Daffodil International University

General Category => Common Forum => Topic started by: Raja Tariqul Hasan Tusher on March 10, 2020, 01:41:57 PM

Title: করোনো নিয়ে কোন কথায় কান দিতে নেই
Post by: Raja Tariqul Hasan Tusher on March 10, 2020, 01:41:57 PM
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস। করোনা থেকে পরিত্রাণের উপায় কী, তা এখনো অজানা। তা সত্ত্বেও থেমে নেই স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে পরামর্শ। এসব পরামর্শের বেশির ভাগই অকেজো। এগুলো ক্ষতিকর নাও হতে পারে; আবার বিপজ্জনকও হতে পারে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় করোনাভাইরাস নিয়ে নানা স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শ ঘুরে বেড়াচ্ছে। এর মধ্যে যা যা উপেক্ষা করতে হবে, তা বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

রসুন: ফেসবুকে রসুন নিয়ে অনেক পোস্ট ঘুরে বেড়াচ্ছে। অনেকে বলছে, রসুন খেলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সম্ভব। এ তো গেল ফেসবুকের কথা। জেনে নিই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) কী বলছে।

ডব্লিউএইচও বলছে, রসুন একটি স্বাস্থ্যকর খাবার। প্রচলিত ধারণা আছে যে রসুন অনেক ধরনের সংক্রমণ রোধ করতে পারে। তবে এ রকম কোনো প্রমাণ নেই যে রসুন খেলে মানুষ করোনোভাইরাস থেকে রক্ষা পাবে।

দ্য সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের খবরে জানা যায়, এক নারী দেড় কেজি রসুন খেয়ে ফেলেছিলেন। গলায় সংক্রমণের পর তাঁকে হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে হয়। সাধারণভাবে ফল, সবজি ও পানি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তবে এমন কোনো প্রমাণ নেই যে এগুলো খেলে করোনোভাইরাস প্রতিরোধ করা সম্ভব।

বিস্ময়কর খনিজ (মিরাকল মিনারেলস): ইউটিউবার জর্ডান সাথেরের অনুসারী কয়েক হাজার। তিনি দাবি করেছেন, করোনা প্রতিরোধের জন্য তাঁর কাছে বিস্ময়কর সহায়ক খনিজ খাবার আছে। মিরাকল মিনারেল সাপ্লিমেন্ট (এমএমএস) নামে পরিচিত এই খাবার করোনোভাইরাসকে একেবারে দূর করে দিতে পারে। এটি একধরনের ক্লোরিন ডাই–অক্সাইড। গত জানুয়ারি মাসে সাথের টুইট করেন, ক্লোরিন ডাই–অক্সাইড শুধু ক্যানসার প্রতিরোধ করতে পারে না, এটি করোনাভাইরাসও পুরোপুরি নিরাময় করতে পারে।

গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) এমএমএস নামে এই বিপজ্জনক পানীয় নিয়ে সতর্কতা জারি করে। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ করোনোভাইরাস ছড়িয়ে পড়া অন্য দেশগুলোতেও এই পানীয়র ব্যাপারে সতর্কতা জারি করে।

এফডিএ বলছে, কোনো গবেষণায় প্রমাণিত হয়নি যে এসব পানীয় নিরাপদ বা কার্যকর বা কোনো অসুস্থতা সারাতে পারে। বরং এ ধরনের পানীয় পান করলে অবসাদ, বমি, ডায়রিয়া ও পানিশূন্যতার উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

ঘরে তৈরি হ্যান্ড স্যানিটাইজার: করোনাভাইরাস প্রতিরোধে হাত পরিষ্কার রাখাটা জরুরি। হ্যান্ড স্যানিটাইজার জেলের স্বল্পতার খবর পাওয়া গেছে। ইতালিতে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের স্বল্পতা উদ্বেগজনক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘরে এই স্যানিটাইজার তৈরির পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা চলছে। লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের অধ্যাপক স্যালি ব্লুমফিল্ড বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন না ঘরে তৈরি স্যানিটাইজিং কার্যকর হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বলছে, বাসায় সাধারণত যেসব রোগজীবাণুনাশক ব্যবহার করা হয়, সেগুলোই কার্যকর হতে পারে।

পানযোগ্য রুপা: যুক্তরাষ্ট্রে জিম বেকারের টিভি শোতে রুপার মিশ্রণ করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সহায়ক বলে দাবি করা হয়। টিভি শোতে বলা হয়, রুপার মিশ্রণ একধরনের জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, এ ধরনের রুপা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী—এমন কোনো প্রমাণ নেই। বরং এতে কিডনির জটিলতা, ত্বক নীল হয়ে যাওয়া ও হৃদ্‌রোগের মতো নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে।

প্রতি ১৫ মিনিটে পানি পান: ফেসবুকের বেশ কিছু পোস্টে দেখা যাচ্ছে, জাপানি এক চিকিৎসক প্রতি ১৫ মিনিটে পানি পান করতে পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর মতে, এতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করা সম্ভব। তবে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ট্রুডি ল্যাং বলেন, করোনোভাইরাস শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে ছড়ায়। এর মধ্যে কিছু ভাইরাস মুখেও যেতে পারে। তবে ঘনঘন পানি পান করলে এই ভাইরাস প্রতিরোধ করা যাবে—এমন কোনো প্রমাণ নেই।

গরমে থাকা এবং আইসক্রিম এড়িয়ে চলা: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে গরম পানি পান, গরম পানিতে গোসল করা ও চুল শুকানোর যন্ত্র (হেয়ার ড্রায়ার) ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে। আইসক্রিম না খেতেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এমনকি অনেক পোস্টে ইউনিসেফ এ ধরনের পরামর্শ দিয়েছে বলে প্রচার চালানো হচ্ছে। ইউনিসেফের কর্মী শার্লট গরনিৎজকা বলেন, ‘এ ধরনের প্রচার পুরোপুরি মিথ্যা। আমরা জানি, গরমে ফ্লুজনিত ভাইরাস বেঁচে থাকতে পারে না। তবে আমরা জানি না যে করোনাভাইরাসের ওপর গরম কতটা প্রভাব ফেলতে পারে।’ অধ্যাপক ব্লুমফিল্ড বলেন, ভাইরাস একবার শরীরে ঢুকে গেলে এটাকে মেরে ফেলার কোনো উপায় নেই; এই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করা ছাড়া।