Daffodil International University

Science & Information Technology => Science Discussion Forum => Latest Technology => Topic started by: Kazi Sobuj on October 01, 2020, 01:17:08 PM

Title: ৯০ মিনিটে করোনা সনাক্ত করবে এই যন্ত্র
Post by: Kazi Sobuj on October 01, 2020, 01:17:08 PM
৯০ মিনিটে করোনা সনাক্ত করবে এই যন্ত্র

(https://www.kalerkantho.com/assets/news_images/2020/09/18/203121corona.jpg)

https://www.dolphin.com.bd/ (https://www.dolphin.com.bd/)

বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে করোনা পরীক্ষা করে রিপোর্ট পাওয়া সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। রিপোর্ট পাওয়ার আগ পর্যন্ত রোগীকে 'আক্রান্ত' বলা যাবে না। ততদিনে তিনি আরও অনেকের মাঝে ভাইরাস ছড়াতে পারেন। সমস্যা সমাধানে বিজ্ঞানীরা এমন একটি যন্ত্র তৈরি করেছেন, যেটি দ্রুত পরীক্ষা করে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নির্ভুলভাবে শনাক্ত করা যাবে মাত্র ৯০ মিনিটে। খবর বিবিসি বাংলার।

লন্ডনের ইমপিরিয়াল কলেজের বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন, ছোট্ট একটা কম্প্যুটার চিপ কীভাবে ল্যাবরেটরির কাজ করবে এবং করোনাভাইরাসের বর্তমান পরীক্ষায় সংক্রমণ শনাক্ত করে যে ফল পাওয়া যাচ্ছে এই পদ্ধতিও ঠিক একই ফল দেবে। পার্থক্য হলো এই যন্ত্র ফল দিতে সময় নেবে মাত্র ৯০ মিনিট। ইংল্যান্ডের আটটি হাসপাতাল এই যন্ত্র ব্যবহার করে করোনাভাইরাস বহনকারী রোগীদের সফলভাবে এবং দ্রুত শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে।

ডিএনএনাজ নামে একটি সংস্থা এই যন্ত্রটি তৈরি করছে। তারা বলছে, কেউ যদি গলা বা নাকের ভেতর থেকে সোয়াব বা নমুনা নিতে পারে, তাহলেই সে এই যন্ত্রটি ব্যবহার করতে পারবে। একটি নীল রংএর কাট্রিজ বা আধারের মধ্যে সোয়াবটা রাখতে হবে, যার ভেতর পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক আছে। আধারটি এরপর জুতার বাক্সের আকারের ছোট একটি যন্ত্রের ভেতর ঢুকিয়ে দিতে হবে, যে যন্ত্র ওই নমুনা বিশ্লেষণ করবে। ওই আধারটি একবার ব্যবহারের পর ফেলে দিতে হবে।

বিসির বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সংবাদদাতা জেমস গ্যালাহার লিখেছেন, এই গবেষণার তথ্য প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞান সাময়িকী ল্যানসেট মাইক্রোবে। সেখানে বলা হয়েছে ৩৮৬ জনের কাছ থেকে সংগ্রহ করা নমুনা ডিএনএনাজ কম্পানির যন্ত্র দিয়ে এবং পাশাপাশি প্রচলিত ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে দুটি পরীক্ষার ফলাফল তুলনা করা হয়েছে।

ইমপিরিয়াল কলেজের অধ্যাপক গ্রেয়াম কুক বলেছেন, 'দুটি পরীক্ষার ফলাফল দেখা গেছে একইরকম, যা খুবই আশ্বস্ত হবার মত। বিশেষ করে যখন একটা নতুন প্রযুক্তি আপনি বাজারে আনার চেষ্টা করছেন তখন ফলাফলে তারতম্য না থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ," বলেছেন । অনেক পরীক্ষায় দেখা গেছে, হয়ত সেটা দ্রুত করা যাচ্ছে কিন্তু ফলাফল নির্ভরযোগ্য নয়, আবার কোনটায় ফলাফল নির্ভুল কিন্তু সময় লাগছে, কিন্তু এ ক্ষেত্রে দুটোই সফলভাবে অর্জিত হয়েছে।'

ল্যাবরেটরির পরীক্ষায় যেখানে বলা হচ্ছে রোগীর ভাইরাস নেই, এই যন্ত্রের পরীক্ষাতেও সেই ফলই এসেছে। ল্যাব পরীক্ষা যেখানে বলছে রোগীর ভাইরাস আছে, দ্রুত সময়ের এই পরীক্ষা ৯৪% ক্ষেত্রে একই রেজাল্ট দিয়েছে। এখানে সমস্যা একটা রয়েছে। সেটা হল একটা বাক্স-যন্ত্র দিয়ে একবারে শুধু একটা নমুনাই পরীক্ষা করা সম্ভব। কাজেই কোন প্রতিষ্ঠান যদি একটি বাক্স ব্যবহার করে তাহলে সারা দিনে প্রায় ১৬টার বেশি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হবে না।

অধ্যাপক কুক বলেছেন, 'যেসব ক্ষেত্রে আপনার দ্রুত জানা প্রয়োজন কেউ সংক্রমিত কিনা এবং একটা দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া যেখানে জরুরি, সেখানে এই যন্ত্র খুবই উপযোগী হবে।' তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, গত সপ্তাহে এই যন্ত্র ব্যবহার করে একজন রোগী কোভিড-১৯ আক্রান্ত কিনা তা দ্রুত জানা সম্ভব হয়েছে এবং সাথে সাথে ডেক্সামেথাসোন এবং রেমডেসিভির ওষুধ দিয়ে তার চিকিৎসা শুরু করে দেয়া সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেছেন, এই যন্ত্র হাসপাতালগুলোর জন্য ভবিষ্যতে খুবই উপযোগী হবে। কারণ এটা ব্যবহার করে খুব দ্রুত তারা শনাক্ত করতে পারবে হাসপাতালে ভর্তি হতে আসা রোগী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নাকি তিনি সাধারণ ফ্লু বা শ্বাসযন্ত্রের অন্য ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে বড় বড় জায়গায় যেখানে অনেক মানুষের সমাগম হবে সেখানে পরীক্ষার জন্য এই যন্ত্র হয়ত সঠিক হবে না। যেমন ফুটবল স্টেডিয়ামে। সেখানে হয়তো ৬০ হাজার দর্শক সমাগম হবে, সবাইকে পরীক্ষা করতে গেলে সেখানে ৬০ হাজার যন্ত্র প্রয়োজন হবে। কিন্তু ছোট ভেন্যুতে বা যেখানে অল্প লোক জড়ো হবে, সেখানে এই যন্ত্র অবশ্যই দ্রুত সংক্রমণ শনাক্ত করতে কার্যকর।

ইংল্যান্ডের অন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অফ ওয়ারইক, যারা এই গবেষণার সাথে যুক্ত নয়, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লরেন্স ইয়ং বলেছেন এই উদ্ভাবন 'সৃজনশীল' এবং কেউ ভাইরাস বহন করছেন কিনা তা দ্রুত জানতে পারলে সেটা রোগীর দ্রুত চিকিৎসার জন্য যেমন সহায়ক হবে, তেমনি ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতেও এটা খুবই সাহায্য করবে। তবে সব বিজ্ঞানীই বলেছেন এই যন্ত্র ছোট পরিমণ্ডলে উপকারী হবে। কিন্তু মারাত্মক এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকারগুলোকে গণহারে পরীক্ষার ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে হবে।


Source: https://www.kalerkantho.com/online/info-tech/2020/09/18/956776