Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - habib

Pages: 1 ... 3 4 [5] 6 7 8
61
Politics / Russians love Putin Why?
« on: August 03, 2015, 11:07:47 AM »
রুশরা পুতিনকে কেন ভালোবাসে?


দেশের মানুষের কাছে এখনো বেশ জনপ্রিয় পুতিন। ছবি: এএফপিরাশিয়ায় ১৫ বছর আগে প্রথম ক্ষমতায় আসেন ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকে আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রে তিনি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁর সুনাম আছে। আছে দুর্নামও। কারও চোখে তিনি নায়ক, কারও চোখে খলনায়ক। কারও দৃষ্টিতে তিনি স্বৈরশাসক, ছলেবলে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছেন। কেউবা বলে, পুতিন ছাড়া রুশদের রক্ষা করার মতো নেতা নেই।

দোষ-গুণ যাই থাকুক, এই প্রেসিডেন্টকে দেশটির বেশির ভাগ মানুষ এখনো ভালোবাসে। কিন্তু কেন? যুক্তরাজ্যের নিউ স্টেটসম্যান সাময়িকী এই প্রশ্নের উত্তরে পাঁচটি কারণের কথা উল্লেখ করেছে।
গত প্রায় এক বছরে, বিশেষ করে ইউক্রেন-ইস্যুতে পুতিনের আগ্রাসী মনোভাবের কারণে পশ্চিমাদের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি হয়েছে। নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়েছে রাশিয়া। তবু অনমনীয়ভাবে ইউক্রেনে রুশপন্থী বিদ্রোহীদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন পুতিন।

পশ্চিমারা পুতিনের সমালোচনায় মুখর। তারা রুশ প্রেসিডেন্টকে খলনায়ক হিসেবে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরছে। এতে পুতিনের কিছু যায়-আসে না বলেই মনে হচ্ছে। অন্তত জনমত জরিপের ফল এমন আভাস দিচ্ছে। দেশের মানুষের কাছে এখনো বেশ জনপ্রিয় পুতিন।

রাশিয়ার স্বাধীন জরিপ ও গবেষণা সংস্থা দ্য লেভাদা সেন্টারের সাম্প্রতিক এক জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, দেশটির ৮৭ শতাংশ মানুষ পুতিনকে সমর্থন করে। জুন মাসে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা ছিল ৮৯ শতাংশ। ২০১২ সালে ছিল ৬৪ শতাংশ।

পশ্চিমাদের চক্ষুশূল পুতিনকে রুশরা কেন এত ভালোবাসে?
রাশিয়ার তরুণ ও বয়স্কদের সঙ্গে কথা বলে এই প্রশ্নের উত্তর অনুসন্ধান করার চেষ্টা করেছে নিউ স্টেটসম্যান। রুশদের মধ্যে তাদের বর্তমান প্রেসিডেন্টের বিপুল গ্রহণযোগ্যতার অন্তত পাঁচটি কারণ খুঁজে পেয়েছে তারা।

পুতিনকে একজন দৃঢ়চেতা ও শক্তিশালী রাজনৈতিক নেতা মনে করে দেশটির অধিকাংশ জনগণ। রাশিয়ায় তিনি যতটা সম্মান ও শ্রদ্ধা পেয়েছেন, অন্যরা তা পাননি। তিনি কথায় মানুষকে মুগ্ধ করতে পারেন। প্রতিদ্বন্দ্বীরা তাঁর কাছে নস্যি।

পুতিন রাশিয়ায় মধ্যবিত্ত শ্রেণি গড়েছেন। দেশটির অনেকে এখন রুচিশীল গাড়ি চালায়। বিদেশ ভ্রমণ করে। ভালো পোশাক পরে। পুতিন ক্ষমতায় আসার পর দেশটির মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। বেড়েছে ক্রয়ক্ষমতা। রাশিয়ার পথেঘাটে ঘুরলে পরিবর্তনটা চোখে পড়ে। আর পরিসংখ্যানও তেমনটাই সাক্ষ্য দেয়।

রুশদেরই ভাষ্য, নানা সংস্কারের মাধ্যমে দেশটির সামাজিক উন্নয়নে অবদান রেখেছেন পুতিন। তিনি অবসরভাতা বাড়িয়েছেন। বিনিয়োগ বাড়িয়েছেন শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে। অবকাঠামোর উন্নয়ন ঘটিয়েছেন। সামাজিক নিরাপত্তা জোরদার করেছেন। রাশিয়ায় হত্যাসহ অপরাধ কমে গেছে। এসব পদক্ষেপের কারণে গত ২০ বছরের মধ্যে ২০১৩ সালে প্রথমবার রাশিয়ায় মৃত্যুর চেয়ে জন্মহার বেড়েছে।

রুশরা মনে করে, রাশিয়ার প্রতিপত্তি পুনরুদ্ধার করেছেন পুতিন। তিনি রুশদের মূল্যবোধকে গুরুত্ব দিয়েছেন। দেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। আন্তর্জাতিক চাপের কাছে নতিস্বীকার করেননি। বরং রাশিয়া যে হারিয়ে যায়নি, বিশ্বকে তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রকে টক্কর দিয়েছেন। পুতিন ধীরে ধীরে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা খাতকে পুনর্গঠন করেছেন। কৌশলগতভাবে রাশিয়াকে বিশ্বের কাছে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছেন। পুতিনের বিপুল জনপ্রিয়তার পেছনে এই বিষয়গুলোই সম্ভবত সবচেয়ে বেশি কাজ করছে। এ প্রসঙ্গে দেশটির এক নারীর ভাষ্য, নব্বইয়ের দশকে বিশ্ব আমাদের তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশ হিসেবে বিবেচনা করত, এখন আমরা একটি শক্তি হিসেবে গণ্য।

সবশেষ কথা হলো, রাশিয়ায় এই মুহূর্তে পুতিনের বিকল্প নেই। নেতৃত্বের যোগ্যতায় বিরোধী রাজনীতিবিদেরা মোটেও তাঁর সমতুল্য নয়।

Source : http://www.prothom-alo.com/international/article/592348/

62
Namaj/Salat / An Exceptional Prayer…Salaatut Tasbeeh
« on: August 02, 2015, 04:51:26 PM »
An Exceptional Prayer...Salaatut Tasbeeh

In life there are occasions and opportunities where a person has a chance to increase in profits and rewards significantly. One such opportunity is the Blessed Month of Ramadaan, wherein rewards are multiplied enormously. This is a time where we can exert ourselves in prayers to gain nearness to Allah Ta'ala.

An exceptional prayer that can be performed in Ramadaan as well as throughout the year is Salaatut Tasbeeh, a special prayer taught to the Muslim Ummah by The Messenger of Allah (Peace be upon him).

Salatut Tasbeeh is a special Salaah that carries great rewards and blessings.  Hazrat Abdullah ibn Abbas (R.A) reports that Nabi (S.A.W) said to him: "O Abbas! O my uncle! Should I present to you a gift? Should I bestow something to you? Should I inform you of something greatly beneficial? Should I show you such an act which, if you render it, Allah will forgive all your sins – old and new, those committed in error and those committed deliberately, sins committed publicly or privately? The act is to perform four Rakaats (Salatut Tasbeeh) ... (after the Messenger of Allah (S.A.W) taught him the way of performing this Salaah, he said): If possible, perform this Salaah daily; if you are unable, then perform it once a week. If you are unable, then perform it once a month; if you are unable, then perform it once a year and if you are unable to do even this, then perform it at least once in a lifetime." (Hadith-Abu Dawood)

WHEN TO PRAY:

This Salaah (namaz) is offered in four rakat at any convenient time and can be read in any part of the day and night keeping in mind the forbidden times for performing Salaah (i.e. Zawal , Sunrise and Sunset times). It is an excellent practice during the Mubarak(blessed) nights of Ramadhaan or on any other auspicious night.

The Tasbeeh(words of praise)  to be recited in Salatut Tasbeeh:

"Subhan allahi wal hamdulillahi wa la ilaha illal laahu wallahu akbar" 

The words "La Hawla wala Quwwata illa billahil Aliyyil Azeem" may also be added at the end of the above Tasbeeh.

METHOD:

FIRST RAKA'AH

·         After Thana - 15 Times

·         After the Surah and before Ruku - 10 Times

·         In Ruku after the Tasbeeh - 10 Times

·         In Qaumah (standing position after Ruku) - 10 Times

·         In (first) Sajda after the Tasbeeh - 10 Times

·         In Jalsa (sitting position between the two Sajdas) - 10 Times

·         In (second) Sajda after the Tasbeeh - 10 Times

·         The second, third and fourth Rakaats will be read in the same manner.

Note:

1. In every Rakat, the Tasbeeh will be recited 75 times totalling 300 times in the entire Salah.

2. There are also other methods of praying Salatut Tasbeeh which is correct and acceptable.

POINTS TO REMEMBER:

1) Do not count loudly.

2) Do not count by holding a Bead Tasbeeh(prayer beads) or a counter in your hand.

3) You may count by pressing the fingers as a reminder. For example if you are in Ruku. You may press small finger of your right hand first for the first count, then the finger next to it for second count, then the middle finger for third count, following this method until you reach the small finger of left hand will give you an exact count of ten. Use the same method in Qiyaam, Sajdah and Jalsa.

May Allah Ta'ala accept our ibadah(worship) and grant us an elevated position in Jannah(paradise).

63
Namaj/Salat / 11 Benefits of Prayer incredible !!!
« on: August 02, 2015, 04:28:19 PM »
নামাজের অবিশ্বাস্য ১১ টি উপকারিতা !!!


একজন মুসলমান হিসেবে আমরা সবাই নামাজ পড়ে থাকি কেননা নামাজ বেহেস্তের চাবি কাঠি। তবে নামাজ কি শুধু পরকালেই উপকারে আসে নাকি দুনিয়াতেও রয়েছে এর ব্যাপক উপকারিতা আসুন জেনে নিয় নামাজের অবিশ্বাস্য ১১ টি উপকারিতা ।

১. নামাজে যখন সিজদা করা হয় তখন আমাদের মস্তিস্কে রক্ত দ্রুত প্রবাহিত হয় ফলে আমাদের স্মৃতি শক্তি অনেকবৃদ্ধি পায়।

২. নামাজের যখন আমরা দাড়াই তখন আমাদের চোখ জায়নামাজের সামনের ঠিক একটি কেন্দ্রে স্থির অবস্থানে থাকে ফলে মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।

৩. নামাজের মাধ্যমের আমাদের শরীরের একটি ব্যায়াম সাধিত হয়এটি এমন একটি ব্যায়াম যা ছোট বড় সবাই করতে পারে।

৪. নামাজের মাধ্যমে আমাদের মনের অসাধারন পরিবর্তন আসে।

৫. নামাজ সকল মানুষের দেহের কাঠামো বজায় রাখেফলে শারীরিক বিকলঙ্গতা লোপ পায়।

৬. নামাজ মানুষের ত্বক পরিষ্কার রাখে যেমন ওজুর সময় আমাদের দেহের মূল্যবান অংশগুলো পরিষ্কার করা হয় এর ফলে বিভিন্ন প্রকার জীবানু হতে আমরা সুরক্ষিত থাকি।

৭. নামাজে ওজুর সময় মুখমন্ডল ৩ বার ধৌত করার ফল আমাদের মুখের ত্বক উজ্জল হয় এবং মুখের দাগ কম দেখা যায়।

৮. ওজুর সময় মুখমন্ডল যেভাবে পরিস্কার করা হয় তাতে আমাদের মুখে একপ্রকার মেসেস তৈরি হয় ফলে আমাদের মুখের রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পায় এবং বলিরেখা কমে যায়।

৯. কিশোর বয়সে নামাজ আদায় করলে মন পবিত্র থাকে এর ফলে নানা প্রকার অসামাজিক কাজ সে বিরত থাকে।

১০. নামাজ আদায় করলে মানুষের জীবনী শক্তি বৃদ্ধি পায়।

১১. কেবল মাত্র নামাজের মাধ্যমেই চোখের নিয়ম মত যত্ন নেওয়া হয় ফলে অধিকাংশ নামাজ আদায় কারী মানুষের দৃষ্টি শক্তি বজায় থাকে।

64
ক্রিকেটের যে রেকর্ডগুলো ভাঙতে পারছে না কেউ !!!

