এমনও দেশ আছে যেখানকার কোন বিশ্ববিদ্যালয়ও শীর্ষ ১০০’র তালিকায় আসতে পারেনি।
বাংলানিউজ: প্রতি বছরই তো র্যাংকিং করা হয়, প্রতি বছর আপনার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত এ ধরনের গবেষণামুলক কাজের সংখ্যা আনুমানিক কত হয়ে থাকে?
লুৎফর রহমান: মূলত রিসার্চ, পাবলিকেশন করে থাকেন শিক্ষক ও মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা।তাছাড়া শিক্ষকদের মধ্যেও ক্যাটাগরি অনুযায়ী, বিশেষ করে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসররা এসব কাজ বেশি করে থাকেন।পাবলিকেশনস ও গবেষণা কর্মের সঠিক সংখ্যা এ মুহূর্তে বলা সম্ভব না হলেও আনুমানিক ২শ’ এর অধিক প্রকাশ হয়।
বাংলানিউজ: যেসব কাজের জন্য আপনার ইউভার্সিটি এ অবস্থানে উঠে এসেছে সেগুলোর মধ্যে আপনার বিবেচনায় বেশি গুরত্বপূর্ণ কি কি?
লুৎফর রহমান: বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান ড. আকতার হোসেন উদ্ভাবিত ‘ব্রেইল সফটওয়্যার’ দেশে বিদেশে প্রচুর প্রশংসিত হয়েছে।সফটওয়্যারটি দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য তৈরি- যার মাধ্যমে তারা প্রযুক্তিপণ্য সম্পর্কে জানতে ও শিখতে পারে। এছাড়া ইনফরমেশন সিকিউরিটি, ইন্টারনেট সিকিউরিটি ও ডিপার্টমেন্ট অব ইটিই’র বেশ কিছু প্রজেক্ট দেশীয় পর্যায়ে স্বীকৃতি পেয়েছে।
বাংলানিউজ: এ ধরনের সাফল্য শিক্ষার্থীদের জন্য কতটা অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে?
লুৎফর রহমান: একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যে কোন সাফল্য, সৃষ্টিকর্ম অবশ্যই শিক্ষার্থীদের উপরের দিকে উঠতে প্রেরণা যোগায়। এক্ষেত্রে শিক্ষাদাতাদের দক্ষতা এবং দায়িত্ববোধ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। যেমন একজন শিক্ষক যদি ভালমানের বই প্রকাশ, বিশেষ ধরনের কিছু সৃষ্টি করেন সেটা নি:সন্দেহে শিক্ষার্থীদের গৌরবের বিষয় হয়ে ওঠে। কাজেই শিক্ষাদাতাদের এদিকটাতে সচেতন হতে ও কাজে মনোনিবেশ করতে হবে।
বাংলানিউজ: যারা দেশের জন্য এমন সাফল্য বয়ে আনছেন, আরও এগিয়ে যেতে তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কি?
লুৎফর রহমান: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার মূল অংশ হচ্ছে গবেষণা, তাদের উদ্দেশ্যে একটি কথাই বলব, তারা যেন বেশি বেশি গবেষণা করেন। আর এজন্য অধিকতর প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোকে গবেষণাকর্মে রাখতে হবে। আধুনিকমানের কাজ করতে হবে। প্রগতিশীল হতে হবে।এতে নিজেদের যোগ্যতা তো বাড়বেই, সেইসঙ্গে দেশ ও নতুনরা তাদের মাধ্যমে অগ্রগামী হবে। এ র্যাংকিং’এ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়টিও প্রযুক্তিভিত্তিক।কাজেই এ মাধ্যমের ক্রমবিকাশ করতে হবে এবং বেশি বেশি অ্যাপলিকেশন তৈরি করতে হবে।
বাংলানিউজ: মূলত এসব প্রকাশনা, কাজের কোন দিকগুলোকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে মূল্যায়ন করা হয়?
লুৎফর রহমান: বিশ্বমানদণ্ড ও জনপ্রিয়তার দিকটিকে গুরত্ব দেওয়া হয় এসব কাজের মূল্যায়নে। এক্ষেত্রে ভিজিটরের সংখ্যা মূখ্য নয়। তাই কিছু ওয়েব ইনডিকেটরের ভিত্তিতে এগুলোর মূল্যায়ন পক্রিয়া হয় যাতে মানসম্মত ও সম্প্রসারিত এবং অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত হয়।
বাংলানিউজ: প্রতিযোগিতামুলক কার্যক্রমে দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর যে ব্যবধানের কথা শোনা যায় সে সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কি?
