61
Politics / Russians love Putin Why?
« on: August 03, 2015, 11:07:47 AM »রুশরা পুতিনকে কেন ভালোবাসে?
দেশের মানুষের কাছে এখনো বেশ জনপ্রিয় পুতিন। ছবি: এএফপিরাশিয়ায় ১৫ বছর আগে প্রথম ক্ষমতায় আসেন ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকে আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রে তিনি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁর সুনাম আছে। আছে দুর্নামও। কারও চোখে তিনি নায়ক, কারও চোখে খলনায়ক। কারও দৃষ্টিতে তিনি স্বৈরশাসক, ছলেবলে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছেন। কেউবা বলে, পুতিন ছাড়া রুশদের রক্ষা করার মতো নেতা নেই।
দোষ-গুণ যাই থাকুক, এই প্রেসিডেন্টকে দেশটির বেশির ভাগ মানুষ এখনো ভালোবাসে। কিন্তু কেন? যুক্তরাজ্যের নিউ স্টেটসম্যান সাময়িকী এই প্রশ্নের উত্তরে পাঁচটি কারণের কথা উল্লেখ করেছে।
গত প্রায় এক বছরে, বিশেষ করে ইউক্রেন-ইস্যুতে পুতিনের আগ্রাসী মনোভাবের কারণে পশ্চিমাদের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি হয়েছে। নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়েছে রাশিয়া। তবু অনমনীয়ভাবে ইউক্রেনে রুশপন্থী বিদ্রোহীদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন পুতিন।
পশ্চিমারা পুতিনের সমালোচনায় মুখর। তারা রুশ প্রেসিডেন্টকে খলনায়ক হিসেবে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরছে। এতে পুতিনের কিছু যায়-আসে না বলেই মনে হচ্ছে। অন্তত জনমত জরিপের ফল এমন আভাস দিচ্ছে। দেশের মানুষের কাছে এখনো বেশ জনপ্রিয় পুতিন।
রাশিয়ার স্বাধীন জরিপ ও গবেষণা সংস্থা দ্য লেভাদা সেন্টারের সাম্প্রতিক এক জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, দেশটির ৮৭ শতাংশ মানুষ পুতিনকে সমর্থন করে। জুন মাসে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা ছিল ৮৯ শতাংশ। ২০১২ সালে ছিল ৬৪ শতাংশ।
পশ্চিমাদের চক্ষুশূল পুতিনকে রুশরা কেন এত ভালোবাসে?
রাশিয়ার তরুণ ও বয়স্কদের সঙ্গে কথা বলে এই প্রশ্নের উত্তর অনুসন্ধান করার চেষ্টা করেছে নিউ স্টেটসম্যান। রুশদের মধ্যে তাদের বর্তমান প্রেসিডেন্টের বিপুল গ্রহণযোগ্যতার অন্তত পাঁচটি কারণ খুঁজে পেয়েছে তারা।
পুতিনকে একজন দৃঢ়চেতা ও শক্তিশালী রাজনৈতিক নেতা মনে করে দেশটির অধিকাংশ জনগণ। রাশিয়ায় তিনি যতটা সম্মান ও শ্রদ্ধা পেয়েছেন, অন্যরা তা পাননি। তিনি কথায় মানুষকে মুগ্ধ করতে পারেন। প্রতিদ্বন্দ্বীরা তাঁর কাছে নস্যি।
পুতিন রাশিয়ায় মধ্যবিত্ত শ্রেণি গড়েছেন। দেশটির অনেকে এখন রুচিশীল গাড়ি চালায়। বিদেশ ভ্রমণ করে। ভালো পোশাক পরে। পুতিন ক্ষমতায় আসার পর দেশটির মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। বেড়েছে ক্রয়ক্ষমতা। রাশিয়ার পথেঘাটে ঘুরলে পরিবর্তনটা চোখে পড়ে। আর পরিসংখ্যানও তেমনটাই সাক্ষ্য দেয়।
রুশদেরই ভাষ্য, নানা সংস্কারের মাধ্যমে দেশটির সামাজিক উন্নয়নে অবদান রেখেছেন পুতিন। তিনি অবসরভাতা বাড়িয়েছেন। বিনিয়োগ বাড়িয়েছেন শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে। অবকাঠামোর উন্নয়ন ঘটিয়েছেন। সামাজিক নিরাপত্তা জোরদার করেছেন। রাশিয়ায় হত্যাসহ অপরাধ কমে গেছে। এসব পদক্ষেপের কারণে গত ২০ বছরের মধ্যে ২০১৩ সালে প্রথমবার রাশিয়ায় মৃত্যুর চেয়ে জন্মহার বেড়েছে।
রুশরা মনে করে, রাশিয়ার প্রতিপত্তি পুনরুদ্ধার করেছেন পুতিন। তিনি রুশদের মূল্যবোধকে গুরুত্ব দিয়েছেন। দেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। আন্তর্জাতিক চাপের কাছে নতিস্বীকার করেননি। বরং রাশিয়া যে হারিয়ে যায়নি, বিশ্বকে তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রকে টক্কর দিয়েছেন। পুতিন ধীরে ধীরে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা খাতকে পুনর্গঠন করেছেন। কৌশলগতভাবে রাশিয়াকে বিশ্বের কাছে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছেন। পুতিনের বিপুল জনপ্রিয়তার পেছনে এই বিষয়গুলোই সম্ভবত সবচেয়ে বেশি কাজ করছে। এ প্রসঙ্গে দেশটির এক নারীর ভাষ্য, নব্বইয়ের দশকে বিশ্ব আমাদের তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশ হিসেবে বিবেচনা করত, এখন আমরা একটি শক্তি হিসেবে গণ্য।
সবশেষ কথা হলো, রাশিয়ায় এই মুহূর্তে পুতিনের বিকল্প নেই। নেতৃত্বের যোগ্যতায় বিরোধী রাজনীতিবিদেরা মোটেও তাঁর সমতুল্য নয়।
Source : http://www.prothom-alo.com/international/article/592348/