শচীন টেন্ডুলকারের ১০০ আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরির রেকর্ডটি ভাঙার কেউ কি আছেন? ছবি: ফাইল ছবি

ক্রিকেট খেলা হচ্ছে সংখ্যাভিত্তিক খেলা। আর সংখ্যার খেলা ক্রিকেটে রেকর্ড ও নিত্য আলোচিত বিষয়। বিশ্ব ক্রিকেটে গত কিছুদিনের রেকর্ড ভাঙার খেলাও এখন একটা খেলায় রূপ নেয়েছে। বিশেষ করে বিগত বছরগুলোতে খেলার সংখ্যা এত বেড়েছে যে রেকর্ড বইয়ে নাম লেখাচ্ছেন অনেক ক্রিকেটার নিত্য নতুন করে। আর রেকর্ড গড়াই হয় ভাঙার জন্য। কিন্তু বিশ্ব ক্রিকেটে এমন অনেক রেকর্ড আছে যেগুলো সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এখনো টিকে রয়েছে । তার কয়েকটির বয়স তো একশও পার করেছে। তবে দেখে নেওয়া যাক এমন কিছু রেকর্ডের কথা-

১. নিঃসঙ্গ শেরপা
এ রেকর্ডের বয়স টেস্ট ইতিহাসের সমান। ইতিহাসের প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেই অনেক গুলো রেকর্ড করে ফেলেছিলেন চার্লস ব্যানারম্যান । টেস্ট ইতিহাসের প্রথম বলের মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। প্রথম রান নিয়েছেন তিনি। প্রথম শতক ও তাঁর! এসব রেকর্ড তো কারও পক্ষেই ভাঙা সম্ভব নয়। কিন্তু আরেকটি রেকর্ড করেছিলেন চার্লস, ১৩৮ বছর পরও যেটি অধরা রইল সবার জন্য। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসের সংগ্রহ ছিল ২৪৫ , যার ১৬৫ রান এসেছিল চার্লসের ব্যাট থেকে। দলের ৬৭ শতাংশ রান কেবল একজন ব্যাটসম্যানের ব্যাট থেকে এসেছে! দলীয় ২৪০ রানের মাথায় ইনজুরির কারণে মাঠ না ছাড়লে রেকর্ডটি আরও বড় হতেই পারত। তবে ততক্ষণে তিনি দলের হয়ে দুই তৃতীয়াংশ রান সংগ্রাহক হয়ে গেছেন। এই রেকর্ড ভাঙতে পারেননি এখনো কেউ।
২. অচেনা ঘাতক
টেস্ট অভিষেকে চমক দেখিয়েছেন অসংখ্য ক্রিকেটার। বিশেষ করে বোলারদের টেস্ট অভিষেকের পারফরম্যান্স তো অধিকাংশ সময় হয় চমক জাগানিয়া। বারবার অচেনা ঘাতকে কাঁটা পড়েছেন অসংখ্য ব্যাটসম্যান । তারপরও অভিষেকে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ডের বয়স ১২০ বছর হয়ে গেল। অ্যাডিলেডে ইংল্যান্ড দলের দ্বিতীয় ইনিংসে অ্যালবার্ট এডউইন ট্রট যখন বোলিং করতে এলেন তখনো বোঝা যাইনি কি হতে যাচ্ছে কিছুক্ষণের মধ্যেই। প্রথম ইনিংসে উইকেট শূন্য থাকা এই ডানহাতি দ্বিতীয় ইনিংসে ২৭ ওভার বল করে ৪৩ রানের বিনিময়ে ৮ উইকেট তুলে নেন। অস্ট্রেলিয়ান এই বোলারের রেকর্ড ১২০ বছর পরেও অক্ষুণ্ন রয়েছে । এই রেকর্ড ভাঙার কাছাকাছি কেবল তাঁর স্বদেশি বব মেসি যেতে পেরেছিলেন। তাও সেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, ৭৭ বছর পর অভিষিক্ত বব ৮ উইকেট নিয়েছিলেন ৫৩ রানের বিনিময়ে।
৩. অচেনা ঘাতক- ব্যাটিং
অভিষেকে ব্যাট করতে নেমে অনেক ব্যাটসম্যান স্নায়ুচাপে ভোগেন বলে শোনা যায়। ইংলিশ ব্যাটসম্যান রেজিন্যাল্ড ফস্টার অবশ্য এই সব স্নায়ুচাপ চাপ-টাপের ধার ধারতেন না। ১৯০৩ সালে সিডনি টেস্টে ব্যাট ৩ উইকেট পরার পর ব্যাট করতে নেমেছিলেন। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন মাঠ ছেড়ে যাচ্ছেন তখন তাঁর নামের পাশে ২৮৭ রান! মাত্র ১৩ রানের জন্য ইতিহাসের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ত্রিশতক হাঁকানোর রেকর্ড হাত ফসকে যায়। সেই সঙ্গে অভিষেকে ত্রিশতক হাঁকানোর অবিস্মরণীয় এক রেকর্ডও হাত ছাড়া করেন তিনি। কিন্তু অভিষেকে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ১১১ বছর পরেও তাঁর বগলদাবা। অভিষেকে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় দ্বিতীয় স্থান দক্ষিণ আফ্রিকান জ্যাক রুডলফের । বাংলাদেশের সঙ্গে চট্টগ্রামে টেস্ট অভিষেকে ২২২ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি।
৪. রানের পাহাড়
ছোট মাঠ, ভারী ব্যাট আর বোলিংয়ে হাজারো শৃঙ্খল মিলিয়ে ক্রিকেটে এখন ব্যাটসম্যানদের জয়জয়কার। ক্রিকেট মানেই এখন রান আর রান। কিন্তু রানের হিসেবে সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ডের বয়স কিন্তু প্রায় শতবর্ষ হতে চলেছে। ১৯২৮ সালের ব্রিসবেন টেস্টে ইংল্যান্ড ৬৭৫ রানে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পর ৮৭ বছর পার হয়ে গেছে । কিন্তু এই রেকর্ড এখনো ভাঙা যায়নি।
ইনিংসে জেতার রেকর্ডের বয়স অবশ্য একটু কম। আজ থেকে ৭৭ বছর আগে ওভালে ইংল্যান্ড তাঁদের চিরশত্রু অস্ট্রেলিয়াকেই ইনিংস এবং ৫৭৯ রানে হারিয়েছিল। সে রেকর্ডও এখনো অক্ষুণ্ন।
৫. ধারাবাহিকতা
টেস্ট ক্রিকেটের রানের রেকর্ড নিয়ে কথা হবে আর স্যার ডন ব্র্যাডম্যান সেখানে আসবেন না এটি অসম্ভব। ১৯৪৮ সালে ওভাল টেস্টে শেষবারের মতো ব্যাট করতে নামার সময় খুব সহজ একটি সমীকরণ ছিল ব্র্যাডম্যানের সামনে। মাত্র ৪ রান করলেই ক্যারিয়ার শেষ করবেন ১০০ গড় নিয়ে। কিন্তু উইলিয়াম হোলিসের বলে শূন্য রানে ফিরে যান তিনি। তারপরও তাঁর ব্যাটিং গড় দাঁড়ায় ৯৯.৯৪! এরপর ৬৭ বছর হতে চলল, ব্যাটিং গড়ে ব্র্যাডম্যানের ধারে কাছেও কেউ যেতে পারেননি।
ডন ব্র্যাডম্যানের আরেকটি রেকর্ডও এখনো অক্ষুণ্ন। নিজের ক্যারিয়ারে ৮০ ইনিংসে ব্যাট করেছেন , তাঁর ২৯ ইনিংসেই শতক হাঁকিয়েছেন। প্রতি ২.৭৬ ইনিংসে একটি শতরান! এই রেকর্ড ও অক্ষুণ্ন আছে গত ৬৭ বছর ধরে।
৬. অল্প স্বল্প গল্প
টেস্টে সর্বনিম্ন রানে গুটিয়ে যাওয়ার রেকর্ড কোন দলের জানেন? না, বিশ্ব ক্রিকেটে যাদের সামর্থ্য নিয়ে সর্বদা আলোচনা হয়— সেই জিম্বাবুয়ে বা বাংলাদেশ নয়। এই রেকর্ডের মালিক নিউজিল্যান্ড। ৬০ বছর আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের মাটিতে ২৭ ওভার ব্যাটিং করে ২৬ করতে পেরেছিল। দলীয় সর্বনিম্ন রানের এই রেকর্ড গত ছয় দশক ধরে নিউজিল্যান্ড বহন করছে। গত ষাট বছরে অন্য কোনো দলের ইনিংস ৪০ রানের নিচে গুটিয়ে যায়নি।
এবং শচীন টেন্ডুলকার
ওয়ানডে ও টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ওয়ানডে ও টেস্ট দুই ক্ষেত্রেই সর্বোচ্চ শতকের মালিক। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৩৪৩৫৭ এবং ঠিক ১০০ টি শতক নিয়ে যে রেকর্ড গড়েছেন ভারতের ‘লিটল মাস্টার’, সেটিও হয়তো এমনই এক রেকর্ডে রূপান্তরিত হচ্ছে। ব্র্যাডম্যানের টেস্ট গড়ের মতো যে রেকর্ড ভাঙার স্বপ্ন দেখা যায় কিন্তু বাস্তবে করে দেখানো প্রায় অসম্ভব। নিকট ভবিষ্যতে এই রেকর্ড ভাঙার কোনো সম্ভাবনা নেই। কে জানে হয়তো ১০০ বছর পরেও যখন ‘যে রেকর্ড অটুট এখনো’ এর তালিকা তৈরি হবে, সেখানে শচীনের নাম জ্বলজ্বল করবে ।

Source : http://www.prothom-alo.com/sports/article/590488/
              আগস্ট ০১, ২০১৫

65
সাকিব–মুশফিকদের প্রেরণা হয়ে আছেন একজন শহীদুর !!

সব প্রথমের আলাদা একটা আবেদন থাকে। আলাদা আবেগ থাকে। স্মৃতির ডানায় ভর করে সেই প্রথমে ফিরে গেলে অপার্থিব আবেশ ভর করে মনে। বাংলাদেশের ক্রিকেটে দারুণ এক প্রথমের সঙ্গে জড়িয়ে তিনি। যে প্রথম চিরদিনই অনুপ্রেরণা হয়ে থেকে যাবে বাংলাদেশের ক্রিকেটে। আজ মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ-সাকিব-সৌম্যরা যত কীর্তি গড়েন, সেগুলোর পথপ্রদর্শক হয়ে থাকেন একজন শহীদুর রহমান। হ্যাঁ, দেশের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচের সর্বোচ্চ স্কোরার তিনি।


শহীদুর রহমান এখন। ছবি: রানা আব্বাস

শহীদুর রহমান নামটি খুব পরিচিত হয়তো নয় এই প্রজন্মের কাছে। আজ থেকে ২৯ বছর আগে ১৯৮৬ সালের ৩১ মার্চ এশিয়া কাপের ম্যাচে ইমরান খান, আবদুল কাদির, ওয়াসিম আকরামদের পাকিস্তানের বিপক্ষে শহীদুরের ব্যাট থেকে এসেছিল সর্বোচ্চ ৩৭ রান। সে সময়কার প্রেক্ষাপট বিচার করুন। দেশের প্রথম ওয়ানডে, প্রতিপক্ষে ইমরান, কাদির, আকরামদের মতো বোলার। দলের ইনিংসই শেষ হয়ে গেছে ৯৪ রানে, সে বিচারে ৩৭ রান কিন্তু অনেক কিছুই। সেদিন সেই বড় ব্যাপারটিই করে দেখিয়েছিলেন এই শহীদুর। বিশ্ব সেরা বোলারদের বিপক্ষে বুক চিতিয়ে লড়ে পথ দেখিয়েছিলেন বাকিদের। পথ দেখিয়েছিলেন আগামী প্রজন্মকেও। দুনিয়াকে জানিয়ে এসেছিলেন এদেশের ক্রিকেটের আগমনী বার্তা। আজ অনেকটুকু পথ এগিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশের ক্রিকেট শ্রদ্ধাবনত চিত্তে পেছনে ফিরে তাকায় তার শুরুর নায়কদের দিকে।

শুরুর অন্যতম নায়ক শহীদুর রহমানের আবাস চট্টগ্রামে। তাঁর কাছে প্রথম ওয়ানডের স্মৃতিগাথা শুনতে চাইলে বেশ খুশিই হলেন। আমন্ত্রণ জানালেন এমএ আজিজ স্টেডিয়াম-সংলগ্ন নিজের মালিকানাধীন রেস্তোরাঁ রয়েল হাটে। আড্ডার জন্য অসাধারণ সেই রেস্তোরাঁয় বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায় স্মৃতির ঝাঁপি মেলে দিলেন তিনি। বললেন, শামীম কবির ভাই, রকিবুল ভাই, আশরাফুল ভাইদের হাত ধরেই বাংলাদেশের ক্রিকেটের পথচলার শুরু। এরপর মশালটা এল আমাদের হাতে। পরে আকরাম-আমিনুলদের হাত ঘুরে বর্তমান প্রজন্মের কাছে এটি পেয়েছে পরিপূর্ণতা। আজকের ক্রিকেটের উন্নতি নাকি এক অদ্ভুত ভালো লাগার অনুভূতি ছড়িয়ে দেয় তাঁর নিজের মনে।

২৩ বছর বয়সে ডাক পেয়েছিলেন জাতীয় দলে। তাও আবার ঐতিহাসিক এক মুহূর্তের সঙ্গী হয়ে। শ্রীলঙ্কার মোরাতুয়ায় এশিয়া কাপের ওই ম্যাচটির অংশ হতে পারার গৌরব ছিল অন্যরকমই, দেশের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ। এর অংশ মানেই ইতিহাসের অংশ হয়ে যাওয়া। রোমাঞ্চও কম ছিল না। নিজেই বললেন, ইমরান খান, জাভেদ মিয়াঁদাদ, আবদুল কাদির, মহসিন খান, মুদাস্‌সর নজররা তখন বিশ্ব ক্রিকেটের প্রতিষ্ঠিত তারকা। সেই দলে ওয়াসিম আকরাম উঠতি তারকা। আমরা খুবই রোমাঞ্চিত ছিলাম এই ম্যাচটা নিয়ে।

সে ম্যাচে ইমরান খান-ওয়াসিম আকরামদের মতো বোলারদের খেলতে এতটুকু বুক কাঁপেনি? কীভাবে ডাকাবুকো সব বোলারদের সামলে সর্বোচ্চ ৩৭ রান করলেন? শহীদের চোখে-মুখে তারুণ্যের অজেয় ভাবটা ফুটে উঠল ভালোভাবেই, ‘ভয় পাব কেন? যদিও ইমরান খানের নেতৃত্বে পাকিস্তান তখন এশিয়ার জায়ান্ট। আমরা পুঁচকে একটা দল। এখন একজন বোলার-ব্যাটসম্যানকে নিয়ে কতভাবে বিশ্লেষণ হয় ম্যাচের আগে। অথচ কোনো ধারণা ছাড়াই সরাসরি ইমরান-ওয়াসিমের মতো বোলারদের সামলাতে হলো। তবে ভেতরে কোনো স্নায়ুচাপ বা ভয় কাজ করেনি। বয়সও কম ছিল। লক্ষ্য ছিল বল আসবে, খেলব। হলে হবে, না হলে নেই। হারানোর যেহেতু কিছুই ছিল না, ভয় পাওয়ারও প্রশ্ন ওঠে না।’ সেদিন ব্যাটিংয়ের সময়ে শহীদকে নাকি কিছুটা স্লেজিং করেছিলেন জাভেদ মিয়াদাঁদ, ‘যখন ব্যাটিং করছিলাম স্লিপ থেকে জাভেদ মিয়াঁদাদ উর্দুতে কিছু বলছিল। তবে ভাষাটা ঠিক বুঝিনি।’