লুৎফর রহমান: এ বিষয়টির সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করছি। একমাত্র প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যা কিছুটা পিছিয়ে। লক্ষ্য করলে দেখবেন দেশে যেসব কনটেস্ট হয়ে থাকে সেগুলোতে কোনভাবেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পিছিয়ে পড়ছে না।বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান অত্যন্ত ভাল। তাই আমার আত্মবিশ্বাস থেকে বলছি- আগামী ৫ বছরের মধ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে তালিকার শীর্ষে।
বাংলানিউজ: শিক্ষার্থীরা অনেক সময় সেমিস্টারের সময়কে অপর্যাপ্ত মনে করে, এ ব্যাপারে কি বলবেন।
লুৎফর রহমান: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সৌভাগ্য তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই স্ব স্ব পোগ্রাম শেষ করতে পারছে। প্রতিটি সময়ের সঠিক ব্যবহার হচ্ছে এখানে। একমাত্র সরকারি ছুটি ও ধর্মীয় ছুটি ছাড়া কোনো সময় অপচয় হচ্ছে না। তাছাড়া প্রচুর সুবিধা পাচ্ছে এবং শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে নিত্য নতুন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।এক্ষেত্রে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দুর্ভাগ্যই বলব, নানা ধরনের সমস্যার কারণে মূল্যবান সময়ের অনেকটা নষ্ট হচ্ছে।যেজন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান পর্যবেক্ষণ করে অনেক শির্ক্ষাথী এখানে আসছে। ১৯৯২ সালে দেশে প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন হয়, বর্তমানে এর সংখ্যা ৬২ টি।
বাংলানিউজ: গবেষণা কর্মের উন্নয়নের সঙ্গে আর্থিক দিকটার গুরুত্ব কতখানি আছে।এক্ষেত্রে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা আছে কি?
লুৎফর রহমান: নিজ অর্থায়নে পরিচালিত হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। আর আধুনিক ও গুণগতমানের উদ্ভাবনার সঙ্গে আর্থিক সম্পর্কটা অবশ্যই যুক্ত। আধুনিক শিক্ষা উপকরণ, আইসিটি বেজড বিভিন্ন উপকরণ থেকে শুরু করে শিক্ষা কার্যক্রমের প্রতিটি মাধ্যম ব্যয়বহুল। তাছাড়া এখানকার শিক্ষাদাতাদের ফিন্যান্সিয়াল ডিমান্ড বেশি।
বাংলানিউজ: আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গবেষণাকেন্দ্রের সংখ্যা কত?
লুৎফর রহমান: বিজনেস অ্যান্ড ইকোনোমিক্স, সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ও হিউম্যানিটিজ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্স অনুষদ অনুযায়ী গবেষণাকেন্দ্রের সংখ্যা তিনটি।
বাংলানিউজ: আপনি যে র্যাংকিংয়ের কথা বলছেন, তা নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনাও শোনা যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, এ ফলাফল আন্তর্জাতিক মানের নয়।এর কারণ হিসেবে দায়ী করা হচ্ছে গবেষণা কাজে অদক্ষতা এবং অনীহা। এবিষয়ে কি বলবেন?
লূৎফর রহমান: এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কারণ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্বল ব্যবস্থাপনা। নিয়ম নীতিকে অবহেলা করে স্বেচ্ছাচারিতা চলে সেখানে। যার ফলে মানসম্মত কাজ হচ্ছে না। সংশ্লিষ্টদের সদিচ্ছার অভাবে আজ এমনটা হচ্ছে। সেখানে কোন ইলেকশন নেই। এই দিক থেকে তুলনা করলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনেক এগিয়ে। বিশেষ করে উন্নত ব্যবস্থাপনা। তাছাড়া সবক্ষেত্রেই নীতিমালার বিষয়টি কঠিনভাবে অনুসরণ করা হয়। যার ফলে অভ্যন্তরীণ জটিলতা মুক্ত থাকে।
বাংলানিউজ: বর্তমান সময়ের জোরালো একটি উচ্চারণ ‘তরুণরাই গড়তে পারে ডিজিটাল বাংলাদেশ’ তো বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের এই অর্জন সরকারের সেই প্রত্যাশা পূরণে কতটা ভূমিকা রাখছে?
লুৎফর রহমান: বাংলাদেশের আইসিটি মন্ত্রী, বলতে গেলে তিনিও তরুণ।তথ্যপ্রযুক্তিতে নিত্য নতুন যেসব উদ্ভাবন আসছে সেগুলোর অধিকাংশই আসছে নতুন প্রজন্ম থেকে এবং এক্ষেত্রে জড়িত সবাই প্রায় তরুণ। অসম্ভব রকমের আগ্রহ দক্ষতা এদের মধ্যে সুস্পষ্ট। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অর্জন নিশ্চয় ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পুরণ করছে।
বাংলানিউজ: বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জিত মূল্যবান অর্জন বা অ্যাওয়ার্ড সম্পর্কে কিছু বলেন?
লুৎফর রহমান: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষায় ও তথ্যপ্রযুক্তিতে অবদান, পরিবেশ উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচন বিষয়ক অনেক কাজের স্বীকৃতি পেয়েছে ড্যাফোডিল। অতি সম্প্রতি এশিয়ার সেরা বিজনেস স্কুল অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে। অসাধারণ ব্র্যান্ডিং এবং মার্কেটিংয়ের জন্য বাংলাদেশে এই প্রথম ড্যাফোডিলের শীর্ষস্থানীয় তিন শিক্ষককে ‘তৃতীয় সিএমও এশিয়া- ব্র্যান্ড লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম স্থানে আছে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়।
মুল নিউজ লিংক:
http://banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=861ad02466a4fb50ecb4725d5c3ca6d4&nttl=15092012138922