বর্তমান সময়ে একজন উঠতি ক্রিকেটারদের সামনে যেমন আদর্শ হিসেবে থাকেন মাশরাফি-সাকিব-তামিম-মুশফিকরা; তখন শহীদুর রহমানদের সামনে ছিলেন না কেউ। ছিল না তেমন অবকাঠামোগত সুবিধা, অ্যাকাডেমির ব্যবস্থা। ছিল না টিভিতেও অন্য দলের খেলা দেখারও খুব একটা সুযোগ।


বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডে স্কোয়াডে শহীদুর রহমান (দাঁড়ানো বাম দিক থেকে প্রথম)। ছবি: ফাইল ছবি

কঠিন সেই দিনগুলোর কথা যেন জীবন্ত হয়ে উঠল শহীদুর রহমানের চোখে, ‘আশির দশকে ম্যাটিং উইকেটে খেলতাম। আন্তর্জাতিক ম্যাচ তো ম্যাটিং উইকেটে হয় না। আসলে ক্রিকেট খেলতাম শখের বশেই। পড়াশোনার পাশাপাশি সময় কাটাতেই ক্রিকেট চালিয়ে নেওয়া। ফুলটাইম কাজ হিসেবে ক্রিকেটকে বেছে নেওয়া কঠিনই ছিল। সিরিয়াস ক্রিকেটে খেলেছি অনেক পরে এসে।’

খেলোয়াড়ি জীবনে নিয়মিত নামতেন চারে। আক্রমণাত্মক খেলতে ভালোবাসতেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে সে ম্যাচে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ স্ট্রাইকরেট ছিল তাঁরই। তবে ইনিংসটি নিয়ে খানিকটা আক্ষেপ শহীদের কণ্ঠে, ‘রক্ষণাত্মক খেলা আমার ধাঁচে ছিল না। ইনিংসটা ফিফটি ছাড়িয়ে যেতে পারত। আগের দিন প্রচণ্ড বৃষ্টি হয়েছিল। সে সময় এখনকার মতো স্টেডিয়ামে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত ছিল না। আউটফিল্ড ছিল কিছুটা ভেজা, কর্দমাক্ত। আমার ছয়-ছয়টা পুল শট ডিপ মিডউইকেটে পড়ে আটকে গিয়েছিল। ওই পজিশনে কোনো ফিল্ডারও ছিল না। আউটফিল্ড শক্ত থাকলে নিশ্চিত চার। চার গুলো হলে আমার ব্যক্তিগত সংগ্রহটা ৬০-৬৫ রান হয়ে যেতো। হয়তো সেদিনই দেশের হয়ে প্রথম ফিফটিটা হয়ে যায় আমারই।’

স্মৃতিচারণা করতে করতেই শহীদুর জানিয়ে দিলেন অন্যরকম একটি তথ্যও। দেশের হয়ে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে কোনো ম্যাচ ফি পাননি বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। আইসিসির দেওয়া অ্যাপিয়ারেন্স মানি ৫০ হাজার ডলারের প্রায় পুরোটাই নিজেদের কোষাগারে জমা করেছিল সে সমকার বোর্ড। এটা ছাড়া তাদের কোনো উপায়ও ছিল না। সরকারি অনুদানের দয়ায় চলত সে সময়কার বোর্ড। এশিয়া কাপের ঠিক দুমাস পরই ইংল্যান্ডে আইসিসি ট্রফি খেলতে যাওয়ার কথা ছিল। বোর্ড সেই ৫০ হাজার ডলারের পুরোটাই কাজে লাগিয়েছিল ইংল্যান্ড যাওয়ার খরচ সামলাতে।

শহীদুর রহমান অবশ্য একদিক দিয়ে বেশ ভাগ্যবানই। তিনি নিজেই জানালেন সেই সৌভাগ্যের কথা, ‘দলের অন্য খেলোয়াড়দের কেউই কোনো ম্যাচ ফি পায়নি। তবে সর্বোচ্চ ৩৭ রানের ইনিংসটি খেলায় তৎকালীন বোর্ড সভাপতি কে, জেড ইসলাম আমাকে ৩০০ ডলার দিয়েছিলেন। আমি সেই টাকাটা সবার মধ্যে ভাগ করে দিয়েছিলাম।’

পরের ওয়ানডেতেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে করেছিলেন দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৫ রান। ওই দুটো ওয়ানডের পর আর কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা হয়নি শহীদের। ক্যারিয়ারের ইতি টানতে হয়েছে একটু আগেভাগেই। স্বপ্নের সীমা কেন এতটুকু সীমাবদ্ধ থাকল? দুই সন্তানের জনক, বর্তমানে সফল এ ব্যবসায়ী বললেন, ‘স্বপ্ন বড় হবে কী; দেখার আগেই তো শেষ! আসলে সামনে কোনো লক্ষ্য ছিল না। এখন একজন খেলোয়াড় লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারে। ভাবে, দুই তিন বছর নিয়মিত জাতীয় দলে খেলতে পারলেই কোটি টাকা আয় করা যাবে। আমাদের সময় তা ছিল না। নিজের চলার টাকাটা জোগাড় হলেই খুশি। ক্রিকেট খেলেছি কেবল ভালোবাসা থেকেই। তবে একটা সময় মনে হলো ক্রিকেটে ভবিষ্যৎ গড়া কঠিন। এ কারণে খেলা ছেড়ে ব্যবসায় যুক্ত হলাম। এখন ক্রিকেটকে পৃষ্ঠপোষকতা করি। ক্রিকেটের সঙ্গে নানাভাবেই আছি।’

আলাপ জমে ওঠে দারুণভাবে। বৃষ্টিমুখর বিকেলটা কীভাবে দ্রুত যেন কেটে যায়। সোনালি অতীতের নানা গল্প শেষে শহীদুর রহমানকে উঠতে হয়। ছুটতে হয় সামনের দিকে।

বাংলাদেশের ক্রিকেটও এখন ছুটছে সামনের দিকে। তবে ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা শহীদুর রহমানরা বিস্মৃত হন না কখনোই, তাঁদের বিস্মৃত হওয়া মানে যে নিজেদের শিকড়কেই অস্বীকার করা।

Source: http://www.prothom-alo.com/sports/article/586210/
             জুলাই ২৭, ২০১৫

66
মুস্তাফিজের যে কীর্তি আর কারও নেই!!!

 
বৃষ্টি ভেজা ড্র। তবে এই নিষ্প্রাণ ম্যাচেও একটা অনন্য কীর্তি যোগ হলো মুস্তাফিজুর রহমানের নামের পাশে। এই টেস্টে ম্যাচ সেরা হয়েছেন এই বাঁ-হাতি পেসার। অভিষেকেই ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন ওয়ানডেতেও। ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ওয়ানডে ও টেস্ট দুই ধরনের ক্রিকেটে অভিষেকেই ম্যাচ সেরা হওয়ার প্রথম কীর্তি গড়লেন এই তরুণ।

অভিষেকের পর থেকেই একের পর কীর্তির পাশে নিজের নাম লেখাচ্ছেন। ‘রেকর্ড গড়া তো আপনার কাছে ডাল-ভাত হয়ে গেছে!’ মন্তব্যটা করতেই হো হো করে হেসে উঠলেন। হাসি সামলে কেবল বললেন, ‘সব আল্লাহর ইচ্ছা।’

ড্রেসিং রুমে নাকি বেশ সপ্রতিভ। বাইরে থেকে অবশ্য বোঝার উপায় নেই। তবে ২২ গজে নিজের বাড়ির উঠোনের চেয়েও বেশি সপ্রতিভ। মাঠে এত স্বচ্ছন্দ, মনেই হয় না আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছে মাত্র চার মাস আগে। সারল্যমাখা চেহারায় একেকটা ফণা তুলে গুঁড়িয়ে দিচ্ছেন প্রতিপক্ষের ব্যাটিং লাইন-আপ। একটার পর একটা কীর্তি গড়ে অল্প সময়ে সব আলো কেড়ে নিয়েছেন নিজের দিকে।

অভিষেকে চমক দেখানো খেলোয়াড়ের সংখ্যা নেহাতই কম নয়। টেস্ট এবং ওয়ানডে ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত ১০০ জন খেলোয়াড় অভিষেকে ম্যাচ সেরা হয়েছেন। কিন্তু টেস্ট এবং ওয়ানডে অভিষেকেই ম্যাচসেরা হতে পারেননি তাঁরা কেউই। মুস্তাফিজের এই অর্জন তাই অনন্য।

দারুণ এ রেকর্ড গড়ে যারপরনাই খুশি। অবশ্য প্রতিক্রিয়া প্রকাশে যথারীতি পরিমিত, ‘ভালো তো লাগেই।’ কথা এমনিতে কমই বলেন। শুরুতে জড়তা থাকলেও এখন বেশ গুছিয়ে বলতে পারেন। সারল্যমাখা মুস্তাফিজই দুর্বোধ্য ধাঁধা হয়ে যান ডাকাবুকো সব ব্যাটসম্যানদের কাছে।

শুরুর এই প্রেরণা নিয়ে মুস্তাফিজ এগিয়ে যেতে চান আরও সামনে। সবচেয়ে বড় কথা, এসব রেকর্ড-টেকর্ডে বেশি মাথা ঘামাতে চান না। মুস্তাফিজের ভাবনায় কেবল দেশের জন্য কিছু করা, ‘আমার মূল লক্ষ্য অনেক দিন জাতীয় দলের হয়ে খেলা। দেশের জন্য আরও কিছু করা। দেশের সুনাম বয়ে আনতে ভূমিকা রাখা।’

মাত্র কয়েক দিনে জীবনে কত পরিবর্তন! কোটি মানুষের মুখে এখন ধ্বনিত হয় একটি নাম—মুস্তাফিজ! ১৬ কোটি মানুষের ভালোবাসার নাম—মুস্তাফিজ। দলের সাফল্যে যাঁর নাম সবার আগে আসে—মুস্তাফিজ!

হঠাৎ করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এলেও জীবনে কোনো পরিবর্তন অনুভব হয় না মুস্তাফিজের। এখানেও মুস্তাফিজের দর্শনটা আশ্চর্য সরল, ‘জীবনের কোনো পার্থক্য দেখি না। আগে যেরকম ছিলাম, এখনো সেরকমই আছি। এ ছাড়া কীই-বা বলার আছে। আমার জন্য দোয়া করবেন।’
তা আর বলতে। তার জন্য দোয়ায় মিলিত হয় ৩২ কোটি হাত!

Source:  http://www.prothom-alo.com/sports/article/584458
              জুলাই ২৫, ২০১৫

67
লিটন কুমার দাস, এক চওড়া ব্যাটের নায়ক!


বড় ইনিংস খেলা হয়নি এখনো। একটি মাত্র অর্ধশতক। তবে নিজের জাত চিনিয়েছেন তার খেলা ছোট খাট ইনিংস গুলোতেই।
এই ডান হাতি ব্যাটসম্যানের স্ট্রোক খেলার ধরন দেখলেই  মনে ভেসে উঠে মিষ্টার ক্রিকেট খ্যাত মাইক হাসির ছান্দিক ব্যাটিং
এর কথা। অনেকটাই মিল আছে এই দুজনের ক্লাসিকাল কাভার ড্রাইভের মধ্যে। আর উইকেটের পিছনেতো রীতিমত কুমার
সাঙ্গাকারা। বলের ধরন দেখে শরীরের মুভমেন্ট, আপিলের ধরন ও লেগ স্ট্যাম্পের বাইরের বল গুলোকে অনায়াসে তালুবন্দি
করা দেখতে দেখতে আপনিও হয়তো সাঙ্গাকারার মাঝে এই উইকেট কিপারকে গুলিয়ে ফেলতে পারেন। হুম, কথা হচ্ছে
টাইগার উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান - লিটন কুমার দাস কে নিয়ে। 

তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসার সিঁড়িটা যেকোন ক্রিকেটারেরই ঈর্ষা হওয়ার মত। নিজেকে ভাল ভাবে প্রমাণ করেই তবে
জাতীয় দলে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন লিটন। প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটে তিনি ৩৮ টি ইনিংস খেলেছেন ২২ ম্যাচে। আছে ৯টি
অর্ধশতক ও ৬ টি শত রানের চমকপ্রদ ইনিংস।  শতক অর্ধশতকের সংখ্যাটা কাকতালিয় ভাবে 'নয়-ছয়' হলেও  প্রথম শ্রেনীর
ক্রিকেটে তার রান গড় ৫৩.১৬ ! বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এত ভাল গড় নিয়ে জাতীয় দলে আসেননি কোন ক্রিকেটারই।
প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটে তার ব্যাট অহরহ হেসেছে। রান করার ক্ষেত্রে তার ব্যাট যে যথেষ্ট চওড়া তার প্রমানও মিলেছে বহুবার।
কিন্তু আন্তর্জাতীক ক্রিকেটে নিজেকে স্থীর করতে একটু যেন সময় নিচ্ছেন লিটন কুমার দাস। 

শুরুর মধ্যে যেন একটু জড়তা। মাঝে মধ্যে সেটা কাটিয়ে কিছু সাবলিল শট। দ্রুত উন্নতি করছেন লিটন কুমার দাস। এখনো
পর্যন্ত খেলেছেন ৬টি একদিনের ম্যাচ। সেখানে ৩৪ ও ৩৬ রানের দুটি মাঝারি মানের ইনিংসও আছে। ভারতের বিপক্ষে ৪১ বলে
খেলা ৩৬ রানের ইনিংসটিতে আছে ৫ টি অসাধারন চারের মার আর ৩৪ রানের ইনিংসটি সাজানো ৩ টি বাউন্ডারি দিয়ে। দক্ষিন
আফ্রিকার বিপক্ষে তার খেলা ১৭ রানের ইনিংসটি এসেছে ১৪ বল থেকে। সাবলিল ব্যাট চালাচ্ছিলেন। ২ টি চার আর একটি দর্শনীয়
ছয় এর পর ১৪ তম বলটি রাবাদার অসাধারন ইয়োর্কারে রক্ষা পায়নি স্ট্যাম্প। বোলারের কৃতিত্ব বললে ভুল হয়না।

দক্ষিন আফ্রিকার বিপক্ষে চলমান টেস্ট সহ লিটন দাসের আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচ সংখ্যা দুই। ইনিংস সংখ্যাও দুই। ভারতের বিপক্ষে
২য় ইনিংসে ব্যাট করার সুযোগ পাননি তিনি। প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ৪৪। ৮টি চার ও একটি ছক্কায় সাজানো সেই ইনিংসটি
খেলতে লিটন খরচ করেছিলেন ৪৫টি বল। তার ব্যাট যে দিন দিন আরো চওড়া হবার ইঙ্গিত দিচ্ছে সেটা বুঝতে বাকি ছিলনা
নির্বাচকদের। দক্ষিন আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট দলেও ঠাই। প্রথম ইনিংসে নির্বাচকদের আস্থার মর্যাদাও রেখেছেন লিটন।
ডি ককের অসাধারন ক্যাচে প্যাভিলয়নে ফেরার আগে খেলেছেন ৫০ রানের একটি সাজানো - গুছানো ইনিংস। ১০২ বলে খেলা
এ ইনিংসটিতে বাউন্ডারি ছিল ৭ টি। প্রায় প্রত্যেকটি বাউন্ডারি এসেছে নান্দনিক সব ক্রিকেটীয় শটে। বুঝার উপায় ছিলনা মাত্র
২য় আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচ খেলতে নেমেছেন এই ব্যাটসম্যান। ইনিংসটা আরো লম্বা হতে পারতো। কুইনটন ডি ককের রেয়ার
ক্যাচে পরিনত হওয়াই প্রথম ইনিংসে পরে ব্যাট করে বাংলাদেশের লিড নেয়ার রেয়ার ম্যাচে টাইগারদের ইনিংস থেমেছে
৩২৬ এ। ৭৮ রানের লিড পেয়েছে বাংলাদেশ।

ক্রিকেটের এই বিশ্ব মঞ্চে নার্ভাসনেস অনেকের মধ্যেই কাজ করে। গ্রেটরা সেটাকে কাটিয়ে উঠে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন
আগামির তারকা হিসেবে। দিনাজপুরের ছেলে লিটন কুমার দাসও নিজেকে মেলে ধরবেন, তার ব্যাটে চড়ে আসবে টাইগারদের
অনেক জয়, বিশ্ব ক্রিকেটে টাইগারদের অগ্রগতি চলতেই থাকবে আর স্বপ্ন ছুঁয়ে যাবে আরেকটি স্বপ্নকে। লিটনের ব্যাটও ইঙ্গিত
দিচ্ছে সেদিকেরই।  এগিয়ে যাক টাইগাররা, শুভ কামনা রইলো লিটন দাসের জন্য।

Source : http://www.tigercricket.com.bd/news/cricket-exclusive/21

68
Science Discussion Forum / Ask a hundred keyboard shortcuts !!
« on: July 23, 2015, 10:56:28 AM »
জেনে নিন কি-বোর্ডের একশটি শর্টকাট


কম্পিউটারে মাউস দিয়ে ছোটখাট কাজ করাটা সাধারণ ব্যবহার‌ীদের জন্য খুবই আরামদায়ক। কিন্তু বড় ও জটিল সফটওয়্যারে কাজ করতে হলে দক্ষতা ও গতি বাড়াতে অবশ্যই কি-বোর্ড শর্টকাট জানতে হবে। অভ্যস্ত না হলেও চেষ্টা করে দেখুন, সাধারণ এমএস ওয়ার্ডে লেখালেখির সময়ও কিছু শর্টকাট জানা থাকলে কাজে গতি কতো বেড়ে যায়। এখানে এমন একশর বেশি শর্টকাটের একটি তালিকা দেয়া হলো:

Keyboard Shorcuts (Microsoft Windows)

1. CTRL+C (Copy)
2. CTRL+X (Cut)
3. CTRL+V (Paste)
4. CTRL+Z (Undo)
5. DELETE (Delete)
6. SHIFT+DELETE (Delete the selected item permanently without placing the item in the Recycle Bin)
7. CTRL while dragging an item (Copy the selected item)
8. CTRL+SHIFT while dragging an item (Create a shortcut to the selected item)
9. F2 key (Rename the selected item)
10. CTRL+RIGHT ARROW (Move the insertion point to the beginning of the next word)
11. CTRL+LEFT ARROW (Move the insertion point to the beginning of the previous word)
12. CTRL+DOWN ARROW (Move the insertion point to the beginning of the next paragraph)
13. CTRL+UP ARROW (Move the insertion point to the beginning of the previous paragraph)
14. CTRL+SHIFT with any of the arrow keys (Highlight a block of text)
SHIFT with any of the arrow keys (Select more than one item in a window or on the desktop, or select text in a document)
15. CTRL+A (Select all)
16. F3 key (Search for a file or a folder)
17. ALT+ENTER (View the properties for the selected item)
18. ALT+F4 (Close the active item, or quit the active program)
19. ALT+ENTER (Display the properties of the selected object)
20. ALT+SPACEBAR (Open the shortcut menu for the active window)
21. CTRL+F4 (Close the active document in programs that enable you to have multiple documents opensimultaneou sly)
22. ALT+TAB (Switch between the open items)
23. ALT+ESC (Cycle through items in the order that they had been opened)
24. F6 key (Cycle through the screen elements in a window or on the desktop)
25. F4 key (Display the Address bar list in My Computer or Windows Explorer)
26. SHIFT+F10 (Display the shortcut menu for the selected item)
27. ALT+SPACEBAR (Display the System menu for the active window)
28. CTRL+ESC (Display the Start menu)
29. ALT+Underlined letter in a menu name (Display the corresponding menu) Underlined letter in a command name on an open menu (Perform the corresponding command)
30. F10 key (Activate the menu bar in the active program)
31. RIGHT ARROW (Open the next menu to the right, or open a submenu)
32. LEFT ARROW (Open the next menu to the left, or close a submenu)
33. F5 key (Update the active window)
34. BACKSPACE (View the folder onelevel up in My Computer or Windows Explorer)
35. ESC (Cancel the current task)
36. SHIFT when you insert a CD-ROMinto the CD-ROM drive (Prevent the CD-ROM from automatically playing)

Dialog Box – Keyboard Shortcuts
1. CTRL+TAB (Move forward through the tabs)
2. CTRL+SHIFT+TAB (Move backward through the tabs)
3. TAB (Move forward through the options)
4. SHIFT+TAB (Move backward through the options)
5. ALT+Underlined letter (Perform the corresponding command or select the corresponding option)
6. ENTER (Perform the command for the active option or button)
7. SPACEBAR (Select or clear the check box if the active option is a check box)
8. Arrow keys (Select a button if the active option is a group of option buttons)
9. F1 key (Display Help)
10. F4 key (Display the items in the active list)
11. BACKSPACE (Open a folder one level up if a folder is selected in the Save As or Open dialog box)

Microsoft Natural Keyboard Shortcuts
1. Windows Logo (Display or hide the Start menu)
2. Windows Logo+BREAK (Display the System Properties dialog box)
3. Windows Logo+D (Display the desktop)
4. Windows Logo+M (Minimize all of the windows)
5. Windows Logo+SHIFT+M (Restorethe minimized windows)
6. Windows Logo+E (Open My Computer)
7. Windows Logo+F (Search for a file or a folder)
8. CTRL+Windows Logo+F (Search for computers)
9. Windows Logo+F1 (Display Windows Help)
10. Windows Logo+ L (Lock the keyboard)
11. Windows Logo+R (Open the Run dialog box)
12. Windows Logo+U (Open Utility Manager)
13. Accessibility Keyboard Shortcuts
14. Right SHIFT for eight seconds (Switch FilterKeys either on or off)
15. Left ALT+left SHIFT+PRINT SCREEN (Switch High Contrast either on or off)
16. Left ALT+left SHIFT+NUM LOCK (Switch the MouseKeys either on or off)
17. SHIFT five times (Switch the StickyKeys either on or off)
18. NUM LOCK for five seconds (Switch the ToggleKeys either on or off)
19. Windows Logo +U (Open Utility Manager)
20. Windows Explorer Keyboard Shortcuts
21. END (Display the bottom of the active window)
22. HOME (Display the top of the active window)
23. NUM LOCK+Asterisk sign (*) (Display all of the subfolders that are under the selected folder)
24. NUM LOCK+Plus sign (+) (Display the contents of the selected folder)

MMC COnsole Windows Shortcut keys
1. SHIFT+F10 (Display the Action shortcut menu for the selected item)
2. F1 key (Open the Help topic, if any, for the selected item)
3. F5 key (Update the content of all console windows)
4. CTRL+F10 (Maximize the active console window)
5. CTRL+F5 (Restore the active console window)
6. ALT+ENTER (Display the Properties dialog box, if any, for theselected item)
7. F2 key (Rename the selected item)
8. CTRL+F4 (Close the active console window. When a console has only one console window, this shortcut closes the console)

Remote Desktop Connection Navigation
1. CTRL+ALT+END (Open the Microsoft Windows NT Security dialog box)
2. ALT+PAGE UP (Switch between programs from left to right)
3. ALT+PAGE DOWN (Switch between programs from right to left)
4. ALT+INSERT (Cycle through the programs in most recently used order)
5. ALT+HOME (Display the Start menu)
6. CTRL+ALT+BREAK (Switch the client computer between a window and a full screen)
7. ALT+DELETE (Display the Windows menu)
8. CTRL+ALT+Minus sign (-) (Place a snapshot of the active window in the client on the Terminal server clipboard and provide the same functionality as pressing PRINT SCREEN on a local computer.)
9. CTRL+ALT+Plus sign (+) (Place asnapshot of the entire client window area on the Terminal server clipboardand provide the same functionality aspressing ALT+PRINT SCREEN on a local computer.)

Microsoft Internet Explorer Keyboard Shortcuts
1. CTRL+B (Open the Organize Favorites dialog box)
2. CTRL+E (Open the Search bar)
3. CTRL+F (Start the Find utility)
4. CTRL+H (Open the History bar)
5. CTRL+I (Open the Favorites bar)
6. CTRL+L (Open the Open dialog box)
7. CTRL+N (Start another instance of the browser with the same Web address)
8. CTRL+O (Open the Open dialog box,the same as CTRL+L)
9. CTRL+P (Open the Print dialog box)
10. CTRL+R (Update the current Web )

 See more at: http://www.bd24live.com/bangla/article/2670/index.html#sthash.uUusVRDP.dpuf

69
যে ১৪টি আমল করলে আল্লাহ্ চাইলে আপনার রিজিক বাড়বে!

মুসলিম মাত্রই বিশ্বাস করেন যে তার আয় ও উপার্জন, জীবন ও মৃত্যু, এবং সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্য ইত্যাদি র্নিধারণ হয়ে যায় যখন তিনি মায়ের উদরে থাকেন। আর এসব তিনি লাভ করেন তার জন্য বরাদ্দ উপায়-উপকরণগুলোর মাধ্যমে।

তাই আমাদের কর্তব্য হলো হাত গুটিয়ে বসে না থেকে এর জন্য র্নিধারিত উপায়-উপকরণ সংগ্রহে চেষ্টা করা। যেমন চাষাবাদ, ব্যবসায়-বাণিজ্য, শিল্প-চারু, চাকরি-বাকরি বা অন্য কিছু।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿هُوَ ٱلَّذِي جَعَلَ لَكُمُ ٱلۡأَرۡضَ ذَلُولٗا فَٱمۡشُواْ فِي مَنَاكِبِهَا وَكُلُواْ مِن رِّزۡقِهِۦۖ وَإِلَيۡهِ ٱلنُّشُورُ ١٥﴾ [الملك: ١٥]

‘তিনিই তো তোমাদের জন্য যমীনকে সুগম করে দিয়েছেন, কাজেই তোমরা এর পথে-প্রান্তরে বিচরণ কর এবং তাঁর রিযক থেকে তোমরা আহার কর। আর তাঁর নিকটই পুনরুত্থান।’ {সূরা আল-মুলক, আয়াত : ১৫}

রিজিক বৃদ্ধির উপায়সমূহের মধ্যে কুরআন ও হাদীস উল্লেখিত ১৪টি আমল :

প্রথম আমল : তাকওয়া ও তাওয়াক্কুল অবলম্বন করা
আল্লাহর ভয় তথা তাকওয়া অবলম্বন করা, তাঁর নির্দেশাবলি পালন ও নিষিদ্ধ বিষয়গুলো বর্জন করা। পাশাপাশি আল্লাহর ওপর অটল আস্থা রাখা, তাওয়াক্কুল করা এবং রিজিক তালাশে তাঁর সাহায্য প্রার্থনা করা। কারণ, যে আল্লাহর ওপর ভরসা করে তিনিই তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান।

আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন,

﴿ وَمَن يَتَّقِ ٱللَّهَ يَجۡعَل لَّهُۥ مَخۡرَجٗا ٢ وَيَرۡزُقۡهُ مِنۡ حَيۡثُ لَا يَحۡتَسِبُۚ وَمَن يَتَوَكَّلۡ عَلَى ٱللَّهِ فَهُوَ حَسۡبُهُۥٓۚ إِنَّ ٱللَّهَ بَٰلِغُ أَمۡرِهِۦۚ قَدۡ جَعَلَ ٱللَّهُ لِكُلِّ شَيۡءٖ قَدۡرٗا ٣ ﴾ [الطلاق : ٢، ٣]

‘আর যে আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য উত্তরণের পথ তৈরী করে দেন। এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিযিক দিবেন যা সে কল্পনাও করতে পারবে না। আর যে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ তাঁর উদ্দেশ্য পূর্ণ করবেনই। নিশ্চয় আল্লাহ প্রত্যেক জিনিসের জন্য একটি সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন।’ {সূরা আত-তালাক, আয়াত : ২-৩}

অর্থাৎ যে আল্লাহকে ভয় করবে এবং আনুগত্য দেখাবে, আল্লাহ তার সকল সংকট দূর করে দেবেন এবং তার কল্পনাতীত স্থান থেকে রিজিকের সংস্থান করে দেবেন। আর যে কেউ তার উদ্দেশ্য হাসিলে একমাত্র আল্লাহর শরণাপন্ন হয় তিনিই তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান। বলাবাহুল্য এই তাকওয়ার পরিচয় মেলে হালাল উপার্জনে চেষ্টা এবং সন্দেহযুক্ত কামাই বর্জনের মধ্য দিয়ে।

দ্বিতীয় আমল : তাওবা ও ইস্তেগফার করা
অধিক পরিমাণে ইস্তেগফার এবং বেশি বেশি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলেও রিজিক বাড়ে। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর অন্যতম নবী ও রাসূল নূহ আলাইহিস সালামের ঘটনা তুলে ধরে ইরশাদ করেন,

﴿ فَقُلۡتُ ٱسۡتَغۡفِرُواْ رَبَّكُمۡ إِنَّهُۥ كَانَ غَفَّارٗا ١٠ يُرۡسِلِ ٱلسَّمَآءَ عَلَيۡكُم مِّدۡرَارٗا ١١ وَيُمۡدِدۡكُم بِأَمۡوَٰلٖ وَبَنِينَ وَيَجۡعَل لَّكُمۡ جَنَّٰتٖ وَيَجۡعَل لَّكُمۡ أَنۡهَٰرٗا ١٢ ﴾ [نوح: ١٠، ١٢]

‘আর বলেছি, ‘তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও; নিশ্চয় তিনি পরম ক্ষমাশীল’। (তাঁর কাছে ক্ষমা চাইলে) ‘তিনি তোমাদের উপর মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, ‘আর তোমাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান- সন্ততি দিয়ে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের জন্য বাগ-বাগিচা দেবেন আর দেবেন নদী-নালা’। {সূরা নূহ, আয়াত : ১০-১২}

হাদীসে বিষয়টি আরেকটু খোলাসা করে বলা হয়েছে, আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

« مَنْ لَزِمَ الاِسْتِغْفَارَ جَعَلَ اللَّهُ لَهُ مِنْ كُلِّ ضِيقٍ مَخْرَجًا وَمِنْ كُلِّ هَمٍّ فَرَجًا وَرَزَقَهُ مِنْ حَيْثُ لاَ يَحْتَسِبُ ».

‘যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার করবে আল্লাহ তার সব সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের সংস্থান করে দেবেন।’ [আবূ দাঊদ : ১৫২০; ইবন মাজা : ৩৮১৯; তাবরানী : ৬২৯১][1]

অন্য হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

« مَنْ أَكْثَرَ الِاسْتِغْفَارَ جَعَلَ اللَّهُ لَهُ مِنْ كُلِّ هَمٍّ فَرَجًا وَمِنْ كُلِّ ضِيقٍ مَخْرَجًا وَرَزَقَهُ مِنْ حَيْثُ لاَ يَحْتَسِبُ».

‘যে ব্যক্তি বেশি বেশি ইস্তেগফার করবে আল্লাহ তার সব সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন।’ [বাইহাকী : ৬৩৬; হাকেম, মুস্তাদরাক : ৭৬৭৭ সহীহ সূত্রে বর্ণিত।]

তৃতীয় আমল : আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা
আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং তাদের হক আদায়ের মাধ্যমেও রিজিক বাড়ে। যেমন : আনাস ইবন মালেক রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি তিনি ইরশাদ করেন,

« مَنْ سَرَّهُ أَنْ يُبْسَطَ لَهُ فِي رِزْقِهِ أَوْ يُنْسَأَ لَهُ فِي أَثَرِهِ فَلْيَصِلْ رَحِمَهُ».

‘যে ব্যক্তি কামনা করে তার রিজিক প্রশস্ত করে দেওয়া হোক এবং তার আয়ু দীর্ঘ করা হোক সে যেন তার আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখে।’ [বুখারী : ৫৯৮৫; মুসলিম : ৪৬৩৯]

চতৃর্থ আমল : নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দরূদ পড়া
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দরূদ পাঠেও রিজিকে প্রশস্ততা আসে। যেমনটি অনুমিত হয় নিম্নোক্ত হাদীস থেকে। তোফায়েল ইবন উবাই ইবন কা‘ব রাদিআল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন,

قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّى أُكْثِرُ الصَّلاَةَ عَلَيْكَ فَكَمْ أَجْعَلُ لَكَ مِنْ صَلاَتِى فَقَالَ « مَا شِئْتَ ». قَالَ قُلْتُ الرُّبُعَ. قَالَ « مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ ». قُلْتُ النِّصْفَ. قَالَ « مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ ». قَالَ قُلْتُ فَالثُّلُثَيْنِ. قَالَ « مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ ». قُلْتُ أَجْعَلُ لَكَ صَلاَتِى كُلَّهَا. قَالَ « إِذًا تُكْفَى هَمَّكَ وَيُغْفَرُ لَكَ ذَنْبُكَ ». قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ.

আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল, আমি আপনার প্রতি অধিকহারে দরূদ পড়তে চাই, অতএব আমার দু‘আর মধ্যে আপনার দরূদের জন্য কতটুকু অংশ রাখব? তিনি বললেন, তুমি যতটুকু চাও। কা‘ব বলেন, আমি বললাম, এক চতুর্থাংশ। তিনি বললেন, তুমি যতটুকু চাও। তবে যদি তুমি বেশি পড় তা তোমার জন্য উত্তম হবে। আমি বললাম, অর্ধেক? তিনি বললেন, তুমি যতটুকু চাও। তবে তুমি যদি বেশি পড় তা তোমার জন্য উত্তম হবে।

কা‘ব বলেন, আমি বললাম, তাহলে দুই তৃতীয়াংশ? তিনি বললেন, তুমি যতটুকু চাও। তবে তুমি যদি বেশি পড় তা তোমার জন্য উত্তম হবে। আমি বললাম, আমার দু‘আর পুরোটা জুড়েই শুধু আপনার দরূদ রাখব। তিনি বললেন, তাহলে তা তোমার ঝামেলা ও প্রয়োজনের জন্য যথেষ্ট হবে এবং তোমার গুনাহ ক্ষমা করা হবে। [তিরমিযী : ২৬৪৫; হাকেম, মুস্তাদরাক : ৭৬৭৭ (আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি ‘হাসান’ সহীহ।)]

পঞ্চম আমল : আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করা
আল্লাহর রাস্তায় কেউ ব্যয় বা দান করলে তা বিফলে যায় না। সে সম্পদ ফুরায়ও না। বরং তা বাড়ে বৈ কি। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন,

﴿ قُلۡ إِنَّ رَبِّي يَبۡسُطُ ٱلرِّزۡقَ لِمَن يَشَآءُ مِنۡ عِبَادِهِۦ وَيَقۡدِرُ لَهُۥۚ وَمَآ أَنفَقۡتُم مِّن شَيۡءٖ فَهُوَ يُخۡلِفُهُۥۖ وَهُوَ خَيۡرُ ٱلرَّٰزِقِينَ ٣٩ ﴾ [سبا: ٣٩]

‘বল, ‘নিশ্চয় আমার রব তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা রিযক প্রশস্ত করেন এবং সঙ্কুচিত করেন। আর তোমরা যা কিছু আল্লাহর জন্য ব্যয় কর তিনি তার বিনিময় দেবেন এবং তিনিই উত্তম রিযকদাতা।’ {সূরা আস-সাবা’, আয়াত : ৩৯}

ষষ্ঠ আমল : বারবার হজ-উমরা করা
হজ ও উমরা পাপ মোচনের পাশাপাশি হজকারী ও উমরাকারীর অভাব-অনটন দূর করে এবং তার সম্পদ বাড়িয়ে দেয়। আবদুল্লাহ ইব্ন মাসঊদ রাদিআল্লাহু আনহুমা কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

« تَابِعُوا بَيْنَ الْحَجِّ وَالْعُمْرَةِ فَإِنَّهُمَا يَنْفِيَانِ الْفَقْرَ وَالذُّنُوبَ كَمَا يَنْفِى الْكِيرُ خَبَثَ الْحَدِيدِ وَالذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ وَلَيْسَ لِلْحَجَّةِ الْمَبْرُورَةِ ثَوَابٌ إِلاَّ الْجَنَّةُ ».

‘তোমরা হজ ও উমরা পরপর করতে থাক, কেননা তা অভাব ও গুনাহ দূর করে দেয়, যেমন দূর করে দেয় কামারের হাপর লোহা, সোনা ও রুপার ময়লাকে।’ [তিরমিযী : ৮১৫; নাসাঈ : ২৬৩১]

সপ্তম আমল : দুর্বলের প্রতি সদয় হওয়া বা সদাচার করা
মুস‘আব ইবন সা‘দ রাদিআল্লাহু আনহু যুদ্ধজয়ের পর মনে মনে কল্পনা করলেন, তিনি বোধ হয় তাঁর বীরত্ব ও শৌর্য-বীর্য হেতু অন্যদের চেয়ে নিজেকে বেশি মর্যাদাবান। সেই প্রেক্ষিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,

« هَلْ تُنْصَرُونَ وَتُرْزَقُونَ إِلاَّ بِضُعَفَائِكُمْ » .

‘তোমাদের মধ্যে থাকা দুর্বলদের কারণে কেবল তোমাদের সাহায্য করা হয় এবং রিজিক প্রদান করা হয়।’ [বুখারী : ২৮৯৬]

অষ্টম আমল : ইবাদতের জন্য ঝঞ্ঝাটমুক্ত হওয়া
আল্লাহর ইবাদতের জন্য ঝামেলামুক্ত হলে এর মাধ্যমেও অভাব দূর হয় এবং প্রাচুর্য লাভ হয়। যেমনটি বর্ণিত হয়েছে আবূ হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু কর্তৃক। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

« إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى يَقُولُ يَا ابْنَ آدَمَ تَفَرَّغْ لِعِبَادَتِى أَمْلأْ صَدْرَكَ غِنًى وَأَسُدَّ فَقْرَكَ وَإِلاَّ تَفْعَلْ مَلأْتُ يَدَيْكَ شُغْلاً وَلَمْ أَسُدَّ فَقْرَكَ ».

‘আল্লাহ তা‘আলা বলেন, হে আদম সন্তান, আমার ইবাদতের জন্য তুমি ঝামেলামুক্ত হও, আমি তোমার অন্তরকে প্রাচুর্য দিয়ে ভরে দেব এবং তোমার দারিদ্র ঘুচিয়ে দেব। আর যদি তা না কর, তবে তোমার হাত ব্যস্ততায় ভরে দেব এবং তোমার অভাব দূর করব না।’ [তিরমিযী : ২৬৫৪; মুসনাদ আহমদ : ৮৬৮১; ইবন মাজা : ৪১০৭]

নবম আমল : আল্লাহর রাস্তায় হিজরত করা
আল্লাহর সন্তুষ্টির নিমিত্তে হিজরত তথা স্বদেশ ত্যাগ করলে এর মাধ্যমেও রিজিকে প্রশস্ততা ঘটে। যেমনটি অনুধাবিত হয় নিচের আয়াত থেকে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ ۞وَمَن يُهَاجِرۡ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ يَجِدۡ فِي ٱلۡأَرۡضِ مُرَٰغَمٗا كَثِيرٗا وَسَعَةٗۚ وَمَن يَخۡرُجۡ مِنۢ بَيۡتِهِۦ مُهَاجِرًا إِلَى ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ ثُمَّ يُدۡرِكۡهُ ٱلۡمَوۡتُ فَقَدۡ وَقَعَ أَجۡرُهُۥ عَلَى ٱللَّهِۗ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورٗا رَّحِيمٗا ١٠٠ ﴾ [النساء : ١٠٠]

‘আর যে আল্লাহর রাস্তায় হিজরত করবে, সে যমীনে বহু আশ্রয়ের জায়গা ও সচ্ছলতা পাবে। আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উদ্দেশ্যে মুহাজির হয়ে নিজ ঘর থেকে বের হয় তারপর তাকে মৃত্যু পেয়ে বসে, তাহলে তার প্রতিদান আল্লাহর উপর অবধারিত হয়। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ {সূরা আন-নিসা, আয়াত : ১০০}

আয়াতের ব্যাখ্যা আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস প্রমুখ সাহাবী রাদিআল্লাহু আনহুদ বলেন, স্বচ্ছলতা অর্থ রিজিকে প্রশস্ততা।

দশম আমল : আল্লাহর পথে জিহাদ
একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি হাসিলের জিহাদেও সম্পদের ব্যপ্তি ঘটে। গনীমত বা যুদ্ধলব্ধ সম্পদের মাধ্যমে সংসারে প্রাচুর্য আসে। যেমন ইবন উমর রাদিআল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

« وَجُعِلَ رِزْقِي تَحْتَ ظِلِّ رُمْحِي ».

‘আর আমার রিজিক রাখা হয়েছে আমার বর্শার ছায়াতলে।’ [মুসনাদ আহমদ : ৫৬৬৭; বাইহাকী : ১১৫৪; শু‘আবুল ঈমান : ১৯৭৮৩]

একাদশ আমল : আল্লাহর নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা
সাধারণভাবে আল্লাহ যে রিজিক ও নিয়ামতরাজি দান করেছেন তার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া করা এবং তাঁর স্তুতি গাওয়া। কারণ, শুকরিয়ার ফলে নেয়ামত বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন,

﴿ وَإِذۡ تَأَذَّنَ رَبُّكُمۡ لَئِن شَكَرۡتُمۡ لَأَزِيدَنَّكُمۡۖ وَلَئِن كَفَرۡتُمۡ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٞ ٧ ﴾ [ابراهيم: ٧]

‘আর যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন, ‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় কর, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেব, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আযাব বড় কঠিন।’ {সূরা ইবরাহীম, আয়াত : ০৭}

আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা শুকরিয়ার বদৌলতে নেয়ামত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। আর বলাবাহুল্য আল্লাহর বাড়ানোর কোনো সীমা-পরিসীমা নাই।

দ্বাদশ আমল : বিয়ে করা
আজকাল মানুষের দুনিয়ার প্রাচুর্য ও বিলাসের প্রতি আসক্তি এত বেশি বেড়েছে, তারা প্রচুর অর্থ নেই এ যুক্তিতে প্রয়োজন সত্ত্বেও বিয়ে বিলম্বিত করার পক্ষে রায় দেন। তাদের কাছে আশ্চর্য লাগতে পারে এ কথা যে বিয়ের মাধ্যমেও মানুষের সংসারে প্রাচুর্য আসে। কারণ, সংসারে নতুন যে কেউ যুক্ত হয়, সে তো তার জন্য বরাদ্দ রিজিক নিয়েই আসে।

আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন,

﴿ وَأَنكِحُواْ ٱلۡأَيَٰمَىٰ مِنكُمۡ وَٱلصَّٰلِحِينَ مِنۡ عِبَادِكُمۡ وَإِمَآئِكُمۡۚ إِن يَكُونُواْ فُقَرَآءَ يُغۡنِهِمُ ٱللَّهُ مِن فَضۡلِهِۦۗ وَٱللَّهُ وَٰسِعٌ عَلِيمٞ ٣٢ ﴾ [النور : ٣٢]

‘আর তোমরা তোমাদের মধ্যকার অবিবাহিত নারী-পুরুষ ও সৎকর্মশীল দাস দাসীদের বিবাহ দাও। তারা অভাবী হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও মহাজ্ঞানী।’ {সূরা আন-নূর, আয়াত : ৩২}

উমর ইবন খাত্তাব রাদিআল্লাহু আনহুমা বলতেন, ওই ব্যক্তির ব্যাপার বিস্ময়কর যে বিয়ের মধ্যে প্রাচুর্য খোঁজে না। কারণ স্বয়ং আল্লাহ বলেছেন, ‘তারা অভাবী হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন।’

ত্রয়োদশ আমল : অভাবের সময় আল্লাহমুখী হওয়া এবং তার কাছে দু‘আ করা
রিজিক অর্জনে এবং অভাব দূরীকরণে প্রয়োজন আল্লাহর কাছে দু‘আ করা। কারণ, তিনি প্রার্থনা কবুল করেন। আর আল্লাহ তা‘আলাই রিজিকদাতা এবং তিনি অসীম ক্ষমতাবান।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ وَقَالَ رَبُّكُمُ ٱدۡعُونِيٓ أَسۡتَجِبۡ لَكُمۡۚ ﴾ [غافر: ٦٠]

‘আর তোমাদের রব বলেছেন, ‘তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব।’ {সূরা আল-মু‘মিন, আয়াত : ৬০}

এ আয়াতে আল্লাহ দু‘আ করার নির্দেশ দিয়েছেন আর তিনি তা কবুলের জিম্মাদারি নিয়েছেন। যাবৎ না তা কবুলে পথে কোনো অন্তরায় না হয়। যেমন ওয়াজিব তরক করা, হারাম কাজে জড়ানো, হারাম আহার গ্রহণ বা হারাপ পরিচ্ছদ পরা ইত্যাদি এবং কবুলকে খানিক বিলম্বিতকরণ। আল্লাহর কাছে দু‘আয় বলা যেতে পারে,

‘হে রিজিকদাতা আমাকে রিজিক দান করুন, আপনি সর্বোত্তম রিজিকদাতা। হে আল্লাহ আমি আপনার কাছে পবিত্র সুপ্রশস্ত রিজিক চাই। হে ওই সত্তা, দানের ঢল সত্ত্বেও যার ভাণ্ডারে কমতি হয় না। হে আল্লাহ, আমাকে আপনি আপনার হালাল দিয়ে আপনার হারাম থেকে যথেষ্ট করে দিন আর আপনার দয়া দিয়ে আপনি ছাড়া অন্যদের থেকে যথেষ্ট হয়ে যান। হে আল্লাহ আপনি আমাকে যে রিজিক দিয়েছেন তা দিয়েই সন্তুষ্ট বানিয়ে দিন। আর যা আমাকে দিয়েছেন তাতে বরকত দিন।’

অভাবকালে মানুষের কাছে হাত না পেতে আল্লাহর শরণাপন্ন হলে এবং তাঁর কাছেই প্রাচুর্য চাইলে অবশ্যই তার অভাব মোচন হবে এবং রিজিক বাড়ানো হবে।

আবদুল্লাহ ইবন মাসঊদ রাদিআল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

« مَنْ نَزَلَتْ بِهِ فَاقَةٌ فَأَنْزَلَهَا بِالنَّاسِ لَمْ تُسَدَّ فَاقَتُهُ وَمَنْ نَزَلَتْ بِهِ فَاقَةٌ فَأَنْزَلَهَا بِاللَّهِ فَيُوشِكُ اللَّهُ لَهُ بِرِزْقٍ عَاجِلٍ أَوْ آجِلٍ ».

‘যে ব্যক্তি অভাবে পতিত হয়, অতপর তা সে মানুষের কাছে সোপর্দ করে (অভাব দূরিকরণে মানুষের ওপর নির্ভরশীল হয়), তার অভাব মোচন করা হয় না। পক্ষান্তরে যে অভাবে পতিত হয়ে এর প্রতিকারে আল্লাহর ওপর নির্ভরশীল হয় তবে অনিতবিলম্বে আল্লাহ তাকে তরিৎ বা ধীর রিজিক দেবেন। [তিরমিযী : ২৮৯৬; মুসনাদ আহমদ : ৪২১৮]

চতুর্দশ আমল : গুনাহ ত্যাগ করা, আল্লাহর দীনের ওপর সদা অটল থাকা এবং নেকীর কাজ করে যাওয়া।
গুনাহ ত্যাগ করা, আল্লাহর দীনের ওপর অটল থাকা এবং নেকীর কাজ করা- এসবের মাধ্যমেও রিজিকের রাস্তা প্রশস্ত হয় যেমন পূর্বোক্ত আয়াতগুলো থেকে অনুমান করা যায়।
তবে সর্বোপরি আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা দুনিয়াতে চিরদিন থাকার জন্য আসি নি। তাই দুনিয়াকে প্রাধান্য না দিয়ে উচিত হবে আখিরাতকে অগ্রাধিকার ও প্রাধান্য দেয়া।

আমাদের এদেন অবস্থা দেখে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ بَلۡ تُؤۡثِرُونَ ٱلۡحَيَوٰةَ ٱلدُّنۡيَا ١٦ وَٱلۡأٓخِرَةُ خَيۡرٞ وَأَبۡقَىٰٓ ١٧ ﴾ [الاعلى: ١٦، ١٧]

‘বরং তোমরা দুনিয়ার জীবনকে প্রাধান্য দিচ্ছ। অথচ আখিরাত সর্বোত্তম ও স্থায়ী।’ {সূরা আল-আ‘লা, আয়াত : ১৬-১৭}

আর পরকালের মুক্তি ও চিরশান্তিই যার প্রধান লক্ষ্য তার উচিত হবে রিজিকের জন্য হাহাকার না করে অল্পে তুষ্ট হতে চেষ্টা করা।

যেমন : হাদীসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবন আমর ইবন আ‘স রাদিআল্লাহু আনহুম থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

« قَدْ أَفْلَحَ مَنْ أَسْلَمَ وَرُزِقَ كَفَافًا وَقَنَّعَهُ اللَّهُ بِمَا آتَاهُ ».

‘ওই ব্যক্তি প্রকৃত সফল যে ইসলাম গ্রহণ করেছে আর তাকে জীবন ধারণে (অভাবও নয়; বিলাসও নয়) পর্যাপ্ত পরিমাণ রিজিক দেয়া হয়েছে এবং আল্লাহ তাকে যা দিয়েছেন তাতে তুষ্টও করেছেন। [মুসলিম : ২৪৭৩; তিরমিযী : ২৩৪৮; আহমদ : ৬৫৭২]

পরিশেষে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা, তিনি যেন আমাদের এসব উপায়-উপকরণ যোগাড় করে রিজিক তথা হালাল উপার্জনে উদ্যোগী ও সফল হবার তাওফীক দান করেন। তিনি যেন আপনাদের রিজিক ও উপার্জনে প্রশস্ততা দান করেন।

 See more at: http://www.bd24live.com/bangla/article/52870/index.html#sthash.t3m7Wjx1.7GnUhALe.dpuf

70
পবিত্র কোরআনের প্রাচীনতম পাণ্ডুলিপির দুটি পাতার সন্ধান


যুক্তরাজ্যে পবিত্র কোরআন শরিফের ‘সবচেয়ে পুরোনো’ পাণ্ডুলিপির অংশবিশেষ পাওয়া গেছে। বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে পাওয়া হাতে লেখা ওই পাণ্ডুলিপির রেডিওকার্বন প্রযুক্তিতে পরীক্ষার পর দাবি করা হয়েছে, এটা অন্তত ১ হাজার ৩৭০ বছর আগের। ছবি: এএফপিবার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে প্রায় ১০০ বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যের তিন হাজারের বেশি বিভিন্ন ধরনের বইপত্র ও নথির সঙ্গে ওই পাণ্ডুলিপিও সংরক্ষিত ছিল। ছবি: এএফপিসম্প্রতি এ পাণ্ডুলিপিটি পিএইচডি গবেষক আলবা ফেদেলির নজরে আসে। তিনি সেটা খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। পরে এটি ঠিক কত বছরের পুরোনো, তা জানতে রেডিওকার্বন পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেন। ছবি: এএফপিবার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের তত্ত্বাবধায়ক পাণ্ডুলিপিটি দেখাচ্ছেন। ছবি: এএফপিপবিত্র কোরআন শরিফের ‘সবচেয়ে পুরোনো’ এই পাণ্ডুলিপি সম্প্রতি পিএইচডি গবেষক আলবা ফেদেলির নজরে আসে। ছবি: এএফপিহাতে লেখা এ পাণ্ডুলিপির রেডিওকার্বন প্রযুক্তিতে পরীক্ষার পর দাবি করা হয়েছে, এটা অন্তত ১ হাজার ৩৭০ বছর আগের।

যুক্তরাজ্যে পবিত্র কোরআন শরিফের ‘সবচেয়ে পুরোনো’ পাণ্ডুলিপির অংশবিশেষ পাওয়া গেছে বলে দাবি করা হচ্ছে। বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে পাওয়া হাতে লেখা ওই পাণ্ডুলিপির রেডিওকার্বন প্রযুক্তিতে পরীক্ষার পর দাবি করা হয়েছে, এটা অন্তত ১ হাজার ৩৭০ বছর আগের। খবর বিবিসির।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে প্রায় ১০০ বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যের তিন হাজারের বেশি বিভিন্ন ধরনের বইপত্র ও নথির সঙ্গে ওই পাণ্ডুলিপিও সংরক্ষিত ছিল। সম্প্রতি পাণ্ডুলিপিটি পিএইচডি গবেষক আলবা ফেদেলির নজরে আসে। তিনি সেটা খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। পরে এটি ঠিক কত বছরের পুরোনো, তা জানতে রেডিওকার্বন পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেন।
ব্রিটিশ লাইব্রেরির এমন অনেক পাণ্ডুলিপির বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ ইসা ওয়ালি বলেন, এটা ‘দারুণ এক আবিষ্কার’, যা সারা বিশ্বের মুসলমানদের ‘উদ্বেলিত’ করবে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওকার্বন অ্যাক্সেলেরেটর ইউনিট ওই পাণ্ডুলিপি পরীক্ষা করার পর জানায়, পাণ্ডুলিপিটি ছাগলের বা ভেড়ার চামড়ার ওপর লেখা হয়েছে। এটা কোরআন শরিফের সবচেয়ে পুরোনো পাণ্ডুলিপি।


ইসলাম ধর্মমতে, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর মাধ্যমে পবিত্র কোরআন ধাপে ধাপে নাজিল হয় ৬১০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত। ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে মহানবী (সা.) ইন্তেকাল করেন।
ব্রিটিশ ব্যবসায়ী এডওয়ার্ড ক্যাডবেরির পৃষ্ঠপোষকতায় বর্তমান ইরাকের মসুলে জন্ম নেওয়া খ্রিষ্টান যাজক অ্যালফন্স মিনগানা গত শতাব্দীর বিশের দশকে মধ্যপ্রাচ্য থেকে স্থানীয় নানা বিষয়ের প্রায় তিন হাজার পাণ্ডুলিপি সংগ্রহ করেছিলেন। সেগুলো বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে রাখা ছিল। বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সংগ্রহবিষয়ক পরিচালক সুসান ওরাল বলেন, ‘এটা যে এত বেশি পুরোনো, তা গবেষকেরাও ভাবতে পারেননি। আমরা সবচেয়ে পুরোনো কোরআনের পাণ্ডুলিপিগুলোর মধ্যে একটি পাণ্ডুলিপির অংশবিশেষ পেয়েছি, সারা বিশ্ব ভীষণ খুশি।’
বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিশ্চিয়ানিটি অ্যান্ড ইসলামের অধ্যাপক ডেভিড টমাস বলেন, ‘ওই পাণ্ডুলিপি আমাদের ইসলাম প্রতিষ্ঠার প্রকৃত সময়ের কাছাকাছি বছরগুলোতে নিয়ে যায়।’ তিনি বলেন, খোঁজ পাওয়া পাণ্ডুলিপির অংশবিশেষ যিনি লিখেছেন, তিনি সম্ভবত মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সময় বেঁচে ছিলেন। হয়তো তিনি মহানবী (সা.)-কে চিনতেন। হয়তো মহানবী (সা.)-এর বাণী তিনি সরাসরি শুনেছেন।


অধ্যাপক টমাস বলেন, শুরুর দিকে পবিত্র কোরআন শরিফের আয়াতগুলো পশুর চামড়া, পাথর, খেঁজুরগাছের পাতা ইত্যাদিতে লেখা হতো। ৬৫০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে পবিত্র কোরআন শরিফের চূড়ান্ত সংস্করণ সংকলিত হয়। তিনি বলেন, পাণ্ডুলিপির যে অংশটি পাওয়া গেছে, তা মহানবী (সা.)-এর ইন্তেকালের পর দুই দশকের কম সময়কালের হতে পারে।
সন্ধান পাওয়া পাণ্ডুলিপিটি লেখা হয়েছে ‘হিজাজি লিপিতে’; যা আরবি লেখার প্রথম দিকের রূপ। এ বিষয়টিও পাণ্ডুলিপির অংশটি সবচেয়ে পুরোনো হওয়ার পক্ষে যুক্তি দেয়।
ব্রিটিশ লাইব্রেরির পাণ্ডুলিপি বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ ইসা ওয়ালি বলেন, সুন্দর ও স্পষ্টভাবে হিজাজি লিপিতে লেখা ওই দুটি পৃষ্ঠা ইসলামের প্রথম তিন খলিফার সময়ের। ইসলামের প্রথম তিন খলিফা ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত মুসলমানদের নেতা ছিলেন। তৃতীয় খলিফা হজরত ওসমান (রা.)-এর সময় পবিত্র কোরআন শরিফের ‘চূড়ান্ত সংস্করণ’ বিতরণ করা হয়। ইসা ওয়ালি পাণ্ডুলিপির অংশবিশেষকে ওই যুগের বা তার আগের সময়ের ‘মূল্যবান আবিষ্কার’ বলে অভিহিত করেন।


এই আবিষ্কারে উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যের মুসলিম সম্প্রদায়। বার্মিংহাম কেন্দ্রীয় মসজিদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আফজাল বলেন, ‘পাণ্ডুলিপির অংশবিশেষ দেখে আমি আনন্দে-আবেগে কেঁদে ফেলি। আমি নিশ্চিত, এটা একনজর দেখতে পুরো যুক্তরাজ্য থেকে মানুষ বার্মিংহামে আসবে।’
বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সন্ধান পাওয়া পাণ্ডুলিপির অংশবিশেষ সর্বসাধারণের জন্য প্রদর্শিত হবে। আগামী অক্টোবরে বার্মিংহামের বারবার ইনস্টিটিউটে প্রদর্শনের জন্য রাখা হবে।

Source: http://www.prothom-alo.com/international/article/582793
            জুলাই ২৩, ২০১৫

71
বাংলাদেশের টেস্ট–আইসিসির পরীক্ষাগার!


বাংলাদেশের টেস্ট মানেই কি আইসিসির পরীক্ষাগার? এমন প্রশ্ন ওঠার কিন্তু যথেষ্ট অবকাশ আছে! ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা যে নতুন আম্পায়ারদের ‘ব্রেক’ দিতে বেছে নিচ্ছে বাংলাদেশেরই টেস্ট ম্যাচগুলো। ২০০০ সালে টেস্ট অভিষেকের পর থেকে বাংলাদেশের খেলা ৯২টি টেস্ট ম্যাচে অভিষেক হয়েছে ১৮ জন আম্পায়ারের। বাংলাদেশের টেস্ট আইসিসির পরীক্ষাগার, নয়তো কী!

বাংলাদেশের টেস্ট ম্যাচে অভিষেক ঘটেছে তিন বাংলাদেশি আম্পায়ারেরও। ২০০১ সালের ৮ নভেম্বর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টে প্রথম বাংলাদেশি টেস্ট আম্পায়ার হিসেবে অভিষিক্ত হয়েছিল আকতারউদ্দিন শাহীনের। এরপর অভিষেক ঘটেছে মাহবুবুর রহমান ও শওকতুর রহমানের। প্রথম দিকে ব্যাপারটা ইতিবাচক মনে হলেও আইসিসির কল্যাণে তা অচিরেই পরিণত হয় ভাবনার বিষয়ে। অতীতে অনভিজ্ঞ কিংবা অদক্ষ অভিষিক্ত আম্পায়ারের কুফল অনেকবারই বাংলাদেশ পেয়েছে বাজেভাবে।

২০০১ সালে যেদিন আকতারউদ্দিন শাহীনের অভিষেক ঘটে, তারপর থেকে এখনো পর্যন্ত ক্রিকেট বিশ্ব দেখেছে ৬০৬টি টেস্ট। এ সময় বাংলাদেশ টেস্ট খেলেছে ৮৬টি। এই টেস্টগুলোতে যেখানে মোট ২৯ জন আম্পায়ারের অভিষেক ঘটেছে, সেখানে বাংলাদেশের খেলা ৮৬ টেস্টে ১৮ জন আম্পায়ারের অভিষেককে কোনোভাবেই হালকা করে দেখার অবকাশ নেই। বাংলাদেশের টেস্ট ম্যাচগুলোর গুরুত্ব আইসিসির কাছে কম—ব্যাপারটা কি এমনটাই দাঁড়ায় না? গুরুত্ব কম দেখেই বাংলাদেশের টেস্টগুলোকে ‘পরীক্ষাগার’ হিসেবে বেছে নিচ্ছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা।

এই তালিকার সর্বশেষ সংযোজন জোয়েল উইলসন। চট্টগ্রামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেই অভিষেক হলো এই ক্যারিবীয় আম্পায়ারের। অর্থাৎ, আরও একজন নতুন, আনকোরা আম্পায়ারের ‘পরীক্ষার হল’ হয়ে গেল বাংলাদেশের একটি টেস্ট ম্যাচ। উইলসন বিতর্কিত কোনো সিদ্ধান্ত না দিলেও প্রোটিয়া বোলারদের কিছু ‘ওভার স্টেপিং’ তাঁর দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে। এই ‘দৃষ্টি এড়ানো’র ব্যাপারটা একাধিক হওয়ায় তাঁর দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন কিন্তু উঠতেই পারে।

বাংলাদেশের টেস্টে অভিষেক হওয়ার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আম্পায়ার হিসেবে নিজেদের শীর্ষ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার উদাহরণও আছে। আলিম দার ও ইয়ান গোল্ড—বাংলাদেশের ক্রিকেটানুরাগীদের কাছে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বিতর্কিত এই দুই আম্পায়ার কিন্তু টেস্ট পরিচালনা শুরু করেছিলেন বাংলাদেশের খেলাতেই।
ব্যাপারটি নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ভাবতে বসার সময় বোধ হয় এসেই গেছে!

Source: http://www.prothom-alo.com/sports/article/582214
             জুলাই ২২, ২০১৫

72
অধিনায়ক নন, যখন তিনি বাবা

 


এরাই এখন তাঁর সবচেয়ে বড় সম্পদ। মাশরাফির ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া ছবিসবুজ মাঠের ক্যানভাসে মাশরাফি বিন মুর্তজা কত ছবিই তো আঁকেন। কখনো প্রতিপক্ষের উইকেট নিয়ে, কখনো বলিষ্ঠ নেতৃত্ব জয় তুলে নিয়ে; ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যাট হাতে বল সীমানা ছাড়া করেও! বলবেন, তাঁর অভিনব উদযাপনের ছবিটাই বা বাদ দেওয়া কেন? সেটাও না হয় রাখা গেল। কিন্তু মাশরাফিকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, আপনার প্রিয় ছবি কোনটি?

অধিনায়ককে তাঁর ক্ষুরধার মস্তিষ্ক ব্যবহার না করেই অবলীলায় হয়তো বলবেন, ‘আমার মেয়ে হুমায়রার ছবিগুলো।’
হুমায়রা মুর্তজা, মাশরাফির চার বছরের কন্যা। মেয়ে ছবি আঁকা শিখেছে। ছোট্ট আঙুলে সাদা ক্যানভাসে কত্ত ছবি আঁকতে, বাবাকে দেখাবে। বাবা যতক্ষণ না ছবিগুলো দেখছে, শান্ত হবে না। বাবা হয়তো মেয়েকে অনুপ্রাণিত করে বলবে, ‘বাহ! মা দারুণ এঁকেছ!’ ক্রিকেটের ব্যস্ত সূচিতে ছোট্ট মেয়ের শিল্পকর্ম হয়তো খুব বেশি দেখার সুযোগ মেলে না।
তাঁর কাঁধে জাতীয় দলের দায়িত্ব। আবেগকে পেছনে ঠেলে, প্রিয় সন্তানদের মুখগুলো মনের ভেতর লুকিয়ে চোয়াল শক্ত করে নামতে হয় মাঠে। প্রতিপক্ষ যে-ই হোক, অধিনায়কের ভাবনায় থাকে একটাই—জয়। গত নভেম্বর থেকে মাশরাফির নেতৃত্বে এভাবেই বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। তবে দিন শেষে তিনিও মানুষ; সন্তানের বাবা। মাঠের সেই কাঠিন্য কখনো ভেঙে পড়ে আবেগের ঢেউয়ে। মনের কোনো ভেসে ওঠে কন্যা হুমায়রা আর আট মাসের ছেলে সাহেল মুর্তজার মুখ।
গত মাসে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ জেতার পর কলকাতার একটি দৈনিকে লিখল, ম্যাচ শেষে ভারতীয় ড্রেসিংরুমে ধোনির কাছে নাকি মুস্তাফিজকে নিয়ে গিয়েছিলেন মাশরাফি। আইপিএলে খেলার সম্ভাবনা আছে কি না জানতে। খবরটা বেশ হইচই ফেলেছিল বাংলাদেশে। মাশরাফি পরে পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, এমন কিছুই ঘটেনি। এ প্রশ্নের উত্তরটাও দিলেন তাঁর মতো করে, ‘বাসায় ছেলে-মেয়ের মুখই দেখার সময় পাচ্ছি না! অন্য কোথাও যাওয়ার তো সুযোগই নেই।’
হয়তো কথাটায় শ্লেষ আছে। কিন্তু চাইলে এর মধ্যে আকুতিও খুঁজে পেতে পারেন। বোঝায় যায়, ছেলে-মেয়ের জন্য মনটা তাঁর কতটা ব্যাকুল থাকে। ছেলেটা হয়তো হামাগুড়ি দেয়। ফোকলা দাঁতে হাসি দিয়ে ইশারায় বাবাকে অনেক কিছুই বলে। কখনো আবার কোমল আঙুলগুলো দিয়ে বাবার তর্জনিটা আটকে ধরে। বাবাকে ছাড়বে না কিছুতেই। তবুও বাবাকে যেতে হয়। পিতা-পুত্রের রচিত পৃথিবীর সেরা দৃশ্যটা হৃদয়ে তুলে রেখে মাশরাফিকে নামতে হয় মাঠে।
এই তো, গত বিশ্বকাপেই কী এক কঠিন পরীক্ষার সামনে পড়লেন। মাত্রই কিছু​দিন আগে পৃথিবীতে আসা ছেলেটা ভীষণ অসুস্থ। হাসপাতালেও ছিল অনেক দিন। মাশরাফি তখন বিশ্বকাপে। এক দিকে সন্তান, অন্য দিকে দেশ—এক বাবার কাছে এর চেয়ে কঠিন পরীক্ষা আর কী হতে পারে! একবার ভেবেছিলেন দেশেই ফিরে আসবেন। কিন্তু আবার তাকালেন দলের দিকে। দলটাকেও যে ভালোবাসেন সন্তানের মতো! মাশরাফি বুকে কষ্ট চেপে থেকে গেলেন অস্ট্রেলিয়াতেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের এ এক বোহেমিয়ান জীবন!
আর তাই খেলার ব্যস্ততা, অধিনায়ক হিসেবে নানা দায়িত্ব-প্রতিশ্রুতি রক্ষা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি—এত কাজের ভিড়ে ঠিকই সময় বের করে নেন পরিবারের জন্য। কেবল মাঠেই নন, সন্তানদের প্রতি দায়িত্ব পালনেও ভীষণ সচেতন। মেয়ে হুমায়রার স্কুল থাকলে সকাল আটটায় ঘুম থেকে উঠে পড়বেন। ম্যাচ না থাকলে মেয়েকে নিজেই স্কুল নামিয়ে দিয়ে অনুশীলন করতে মাঠে যাবেন। ছেলে-মেয়েকে মানুষ করাই যে তাঁর সবচেয়ে বড় লক্ষ্য।
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে একজন জানতে চাইলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১-১ করার পর এখন সিরিজ জয়টা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াল কি? মাশরাফির জবাব, ‘প্রতিটি দিনই একেকটা চ্যালেঞ্জ। আর চ্যালেঞ্জ বলতে বলতে বুঝি, আমার ছোট্ট ছেলে-মেয়ে আছে। তাদের মানুষ করাই আমার চ্যালেঞ্জ। বাকি আর যা আছে, কোনো কিছুই আমার কাছে চ্যালেঞ্জ মনে হয় না।’
মাঠে কেবল নেতৃত্বেই নয়, মাশরাফির কথায় কী এক জাদু আছে! মন্ত্রমুগ্ধের মতে কেবলই শুনতে হয়। একটি বিজয়ী দলের অধিনায়কের কাছে সন্তানদের মানুষ করার চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কিছু নেই—পৃথিবীর আর কোনো অধিনায়ক এমন উত্তর দিতেন কিনা সন্দেহ! এরপর বিষয়টি কি আর খেলার চৌহদ্দিতে আটকে থাকে? এত বড় দর্শন যিনি লালন করেন, তিনি কেবল বড় ক্রিকেটার নন, বিরাট মাপের মানুষও।

Source: http://www.prothom-alo.com/sports/article/577141/
             জুলাই ১৩, ২০১৫

73
Cricket / ‘ডাক’ এর কথকতা...
« on: July 11, 2015, 02:43:21 PM »
‘ডাক’ এর কথকতা...

 
১৫ বার শূন্যরানে সাজঘরে ফিরেছেন তামিম ইকবাল। ছবি: শামসুল হকদক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে তামিম ইকবাল শূন্য রানে ফিরেছেন ১৩ বলের মোকাবিলায়। অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগাটা স্বাভাবিক, এতগুলো বল খেলে ‘রানহীন’ তামিম আবার কোনো রেকর্ডের অংশ হলেন কিনা। যারা এই লাইনে ভেবেছেন, তাদের জ্ঞাতার্থে জানানো যাচ্ছে, তামিমের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বল মোকাবিলা করে শূন্যরানে আউট হওয়ার রেকর্ড একদিনের ক্রিকেটে আছে। আর বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ডের পাতায় তামিমের সঙ্গী বেশ কয়েকজনই।
সবচেয়ে বেশি বল খেলে একদিনের ক্রিকেটে ‘শূন্য’ রানে আউট হওয়ার দুর্ভাগ্য রুনাকো মর্টনের। ক্যারিবীয় এই ক্রিকেটার মাত্র ৩৩ বছর বয়সে এক সড়ক দুর্ঘটনায় চলে গেছেন পরলোকে। ২০০৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিনি ৩১ বল খেলে শূন্যরানে ফিরেছিলেন সাজঘরে। বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় রানহীন কাটিয়ে শূন্যরানে সাজঘরে ফেরার রেকর্ডটি আতহার আলী খানের। ১৯৯৮ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত কোকাকোলা ওয়ানডে সিরিজে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে আতহার শূন্যরানে ফিরেছিলেন ২২টি বল খেলার পর।
বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে আতহারের পর সবচেয়ে বেশি বল খেলে শূন্যরানে ফেরার দুর্ভাগ্য হয়েছে আরও চার ব্যাটসম্যানের। এঁরা হচ্ছেন হারুনুর রশিদ, আকরাম খান, সানোয়ার হোসেন আর অলক কাপালি। এই চার ব্যাটসম্যানের প্রত্যেকেই ১৪ বল খেলে শূন্য করে ফিরেছিলেন। দেশের টেস্ট পূর্ব যুগের খেলোয়াড় হারুনুর রশিদ ১৯৮৮ সালে চট্টগ্রামে ভারতের বিপক্ষে এশিয়া কাপ ক্রিকেটের এক ম্যাচে ১৪ বল খেলে শূন্য রানে সাজঘরে ফিরেছিলেন। আকরাম ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে এডিনবরার মাঠে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ১৪ বল খেলে শূন্য করেছিলেন। অলক কাপালির ১৪ বলে শূন্য দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২০০২ সালে, বেনোনিতে। সানোয়ার ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে ১৪ বল খেলে শূন্যরানে সাজঘরে ফিরেছিলেন।
১৩ বল খেলে শূন্যরানে ফেরার রেকর্ডে তামিমের সঙ্গী চট্টগ্রামেরই আফতাব আহমেদ। একসময়ের প্রতিভাদীপ্ত আফতাব তাঁর ওয়ানডে অভিষেকেই বার্মিংহামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শূন্যরানে ফিরেছিলেন। ১৩ বল খেলে, ১২ মিনিট উইকেটে থেকে তিনি এই অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ডের অংশ হয়েছিলেন।
পরলোকগত রুনাকো মর্টন সবচেয়ে বেশি বল খেলে শূন্যরানে ফিরেছিলেন। তিনি আছেন এই রেকর্ডের শীর্ষে। মর্টনের সঙ্গে এই রেকর্ডের শীর্ষ স্থানগুলো দখল করা খেলোয়াড়েরা হলেন, ফিল সিমন্স (২৩ বল), আতহার আলী খান (২২ বল), গ্রায়েম ফাওলার (২১ বল), গ্রায়েম ল্যাবরয় (২০ বল), টিম ডি লিডে (১৯ বল) . ড্যারেক আন্ডারউড (১৮ বল)।
আরেকটি তথ্য এখানে দিয়ে রাখা ভালো। বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে বেশিবার শূন্যরানে সাজঘরে ফেরার রেকর্ডটি সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশারের। তিনি মোট ১৮ বার কোনা রান না করেই বেরিয়ে এসেছেন মাঠ থেকে। তামিম ইকবাল ও মোহাম্মদ রফিক শূন্যরানে ফিরেছেন ১৫ বার করে।

Source:http://www.prothom-alo.com/sports/article/575299/
            জুলাই ১১, ২০১৫

74
ওয়ানডে অভিষেকে হ্যাটট্রিক


তাইজুল ইসলাম
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে
মিরপুর ২০১৪
টেন্ডাই চাতারা, জন নিয়ুম্বু, তিনাশে পানিয়াঙ্গারা
কাগিসো রাবাদা
দ. আফ্রিকা-বাংলাদেশ
মিরপুর ২০১৫
তামিম ইকবাল, লিটন দাস, মাহমুদউল্লাহ

বাংলাদেশের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক
চামিন্ডা ভাস
শ্রীলঙ্কা
পিটারমারিজবার্গ
২০০৩
হান্নান সরকার, মোহাম্মদ আশরাফুল, এহসানুল হক
কাগিসো রাবাদা
দ. আফ্রিকা
মিরপুর
২০১৫
তামিম ইকবাল, লিটন দাস, মাহমুদউল্লাহ

অভিষেকে ৫ উইকেট
ম্যাচ ভেন্যু সাল
৬/১৬ কাগিসো রাবাদা দক্ষিণ আফ্রিকা-বাংলাদেশ মিরপুর ২০১৫
৬/২২ ফিদেল এডওয়ার্ডস ওয়েস্ট ইন্ডিজ-জিম্বাবুয়ে হারারে ২০০৩
৫/২১ টনি ডডেমেইড অস্ট্রেলিয়া-শ্রীলঙ্কা পার্থ ১৯৮৮
৫/২৬ শল কারনাইন শ্রীলঙ্কা-নিউজিল্যান্ড মোরাতুয়া ১৯৮৪
৫/২৭ অস্টিন কডরিংটন কানাডা-বাংলাদেশ ডারবান ২০০৩
৫/২৮ তাসকিন আহমেদ বাংলাদেশ-ভারত মিরপুর ২০১৪
৫/২৯ অ্যালান ডোনাল্ড দক্ষিণ আফ্রিকা-ভারত কলকাতা ১৯৯১
৫/৩০ ব্রায়ান ভিটরি জিম্বাবুয়ে-বাংলাদেশ হারারে ২০১১
৫/৪৬ ক্রেগ ইয়াং আয়ারল্যান্ড-স্কটল্যান্ড ডাবলিন ২০১৪
৫/৫০ মুস্তাফিজুর রহমান বাংলাদেশ-ভারত মিরপুর ২০১৫
৫/৬৭ চারিথা বুদ্ধিকা শ্রীলঙ্কা-জিম্বাবুয়ে শারজা ২০০১

৬/১৬
ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা বোলিং এখন রাবাদার। এর আগে ২০০৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২২ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন
মাখায়া এনটিনি।

দ্বিতীয় দক্ষিণ আফ্রিকান হিসেবে ওয়ানডে অভিষেকে ৫ উইকেট নিলেন রাবাদা। ১৯৯১ সালে কলকাতার ইডেন গার্ডেনে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ওয়ানডেতে ভারতের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন অ্যালান ডোনাল্ড।

Source: http://www.prothom-alo.com/sports/article/575257/
             জুলাই ১১, ২০১৫

75
আর্জেন্টিনাকে বেছে নেওয়াই মেসির ‘পাপ’!


আকাশি-সাদায় ফিরে আসুক মেসির হাসি! ফাইল ছবিচারটা চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফি। চ্যাম্পিয়নস লিগের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা। ইউরোপের অন্যতম শীর্ষ লিগ লা লিগার সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা। লা লিগার সর্বোচ্চ গোলের জোগানদাতাও। চারবারের ফিফা বর্ষসেরা, যে মুকুট পরতে চলেছেন পঞ্চমবারের মতো। সব মিলে বার্সেলোনায় জেতা গুরুত্বপূর্ণ ট্রফির সংখ্যা ২৪টি! ইউরোপের শীর্ষ ফুটবলে খেলে ৫১৪ ম্যাচে ৪২৩ গোল!

এর সঙ্গে আরও তিনটি ট্রফি যোগ করুন: একটি বিশ্বকাপ, আর দুটি মহাদেশীয় শিরোপা।
এবার বলুন, অবিসংবাদিতভাবে সর্বকালের সেরা ফুটবলারের নাম কী? লিওনেল মেসি!

থামিয়ে দিতে চাইছেন তো? ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকাটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে—মেসি কবে বিশ্বকাপ জিতল! সঙ্গে দুটো মহাদেশীয় ট্রফিও!
না, জেতেননি। জিততে পারতেন। যদি ২০০৪ সালে স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের প্রস্তাবটায় সায় দিতেন সানন্দে। মেসি তত দিনে স্পেনের নাগরিকত্ব পেয়ে গেছেন। বার্সেলোনার ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে লা লিগাও অভিষেক হয়ে গেছে। মেসিকে চায় স্পেন জাতীয় দল। ২০০৪ সালে অনূর্ধ্ব ২০ ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ। মেসিকে স্পেনের যুবদলে রাখার প্রস্তাব দেওয়া হলো।

বয়স তখন তাঁর সতেরোও পূর্ণ হয়নি। এত কম বয়সে এত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের মুখোমুখি। মেসি জানেন, জীবনের সিংহভাগ সময় তাঁর কাটবে স্পেনেই। মাত্র ১৩ বছর বয়সে এখানে চলে এসেছেন। আর্জেন্টাইন স্প্যানিশের চেয়ে আসল স্প্যানিশ ভাষাটাই নাকি চোস্ত বলেন। আর্জেন্টিনার জাতীয় সংগীত জানেন কিনা, এই সংশয় এখনো কাটেনি অনেকের।

সবচেয়ে বড় কথা, ফুটবলার হিসেবে তিনি আর্জেন্টিনায় জনপ্রিয় নন। জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে আর্জেন্টিনার ফুটবল-পাগল মানুষদের কাছে কার্লোস তেভেজের অর্ধেকও নন মেসি। আর্জেন্টিনার মানুষদের মন জিততে হলে বোকা জুনিয়র্স কিংবা রিভার প্লেটের মতো ক্লাবের হয়ে খেলতে হয়। পরে ইউরোপে গিয়ে টাকা বানান, সমস্যা নেই। আগে আর্জেন্টিনার লিগে মন জিতুন ভক্তদের। মেসি তা করেননি, পেশাদার ফুটবল শুরুই হয়েছে তাঁর স্পেনে।

আর্জেন্টিনার মানুষদের মন জেতার আরেকটা পথ আছে। ভীষণ কঠিন এক পথ। মেসি সেই পথে হাঁটবেন বলে সিদ্ধান্ত নিলেন। ফিরিয়ে দিলেন স্পেনের হয়ে খেলার প্রস্তাব। বেছে নিলেন আর্জেন্টিনাকেই। যেখানে নাড়িপোঁতা আছে তাঁর। সেই ছোট্টবেলাতেই শেকড় উপড়ে ভিনদেশে থিতু হওয়ার পরও কেন জন্মভূমি মানুষকে এভাবে টানে! কে জানে তার উত্তর!

এবং এইখানেই ‘ভুল’টা করলেন মেসি। এইখানেই ‘পাপ’ হলো তাঁর। স্পেনের হয়ে খেললে ২০০৮ থেকে ২০১২-এই চার বছরে দুটো ইউরো আর একটি বিশ্বকাপ জেতার কীর্তি যুক্ত হতো তাঁর নামের পাশে। এর সঙ্গে ক্লাবের হয়ে অবিশ্বাস্য অর্জন। পেলে নাকি ম্যারাডোনা-এই বিতর্কটা হতো সর্বকালের দ্বিতীয় সেরা ফুটবলার কে, তা নিয়ে। একটা সিদ্ধান্ত, শুধু একটা সিদ্ধান্তই পাল্টে দিল সব! মেসির বিশ্বকাপ জিততে না-পারার দায় কতটা তাঁর সামর্থ্যে, কতটা তাঁর সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতায়?

জ্যাক ক্যালিস বিশ্বকাপ জেতেননি। ক্রিকেট কোথায় তাঁর অবস্থান? শেষ বয়সে এসে বিশ্বকাপ জিতেছেন শচীন টেন্ডুলকার। যদি না জিততেন? সর্বকালের সেরা হতেন না? বিশ্বকাপ জিতেও, এত অবিশ্বাস্য রেকর্ড নিয়েও টেন্ডুলকার অনেকের চোখেই সর্বকালের সেরা নন। সর্বকালের সেরা মাপার কোনো আদর্শ কোনো মাপকাঠি নেই। সর্বকালের সেরা হতে গেলে বিশ্বকাপ জিততেই হয়—এই তত্ত্বে আপনি বিশ্বাস করতেই পারেন। কিন্তু ইকার ক্যাসিয়াসের মনে হয়েছিল, বিশ্বকাপ জেতার চেয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতাই কঠিন। এই কথাটাই সেদিন ইএসপিএনের টক শোতে বললেন লিভারপুলে ১৩ বছর​ খেলে যাওয়া, বর্তমানের ফুটবল পণ্ডিত স্টিভ নিকোল। জর্জ বেস্ট উত্তর আয়ারল্যান্ডে জন্মেছিলেন—দোষটা তাঁর?

ফুটবল ক্লাব-কেন্দ্রীক খেলা। নিকোল মনে করেন, এখানে একজন খেলোয়াড়কে তাঁর ক্লাবের অর্জন দিয়েই মাপা উচিত। কিন্তু নিকোলের বক্তব্যের পক্ষে-বিপক্ষে অনেক যুক্তি আছে। দিজমা সান্তোস, নিলটন সান্তোস, জোজিমোদের কজন চেনে? অথচ এঁদের দুটো করে বিশ্বকাপ জেতার কীর্তি আছে। আবার এও তো সত্যি, এই বিশ্বকাপই পেলে-ম্যারাডোনাকে আলাদা করে দিয়েছে ক্রুইফ-​প্লাতিনিদের থেকে।

বিতর্ক চলছে। চলবে। তবে এই যুক্তির আয়না দিয়ে যদি দেখেন, আর্জেন্টিনাকে বেছে না নিলেই হয়তো ভালো করতে মেসি। অবশ্য এই তত্ত্বে সবচেয়ে বড় বিরোধিতা করবেন মেসি নিজেই। দেশ আর মাকে কেউ কখনো ভুলে থাকতে পারে! হোক না তিনি হাজার মাইল দূরে থাকেন। কোপা শেষে তো স্পেনে নয়, ফিরে গেছেন আর্জেন্টিনাতেই।
আর আর্জেন্টিনার জাতীয় সংগীত? মেসি বলবেন, মুখ দিয়ে জাতীয় সংগীত গাইতে হয় কে বলেছেন? জাতীয় সংগীত গাইতে হয় হৃদয় দিয়ে!

Source: http://www.prothom-alo.com/sports/article/573904/
জুলাই ১০, ২০১৫

Pages: 1 ... 3 4 [5] 6 7 8